প্রিয় ক্লাস ফাইভ ছাত্র-ছাত্রীরা তোমাদের বাংলা পাতাবাহার বইয়ের গল্পবুড়ো| বুনো হাঁস | দারোগাবাবু এবং হাবু তাঁর সঙ্গে খোকার বুদ্ধি এখানে ...
প্রিয় ক্লাস ফাইভ ছাত্র-ছাত্রীরা তোমাদের বাংলা পাতাবাহার বইয়ের গল্পবুড়ো| বুনো হাঁস | দারোগাবাবু এবং হাবু তাঁর সঙ্গে খোকার বুদ্ধি এখানে মোট ৩টি চ্যাপ্টারের হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্ন উত্তর গুলি সহজ ও সুন্দর ভাবে নীচের দিকে আলোচনা করে দেওয়া রয়েছে। আশা রাখছি তোমাদের অনেক হেল্পফুল বা উপকার হবে। তোমাদের এই উত্তর গুলো বন্ধুদের মাঝেও শেয়ার করে দিও যাতে তাদেরও হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্ন উত্তর গুলো করতে সুবিধা হয়।
Class5 Bangla Patabahar Question Answer | Bengali Text Book Hate Kolome Question Answer
১৯০২ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুলাই বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকা জেলার মালখানগর নামক স্থানে পশুপতি বসুর পুত্র কবি সুনির্মল বসুর জন্ম হয়েছিল। পিতার কর্মসূত্রে কবি ঝাড়খন্ডের গিরিডিতে ছোটোবেলা কাটান। সাঁওতাল পরগনার মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ তাঁর মনে কবিতা রচনার অনুপ্রেরণা জোগায়। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে তিনি কলকাতার সেন্ট পলস্ কলেজে ভরতি হন। তাঁর প্রথম কবিতা ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। প্রধানত সরস শিশু সাহিত্য রচনাকেই তিনি সাহিত্যের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তিনি চিত্রাঙ্কনেও দক্ষ ছিলেন। ছড়া, কবিতা, গল্প, কাহিনি, উপন্যাস, ভ্রমণ কাহিনি, রূপকথা, কৌতুক নাট্য প্রভৃতি। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল ‘হাওয়ার দোলা’, ‘ছানাবড়া’, ‘বেড়ে মজা’, ‘হইচই’, ‘কথা শেখা’, ‘ছন্দের টুং টাং’, ‘বীরশিকারী’ ইত্যাদি। ‘হাওয়ার দোলা’ তাঁর প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ। তাঁর সম্পাদিত বই—‘ছোটোদের চয়নিকা’, ‘ছোটোদের গল্প সংকলন'।‘কিশোর এশিয়া’ নামক পত্রিকার তিনি পরিচালক ছিলেন। তিনি ‘ভুবনেশ্বরী’ পদকে (১৯৫৬) পুরস্কৃত হয়েছিলেন। ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে এই কবির মৃত্যু ঘটে।
❏ গল্পবুড়ো কবিতাটির: বিষয়বস্তু
শীতকালে সকালবেলা শিশুদের অলসতা কাটাতে সময় লাগে। তারা ঘুম থেকে উঠতে চায় না। কবির গল্পবুড়ো তাই তাদের ঘুম ভাঙিয়ে দেবার জন্য রূপকথা শোনাবেন বলে ডাকছেন। গল্পবুড়োর কাছে সব দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুত্র, পক্ষীরাজ ঘোড়া ইত্যাদির মতো গল্প যেমন শোনা যায়, তেমন আবার সোনার কাঠি ছুঁইয়ে দিলে নদনদী, প্রান্তর, জনপদ এসে যায়। এমনকি সুন্দরী পরিরা তাঁর ঝোলায় রয়েছে। যে আসবে না, সে ঠকবে গল্পবুড়োর কাছে সে মূর্খ, শত্রু।
❐ আরো পড়ুনঃ ক্লাস - V
class 5 golpo buro sunirmal basu question answer
হাতেকলমে প্রশ্নও উত্তরঃ গল্পবুড়ো
১. ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে বাক্যটি আবার লেখো :
১.১ ‘উওুরে হাওয়া’ বলতে বোঝায় হাওয়া যখন উত্তর দিক থেকে বয়ে আসে। এমন ভাবে শীত কালে হাওয়া বয়।
১.২ থুথুড়ে শব্দটির অর্থ - নড়বড়ে।
১.৩ রূপকথার গল্পে থাকে না উড়োজাহাজ।
১.৪ রূপকথার গল্প সংগ্রহ করেছেন এমন একজন লেখকের নাম বেছে নিয়ে লেখো।
উত্তর : রূপকথার গল্প সংগ্রহ করেছেন এমন একজন লেখকের নাম দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার।
২.১ লেখালেখি ছাড়াও সুনির্মল বসু আর কোন কাজ ভালো পারতেন?
উত্তর : লেখালেখি ছাড়াও সুনির্মল বসু ভালো ছবি আঁকতে পারতেন।
২.২ তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর : তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম ‘হাওয়ার দোলা’, ‘ছানাবড়া’।
৩. এলোমেলো বর্ণগুলিকে সাজিয়ে শব্দ তৈরি করো :
থা রূ ক প ; র ওু জ রা পু ; জ ক্ষী রা প ; ব প ম ন ন ; জ গু বি আ
- থা রূ ক প = রূপকথা
- র ওু জ রা পু = রাজপুওুর
- জ ক্ষী রা প = পক্ষীরাজ
- ব প ম ন ন = মনপবন
- জ গু বি আ = আজগুবি
৪. অন্তমিল আছে এমন পাঁচজোড়া শব্দ কবিতা থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো :
উত্তর : উওুরে—থুথুড়ে
- ব্যথা 〉কথা
- ঝোলা 〉ভোলা
- যক্ষিরাজ 〉পক্ষীরাজ
- দাঁড়খানা 〉কারখানা
- বাঁধা 〉ধাঁধা
৫. বাক্য বাড়াও :
৫.১ শীতকালে হাওয়া বইছে। (কেমন হাওয়া?)
উত্তর : শীতকালে উওুরে হাওয়া বইছে।
৫.২ গল্পবুড়ো ডাকছে। (কেমন বুড়ো?)
উত্তর : থুথুড়ে গল্পবুড়ো ডাকছে।
৫.৩ গল্পবুড়োর মুখ ব্যথা। (মুখ ব্যথা কেন?
