Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Top Ad

Breaking News:

latest

ষষ্ঠ শ্রেণী ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ প্রশ্ন ও উত্তর

  class 6 history chapter 2 ভেবে দেখো...খুঁজে দেখো... ১। সঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো : ১.১) আদিম মানুষ প্রথমে (রান্না করা খাব...

 

class 6 history chapter 2

ভেবে দেখো...খুঁজে দেখো...

১। সঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো :
১.১) আদিম মানুষ প্রথমে (রান্না করা খাবার / পোড়া মাংস/কাঁচা মাংস ও ফলমূল) খেত।
➛ কাঁচা মাংস ও ফলমূল খেত।
১.২) আদিম মানুষের প্রথম হাতিয়ার ছিল (ভোঁতা পাথর/হালকা ছুঁচোলো পাথর/পাথরের কুঠার)।
➛ ভোঁতা পাথর।
১.৩। আদিম মানুষের জীবনে প্রথম জরুরি আবিষ্কার (ধাতু/টাকা/আগুন)।
➛ আগুন।

২। ক স্তম্ভের সঙ্গে খ স্তম্ভ মিলিয়ে দেখো :

৩। নিজের ভাষায় ভেবে লেখো (তিন/চার লাইন) :
(৩.১) আদিম মানুষ যাযাবর ছিল কেন?
➛  আদিম মানুষ কৃষিকাজ জানত না। আশ্রয়, খাদ্য ও বাসস্থানের খোঁজে তাদের এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যেতে হত। এরা খাদ্য উৎপাদক ছিল না, ছিল খাদ্য সংগ্রাহক। তাই তারা খাদ্যের জন্য যাযাবর ছিল।

(৩.২) আগুন জ্বালাতে শেখার পর আদিম মানুষের কী কী সুবিধা হয়েছিল?
➛ আগুন জ্বালাতে শেখার ফলে আদিম মানুষ মাংস খেতে শুরু করল। এই মাংস ছিল সুস্বাদু এবং সহজে হজম হত। শারীরিক পরিশ্রমের ফলে ধীরে ধীরে মানুষের চোয়াল শক্ত হতে শুরু করল। আগুন জ্বালাতে শেখার ফলে মানুষ তীব্র শীতের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারল। বন্যজন্তুদের হাত থেকে তাদের আক্রমণের ভয় দূর হল। গুহার মধ্যে আলো জ্বালানোর ফলে রাত্রে বসে বসে তারা শিল্পকর্ম শুরু করল। এই শিল্পকর্ম ধীরে ধীরে লিপির রূপ নিল। মানুষের সামনের ধারালো উঁচু দাঁত ছোটো হয়ে  গেল। তার চেহারা বদল হল। শরীরের জোর বাড়ল,বুদ্ধিও বাড়ল।

(৩.৩) আদিম মানুষ কেন জোট বেঁধেছিল? এর ফলে তার কী লাভ হয়েছিল?
➛ প্রথম দিকে মানুষ ছিল ভীষণ অসহায়। বন্যজন্তুর আক্রমণে তারা প্রায়ই মারা যেত। শিকার করতে বেরিয়ে তারা নিজেরাই পশুর খাদ্যে পরিণত হয়ে যেত। তাই তারা জোট বাঁধার ফলে মানুষের শিকারের সুবিধা হল। জোট বেঁধে তারা শিকার করলে বড়ো প্রাণী শিকার করতে পারত। অনেক মাংস পাওয়া যেত। জোটবদ্ধ হওয়ায় তারা বিপদে পড়লে তার মোকাবিলা করতে পারত। এভাবে  তারা আত্মরক্ষা, সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে পেরেছে।

