ক্লাস ৬ ইতিহাস অধ্যায় (৪) প্রশ্নও উত্তর সমাধান পৃষ্ঠা - ৬৩ ❏ ভেবে দেখাে খুঁজে দেখাে... ১. সঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে শ...
ক্লাস ৬ ইতিহাস অধ্যায় (৪) প্রশ্নও উত্তর সমাধান পৃষ্ঠা - ৬৩
❏ ভেবে দেখাে খুঁজে দেখাে...
১. সঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো :
১.১) আদি বৈদিক যুগের ইতিহাস জানার প্রধান উপাদান ― (জেন্দ অবেস্তা/মহাকাব্য/ঋকবেদ)
১.২) মেগালিথ বলা হয় ―(পাথরের গাড়ি /পাথরের সমাধি/পাথরের খেলনা) কে।
১.৩) ঋকবেদে রাজা ছিলেন ― (গােষ্ঠীর প্রধান/রাজ্যের প্রধান/সমাজের প্রধান)।
১.৪) বৈদিক সমাজে পরিবারের প্রধান ছিলেন ― (রাজা/বিশপতি/বাবা)।
২. বেমানান শব্দটি খুঁজে লেখাে :
২.১) ঋকবেদ, মহাকাব্য, সামবেদ, অথর্ববেদ।
উত্তরঃ মহাকাব্য।
২.২) ব্রাম্মন, ক্ষত্রিয়, শূদ্র, নৃপতি।
উত্তরঃ নৃপতি।
২.৩) ইনামগাঁও, হস্তিনাপুর, কৌশাম্বী, শ্রাবন্তী।
উত্তরঃ ইনামগাঁও।
২.৪) উষা, অদিতি, পৃথিবী, দুর্গা।
৩. নিজের ভাষায় ভেবে লেখাে (তিন-চার লাইন) :
৩.১) বেদ শুনে শুনে মনে রাখতে হত। এর কারণ কী বলে তােমার মনে হয়?
উত্তরঃ বেদকে শুনে শুনে মনে রাখতে হত বলে একে বলা হত শ্রুতি। এই সময় মানুষ লিখতে জানত না। তখন লিপির ব্যবহার হয়নি। সেই যুগের মানুষ লেখার পদ্ধতি আবিষ্কার করতে পারেনি বলেই বেদকে শুনে শুনে মনে রাখতে হত।
উত্তরঃ পৃথিবী।
৩.১) বেদ শুনে শুনে মনে রাখতে হত। এর কারণ কী বলে তােমার মনে হয়?
উত্তরঃ বেদকে শুনে শুনে মনে রাখতে হত বলে একে বলা হত শ্রুতি। এই সময় মানুষ লিখতে জানত না। তখন লিপির ব্যবহার হয়নি। সেই যুগের মানুষ লেখার পদ্ধতি আবিষ্কার করতে পারেনি বলেই বেদকে শুনে শুনে মনে রাখতে হত।
৩.২) বৈদিক সমাজ চারটি ভাগে কেন ভাগ হয়েছিল বলে তােমার মনে হয়?
উত্তরঃ প্রথম দিকে বৈদিক সমাজে কোনাে ভাগ ছিল না। পরবর্তী বৈদিক যুগে চারটি বর্ণের উল্লেখ পাওয়া যায়। প্রথমে চারটি বর্ণকে জন্মভিত্তিক করে পেশা নির্ধারিত হতে শুরু করে। ব্রাম্মণরা পুজোযজ্ঞ, বেদ পাঠের কাজ করতেন। যুদ্ধ করা, সম্পদ লুট করা ছিল ক্ষত্রিয়দের কাজ। কারিগরি কাজ, কৃষি, বাণিজ্য ছিল বৈশ্যদের কাজ। এই তিন বর্ণের সেবা করাই ছিল শূদ্রদের কাজ। যুদ্ধবন্দি দাসরা ছিল শূদ্র। তাই সমাজকে চার ভাগে ভাগ করা হয়।
৩.৩) বৈদিক যুগের পড়াশােনায় গুরু ও শিষ্যের সম্পর্ক কেমন ছিল বলে মনে হয়?