উত্তর : চেঁচিয়ে গল্পবুড়োর মুখ ব্যথা।

৭. ‘ডাকছে রে’ আর ‘ডাক ছেড়ে’ শব্দজোড়ার মধ্যে কী পার্থক্য তা দুটি বাক্য রচনা করে দেখাও :
যেমন—বাছুরটি ডাক ছেড়ে মাকে ডাকছে রে।
উত্তর : (১) মা ডাক ছেড়ে ছেলেকে ডাকছে রে। (২) ডাকছে রে কুকুর ডাক ছেড়ে।
৮. শব্দঝুড়ির থেকে নিয়ে বিশেষ্য ও বিশেষণ আলাদা করে লেখো :
বিশেষ্য | বিশেষণ |
তল্পি | উওুরে |
ঝোলা | থুথুড়ে |
শীত | জলদি |
রাজপুওুর | আজগুবি |
কারখানা | সত্বর |
৯. পক্ষীরাজ এর মতো (ক্ + ষ্ = ক্ষ) রয়েছে এমন পাঁচটি শব্দ তৈরি করো :
উত্তর : থুথুড়ে—(ত্ + থ = থু)। গল্প—(ল্ + প্ = ল্প)। সত্বর—(ত্ + ব = ত্ব)। নন্দিনী—(ন্ + দ = ন্দ)।
উওুরে—(ত্ + তু = ত্ত)। ছোট্ট—(ট্ + ট = ট্ট)।
উত্তর : থুথুড়ে—(ত্ + থ = থু)। গল্প—(ল্ + প্ = ল্প)। সত্বর—(ত্ + ব = ত্ব)। নন্দিনী—(ন্ + দ = ন্দ)।
উওুরে—(ত্ + তু = ত্ত)। ছোট্ট—(ট্ + ট = ট্ট)।
১০. ক্রিয়ার নীচে দাগ দাও :
১০.১ বইছে হাওয়া উওুরে।
১০.২ ডাক ছেড়ে সে ডাকছে রে।
১০.৩ আয় রে ছুটে ছোট্টরা।
১০.৪ দেখবি যদি জলদি আয়।
১০.১ বইছে হাওয়া উওুরে।
১০.২ ডাক ছেড়ে সে ডাকছে রে।
১০.৩ আয় রে ছুটে ছোট্টরা।
১০.৪ দেখবি যদি জলদি আয়।
১০.৫ চেঁচিয়ে যে তার মুখ ব্যথা।
১১. তোমার দৃষ্টিতে গল্পবুড়ো সাজ-পোশাকটি কেমন হবে, তা একটি ছবিতে আঁকো।
উত্তর : নিজে চেষ্টা করো।
১২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১২.১ গল্পবুড়ো কখন গল্প শোনাতে আসে?
উত্তর : শীতের ভোরে গল্পবুড়ো গল্প শোনাতে আসে।
১২.২ গল্পবুড়োর ঝোলায় কী কী ধরনের গল্প রয়েছে?
উত্তর : গল্পবুড়োর ঝোলায় দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুওুর, পক্ষীরাজ যেমন আছে তেমন ঝলমলে সোনার কাঠি, ময়নামতী নদী, তেপান্তরের মাঠ, কেশবতী নন্দিনী ইত্যাদি নিয়ে রূপকথার গল্প গল্পবুড়োর ঝোলায় বন্দি আছে এদের নিয়ে সে গল্প বলে।
১২.৩ গল্পবুড়ো শীতকালের ভোরে ছোটোদের কীভাবে ঘুম থেকে ওঠাতে চায়?
উত্তর : শীতকালের ভোরে গল্পবুড়ো পথ দিয়ে যেতে যেতে ডাক ছেড়ে ডাক পেড়ে গল্প বলে ছোটোদের ঘুম থেকে ওঠাতে চায়।
১২.৪ ‘রূপকথা’র কোন কোন বিষয় কবিতাটিতে রয়েছে?১২.১ গল্পবুড়ো কখন গল্প শোনাতে আসে?
উত্তর : শীতের ভোরে গল্পবুড়ো গল্প শোনাতে আসে।
১২.২ গল্পবুড়োর ঝোলায় কী কী ধরনের গল্প রয়েছে?
উত্তর : গল্পবুড়োর ঝোলায় দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুওুর, পক্ষীরাজ যেমন আছে তেমন ঝলমলে সোনার কাঠি, ময়নামতী নদী, তেপান্তরের মাঠ, কেশবতী নন্দিনী ইত্যাদি নিয়ে রূপকথার গল্প গল্পবুড়োর ঝোলায় বন্দি আছে এদের নিয়ে সে গল্প বলে।
১২.৩ গল্পবুড়ো শীতকালের ভোরে ছোটোদের কীভাবে ঘুম থেকে ওঠাতে চায়?
উত্তর : শীতকালের ভোরে গল্পবুড়ো পথ দিয়ে যেতে যেতে ডাক ছেড়ে ডাক পেড়ে গল্প বলে ছোটোদের ঘুম থেকে ওঠাতে চায়।
উত্তর : গল্পবুড়োর কাঁধে একটি বড়ো ঝোলা রয়েছে। সেই ঝোলায় রূপকথার দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুওুর, পক্ষীরাজ যেমন আছে, তেমন ঝলমলে সোনার কাঠি, ময়নামতী নদী, তেপান্তরের মাঠ, কেশবতী নন্দিনী সবই বন্দি আছে।
১২.৫ গল্পবুড়ো কাদের তার গল্প শোনাবে না?
উত্তর : গল্পবুড়োর যারা শত্রু, যারা মূর্খ, অলস তাদের গল্প শোনাবে না।
১৩. তোমার পড়া অথবা শোনা একটি রূপকথার গল্প নিজের ভাষায় লেখো :
উত্তর : আমার পড়া অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা সুয়োরানি ও দুয়োরানি একটি রূপকথার গল্প : সুয়োরানির বুঝি মরণকাল এল। তার প্রাণ হাঁপিয়ে উঠছে, তার কিছুই ভালো লাগছে না। বদ্দি বড়ি নিয়ে এল। মধু দিয়ে মেড়ে বলল ‘খাও’। সে ঠেলে ফেলে দিলে। রাজার কানে খবর গেল। রাজা তাড়াতাড়ি সভা ছেড়ে এল। পাশে বসে জিজ্ঞাসা করল, ‘তোমার কী হয়েছে, কী চাই’? সে গুমরে উঠে বলল, “তোমরা সবাই যাও; একবার আমার স্যাঙাৎনিকে ডেকে দাও।' স্যাঙাৎনি এল। রানির হাত ধরে বললে, ‘প্রকাশ করে বলো।’ সুয়োরানি বললে, ‘আমার সাতমহলা বাড়ির একধারে তিনটে মহল ছিল দুয়োরানির। তারপরে হল দুটো, তার পরে হল একটা। তারপরে রাজবাড়ি থেকে সে বের হয়ে গেল। তারপরে দুয়োরানির কথা আমার মনেই রইল না।
উত্তর : আমার পড়া অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা সুয়োরানি ও দুয়োরানি একটি রূপকথার গল্প : সুয়োরানির বুঝি মরণকাল এল। তার প্রাণ হাঁপিয়ে উঠছে, তার কিছুই ভালো লাগছে না। বদ্দি বড়ি নিয়ে এল। মধু দিয়ে মেড়ে বলল ‘খাও’। সে ঠেলে ফেলে দিলে। রাজার কানে খবর গেল। রাজা তাড়াতাড়ি সভা ছেড়ে এল। পাশে বসে জিজ্ঞাসা করল, ‘তোমার কী হয়েছে, কী চাই’? সে গুমরে উঠে বলল, “তোমরা সবাই যাও; একবার আমার স্যাঙাৎনিকে ডেকে দাও।' স্যাঙাৎনি এল। রানির হাত ধরে বললে, ‘প্রকাশ করে বলো।’ সুয়োরানি বললে, ‘আমার সাতমহলা বাড়ির একধারে তিনটে মহল ছিল দুয়োরানির। তারপরে হল দুটো, তার পরে হল একটা। তারপরে রাজবাড়ি থেকে সে বের হয়ে গেল। তারপরে দুয়োরানির কথা আমার মনেই রইল না।