   হাতেকলমে করো   
৪.১ পাশের ছবিটিতে মানুষের প্রতিটি ধাপের মধ্যে কী কী বদল দেখতে পাওয়া যাচ্ছে?
➛ (i) প্রথমে মানুষ সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারত না। আকৃতি ছিল নর-বানরের মতো। তার মাথার আকৃতি ছিল ছোটো। সামনের দিকে লম্বাটে মুখ ছিল। (ii) মানুষ কিছুটা সোজা হয়ে দাঁড়াতে শিখেছে, হাত-পায়ের গঠনের পরিবর্তন ঘটেছে।
(iii) মানুষ অনেকটা সোজা হয়ে দাঁড়িয়েছে। লম্বা হয়েছে। হাতের থাবার গঠন বড়ো হয়েছে। দেখা দিয়েছে হাতে-পায়ে পরিবর্তন। (ঘ) মানুষের চলনে পরিবর্তন হয়েছে, আবার গঠনেও পরিবর্তন হয়েছে। (iv) আদিম মানুষ আধুনিক মানুষে পরিণত হয়েছে। আধুনিক মানুষের মাথা বড়ো হয়েছে। দেহের গঠন সোজা হয়েছে। তার হাঁটার মধ্যে ভারসাম্য এসেছে।
class 6 ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ

৪.২ পাশের ছবি দুটি থেকে আদিম মানুষের পাথরের হাতিয়ার বানানোর পদ্ধতি বিষয়ে কী জানা যাচ্ছে?
➛ (i) মানুষ প্রথমে হাতিয়ার হিসেবে পাথরের টুকরো ব্যবহার করল। (ii) তারপর পাথরকে হাতের মুঠির মধ্যে ধরতে পারা শিখে গেল। (iii) অবশেষে পাথরের টুকরোকে পাথরের সঙ্গে ঠুকে মসৃণ করতে শিখল।
class 6 ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ


👇 Read More Click
Class - VI History Question Answer 

   পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্টাডি নোটস    

MCQ সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :  (মার্ক - ১
১। আদিম মানুষ প্রথমে খেত—
(A) ফলমূল
(B) কাঁচামাংস ও ফলমূল
(C) পোড়ামাংস
(D) রান্না করা খাবার
Answer : (B) কাঁচামাংস ও ফলমূল

২। আদিম মানুষেরা আগুনের ব্যবহার কীভাবে শিখল?
(A) পাথরের ঠোকাঠুকিতে
(B) দেশলাই-এর সাহায্যে
(C) পাতা ঘষে
(D) কোনোটিই নয়
Answer :  (A) পাথরের ঠোকাঠুকিতে

৩। আদিম মানুষেরা দলবেঁধে শিকার করত—
(A) পাখি
(B) মানুষ
(C) পশু
(D) হাতি
Answer :  (C) পশু

৪। ট্যুরো বলতে বোঝায়—
(A) হাতি
(B) ষাঁড়
(C) গোর্
(D) শেয়াল
Answer :  (B) ষাঁড়

৫। প্রধানত কীসের আকার  থেকেই আদিম মানুষের নানারকম ভাগ করা হয়?
(A) মস্তিষ্কের
(B) পায়ের
(C) হাতের আঙুল
(D) মেরুদণ্ডের
Answer :  (D) মেরুদণ্ডের

৬। আদিম মানুষের প্রথম হাতিয়ার ছিল?
(A) ভোঁতা পাথর
(B) হালকা ছুঁচালো পাথর
(C) পাথরের কুঠার
(D) হাতুড়ি
Answer :  (A) ভোঁতা পাথর

৭। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২০ লক্ষ বছর থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৩০ হাজার বছরকে বলা হয়?
(A) পুরোনো পাথরের যুগ
(B) মাঝের পাথরের যুগ
(C) নতুন পাথরের যুগ
(D) কষ্টি পাথরের যুগ
Answer :   (A) পুরোনো পাথরের যুগ

৮। কোন যুগে মানুষ খোলা আকাশের নীচে বা গুহায় বাস করত?
(A) পুরোনো পাথরের যুগ
(B) মাঝের পাথরের যুগ
(C) নতুন পাথরের যুগ
(D) কষ্টি পাথরের যুগ
Answer :  (A) পুরোনো পাথরের যুগ