উত্তরঃ বৈদিক যুগে গুরু ও শিষ্যের মধ্যে সম্পর্ক ছিল মধুর ও গভীর। শিক্ষা নেওয়ার জন্য গুরুর কাছে ছাত্র আবেদন করত। উপনয়নের পর অর্থাৎ পইতা ধারণের পর গুরুর আশ্রমে থেকে ছাত্ররা শিক্ষা লাভ করত। পড়াশােনার সঙ্গে সঙ্গে নানা তারা কাজকর্ম শিখত। ছাত্রদের খাওয়ানাের দায়িত্ব ছিল গুরুর ওপর। বেদপাঠ করানাের মধ্য দিয়ে শিক্ষাদান করা হত। গুরুমশাই হাতেকলমে ছাত্রদের অনেক কিছু শেখাতেন।
৩.৪) আদি বৈদিক ও পরবর্তী বৈদিক যুগে নারীর অবস্থার কি কোনাে বদল হয়েছিল? বদল হয়ে থাকলে কেন তা হয়েছিল বলে মনে হয়?
উত্তরঃ আদি বৈদিক যুগে নারীর অবস্থা বেশ ভালাে ছিল। তারা উপনয়নে অংশ নিয়ে গুরুর কাছে লেখাপড়া,উচ্চশিক্ষা গ্রহণ, নৃত্য-গীতকলা ইত্যাদিতে দক্ষতা অর্জন করত। কিন্তু পরবর্তী বৈদিকযুগে এর বিপরীত চিত্র দেখা যায়। মেয়েদের শিক্ষাবন্ধহয়ে যায়। অল্প বয়সে তাদের বিবাহ দেওয়া রীতি শুরু হয়। তাদের সম্মান কমে যায়। বাল্যবিবাহ, সতীদাহ ইত্যাদির মতাে নিষ্ঠুর প্রথাগুলি চালু হয়। ব্যাবসাবাণিজে, প্রসার ঘটে। সমাজে প্রচুর অর্থের আগম ঘটেছিল। এর ফলে পুরুষদের হাতে সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়েছিল।
৪. হাতেকলমে করাে :
৪.১) বৈদিক সমাজে রাজার ধারণার বদল একটি চার্টের সাহায্যে দেখাও।
উত্তরঃ রাজা — গােপতি →বিশপতি । গােষ্ঠীপতি → নরপতি → ভূপতি।
প্রথমে রাজা গােপতি নামে পরিচিত ছিলেন। পরে তিনি বিশপতি বা গােষ্ঠীপতি নামে
পরিচিত হন। তাঁকে নানা ধরনের দায়িত্ব পালন করতে হত। ঋকবেদে রাজা বা সাধারণ
মানুষও ভূমির দখল পায়নি। এর পরবর্তীকালে রাজা বা ভূপতি হলেন জমির মালিক।
তারপর মহীপতি অর্থাৎ পৃথিবীর মালিক যিনি রাজ্যের প্রধান তিনি নরপতিতে পরিণত
হলেন। নর + পতি অর্থাৎ মানুষের রক্ষাকারী হলেন রাজা।
৪.২) বৈদিক সমাজে জীবিকাগুলির একটি চার্ট তৈরি করাে।
উত্তরঃ জীবিকা → পশুপালন → খাদ্য সংগ্রহকারী → কৃষি → স্থায়ী বসতি স্থাপন → কারিগরি শিল্প – লােহার আবিষ্কার → ধাতু → কারিগরি শিল্পের উন্নতি → ব্যাবসাবাণিজ্যের প্রসার।
বৈদিক সমাজের প্রথম দিকে জীবিকা অর্জনের জন্য মানুষ পশুপালন করত।
খাদ্যসংগ্রহ করত। সমাজে গবাদিপশুই ছিল প্রধান সম্পদ। ঘােড়ার ব্যবহারও সেই
সময়ে ছিল উল্লেখযােগ্য ঘটনা। এরপর কৃষিকাজ মানুষ শিখেছিল। জমিতে যব, গম, ধান
উৎপন্ন হত। ধীরে ধীরে কারিগরি শিল্পের চলন হল। কাঠের আসবাব ও বাড়িঘর তৈরি
করা হত। চামড়ার ব্যবহার ও চামড়া দিয়ে নানা ধরনের জিনিসপত্র তৈরি হত।