তারপরে একদিন দোলযাত্রা। নাটমন্দিরে যাচ্ছি ময়ূরপঙ্খী চড়ে। আগে লোক, পিছে লসকর। ডাইনে বাজে বাঁশি, বাঁয়ে বাজে মৃদঙ্গ। এমন সময় পথের পাশে, নদীর ধারে ঘাটের উপরটিতে দেখি একখানি কুঁড়েঘর, চাপাগাছের ছায়ায়। বেড়া বেয়ে অপরাজিতার ফুল ফুটেছে, দুয়োরের সামনে চালের গুঁড়ো দিয়ে শঙ্খচক্রের আলপনা। আমার ছত্রধারিণীকে শুধোলেম, ‘আহা, ঘরখানি কার?’ সে বললে, দুয়োরানির। তারপরে ঘরে ফিরে এসে সন্ধ্যার সময় বসে আছি, ঘরে প্রদীপ জ্বালিনি, মুখে কথা নেই। রাজা এসে বললে, 'তোমার কী হয়েছে, কী চাই?' আমি বললেম, ‘এ ঘরে আমি থাকব না।
রাজা বললে, ‘আমি তোমায় কোঠাবাড়ি বানিয়ে দেব গজদন্তের দেওয়াল দিয়ে। শঙ্খের গুঁড়োয় মেঝেটি হবে দুধের ফেনার মতো সাদা, মুক্তোর ঝিনুক দিয়ে তার কিনারে এঁকে দেব পদ্মের মালা।' আমি বললেম, ‘আমার বড়ো সাধ গিয়েছে, কুঁড়েঘর বানিয়ে থাকি তোমার বাহির-বাগানের একটি ধারে।’ রাজা বললে, ‘আচ্ছা বেশ, তার আর ভাবনা কী।' কুঁড়েঘর বানিয়ে দিলে। সে ঘর যেন তুলে আনা বনফুল। যেমনি তৈরি হল অমনি যেন মুষড়ে গেল। বাস করতে গেলেম, কেবল লজ্জা
পেলেম। তারপরে একদিন স্নানযাত্রা। নদীতে নাইতে গেছি। সঙ্গে একশো সাতজন সঙ্গিনী। জলের ধারে পালকি নামিয়ে দিলে, স্নান হল। পথে ফিরে আসছি, পালকির দরজা, একটু ফাঁক করে দেখি, ও কোন্ ঘরের বউ গো। যেন নির্মাল্যের ফুল। হাতে সাদা শাঁখা, পরনে লাল পেড়ে শাড়ি। স্নানের পর ঘড়ায় করে জল তুলে আনছে; সকালের আলো তার ভিজে চুলে আর ভিজে ঘড়ার ওপর ঝিকিয়ে উঠছে। ছত্রধারিণীকে শুধোলেম ‘মেয়েটি কে? কোন্ দেবমন্দিরে তপস্যা করে?’ ছত্রধারিণী হেসে বললে, 'চিনতে পারলে না? ওই তো দুয়োরানি।' তারপর ঘরে ফিরে একলা বসে আছি, মুখে কথা নেই।
পেলেম। তারপরে একদিন স্নানযাত্রা। নদীতে নাইতে গেছি। সঙ্গে একশো সাতজন সঙ্গিনী। জলের ধারে পালকি নামিয়ে দিলে, স্নান হল। পথে ফিরে আসছি, পালকির দরজা, একটু ফাঁক করে দেখি, ও কোন্ ঘরের বউ গো। যেন নির্মাল্যের ফুল। হাতে সাদা শাঁখা, পরনে লাল পেড়ে শাড়ি। স্নানের পর ঘড়ায় করে জল তুলে আনছে; সকালের আলো তার ভিজে চুলে আর ভিজে ঘড়ার ওপর ঝিকিয়ে উঠছে। ছত্রধারিণীকে শুধোলেম ‘মেয়েটি কে? কোন্ দেবমন্দিরে তপস্যা করে?’ ছত্রধারিণী হেসে বললে, 'চিনতে পারলে না? ওই তো দুয়োরানি।' তারপর ঘরে ফিরে একলা বসে আছি, মুখে কথা নেই।
রাজা এসে বললে, ‘তোমার কী হয়েছে? কী চাই’? আমি বললেম, ‘আমার বড়ো সাধ, রোজ নদীতে নেমে মাটির ঘড়ায় জল তুলে আনব বকুলতলার রাস্তা দিয়ে।’ রাজা বললে, ‘আচ্ছা বেশ, তার আর ভাবনা কী।' রাস্তায় রাস্তায় পাহারা বসল, লোকজন গেল সরে। সাদা শাঁখা পরলেম, আর লালপেড়ে শাড়ি। নদীতে স্নান সেরে ঘড়ায় করে জল তুলে আনলেম। দুয়োরের কাছে এসে মনের দুঃখে ঘড়া আছড়ে ভাঙলেম। যা ভেবেছিলাম তা হল না, শুধু লজ্জা পেলেমতারপরে সেদিন রাসযাত্রা। মধুবনে জ্যোৎস্নারাতে তাঁবু পড়ল। সমস্ত রাত নাচ হল, গান হল।
পরদিন সকালে হাতির ওপর হাওদা চড়ল। পর্দার আড়ালে বসে ঘরে ফিরছি, এমন সময় দেখি, বনের পথ দিয়ে কে চলেছে, তার নবীন বয়স। চূড়োয় তার বনফুলের মালা, হাতে তার ডালি; তাতে শালুক ফুল, তাতে বনের ফল, তাতে খেতের শাক।’ ছত্রধারিণীকে শুধোলেম, ‘কোন্ ভাগ্যবতীর ছেলে পথ আলো করেছে?’ ছত্রধারিণী বললে, ‘জান না? ওই তো দুয়োরানির ছেলে। ওর মার জন্য নিয়ে চলেছে শালুক ফুল, বনের ফল, খেতের শাক।' তারপরে ঘরে ফিরে একলা বসে আছি, মুখে কোনো কথা নেই। রাজা এসে বললে, 'তোমার কী হয়েছে, কী চাই?' আমি বললেম, ‘আমার বড়ো সাধ, রোজ খাব শালুক ফুল, বনের ফল, খেতের শাক; আমার ছেলে নিজের হাতে তুলে আনবে।'
রাজা বললে, 'আচ্ছা বেশ, তার আর ভাবনা কী।’ সোনার পালঙ্কে বসে আছি, ছেলে ডালি নিয়ে এল। তার সর্বাঙ্গে ঘাম, তার মুখে রাগ। ডালি পড়ে রইল, লজ্জা পেলেম। তারপরে আমার কী হল কী জানি। একলা বসে থাকি, মুখে কথা নেই। রাজা রোজ এসে আমাকে শুধোয়, “তোমার কী হয়েছে, কী চাই?’ ‘সুয়োরানি হয়েও কী চাই, সে কথা লজ্জায় কাউকে বলতে পারিনে। তাই তোমাকে ডেকেছি স্যাঙাৎনি। আমার শেষ কথাটি বলি তোমার কানে, ওই দুয়োরানির দুঃখ আমি চাই।'
❏ লেখিকা পরিচিতি : লীলা মজুমদার
১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ২৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় লেখিকার জন্ম। তিনি বিখ্যাত শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ভাই প্রমদারঞ্জন রায়ের কন্যা অর্থাৎ সুকুমার রায় ছিলেন তাঁর জেঠতুতো দাদা। এই সম্পর্কে তিনি ছিলেন বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের পিসিমা। লীলা মজুমদার নিজেও শিশুসাহিত্যের সম্রাজ্ঞী ছিলেন। ছোটোবেলায় শিলং লোরেটো কনভেন্ট স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। বড়ো হয়ে কলকাতাতেই পড়াশোনা করেন। বিএ এবং এমএ উভয় পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান লাভ করেন। সাহিত্য-সংস্কৃতির জন্য তিনি ‘রবীন্দ্র’ ও ‘বিদ্যাসাগর’ স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা—‘বদ্যিনাথের বাড়ি’, ‘পদিপিসির বর্মিবাক্স’, ‘দিনদুপুরে’, ‘জোনাকি’, ‘এই যা দেখা’, ‘গুপীর গুপ্তখাতা’, ‘হলদে পাখির পালক’, ‘ঝাঁপতাল’, ‘মণিকাঞন’, ‘টংলিং’, ‘মাকু’ইত্যাদি। তিনি ‘সন্দেশ’ পত্রিকার যুগ্ম-সম্পাদক ছিলেন। ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে এই মহীয়সী লেখিকার মৃত্যু ঘটে।❏ বুনো হাঁস গল্পটির: বিষয়বস্তু