৯। আনুমানিক ২০ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার বছর আগের মানুষকে বলা হয়?
(A) অস্ট্রালোপিথেকাস 
(B) হোমো হাবিলিস
(C) হোমো ইরেকটাস 
(D) হোমো স্যাপিয়ে
Answer :  (C) হোমো ইরেকটাস 

১০। আনুমানিক ২ লক্ষ ৩০ হাজার বছর আগের মানুষদের বলা হয়?
(A) হোমো হবিলিস
(B) হোমো ইরেকটাস
(C) হোমো সাপিয়েন্সে 
(D) হোমিলিত
Answer :  (C) হোমো সাপিয়েন্সে 

১১। আনুমানিক ৪০ লক্ষ থেকে ৩০ লক্ষ বছর আগের মানুষকে বলা হয়?
(A) অস্ট্রালোপিথেকাস 
(B) হোমো হাবিলিস
(C) হোমো স্যাপিয়েন্স 
(D) হোমো ইরেকটাস
Answer :  (A) অস্ট্রালোপিথেকাস 
 
১২। ভীমবেটকা গুহার সন্ধান কবে পাওয়া যায়?
(A) ১৯৫৭ সালে
(B) ১৯৫৮ সালে
(C) ১৯৫৯ সালে
(D) ১৯৬০ সাল
Answer :   (A) ১৯৫৭ সালে

১৩। ভীমবেটকা গুহা ভারতের যে রাজ্যে অবস্থিত?
(A) উত্তরপ্রদেশ
(B) অন্ধ্রপ্রদেশ
(C) মধ্যপ্রদেশ
(D) হিমাচল প্রদেশ
Answer :   (C) মধ্যপ্রদেশ

১৪। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে কোথায় পুরোনো পাথরের যুগের হাতিয়ার পাওয়া গেছে?
(A) ওডিশা
(B) কৰ্ণাটক
(C) কেরালা
(D) পশ্চিমবঙ্গ
Answer :  (B) কৰ্ণাটক

১৫। আলতামিরা নামে প্রাচীন গুহাটির সন্ধান পাওয়া যায় ইউরোপের—
(A) জার্মান দেশে
(B) ইংল্যান্ডে
(C) স্পেনে
(D) রোমে
Answer :  (C) স্পেনে

১৬। আট হাজার বছর আগের বন্যপশুর হাড় পাওয়া গেছে?
(A) নর্মদা উপত্যকায়
(B) গাঙ্গেয় উপত্যকায়
(C) সিন্ধু উপত্যকায়
(D) ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায়
Answer : (A) নর্মদা উপত্যকায়

১৭। উপমহাদেশের আদিম মানুষ কৃষিকাজ শেখে?
(A) পুরোনো পাথরের যুগে
(B) মাঝের পাথরের যুগে
(C) নতুন পাথরের যুগে
(D) অধুনা পাথরের যুগ
Answer :  (C) নতুন পাথরের যুগে

১৮। আদিম মানুষের বসতির চিহ্ন পাওয়া গেছে ভারতের কোন রাজ্যে?
(A) রাজস্থানের বাগোড়ে
(B) মধ্যপ্রদেশের আদমগড়ে
(C) উত্তরপ্রদেশের মহাদেহাতে
(D) ত্রিপুরার ছায়মনুতে
Answer : (A) রাজস্থানের বাগোড়ে