দু-রকমের সুতাে কাপড় বােনায় ব্যবহার হত। সােনার নানা রকম গয়না বানানাে হত।
সম্ভবত এক সময় বৈদিক সমাজের মানুষ বন পুড়িয়ে বসতির বিস্তার করে। কারিগরি
শিল্পের উন্নতি হলে কামার, কুমাের, জেলে, চিকিৎসক নানা পেশার লােকের উদ্ভব
ঘটে। পরবর্তী বৈদিক যুগে কাজের ভাগাভাগি অনেক হয়েছিল। যেমন—ধুনক, ধনুকের
ছিলা, তির তৈরির আলাদা লােক ছিল। সামুদ্রিক বাণিজের প্রসার হয়নি। তবে
জিনিসপত্রের বিনিময় শুরু হয়েছিল বলে জানা যায়।
◈ আরো পড়ুনঃ ◈
❑ প্রশ্নও উত্তর প্র্যাকটিস সেট
১. বেদ কথাটি এসেছে_____ শব্দ থেকে।
উত্তরঃ বিদ।
২. সবথেকে পুরােনাে বৈদিক সংহিতা হল_____।
উত্তরঃ ঋগ্বেদ।
৩. ______দিক দিয়ে ইন্দো-আর্যরা ভারতে ঢুকেছিল।
উত্তরঃ উত্তর-পশ্চিম।
৪. আদি বৈদিক যুগের ইতিহাস জানার একমাত্র উপাদান____।
উত্তরঃ ঋগ্বেদ।
৫. অথর্ববেদ হল________সংকলন।
উত্তরঃ জাদুমন্ত্রের।
৬. সংহতি কথার অর্থ হল______করা।
উত্তরঃ সংকলন।
৭. ঋগ্বেদ________পর্বতের উল্লেখ নাই।
উত্তরঃ বিন্ধ্য।
৮. জমির পতি বা মালিককে বলা হত____।
উত্তরঃ ভূপতি।
৯. আদি বৈদিক যুগে_____বিশেষ প্রচলন ছিল না।
উত্তরঃ ব্যাবসা
বাণিজ্যের।
১০.পুজো, যজ্ঞ, বেদপাঠ ইত্যাদি করতেন,_____।
উত্তরঃ ব্রাহ্মণরা।।
১১. বৈদিক যুগে, ____পুজো প্রচলিত ছিল না।
উত্তরঃ মুর্তি।
১২. বৈদিক শিক্ষার দুটি প্রধান বিষয় ছিল_____ও____।
উত্তরঃ ছন্দ ও
ব্যাকরণ।
১৩. বৈদিক যুগের কোনাে ______খোঁজ প্রত্নতাত্ত্বিকরা পাননি।
উত্তরঃ লিপির।
❑ দু-একটি কথায় উত্তর দাও :
১. ইন্দো-আর্য ভাষাগােষ্ঠী কাদের বলা হত?
উত্তরঃ ইন্দো-ইরানীয় ভাষা গােষ্ঠীর একটি শাখা উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত হয়ে ভারতীয় উপমহাদেশে পৌঁছেছিল এদেরই ইন্দো-আর্য ভাষা গােষ্ঠী বলা হয়।
২. বেদ কথার অর্থ কী?
উত্তরঃ বেদ এসেছে বিদ শব্দ থেকে 'বিদ' মানে হল 'জ্ঞান'।
৩. বৈদিক সাহিত্যের চারটি ভাগ কী?
উত্তরঃ ঋক, সাম, যজুঃ ও অথর্ব এই চারটি সংহিতা হল বৈদিক সাহিত্যের চারটি ভাগ।
৪. বৈদিক সাহিত্যের যুগের কটি ভাগ ও কী কী?
উত্তরঃ বৈদিক সাহিত্যের যুগের দুটি ভাগ একটি আদি বৈদিক যুগ অপরটি পরবর্তী বৈদিক যুগ।
৫. সংহিতা কথার অর্থ কী?
উত্তরঃ সংকলন করা।
৬. যজুর্বেদে কী সংকলন করা হয়?
উত্তরঃ যজুর্বেদে মূলত আচার অনুষ্ঠানের দরকারি মন্ত্র কিছুটা পদ্যে ও কিছুটা গদ্যে সংকলন করা হয়।
৭. বেদাঙ্গ কী?
উত্তরঃ বৈদিক সাহিত্যগুলি ঠিক মতাে উচ্চারণ করা, ছন্দ, আসল অর্থ বােঝার জন্য রচনা হয়েছিল বেদাঙ্গ।
৮. বেদাঙ্গ সংখ্যায় কটি?