‘বুনোহাঁস’ গল্পটিতে মানুষের মতো পশুপাখির প্রতি সৈনিকদের স্নেহমমতা প্রকাশ পেয়েছে। জোয়ানরা এমনিতেই নির্মম এবং যুদ্ধবাজ। তাদের মধ্যে যে সামান্য বুনো হাঁসের প্রতি প্রীতি থাকবে এটা ধারণা করা যায় না। কিন্তু যখন দুটো বুনো হাঁস তাদের তাঁবুতে এসে পড়ল তখন তারা অত্যন্ত যত্নে তাদের সেবা শুশ্রুষা করে, আহার দিয়ে নিজেদের সঙ্গী করে নিল। জোয়ানরা সেই দুটো হাঁসের সঙ্গে অবসর সময় কাটাত। বাড়ি থেকে তারা অনেক দূরে ছিল বলে তাদের বাড়ির সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না। হাঁস দুটি ছিল তাদের প্রেরণা। যখন শীত কমে এসেছে বরফ গলতে শুরু করল, দক্ষিণ দিক থেকে উত্তরে অন্য বুনো হাঁসগুলি ফিরে আসা শুরু করল তখন হাঁস দুটিও তাই দেখে একদিন উত্তরে উড়ে চলে গেল। জোয়ানদের তখন ঘরে ফেরার সময় হয়ে এসেছে।
‘বুনোহাঁস’ গল্পটিতে মানুষের মতো পশুপাখির প্রতি সৈনিকদের স্নেহমমতা প্রকাশ পেয়েছে। জোয়ানরা এমনিতেই নির্মম এবং যুদ্ধবাজ। তাদের মধ্যে যে সামান্য বুনো হাঁসের প্রতি প্রীতি থাকবে এটা ধারণা করা যায় না। কিন্তু যখন দুটো বুনো হাঁস তাদের তাঁবুতে এসে পড়ল তখন তারা অত্যন্ত যত্নে তাদের সেবা শুশ্রুষা করে, আহার দিয়ে নিজেদের সঙ্গী করে নিল। জোয়ানরা সেই দুটো হাঁসের সঙ্গে অবসর সময় কাটাত। বাড়ি থেকে তারা অনেক দূরে ছিল বলে তাদের বাড়ির সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না। হাঁস দুটি ছিল তাদের প্রেরণা। যখন শীত কমে এসেছে বরফ গলতে শুরু করল, দক্ষিণ দিক থেকে উত্তরে অন্য বুনো হাঁসগুলি ফিরে আসা শুরু করল তখন হাঁস দুটিও তাই দেখে একদিন উত্তরে উড়ে চলে গেল। জোয়ানদের তখন ঘরে ফেরার সময় হয়ে এসেছে।
হাতেকলমে প্রশ্নও উত্তরঃ বুনো হাঁস
১. ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে বাক্যটি আবার লেখো :১.১ আকাশের দিকে তাকালে তুমি দেখ মেঘ-রোদ্দুর।
১.২ হিমালয় ছাড়া ভারতবর্ষের আরও একটি পর্বতের নাম হল আরাবল্লী।
১.৩ এক রকমের হাঁসের নাম হল বালি হাঁস।
১.৪ পাখির ডানার শোঁ শোঁ শব্দ শোনা যায়।

৩. সঙ্গী—(ঙ্ + গ্)—এমন ‘ঙগ্’ রয়েছে—এরকম পাঁচটি শব্দ লেখো :
উত্তর : অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ, রঙ্গ, অনঙ্গ—এই পাঁচটি শব্দের সবেতেই ‘ঙ্গ’ রয়েছে।
৪. ঘটনাক্রম সাজিয়ে লেখো :
উত্তর : ৪.৪ বুনো হাঁস দক্ষিণ দিকে উড়ে যেত।
উত্তর : ৪.২ হাঁসের ডানা জখম হল।
উত্তর : অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ, রঙ্গ, অনঙ্গ—এই পাঁচটি শব্দের সবেতেই ‘ঙ্গ’ রয়েছে।
৪. ঘটনাক্রম সাজিয়ে লেখো :
উত্তর : ৪.৪ বুনো হাঁস দক্ষিণ দিকে উড়ে যেত।
উত্তর : ৪.২ হাঁসের ডানা জখম হল।
উত্তর : ৪.৫ আরেকটা বুনো হাঁসও নেমে এসে এটার চারদিকে উড়ে বেড়াচ্ছে।
উত্তর : ৪.৩ সারা শীত কেটে গেল।
উত্তর : ৪.১ দেশে ফিরে ওরা বাসা বাঁধবে, বাচ্চা তুলবে।
উত্তর : ৪.১ দেশে ফিরে ওরা বাসা বাঁধবে, বাচ্চা তুলবে।
৫. শূন্যস্থান পূরণ করো :
৫.১ লাডাকের একটা বরফে ঢাকা নির্জন জায়গাতে আমাদের জোয়ানদের একটা ঘাঁটি ছিল।
৫.২ জোয়ানদের মুরগি রাখার খালি জায়গা ছিল।
৫.৩ আস্তে আস্তে হাঁসের ডানা সারল।
৫.৪ দলে দলে বুনো হাঁস তিরের ফলার আকারে, কেবলই উত্তর দিকে উড়ে চলেছে।
৫.৫ ন্যাড়া গাছে পাতার আর ফুলে কুঁড়ি ধরল।
৫.১ লাডাকের একটা বরফে ঢাকা নির্জন জায়গাতে আমাদের জোয়ানদের একটা ঘাঁটি ছিল।
৫.২ জোয়ানদের মুরগি রাখার খালি জায়গা ছিল।
৫.৩ আস্তে আস্তে হাঁসের ডানা সারল।
৫.৪ দলে দলে বুনো হাঁস তিরের ফলার আকারে, কেবলই উত্তর দিকে উড়ে চলেছে।
৫.৫ ন্যাড়া গাছে পাতার আর ফুলে কুঁড়ি ধরল।
৬. শব্দঝুড়ি থেকে বিশেষ্য ও বিশেষণ আলাদা করে লেখো :
বিশেষ্য | বিশেষণ |
বেচারি | বুনো |
লাডাক | জখম |
শীতকাল | গরম |
বরফ | ন্যাড়া |
তাঁবু | নির্জন |
সঙ্গী | চঞ্চল |
৭. ক্রিয়ার নীচে দাগ দাও :
৭.১ বাড়ির জন্য ওদের মন কেমন করত।
৭.২ পাখিরা আবার আসতে আরম্ভ করল।
৭.৩ দেশে ফিরে ওরা বাসা বাঁধবে।
৭.৪ সেখানে বুনো হাঁসরা রইল।
৭.৫ নিরাপদে তাদের শীত কাটে।
৭.১ বাড়ির জন্য ওদের মন কেমন করত।
৭.২ পাখিরা আবার আসতে আরম্ভ করল।
৭.৩ দেশে ফিরে ওরা বাসা বাঁধবে।
৭.৪ সেখানে বুনো হাঁসরা রইল।
৭.৫ নিরাপদে তাদের শীত কাটে।
৮. বাক্য বাড়াও :
৮.১ একদিন একটা বুনো হাঁস দল ছেড়ে নেমে পড়ল। (কোথায় নেমে পড়ল?)