✱ দুই একটি বাক্যে উত্তর দাও : (মার্ক - ১)
১. আদিম মানুষ কীভাবে আগুন জ্বালাত?
➛ আদিম মানুষ চকমকি জাতীয় পাথরের ঠোকাঠুকিতে বা কাঠে কাঠে ঘসে আগুন জ্বালাতে শেখে।
২. ভীমবেটকা কোথায় অবস্থিত?
➛ মধ্যপ্রদেশের ভোপালে ভীমবেটকা অবস্থিত।
৩. আদিম মানুষ প্রথমে কী খেত ?
➛ কাঁচামাংস ও ফলমূল প্রথমে খেত আদিম মানুষ।
৪. ট্যুরো বলতে কী বোঝায়?
➛ টারো বলতে ষাঁড়কে বোঝায়।
৫. আদিম মানুষের প্রথম হাতিয়ার কী ছিল?
➛ ভোঁতা পাথর ছিল আদিম মানুষের প্রথম হাতিয়ার।
৬. বাগোড় কী?
➛ রাজস্থানের বাগোড়ে আদিম মানুষের বসতির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এরা ছিল শিকারি।
৭. নর্মদা উপত্যকার আদমগড়ে কী পাওয়া গেছে ?
➛ আট হাজার বছর পুরোনো বন্য পশুর হাড় পাওয়া গেছে নর্মদা উপত্যকার আদমগড়ে।
৮. পুরোনো পাথরের যুগে মানুষের জীবন কেমন ছিল?
➛ খুব কঠিন ও কষ্টের জীবন ছিল।
৯. লুসি কার নাম দেওয়া হয়েছিল?
➛ প্রায় ৩২ লক্ষ বছর আগের পাওয়া একটি ছোটো মেয়ের কঙ্কালের নাম দেওয়া হয়েছিল লুসি।
১০. আদমগড়ে কী পাওয়া গেছে?
➛ নর্মদা উপত্যকায় আদমগড়ে আট হাজার বছরের পুরোনো বন্য পশুর হাড় পাওয়া গেছে।
১১. মানুষের প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকার কারণ কী?
➛ মানুষের সংস্কৃতি।
১২. সংস্কৃতি বলতে কী বোঝায়?
➛ সংস্কৃতি বলতে নাচ-গান, পোশাক, শিল্প, সাহিত্য ইত্যাদিকে বোঝায়।
১৩. সংস্কৃতি ও সভ্যতা কি একই জিনিস?
➛ না, এক জিনিস নয়।
১৪. ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে আদিম মানুষ কী করেছিল?
➛ ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে আদিম মানুষ গাছের ছাল, পশুর চামড়া গায়ে দিয়েছিল।
১৫. নাচ-গান-সাহিত্য ছাড়া মানুষের সংস্কৃতির আর কোন দিক ছিল?
➛ কাজকর্ম হচ্ছে মানুষের সংস্কৃতির আর এক দিক।
১৬. মানুষের কাছে কখন পশুপালন সহজ হয়ে গেল?
➛ চাষবাস করার ফলে পশুপালন সহজ হয়ে গেল। কারণ তখন অঢেল খড়, বিচালি পাওয়া গেল ।
১৭. লক্ষ লক্ষ বছর আগে পৃথিবীর স্থলভাগ কী ছিল?
➛ ঘন জঙ্গলে ঢাকা।
১৮. হোমিনিড কাদের বলা হয়?
➛আস্তে আস্তে এপ থেকে আলাদা হয়ে যা মানুষদের।
১৯. এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে পুরোনো আদিম মানুষ খোঁজ পাওয়া গেছে কোথায়?
➛ পূর্ব আফ্রিকাতে।


২০. অস্ট্রালোপিথেকাস কাদের বলা হয়?
➛ এপ থেকে রূপান্তরিত মানুষদের।
২১. হোমো হাবিলিস কারা?
➛ আনুমানিক ২০ লক্ষ থকে ১৭ লক্ষ বছর দক্ষ মানুষদের।
২২. হোমো ইরেকটাস কাদের বলা হয়?
➛ আনুমানিক ২০ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার বছর আগের মানুষদের।
২৩. সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারা বুদ্ধিমান মানুষদের বলা হয়?
➛ হোমো স্যাপিয়েন্স।
২৪. হোমো স্যাপিয়েন্স কত বছর আগে জন্মেছিল?
➛ অনুমান করা যায় ২ লক্ষ ৩০ হাজার বছর আগে।
২৫. মানুষের ইতিহাসের একটা বড়ো অংশকে পাথরো যুগ বলা হয় কেন?
➛ কারণ লক্ষ লক্ষ বছর ধরে আদিম মানুষ পাথর  দিয়ে হাতিয়ার বানাত। 
২৬. কুঠার ও চপার জাতীয় হাতিয়ার কোন যুগের মানুষ তৈরি করেছিল?
➛ ভারত উপমহাদেশে পুরোনো পাথরের যুগের মানুষ।
২৭. ভারতীয় উপমহাদেশের কোথায় সব থেকে পুরোনো পাথরের অস্ত্র পাওয়া গেছে?
➛ কাশ্মীরের সোয়ান উপত্যকায়।
২৮. কাথটা হাল্লা কী?
➛ একটি খাল। এটি হুন্সগি উপত্যকায় ইসামপুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে।