উত্তরঃ বেদাঙ্গ সংখ্যায় ছয়টি।
৯. মহাকাব্য কী?
উত্তরঃ পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যের একটি অংশ হলাে মহাকাব্য। মহাকাব্য কথার মানে মহান কাব্য বা কবিতা।
১. ইন্দো-আর্য ভাষাগােষ্ঠী কাদের বলা হত?
উত্তরঃ ইন্দো-ইরানীয় ভাষা গােষ্ঠীর একটি শাখা উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত হয়ে ভারতীয় উপমহাদেশে পৌঁছেছিল এদেরই ইন্দো-আর্য ভাষা গােষ্ঠী বলা হয়।
২. বেদ কথার অর্থ কী?
উত্তরঃ বেদ এসেছে বিদ শব্দ থেকে 'বিদ' মানে হল 'জ্ঞান'।
৩. বৈদিক সাহিত্যের চারটি ভাগ কী?
উত্তরঃ ঋক, সাম, যজুঃ ও অথর্ব এই চারটি সংহিতা হল বৈদিক সাহিত্যের চারটি ভাগ।
৪. বৈদিক সাহিত্যের যুগের কটি ভাগ ও কী কী?
উত্তরঃ বৈদিক সাহিত্যের যুগের দুটি ভাগ একটি আদি বৈদিক যুগ অপরটি পরবর্তী বৈদিক যুগ।
৫. সংহিতা কথার অর্থ কী?
উত্তরঃ সংকলন করা।
৬. যজুর্বেদে কী সংকলন করা হয়?
উত্তরঃ যজুর্বেদে মূলত আচার অনুষ্ঠানের দরকারি মন্ত্র কিছুটা পদ্যে ও কিছুটা গদ্যে সংকলন করা হয়।
৭. বেদাঙ্গ কী?
উত্তরঃ বৈদিক সাহিত্যগুলি ঠিক মতাে উচ্চারণ করা, ছন্দ, আসল অর্থ বােঝার জন্য রচনা হয়েছিল বেদাঙ্গ।
৮. বেদাঙ্গ সংখ্যায় কটি?
উত্তরঃ বেদাঙ্গ সংখ্যায় ছয়টি।
৯. মহাকাব্য কী?
উত্তরঃ পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যের একটি অংশ হলাে মহাকাব্য। মহাকাব্য কথার মানে মহান কাব্য বা কবিতা।
১০. বৈদিক যুগের পালিত পশু কী ছিল?
উত্তরঃ ঘােড়া।
১১. বৈদিক যুগে বিনিময় মাধ্যম কী ছিল?
উত্তরঃ জিনিসপত্র।
১২. আদি বৈদিক যুগের মানুষের প্রধান খাদ্য কি ছিল?
উত্তরঃ যব।
১৩. বৈশ্যদের কাজ কী ছিল?
উত্তরঃ কারিগরি, কৃষি ও বাণিজ্য
ছিল বৈশ্যদের কাজ।
১৪. বাণপ্রস্থাশ্রম কাকে বলে?
উত্তরঃ সংসার থেকে দূরে বনে
কুটির বানিয়ে ধর্মচর্চা করাকে বাণপ্রস্থাশ্রম বলে।
১৫. বেদের অপর নাম শ্রুতি কেন?
উত্তরঃ বেদ শুনে শুনে মুখস্থ
করতে হত বলে বেদের অপর নাম শ্রুতি।
১৬. বৈদিক যুগের সমাজে প্রধান কে ছিল?
উত্তরঃ পিতা।
১৭. আদি বৈদিক সমাজের মানুষ কোন কোন দেবতার পুজো করতেন?
উত্তরঃ ইন্দ্র, বরুণ, অগ্নি,
সূর্য, মিত্র, অশ্বিনীদ্বয়, সােম প্রমুখ।
১৮. বৈদিক সমাজে কী কী শিক্ষা প্রচলিত ছিল?
উত্তরঃ বেদ ছাড়াও গণিত, ব্যাকরণ
ও ভাষাশিক্ষা।
১৯. বৈদিক যুগে অন্য একটি সমাজের নাম করাে?
উত্তরঃ মহারাষ্ট্রের
ইনামগাঁও।
২০. মেগালিথ কী?