উত্তর : একদিন একটা বুনো হাঁস দল ছেড়ে নীচে নেমে পড়ল।
৮.২ ওরা গরম দেশে শীত কাটিয়ে আবার ফিরে যাচ্ছে। (কোথায় এবং কখন ফিরে যাচ্ছে?)
উত্তর : ওরা গরম দেশে শীত কাটিয়ে শীতের শেষে নিজেদের দেশে আবার ফিরে যাচ্ছে।
৮.৩ পাহাড়ের বরফ গলতে শুরু করল। (কোথাকার পাহাড়?)
৮.১ একদিন একটা বুনো হাঁস দল ছেড়ে নেমে পড়ল। (কোথায় নেমে পড়ল?)
উত্তর : একদিন একটা বুনো হাঁস দল ছেড়ে নীচে নেমে পড়ল।
৮.২ ওরা গরম দেশে শীত কাটিয়ে আবার ফিরে যাচ্ছে। (কোথায় এবং কখন ফিরে যাচ্ছে?)
উত্তর : ওরা গরম দেশে শীত কাটিয়ে শীতের শেষে নিজেদের দেশে আবার ফিরে যাচ্ছে।
৮.৩ পাহাড়ের বরফ গলতে শুরু করল। (কোথাকার পাহাড়?)
উত্তর : নীচের পাহাড়ের বরফ গলতে শুরু করল।
৮.৪ আবার ঝোপঝাপ দেখা গেল। (কেমন ঝোপঝাপ?)
৮.৪ আবার ঝোপঝাপ দেখা গেল। (কেমন ঝোপঝাপ?)
উত্তর : আবার সবুজ ঝোপঝাপ দেখা গেল।
৮.৫ গাছে পাতার আর ফুলের কুঁড়ি ধরল। (কেমন গাছে?)
উত্তর : ন্যাড়া গাছে পাতার আর ফুলের কুঁড়ি ধরল।
৮.৫ গাছে পাতার আর ফুলের কুঁড়ি ধরল। (কেমন গাছে?)
উত্তর : ন্যাড়া গাছে পাতার আর ফুলের কুঁড়ি ধরল।
৯. বাক্য রচনা করো : রেডিয়ো, চিঠিপত্র, থরথর, জোয়ান, তাঁবু।
- রেডিয়ো—আজকাল রেডিয়োর ব্যবহার প্রায় উঠেই গেছে।
- চিঠিপত্র—মোবাইল যুগে চিঠিপত্র কেউ লেখে না।
- থরথর—শীতে মানুষটা থরথর করে কাঁপছে।
- জোয়ান—যুদ্ধে জোয়ানদের প্রয়োজন হয়।
- তাঁবু—মাঠের মাঝে সার্কাসের তাঁবু খাটানো হয়েছে।
উত্তর : নিজেরা বুনো হাঁসের ছবি আঁকো।
১১. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১১.১ জোয়ানদের ঘাঁটি কোথায় ছিল?
উত্তর : জোয়ানদের ঘাঁটি লাডাকে ছিল।
১১.২ জোয়ানরা কী কাজ করে?
উত্তর : জোয়ানরা লাডাকের সীমান্তে যুদ্ধ করে।
১১.৩ দুটো বুনো হাঁস দলছুট হয়েছিল কেন?
১১.২ জোয়ানরা কী কাজ করে?
উত্তর : জোয়ানরা লাডাকের সীমান্তে যুদ্ধ করে।
১১.৩ দুটো বুনো হাঁস দলছুট হয়েছিল কেন?
উত্তর : একটা বুনো হাঁস জখম হয়েছে আর একটা দলছুট হয়েছে।
১১.৪ বুনো হাঁসেরা জোয়ানদের তাঁবুতে কী খেত?
উত্তর : বুনো হাঁসেরা জোয়ানদের তাঁবুতে টিনের মাছ, তরকারি, ভুট্টা, ভাত, ফলের কুচি এসব খেত।
১১.৫ হাঁসেরা আবার কোথায়, কখন ফিরে গেল?
১১.৪ বুনো হাঁসেরা জোয়ানদের তাঁবুতে কী খেত?
উত্তর : বুনো হাঁসেরা জোয়ানদের তাঁবুতে টিনের মাছ, তরকারি, ভুট্টা, ভাত, ফলের কুচি এসব খেত।
১১.৫ হাঁসেরা আবার কোথায়, কখন ফিরে গেল?
উত্তরঃ শীতের শেষে উত্তরে নিজেদের দেশে হাঁসেরা আবার ফিরে গেল।
১১.৬ এমনি করে সারা শীত দেখতে দেখতে কেটে গেল'—কেমন করে সারা শীতকাল কাটল? এরপর কী ঘটনা ঘটল ?
উত্তর : দুটো বুনো হাঁস জোয়ানদের ছাউনিতে এসে পড়েছিল। একটা হাঁস আহত ছিল এবং আর একটা হাঁস তাকে দেখতে এসেছিল। তারা পরিযায়ী পাখি। শীতের সময় বা গরমের সময় তারা এক দেশ থেকে আর-এক দেশে ঘুরে বেড়ায়। তাদের বেশি শীত কিংবা বেশি গরম সহ্য হয় না। বরফে ঢাকা নির্জন জায়গায় জোয়ানদের ঘাঁটিতে তাদের গোটা শীতটা দেখতে দেখতে কেটে গেল। এরপর যখন শীত কমে এলো তখন তারা ওই জোয়ানদের ঘাঁটি থেকে তাদের অন্যান্য সঙ্গীদের দেখে উত্তর দিকে নিজেদের দেশে উড়ে গেল।
১১.৬ এমনি করে সারা শীত দেখতে দেখতে কেটে গেল'—কেমন করে সারা শীতকাল কাটল? এরপর কী ঘটনা ঘটল ?