✱ সংক্ষেপে উত্তর দাও : (মার্ক - ৩/৫)
 ১। ভীমবেটকা কোথায় অবস্থিত? এখানে কীসের খোঁজ পাওয়া গেছে?
➛ ভীমবেটকা মধ্যপ্রদেশের ভোপালে অবস্থিত। মধ্যপ্রদেশের ভোপাল থেকে কিছু দূরে আছে বিন্ধ্যপর্বতের গা ঘেঁষে নির্জন জঙ্গল। এখানে ভীমবেটকায় বেশ কিছু গুহার খোঁজ পাওয়া গেছে। এই গুহাগুলিতে আদিম মানুষ বসবাস করত। গুহার দেয়ালে তারা বিভিন্ন ছবি, পাখি, মাছ,  কাঠবেড়ালির মতো প্রাণীর ছবিও এঁকেছিল।

২। নতুন পাথরের যুগ কোন্ কোন্ দিক থেকে নতুন ছিল?
➛ আদিম মানুষের ইতিহাসে নতুন পাথরের যুগ অনেক দিন থেকেই নতুন ছিল। এসেছিল নানা পরিবর্তন। পাথরের হাতিয়ার বানানোর কৌশল অনেক উন্নত হয়েছিল। নানান রকম পাথরের হাতিয়ার তৈরি শুরু হল। মানুষ কৃষিকাজ শিখল। নিজেদের খাদ্য নিজেরা উৎপাদন করতে শিখল। পাশাপাশি ছোটো পাথরের হাতিয়ার ও ব্যবহার শিখল। মানুষ নতুন পাথরের যুগে পশুশিকার করতে শিখল। ছেলেরা দল বেঁধে পশু চরাতে আরম্ভ করল। মেয়েরা বাচ্চাদের দেখাশোনা করতে লাগল। চাষাবাদ আবিষ্কার হলে মানুষ স্থায়ী বসতির দিকে এগোতে থাকল।

৩। সংস্কৃতি বলতে কী বোঝো?
➛ সাধারণভাবে সংস্কৃতি বলতে বোঝায় এমনি নাচগান, পোশাক, শিল্প, সাহিত্য ইত্যাদি। কিন্তু সংস্কৃতি কথাটির আরেক দিকও রয়েছে। সেটা হল কর্ম সংস্কৃতি। সেভাবে বললে আদিম মানুষের কর্মসংস্কৃতি ছিল সুবিশাল। ভোঁতা পাথরের হাতিয়ার এই সংস্কৃতির মধ্যেই পড়ে। এই সংস্কৃতির জন্যই মানুষ টিকে থাকতে পেরেছে। তাই বলা যায়, সবসময় সবদেশে সব সমাজেই কোনো না কোনো সংস্কৃতি রয়েছে।