উত্তরঃ পাথরের সমাধিকে মেগালিথ
বলা হয়।
❑ সংক্ষেপে উত্তর দাও :
১. বৈদিক যুগে বিজ্ঞান চর্চার কতখানি অগ্রগতি হয়েছিল?উত্তরঃ বৈদিক যুগে শিক্ষায় গণিতের চর্চা হত। যজ্ঞবেদি বানানাের জন্য জ্যামিতিক জ্ঞানের প্রয়ােজন হত। স্থপতিরা এটা নির্মাণ করতেন। এই বেদি তৈরিতে শ্রমিক, ছুতাের, গণিতবিদদের দরকার হত। গ্রহ, নক্ষত্র, কাল, ঋতুর সঠিক ধারণার জন্য বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা দেওয়া হত। এর থেকে শুরু হয় জ্যোতিষ চর্চার। শুরু হয় চিকিৎসাশাস্ত্রের পঠনপাঠন।
২. বৈদিক যুগের শিক্ষাব্যবস্থা কেমন ছিল?
উত্তরঃ বৈদিক যুগের শিক্ষাব্যবস্থায় প্রধান ছিলেন গুরু। তাঁর কাছে শিক্ষা লাভের জন্য প্রথমে শিক্ষার্থীকে আবেদন করতে হত। পছন্দ হলে গুরু উপনয়ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেই ছাত্রকে গ্রহণ করতেন। মৌখিক ভাবেই শিক্ষা চর্চা হত।
উত্তরঃ ঋকবেদের ভূগােল থেকে আদি বৈদিক যুগের বিস্তার সম্পর্কে জানা যায়। আজকের আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের সঙ্গে আদি বৈদিক যুগের মানুষের পরিচয় ছিল। সিন্ধু ও তার পূর্ব দিকের উপনদীগুলি দিয়ে ঘেরা অঞ্চল ছিল আদি বৈদিক যুগের বাসস্থান। ওই অঞ্চলটিকে বলা হত। সপ্তসিন্ধু অঞ্চল।
৪. পরবর্তী বৈদিক যুগের বিস্তার সম্পর্কে লেখাে।
উত্তর : গঙ্গা-যমুনা দোয়াব এলাকার উল্লেখ পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে অনেক বেশি। এর থেকে বােঝা যায়, বৈদিক বসতি পাঞ্জাব থেকে পূর্ব দিকে হরিয়ানাতে সরে গিয়েছিল। পরবর্তী বৈদিক সভ্যতার পূর্ব সীমা ছিল উত্তর বিহারের মিথিলা। পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যের মূল ভৌগলিক অঞ্চল ছিল সিন্ধু ও গঙ্গার মাঝের এলাকা।
৫. মহাকাব্য কী?
উত্তর : পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যের একটি অংশ হল মহাকাব্য। মহাকাব্য কথার অর্থ মহান কাব্য বা কবিতা। কোনাে বিশেষ ঘটনা, দেবতা বা বড়াে রাজবংশকে নিয়েই মহাকাব্য লেখা হত। তার সঙ্গে থাকত ভূগােল, গ্রহ-নক্ষত্র, গ্রামনগরের কথা, সমাজ জীবনের নানা দিক, রাজনীতি, যুদ্ধ, উৎসবের কথাও মহাকাব্যে মিশে থাকত।
৬. চতুরাশ্রম প্রথা কী?