উত্তর : দুটো বুনো হাঁস জোয়ানদের ছাউনিতে এসে পড়েছিল। একটা হাঁস আহত ছিল এবং আর একটা হাঁস তাকে দেখতে এসেছিল। তারা পরিযায়ী পাখি। শীতের সময় বা গরমের সময় তারা এক দেশ থেকে আর-এক দেশে ঘুরে বেড়ায়। তাদের বেশি শীত কিংবা বেশি গরম সহ্য হয় না। বরফে ঢাকা নির্জন জায়গায় জোয়ানদের ঘাঁটিতে তাদের গোটা শীতটা দেখতে দেখতে কেটে গেল। এরপর যখন শীত কমে এলো তখন তারা ওই জোয়ানদের ঘাঁটি থেকে তাদের অন্যান্য সঙ্গীদের দেখে উত্তর দিকে নিজেদের দেশে উড়ে গেল।
১২. কোনো পশু বা পাখির প্রতি তোমার সহমর্মিতার একটা ছোট্ট ঘটনার কথা লেখো।
উত্তর : কোনো পশু বা পাখির প্রতি একটি ছোটো ঘটনা : নির্জন উদ্যানে বসে রাজকুমার সিদ্ধার্থ একদিন একটু আনমনা হয়ে কী যেন ভাবছিলেন। সুনীল নির্মল আকাশে তখন উড়ে বেড়াচ্ছিল শত শত রাজহংস। হঠাৎ এদেরই একটি বাণবিদ্ধ অবস্থায় সিদ্ধার্থের কোলে এসে পড়ল। শরবিদ্ধ হাঁসটির যন্ত্রণা সিদ্ধার্থের অন্তঃকরণ স্পর্শ করল। তিনি দয়াপরবশ হয়ে তখনই তার শরীর থেকে শরটিকে তুলে দিলেন। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে আহত হাঁসটিকে বাঁচানোর পর তাকে কোলে নিয়ে সিদ্ধার্থ জননীর মমতায় তার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন। মূক ওই পাখিও যেন ওই স্নেহের অর্থ বুঝতে পেরে তাঁর দিকে নীরবে তাকিয়ে রইল।
উত্তর : কোনো পশু বা পাখির প্রতি একটি ছোটো ঘটনা : নির্জন উদ্যানে বসে রাজকুমার সিদ্ধার্থ একদিন একটু আনমনা হয়ে কী যেন ভাবছিলেন। সুনীল নির্মল আকাশে তখন উড়ে বেড়াচ্ছিল শত শত রাজহংস। হঠাৎ এদেরই একটি বাণবিদ্ধ অবস্থায় সিদ্ধার্থের কোলে এসে পড়ল। শরবিদ্ধ হাঁসটির যন্ত্রণা সিদ্ধার্থের অন্তঃকরণ স্পর্শ করল। তিনি দয়াপরবশ হয়ে তখনই তার শরীর থেকে শরটিকে তুলে দিলেন। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে আহত হাঁসটিকে বাঁচানোর পর তাকে কোলে নিয়ে সিদ্ধার্থ জননীর মমতায় তার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন। মূক ওই পাখিও যেন ওই স্নেহের অর্থ বুঝতে পেরে তাঁর দিকে নীরবে তাকিয়ে রইল।
ঠিক ওই সময়ে সিদ্ধার্থের ভাই দেবদত্ত সেখানে উপস্থিত হল। সিদ্ধার্থকে সে জানাল, এ হাঁসটি তার; কারণ তারই শরে আহত হয়ে উড়ন্ত হাঁসটি নীচে পড়েছে। সিদ্ধার্থ কিন্তু দেবদত্তের এই যুক্তি মানলেন না। তিনি ধীর স্বরে বললেন, আহত বা হত জীবের ওপর হত্যাকারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় তখনই, যখন সে জীবটিকে নিজের আয়ত্তে পায়। কিন্তু এখানে হাঁসটি রয়েছে সিদ্ধার্থের অধিকারে। তা ছাড়া যে জীবন নেয়, তার চেয়ে যে জীবন দেয় তারই তো অধিকার বেশি সে দিক থেকে হাঁসটির ওপর সিদ্ধার্থের অধিকার বেশি। হাঁসটি মরেনি, সে আহত হয়েছে মাত্র। আহতের ব্যথা কেমন, আজ তা মর্মে মর্মে তিনি অনুভব করছেন। বুঝেছেন, ক্ষুদ্র এই পাখিটির ক্ষুদ্র প্রাণ কী সাংঘাতিকভাবে আহত হয়েছে। এই হাঁসটির জন্য তিনি সর্বস্ব ত্যাগ করতেও রাজি এমনকি শাক্যরাজ্যের সিংহাসনেও তাঁর প্রয়োজন নেই।
দেবদত্ত ওই সিংহাসন নিক, কিন্তু হাঁসটির ওপরে অধিকার কিছুতেই সিদ্ধার্থ ত্যাগ করবেন না। সিদ্ধার্থের এই দৃঢ়তা দেখে দেবদত্ত বিস্মিত ও স্তম্ভিত হল। এ যেন রাজকুমার সিদ্ধার্থ নয় করুণাঘন এক মূর্তি। দেবদত্ত আর কিছু না বলে নিজ গৃহাভিমুখে রওনা দিল। এদিকে সিদ্ধার্থও রাজহাঁসটিকে আকাশে উড়িয়ে দিলেন। সুখে আকাশে উড়তে উড়তে সে যেন সিদ্ধার্থের অপার করুণার কাহিনি সারা বিশ্বে প্রচার করে দিল।
১৩.১ লীলা মজুমদারের জন্ম কোন শহরে?
উত্তর : কলকাতায়।
১৩.২ তাঁর শৈশব কোথায় কেটেছে?
উত্তর : তাঁর শৈশব কেটেছে শিলং পাহাড়ে।
১৩.৩ ছোটোদের জন্য লেখা তাঁর দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর : ছোটোদের জন্য লেখা তাঁর দুটি বইয়ের নাম ‘পদিপিসির বর্মিবাক্স’, ‘হলদে পাখির পালক’।
ভবানীপ্রসাদ মজুমদারের জন্ম ৯ এপ্রিল ১৯৫৩। পিতা নারায়ণচন্দ্র মজুমদার এবং মাতা নিরুপমা দেবী। সাহিত্যিক হিসেবে প্রকাশিত গ্রন্থ ‘কিশোর সাহিত্য’, ‘মজার ছড়া’, ‘মিঠে কড়া’, ‘খেলার ছড়া’, ‘নাম তাঁর সুকুমার’, ‘শিকল ভাঙার শব্দ’, ‘ছোটোদের কচি পাতা’ ইত্যাদি। পুরস্কার ও সম্মান পেয়েছেন সুকুমার রায় শতবার্ষিকী পুরস্কার, সত্যজিৎ পুরস্কার, সুকান্ত পুরস্কার, শিশুসাহিত্য পরিষদ পুরস্কার। তিনি সহজ কথায় সরল ছন্দে বিচিত্র বিষয়ে ষোলো হাজারেরও বেশি ছড়া লিখেছেন।
❏ দারোগাবাবু এবং হাবু : বিষয়বস্তু