৪। মানুষ কীভাবে আগুন জ্বালাতে শিখল?
➛ প্রথম প্রথম মানুষ বনে আগুন লেগে যাওয়ার ব্যাপারটা দেখে অবাক হয়ে যেত। পরে কোনও এক সময় জ্বলন্ত গাছের ডাল এনে তারা গুহার মধ্যে আগুন জ্বালিয়ে রাখত। অনুমান করা হয়, হয়তো মানুষ একদিন পাথরের হাতিয়ার তৈরি করতে গিয়ে চকমকি জাতীয় পাথরের ঠোকাঠুকিতে হঠাৎ আগুন জ্বলে ওঠে। আবার, এমনও বলা যায়, কোনো দিন কাঠে কাঠ ঘষে মানুষ হঠাৎ‍ই আগুন জানিয়ে ফেলেছিল।

৫। উপমহাদেশের কোন কোন স্থানে পুরোনো পাথরের যুগের নমুনা পাওয়া গেছে?
➛ কাশ্মীর রাজ্যের সোয়ান উপত্যকায় সব থেকে পুরোনো পাথরের অস্ত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ ছাড়া হিমাচল প্রদেশের শিবালিক পার্বত্য অঞ্চলেও পুরোনো পাথরের হাতিয়ার পাওয়া গেছে। এগুলির বেশির ভাগই কুঠার ও চপার জাতীয়। এগুলি অধিকাংশই ভারী নুড়ি পাথর দিয়ে বানানো। ঐতিহাসিকগণ অনুমান করেন, হোমো ইরেকটাস প্রজাতির আদিম মানুষ উপমহাদেশের কর্ণাটকের হুন্সগি উপত্যকা, রাজস্থানের দিদওয়ানা ও মহারাষ্ট্রের নেভাসাতে তার প্রমাণ রয়েছে। এসব প্রত্নক্ষেত্রগুলিতে পাওয়া গেছে নানা রকমের পাথরের হাতিয়ার। মধ্যপ্রদেশের নর্মদা উপত্যকায় এক লক্ষ তিরিশ হাজার বছরেরও বেশি আগের মানুষের মাথার খুলি পাওয়া গেছে। যেমন উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের সংঘাত, কর্ণাটকের কুর্ণল ও মধ্যপ্রদেশের ভীমবেটকা।


৬। উপমহাদেশের মাঝের পাথরের মুখের একটি পরিচয় দাও।
➛ পুরোনো পাথরের যুগের পরেই মানুষ পদার্পণ করে মাঝের পাথরের যুগে। এই সময় মানুষ আরও উন্নত হাতিয়ার বানানো শিখে যায়। এই সময়ের ছুরিগুলো বেশি ধারালো ও ছোটো হয়েছিল। মনে করা হয়, খ্রিস্টপূর্ব দশ হাজার অব্দ নাগাদ উপমহাদেশের আবহাওয়া গরম হতে শুরু করে। উত্তর প্রদেশের মাহদহা, মধ্যপ্রদেশের আদমগড় প্রভৃতি অলে পাওয়া গেছে ওই যুগের মানুষের ব্যবহৃত হাতিয়ার। উত্তরপ্রদেশের সরাইনহর রাইতে পাওয়া গেছে দু-দিকে ধারওলা ছুরি। পাওয়া গেছে হাড়ের তৈরি তিরের ফলা। তারা আগুনে পশুর মাংস ঝলসে খেত। সরাই নহর রাইয়ের মানুষ যে বনের শস্য এনে জাঁতায় পিষে নিত  তারও প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে, তারা ফসল উৎপাদন করতে জানত না । নর্মদা উপত্যকার আদমগড়ে আট হাজার বছরের  পুরোনো বন্য পশু ও গবাদি পশু এবং কুকুরের হাড় পাওয়া গেছে। আদমগড়ে ওই যুগের মানুষ পশুপালন করতে শিখেছিল বলে জানা যায়। পশুপালনের ফলে দুধ পাওয়া যেত। তাই তারা তখন দুধ রাখার জন্য কিছু মাটির পাত্র বানিয়েছিল। তবে তখন যে কুমোরের চাক তৈরি হয়নি সে বিষয়ে প্রত্নবিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন।