উত্তর : পরবর্তী বৈদিক যুগে জীবনযাপনের চারটি ভাগ বা পর্যায় ছিল ছাত্রাবস্থায় গুরুগৃহে থেকে শিক্ষালাভ করা ছিল ব্ৰম্মচর্যাশ্রম। শিক্ষালাভের পর বিয়ে করে সংসার জীবনযাপনকে বলে গাহস্থ্যাশ্রম। সংসার থেকে দূরে বনের কুটিরে ধর্মচর্চা করাকে বলে বাণপ্রস্থ। ঈশ্বরচিন্তায় শেষ জীবনকে বলা হত সন্ন্যাস আশ্রম।
৭. বর্ণাশ্রম প্রথা সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখাে।
উত্তর : পরবর্তী বৈদিক যুগের সময় বর্ণাশ্রম প্রথা দেখা যায়। পুজো, যজ্ঞ, বেদ পাঠ ইত্যাদি করতেন ব্রাম্মণরা। যুদ্ধ করত ক্ষত্রিয়রা। বাণিজ্য, কৃষি, কারিগরি কাজ করত বৈশ্য। তিনবর্ণের সেবা করত শূদ্ররা। সমাজে বর্ণ অনুযায়ী ভেদাভেদ ছিল।
৮. বৈদিক সভ্যতার কারিগরি শিল্প সম্পর্কে লেখাে।
উত্তর : আদি বৈদিক সমাজে কারিগরি শিল্পের চল ছিল কম। কাঠের আসবাব, বাড়িঘর ও রথ তৈরি করতে কাঠের কারিগরি শিল্পের কথা জানা যায়। চামড়া দিয়ে থলি, ঘােড়ার লাগাম প্রভৃতি বানানাের জন্য চামড়ার শিল্পের উল্লেখ আছে। পােশাক বানানাের ও গয়না বানানাের শিল্পও প্রচলিত ছিল।
❑ রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর:উত্তর : পরবর্তী বৈদিক যুগের সময় বর্ণাশ্রম প্রথা দেখা যায়। পুজো, যজ্ঞ, বেদ পাঠ ইত্যাদি করতেন ব্রাম্মণরা। যুদ্ধ করত ক্ষত্রিয়রা। বাণিজ্য, কৃষি, কারিগরি কাজ করত বৈশ্য। তিনবর্ণের সেবা করত শূদ্ররা। সমাজে বর্ণ অনুযায়ী ভেদাভেদ ছিল।
৮. বৈদিক সভ্যতার কারিগরি শিল্প সম্পর্কে লেখাে।
উত্তর : আদি বৈদিক সমাজে কারিগরি শিল্পের চল ছিল কম। কাঠের আসবাব, বাড়িঘর ও রথ তৈরি করতে কাঠের কারিগরি শিল্পের কথা জানা যায়। চামড়া দিয়ে থলি, ঘােড়ার লাগাম প্রভৃতি বানানাের জন্য চামড়ার শিল্পের উল্লেখ আছে। পােশাক বানানাের ও গয়না বানানাের শিল্পও প্রচলিত ছিল।
১. কী কারণে ইন্দো-আর্য ভাষাকেই সব থেকে পুরােনাে সাহিত্য বলা হয়?
উত্তর : মানুষের যেমন পরিবার আছে তেমনি ভাষারও আছে পরিবার। তেমনই একটি পরিবারের নাম ইন্দো-ইউরােপী ভাষা পরিবার। ভারতীয় উপমহাদেশ এবং ইউরােপের অনেক ভাষাই এই ভাষা পরিবারের সদস্য। এদেরকে তাই একসঙ্গে ইন্দো-ইউরােপীয় ভাষা পরিবার বলা হয়। ইন্দো-ইউরােপীয় ভাষা পরিবারের এক সদস্য ইন্দো-ইরানীয় ভাষা। ওই ভাষা মানুষের মুখে মুখে ঘুরে ঘুরে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন ভাষায় পরিণত হয়েছে। তার সঙ্গে মিশেছে অনেক আঞ্চলিক শব্দ। সংস্কৃত ভাষা সেই ভাষাগুলির মধ্যে একটি ইন্দো-ইউরােপীয় ভাষা অবশ্য এখন আর নেই। ঋকবেদ ও জেন্দ -অবেস্তায় ইন্দো-ইরানীয় ভাষার প্রভাব লক্ষ করা যায়। অনেকে মনে করেন ইন্দো-ইরানীয় ভাষা গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ তৈরি হওয়ায় ওই গােষ্ঠীর একটি শাখা উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত হয়ে ভারতীয় উপমহাদেশে এসে পড়েছিল এদেরই বলা হয় ইন্দো-আর্য ভাষা গােষ্ঠী। এই ইন্দো-আর্যভাষারই সব থেকে পুরােনাে সাহিত্য হল ঋকবেদ।
২. ইন্দো-ইউরােপীয় ভাষার পরিবার সম্পর্কে যা জানাে লেখাে।