হাবু বড়ো বিপদে পড়েই কাঁদতে কাঁদতে থানার বড়োবাবুর কাছে গিয়েছে। তারা চার ভাই, একই ঘরে থাকে। বড়ো ভাইয়ের সাতটা বেড়াল, মেজো ভাইয়ের আটটা কুকুর, সেজো ভাইয়ের দশটা ছাগল, সবাই একই ঘরে থাকে। হাবুর ঘুম আসে না, গন্ধ লাগে। তাই দারোগার কাছে নালিশ জানাতে এসেছে। দারোগাবাবু গন্ধ তাড়ানোর জন্য দরজা জানলা খুলে রাখতে বললেন। শুনে হাবু করুণ সুরে বলল, তাহলে তার পোষা যে দেড়শো পায়রা ওই ঘরেই আছে, তারা সব উড়ে যাবে।
হাতেকলমে প্রশ্নও উত্তরঃ দারোগাবাবু এবং হাবু
১. ঠিক কথাটি বেছে নিয়ে বাক্যটি আবার লেখো :১.১ হাবু থানার গিয়েছিল অভিযোগ জানাতে।
১.২ বাড়িতে পোষা হয় এমন পাখির মধ্যে পড়ে না কোকিল।
১.৩ হাবু ও তার দাদাদের পোষা মোট পশুপাখির সংখ্যা ১৭৫।

৩. শব্দঝুড়ি থেকে বিশেষ্য ও বিশেষণ আলাদা করে লেখো :
বিশেষ্য | বিশেষণ |
পায়রা | কাবু |
নালিশ | খুব |
দুঃখ | করুণ |
থানা | পোষা |
বড়োবাবু | চারজন |
৪. ‘কেঁদে কেঁদে’—এরকম একই শব্দকে পাশাপাশি দু-বার ব্যবহার করে নতুন পাঁচটি শব্দ তৈরি করো :
উত্তর : রেগে রেগে, যায় যায়, শুনে শুনে, ভেবে ভেবে, মনে মনে।
৫. ক্রিয়ার নীচে দাগ দাও :
৫.১ বললে কেঁদেই হাবু।
৫.২ সাতটা বেড়াল পোষেন ছোটোবড়ো।
৫.৩ বললে করুণ সুরে।
৫.৪ যাবেই যে সব উড়ে।
৫.৫ ভগবানকেই ডাকি।
৫.২ সাতটা বেড়াল পোষেন ছোটোবড়ো।
৫.৩ বললে করুণ সুরে।
৫.৪ যাবেই যে সব উড়ে।
৫.৫ ভগবানকেই ডাকি।
৬. বাক্যরচনা করোঃ
নালিশ, ভগবান, বারণ, করুণ, ভোর।
- নালিশ—মঙ্গল তার সহপাঠীর নামে নালিশ করল।
- ভগবান—ভগবান সকলের মঙ্গল করেন।
- বারণ—প্রবীর বাবা-মায়ের বারণ শোনে না।
- করুণ—ভিজে বেড়ালটা করুণ ভাবে চেয়ে রয়েছে।
- ভোর—ভোর হলেই পাখি ডাকে।
৭. ঘটনাক্রম অনুযায়ী বাক্যগুলি সাজিয়ে লেখো :
উত্তর : ৭.১ হাবু থানার বড়োবাবুর কাছে কান্নাকাটি করে নালিশ জানাল।
উত্তর : ৭.৩ হাবুরা চার ভাই একটা ঘরেই থাকে।
উত্তর : ৭.৪ বড়দা সাতটা বেড়াল, মেজদা আটটা কুকুর, সেজদা দশটা ছাগল ও হাবু নিজে দেড়শো পায়রা পোষে।
উত্তর : ৭.১ হাবু থানার বড়োবাবুর কাছে কান্নাকাটি করে নালিশ জানাল।
উত্তর : ৭.৩ হাবুরা চার ভাই একটা ঘরেই থাকে।
উত্তর : ৭.৪ বড়দা সাতটা বেড়াল, মেজদা আটটা কুকুর, সেজদা দশটা ছাগল ও হাবু নিজে দেড়শো পায়রা পোষে।
উত্তর : ৭.২ জীবজন্তুর গন্ধে হাবুর প্রাণ যায় যায়।
উত্তর : ৭.৫ দারোগাবাবুর উত্তর শুনে হাবু বেজায় কাতর হয়ে পড়ল।
উত্তর : ৭.৫ দারোগাবাবুর উত্তর শুনে হাবু বেজায় কাতর হয়ে পড়ল।
৮. কবিতাটিতে অন্ত্যমিল আছে, এমন পাঁচজোড়া শব্দ লেখো :
উত্তর : হাবু—বড়ো বাবু।
থাকি — ডাকি | বড়ো — করো | বেঁধে — কেঁদে | ভুলো — গুলো | সুরে — উড়ে
উত্তর : হাবু—বড়ো বাবু।
থাকি — ডাকি | বড়ো — করো | বেঁধে — কেঁদে | ভুলো — গুলো | সুরে — উড়ে
৯. বাক্য বাড়াও :
৯.১ হাবু গিয়েছিল (কোথায়? কখন?)উত্তর : হাবু সেদিন ভোরে থানায় গিয়েছিল।
৯.২ বড়দা পোষেন বেড়াল। (কয়টি? কেমন?)
৯.২ বড়দা পোষেন বেড়াল। (কয়টি? কেমন?)
উত্তর : বড়দা পোষেন ছোটো-বড়ো সাতটা বেড়াল।
৯.৩ হাবু ভগবানকে ডাকে। (কেন? কখন?)
উত্তর : হাবু দুঃখে দিনরাত ভগবানকে ডাকে।
৯.৪ দারোগাবাবু বলেন ঘরের জানলা-দরজা খুলে রাখতে। (কাকে?)
৯.৪ দারোগাবাবু বলেন ঘরের জানলা-দরজা খুলে রাখতে। (কাকে?)
উত্তর : দারোগাবাবু হাবুকে বলেন ঘরের জানলা-দরজা খুলে রাখতে।
৯.৫ হাবুর পায়রা উড়ে যাবে। (কয়টি?)
উত্তর : হাবুর দেড়শোটা পায়রা উড়ে যাবে।
১০.১ ছোটোদের জন্য ছড়া কবিতা লিখেছেন, এমন দুজন কবির নাম লেখো।
উত্তর : অন্নদাশংকর রায়, সুনির্মল বসু।
১০.২ তোমার পাঠ্য কবিতাটির কবি কে?
উত্তর : অন্নদাশংকর রায়, সুনির্মল বসু।
১০.২ তোমার পাঠ্য কবিতাটির কবি কে?
উত্তর : ভবানীপ্রসাদ মজুমদার।
১০.৩ তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
১০.৩ তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর : মজার ছড়া, নাম তাঁর সুকুমার।
১১. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১১.১ হাবু কোথায় গিয়ে কার কাছে নালিশ জানিয়েছিল?
উত্তর : হাবু থানায় গিয়ে তিন দাদার নামে দারোগাবাবুর কাছে নালিশ জানিয়েছিল।
১১.২ হাবুর বড়দা, মেজদা ও সেজদা ঘরে কী কী পোষেন?
উত্তর : ঘরে হাবুর বড়দা সাতটা বেড়াল, মেজদা আটটা কুকুর ও সেজদা দশটা ছাগল পোষেন।
১১.৩ হাবুর করুণ অবস্থার জন্য সে নিজেও কীভাবে দায়ী ছিল বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর : হাবু নিজে দেড়শো পায়রা একই ঘরে পোষে। সেই কারণে হাবু নিজেও তার করুণ অবস্থার জন্য দায়ী।
১১.৪ দারোগাবাবু হাবুকে যে পরামর্শ দিলেন সেটি তার পছন্দ হল না কেন?