৭। আদিম মানুষ কীভাবে শ্রমের মধ্য দিয়ে তার জীবনযাত্রা শুরু করল?
➛ আদিম মানুষের জীবনযাত্রার কোনো ধারাবাহিক ইতিহাস জানা সম্ভব হয়নি। তবে পৃথিবীর প্রায় সমস্ত দেশ থেকেই আদিম মানুষের ব্যবহৃত নানা সামগ্রীর নিদর্শন পাওয়া গেছে। এসব চিহ্ন থেকে আদিম মানুষের জীবনযাত্রার মোটামুটি একটা ধারণা পাওয়া যায়। আদিম মানুষের জীবন ছিল খুবই কষ্টের এবং তাদের বিপদ ছিল প্রতি পদে পদে। হিংস্র প্রাণীর মুখোমুখি হঠাৎ পড়ে গিয়ে প্রাণ হারানো ছিল প্রায় প্রতিদিনের ঘটনা। বেঁচে থাকার মতো যথেষ্ট খাদ্যসংগ্রহের সুযোগও ছিল কম। কুড়ি বছর বয়স পার হওয়ার আগেই অর্ধেকের বেশি মানুষ মারা যেত হয় হিংস্র পশুর আক্রমণে, না হয় রোগে কিংবা অনাহারে। হিংস্র পশুর আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষা আর খাদ্যসংগ্রহের জন্য মানুষ হাতিয়ারের প্রয়োজন অনুভব করে। আদিম মানবের তৈরি প্রথম হাতিয়ার ছিল হাতের মুঠিতে শক্ত করে ধরা যায় এমন পাথর। এ ছাড়াও তারা গাছের শক্ত সোজা ডাল বা লাঠিও হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করত। আদিম মানুষ ধারালো পাথর তৈরি করতে শিখে গিয়েছিল। পাথরে পাথরে ঠুকে তারা ধারালো অংশটিকে কাজে লাগাত। এগুলির সাহায্যে তারা খাদ্যসংগ্রহ করত। নিরীহ পশু শিকার করত। তারা হিংস্র জন্তুর সঙ্গে লড়াইও করত। জীবনধারণের জন্য হাতিয়ার তৈরি করার মধ্য দিয়েই মানুষের শ্রমের শুরু।

✱ রচনাধর্মী প্রশ্নের উত্তর দাও : (মার্ক - ৮)
১। ভারতীয় উপমহাদেশে পুরোনো পাথরের যুগ সম্পর্কে আলোচনা করো।
➛  আদিম মানুষের হাড়গোড়েব সামান্য নমুনাই ভারতীয় উপমহাদেশে পাওয়া গেছে। তবে তাদের ব্যবহার করা পুরোনো হাতিয়ার বেশ কি অলে পাওয়া গেছে। তা দেখে মনে করা হয় সেগুলির বেশির ভাগই ভারী নুড়ি পাথরের তৈরি। এগুলি পাওয়া গেছে ভারতীয় উপমহাদেশের কাশ্মীরের সোয়ান উপত্যকায়। এছাড়া বর্তমান পাকিস্তানের পটোয়ার মালভূমিতে ও হিমাচল প্রদেশের শিবালিক পার্বত্য এলাকাতেও পাওয়া গেছে। এগুলি ছিল হাতকুঠার ও চপার জাতীয়। যারা ভারী নিরেট পাথরের হাতকুঠার ব্যবহার করত তারা খাবার সংগ্রহ করত। কিন্তু খাবার তারা নিজেরা বানাতে পারত না। তারা শিকার করে ও ফলমূল জোগাড় করে পেট ভরাত। তারা দল বেঁধে পশুশিকারে যেত। মিলেমিশে খাবার ভাগ করে খেত। মারাত্মক শীত থেকে বাঁচার জন্য তারা পশুর চামড়া ও গাছের ছাল ব্যবহার করত। আদিম সেই মানুষ তখনও পোশাক তৈরি করতে শেখেনি। তখনও তারা পাকাপাকি একটি অলে বসতি স্থাপন করেনি। পাহাড়ের কোনো গুহাতে তারা কুিকাল থাকার জন্য আস্তানা করে নিত। যখন ধারে কাছে কোনো গুহা খুঁজে পেত না তখন তারা খোলা আকাশের নীচেই দিন কাটাত। ভারতীয় উপমহাদেশে পুরোনো পাথরের যুগের মানুষদের আদিম জীবন ছিল ভীষণ দুঃখ-কষ্টের।