উত্তর : বাংলায় আমরা যাকে বলি মা, সংস্কৃতে তাকে বলে মাতৃ বা মাতঃ । ইংরেজিতে বলে mother এবং লাতিন ভাষায় বলে মাতের। এভাবে অনেক শব্দে একটি ভাষার সঙ্গে অনেকগুলি ভাষার মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এই উচ্চারণ ও অর্থের মিল কিন্তু এমনি এমনি হয় না। মানুষের পরিবারের মতাে আছে ভাষারও পরিবার। সেই একই পরিবারের ভাষাগুলির মধ্যে বেশ কিছু মিল বা সাদৃশ্য ধরা পড়ে যায়। তেমনই একটি ভাষা-পরিবার হল ইন্দো-ইউরােপীয় ভাষা পরিবার। ইন্দো অর্থে ভারতীয় উপমহাদেশ এবং ইউরােপীয় বলতে ইউরােপ মহাদেশের কিছু অংশ। ঐতিহাসিকদের মতে, ইন্দো-ইউরােপীয় ভাষার মানুষরা ছিল একটি তৃণভূমি অঞলের যাযাবর। তাদের নিজেদের ও তাদের পালিত পশুর খাদ্যের অভাব দেখা দিলে তারা ইউরােপ, ইরান ও ভারতের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে।
ইন্দো-ইউরােপীয় ভাষা পরিবারের এক সদস্য হল ইন্দো-ইরানীয় ভাষা। ওই ভাষা মানুষের মুখে মুখে ঘুরে পরিবর্তিত রূপে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন ভাষায় পরিণত হয়েছে। সংস্কৃত ভাষা সেই ভাষাগুলির মধ্যে একটি। ঋকবেদ ও জেন্দ-অবেস্তায় ইন্দো-ইরানীয় ভাষার প্রভাব বােঝা যায়। পণ্ডিতরা অনুমান করেন, কোনাে কারণে ইন্দো-ইরানীয় ভাষা গােষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ দেখা দেওয়ায় ওই গােষ্ঠীর একটি শাখা উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত হয়ে ভারতীয় উপমহাদেশে হাজির হয়েছিল। এদেরই বলা হয় ইন্দো-আর্য ভাষাগােষ্ঠী। তবে আদি ইন্দো-ইউরােপীয় ভাষা এখন অবলুপ্ত।
৩. বৈদিক সাহিত্যে বর্ণিত ভূগােল সম্পর্কে আলােচনা করাে।
উত্তর : বৈদিক সাহিত্যে বিশেষ করে ঋকবেদে ভূগােল বিষয়ে প্রচুর আলােচনা পাওয়া যায়। এই সাহিত্যে আলােচিত পর্বত ও নদীর নাম থেকে উপমহাদেশে আর্যদের বসতির খবর জানা যায়। ঋকবেদে হিমালয় (হিমবৎ) ও মূজবন্ত শৃঙ্গের উল্লেখ থাকলেও বিন্ধ্যপর্বতের উল্লেখ নেই। ঋকবেদে যেসব নদীর কথা বলা হয়েছে তা থেকে মনে করা হয় যে, ওইসব নদীর কাছাকাছি এলাকাগুলিতেই আদি বৈদিক যুগের মানুষদের বসবাস ছিল। ঋকবেদে উল্লিখিত সিন্ধু নদের অস্তিত্ব এখন থাকলেও সরস্বতী নদীর অস্তিত্ব এখন আর নেই। ঋকবেদের একেবারে শেষের দিকে মাত্র একবার গঙ্গা ও যমুনা নদীর অস্তিত্বের উল্লেখ আছে। আদি বৈদিক সভ্যতা অবধি যে আজকের আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অবধি উপনদীগুলি দিয়ে ঘেরা অঞ্চল ছিল আদি বৈদিক যুগের মানুষের বসতি। ওই অঞ্চলকে সপ্তসিন্ধু অঞ্চল বলা হত।
পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে গঙ্গা-যমুনা ও দোয়াব অঞলের উল্লেখ থাকায়
বােঝা যায়, পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যের বর্ণনায় ভূগােলের আলােচনা
অনেকখানি পালটে গেছে। পরবর্তী সময়ে পাঞ্জাব থেকে পূর্ব দিকে হরিয়ানাতে
বৈদিক বসতি সরে গিয়েছিল। ওই সাহিত্যে জানা যায়, পরবর্তী বৈদিক সভ্যতার
বিস্তৃতির পূর্ব সীমা ছিল উত্তর বিহারের সীমানা পর্যন্ত। পরবর্তী বৈদিক
সাহিত্যের মূল ভৌগােলিক অঞল ছিল সিন্ধু ও গঙ্গার মাঝের এলাকা।
No comments
Hi Welcome ....