উত্তর : দারোগাবাবু জানতেন না যে হাবুর নিজের দেড়শো পোষা পায়রা রয়েছে। ঘরের দরজা-জানলা খুললে যেহেতু পায়রাগুলো উড়ে যাবে, সেহেতু দারোগাবাবুর পরামর্শ হাবুর পছন্দ হল না।
১১.৫ দারোগাবাবুর কাছে হাবু তার যে দুঃখের বিবরণ দিয়েছিল, তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর : একদিন ভোরে হাবু কাঁদতে কাঁদতে থানার বড়োবাবুর কাছে তার দাদাদের বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে এসেছে। তারা চার ভাই। এতই দুঃখ হাবুর যে দিনরাত সে ভগবানকেই ডাকে। বড়দা ছোটো-বড়ো সাতটা বেড়াল পোষেন, আবার মেজদা আটটা কুকুর পোষেন। একই ঘরের মধ্যে তাদের উৎপাতে হাবুর ঘুম আসে না। হাবুর সেজদাকে একটা পাগল বলা যায়। তার দশটা ছাগল ওই ঘরের মধ্যে থাকে। সেই ছাগলের গন্ধে হাবু কেঁদেমরে। দারোগাবাবু হাবুকে উপদেশ দিলেন যে, ঘরের জানলা-দরজাগুলি খুলে রাখতে। তাতে ঘরের গন্ধটা বেরিয়ে যাবে। দারোগাবাবুর কথা শুনে হাবু মুশকিলে পড়ে যায়, কারণ ওই ঘরের মধ্যে তারও দেড়শো পায়রা আছে। ঘরে জানলা-দরজা খোলা রাখলে তার পোষা পায়রাগুলি নিশ্চিত উড়ে যাবে।
১১.৬ তোমার পোষা বা তুমি পুষতে চাও এমন কোনো প্রাণীর ছবি আঁকো বা তার সম্পর্কে বন্ধুকে লেখো।
উত্তর : বেড়াল গৃহপালিত প্রাণী। আমার পোষা বেড়ালের নাম মিনি। দেখতে অনেকটা বাঘের মতো। তাকে ‘বাঘের মাসি’ মনে হয়। তার চারটি পা, দুটি চোখ, দুটি কান ও একটি লেজ আছে। প্রতিটি পায়ে পাঁচটি করে ধারালো নখ আছে। সারা শরীর লোমে ঢাকা। তার দাঁত, নখ খুবই শক্ত ও ধারালো। সে খুবই শান্ত ও আরামপ্রিয়। আদর পেলে কোলের মধ্যে উঠে পড়ে। তার চোখ রাতেরবেলায় জ্বলজ্বল করে এবং রাতের অন্ধকারে সে দেখতে পায়। সুযোগ পেলেই অবশ্য বাড়ির দুধ, মাছ, মাংস ও অন্যান্য প্রিয় খাদ্য চুরি করে খায়। এ ছাড়া ভাত, ডাল, রুটিও খায়। বেড়ালটি ইঁদুর মেরে গৃহস্থের উপকার করলেও অপকারই করে বেশি। বাড়িঘর নোংরা করে। এ ছাড়া ছোটোদের ডিপথিরিয়া প্রভৃতি রোগও বেড়ালের দ্বারা ছড়ায়। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই বেড়াল দেখতে পাওয়া যায়।
উত্তর : বেড়াল গৃহপালিত প্রাণী। আমার পোষা বেড়ালের নাম মিনি। দেখতে অনেকটা বাঘের মতো। তাকে ‘বাঘের মাসি’ মনে হয়। তার চারটি পা, দুটি চোখ, দুটি কান ও একটি লেজ আছে। প্রতিটি পায়ে পাঁচটি করে ধারালো নখ আছে। সারা শরীর লোমে ঢাকা। তার দাঁত, নখ খুবই শক্ত ও ধারালো। সে খুবই শান্ত ও আরামপ্রিয়। আদর পেলে কোলের মধ্যে উঠে পড়ে। তার চোখ রাতেরবেলায় জ্বলজ্বল করে এবং রাতের অন্ধকারে সে দেখতে পায়। সুযোগ পেলেই অবশ্য বাড়ির দুধ, মাছ, মাংস ও অন্যান্য প্রিয় খাদ্য চুরি করে খায়। এ ছাড়া ভাত, ডাল, রুটিও খায়। বেড়ালটি ইঁদুর মেরে গৃহস্থের উপকার করলেও অপকারই করে বেশি। বাড়িঘর নোংরা করে। এ ছাড়া ছোটোদের ডিপথিরিয়া প্রভৃতি রোগও বেড়ালের দ্বারা ছড়ায়। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই বেড়াল দেখতে পাওয়া যায়।
বিষয়বস্তু আলোচনা :
খোকার ইস্কুলে পুজোর ছুটি পড়েছে। ছুটিতে ইস্কুলের স্যার প্রজাপতি আঁকতে দিয়েছে। প্রজাপতির বদলে খোকা একটা শুঁয়োপোকা এঁকেছে। দাদা খোকার এই আঁকা দেখে দারুণ রেগে বললেন, এটা সে কী করেছে? খোকাকে আঁকতে দেওয়া হয়েছে প্রজাপতি, সে শুঁয়োপোকা এঁকেছে। ইস্কুলে যখন সে জমা দেবে খাতাটা, তখন ইস্কুলের স্যার সেটা দেখে তাকে ক্ষমা করবেন না। তুলি সরিয়ে রেখে খোকা তখন তার দাদাকে বললে, দাদা তার মিছিমিছি ভাবছে, কারণ লেখাপড়ার কাজে খোকা কোনোসময় ফাঁকি দেয় না। এখনও সাতাশ দিন বাকি ইস্কুল খুলতে। এই সাতাশ দিনে নিশ্চয়ই তার আঁকা শুঁয়োপোকাটা রং প্রজাপতি হয়ে যাবে।
খোকার বুদ্ধি প্রাকৃতিক জগৎ নিয়ে, ছবির জগৎ নিয়ে সে ভাবেনি। তিনদিনের একটা শুঁয়োপোকা প্রকৃতির বুকে সাতাশ দিনে প্রজাপতি হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ছবির জগতে সেটা যে সম্ভব নয় তা খোকার বুদ্ধিতে নেই। খোকার দাদা সেই কারণেই খোকার ওপর দারুণ রেগে গিয়েছেন। খোকা নিজেকে সেই কারণে বোকা মনে করতে পারছে না। বরং তার নিজের ধারণা, প্রকৃতি-চেতনা তার যথেষ্ট রয়েছে।
খোকার বুদ্ধি প্রশ্নও উত্তর প্র্যাকটিস সেট
এককথায় উত্তর লেখো :
১। খোকার ওপর কে দারুণ রেগে গিয়েছিল?
উত্তর : খোকার দাদা।
২। খোকার কী আঁকার কথা ছিল?
উত্তর : প্রজাপতি।
৩। পুজোর ছুটির পরে খোকাকে কী জমা দিতে হবে?
উত্তর : আঁকার খাতা।
৪। খোকা প্রজাপতির বদলে কেন শুঁয়োপোকা এঁকেছে?
উত্তর : শুঁয়োপোকা সাতাশ দিনে প্রজাপতি হবে বলে।
৫। খোকাকে কে ক্ষমা করবে না?
উত্তর : ইস্কুলের স্যার।
৬। কী সরিয়ে রাখল খোকা?
উত্তর : রং-তুলি।
৭। দাদা মিছিমিছি খোকাকে কী ভাবছিল?
উত্তর : নেহাত বোকা।
৮। লেখাপড়ার কাজে খোকা কী করে না?
উত্তর : ফাঁকি দেয় না।
৯। পুজোর ছুটির আর কতদিন বাকি ছিল?
উত্তর : সাতাশ দিন।
১০। খোকার আঁকা শুঁয়োপোকাগুলো সাতাশ দিনে কী হয়ে যাবে?
উত্তর : প্রজাপতি হয়ে যাবে।
Related Tags : class 5 bangla,class 5,class 5 bengali,class 5 bangla question answer,class 5 bangla kobita,class5 bangla patabahar,patabahar class 5,wb class 5 bangla patabahar,
No comments
Hi Welcome ....