২। নতুন পাথরের যুগ সম্পর্কে যা জানো লেখো।
➛ পুরোনো পাথরের যুগের অবসান ও নতুন পাথরের যুগের সুচনাকালের মধ্যবর্তী মানবসভ্যতাকে বলা হয় 'মধ্য প্রস্তর যুগ'। আনুমানিক তিরিশ হাজার খ্রিঃ পূঃ থেকে আট হাজার খ্রিঃপূঃ পর্যন্ত ওই যুগ স্থায়ী ছিল। নতুন পাথরের যুগে মানুষের জীবনযাত্রায় ঘটে আমুল পরিবর্তন। প্রাকৃতিক পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ফলেই মানুষের জীবনে ওই পরিবর্তন আসে। তুষার যুগে গাছপালা প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল আর অধিকাংশ জন্তু-জানোয়ার মারা গিয়েছিল। মানুষের খাদ্যের জন্য পশু ও ফলমূলের অভাব দেখা দিল। মাটি খুঁড়ে মানুষ গাছের । মূল সংগ্রহ করতে শিখল। সেই মূল মাটিতে পুঁতে ফসল উৎপাদনের দক্ষতা অর্জন করল। ফসলের মধ্যে গম ও যবের চাষ সবচেয়ে প্রাচীন। ধান চাষও তারা জানত বলে এখন অনেক ঐতিহাসিক মনে করছেন। পশ্চিম এশিয়ার । ইরাক, ইরান, সিরিয়া, প্যালেস্টাইন প্রভৃতি অলে সর্বপ্রথম এসবের ফলন শুরু হয়। মানুষ এক জায়গায় স্থায়ীভাবে বাস করার জন্য ঘর তৈরি করতে শিখল। শীতের হাত থেকে রক্ষা পেতে পশুর লোম বা গাছের ছালের আঁশ দিয়ে কাপড় বুনতেও শিখল। পুরোনো পাথরের যুগের মানুষ ছিল খাদ্য সংগ্রাহক। এবার মানুষ হয়ে উঠল খাদ্য উৎপাদক। প্রকৃতির ওপর তাদের আর ততটা নির্ভর করতে হল না। নব্য প্রস্তর যুগের মানুষের দল বিভিন্ন ধরনের শ্রমের দক্ষতা অর্জন করল। অর্থাৎ মানুষের সমাজে দেখা দিল শ্ৰম বিভাগ। নানা ধরনের শ্রমের উপযোগী হাতিয়ারও মানুষ তৈরি করল। উন্নত ধরনের পাথরের কুড়ুল, কাঠ কাটার পাথরের করাত ছাড়াও কপিকল, কাস্তে, নিড়ানি, শস্য পেষাই করার উদুখল, মাছ ধরার বঁড়শি, বাটালি, ছুঁচ ইত্যাদি হাতিয়ার মানুষ হাড় ও পাথর ঘষে তৈরি করতে শিখল।

ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ class 6,ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ প্রশ্ন ও উত্তর,ক্লাস -6 ইতিহাস ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ,ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ lrnr classes,ক্লাস -6 ইতিহাস ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ,ncert class 6 history chapter 2,class 6 history,class 6th history chapter 2 ncert,ncert class 6 history,history class 6 chapter 2,class 6,class 6 history ncert,class 6th history,from hunting - gathering to growing food class 6 history cbse,ncert class 6 history chapter 2 from hunting - gathering to growing food,ncert history class 6,ncert class 6,cbse class 6 history chapter 2,class 6 history chapter 2 ncert solutions

No comments

Hi Welcome ....