👇 Read More Click Class - VI History Question Answer ভেবে দেখো...খুঁজে দেখো... ১। বেমানান শব্দটি খুঁজে বের করো : ১.১ ভৃগুচ্ছ, কল্যাণ, স...
ভেবে দেখো...খুঁজে দেখো...
১। বেমানান শব্দটি খুঁজে বের করো :
১.১ ভৃগুচ্ছ, কল্যাণ, সোপারা, তাম্রলিপ্ত।
উত্তর : সোপারা।
১.২ বুদ্ধযশ, কুমারজীব, পরমার্থ, সুয়ান জাং।
উত্তর : সুয়ান জাং।
১.৩ আলোকজান্ডার, সেলিউকাস, কনিষ্ক, মিনান্দার।
উত্তর : কনিষ্ক।
২। ক-স্তম্ভের সঙ্গ খ-স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো :

৩। সঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো :
৩.১ হেরোডোটাসের মতে ইন্দুস ছিল পারসিক সাম্রাজ্যের একটি—(প্রদেশ/ দেশ/জেলা)।
উত্তর : প্রদেশ।
৩.২ ইন্দো-গ্রিক বলা হত—(শকদের/ব্যাকট্রিয়ার অধিবাসীদের/ কুষাণদের)।
উত্তর : ব্যাকট্রিয়ার অধিবাসীদের।
৩.৩ সেন্ট থমাস খ্রিস্টধর্ম প্রচারের জন্য ভারতীয় উপমহাদেশে এসেছিলেন—(আলেকজান্ডার/মিনান্দার/ গল্ডোফারনেস)-এর আমলে।
উত্তর : গন্ডোফারনেস।
উত্তর : গন্ডোফারনেস।
৪. নিজের ভাষায় ভেবে লেখো (তিন/চার লাইন) :
৪.১ আলোকজান্ডারের ভারতীয় উপমহাদেশে অভিযানের কি মৌর্য সাম্রাজ্য গড়ে ওঠার ওপরে কোনো প্রভাব ছিল।
উত্তর : আলেকজান্ডার পৃথিবী জুড়ে এক বিরাট সাম্রাজ্য তৈরি করতে চেয়েছিলেন। পারসিকদের সঙ্গে আলোকজান্ডারের যুদ্ধ বাঁধে। পারসিকদের হারিয়ে আলেকজান্ডার ভারতীয় উপমহাদেশে পৌঁছোন। তিনি ভারতীয় উপমহাদেশে ছিলেন মাত্র বছর তিনেক। ফলে ওই অভিযানের প্রভাব ভারতীয় উপমহাদেশে গভীরভাবে পড়েনি। তবে আলেকজান্ডারের প্রভাবে ভারতীয় উপমহাদেশের ছোটো ছোটো শক্তিগুলি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ায় অতি অল্প দিনেই মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ভারতবর্ষে বিদেশি আক্রমণ প্রতিরোধে বিশাল এক সুগঠিত সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন।
৪.২ শক-কুষাণরা আসার আগে ভারতীয় উপমহাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতিতে কী কী বিষয় খুঁজে পাওয়া যায় না?
উত্তর : শক-কুষাণরা এখানে আসার আগে ঘোড়ার ব্যবহার উন্নত ছিল না। ঘোড়ায় বসে পিছনে ঘুরে তির ছোঁড়ার কায়দা চালু ছিল না উপমহাদেশে ঘোড়ার লাগাম ও জিনের ব্যবহার ছিল না। শক-কুষাণরা নানারকম পোশাক, লাল মাটির পাত্র, ইটের ব্যবহার, নাটক চর্চা, মূর্তি পূজার রীতি উপমহাদেশে চালু করে।
৪.৩ প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগের ক্ষেত্রে পড়াশোনার কী ভূমিকা ছিল বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর : প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগের ক্ষেত্রে পড়াশোনার ভূমিকা অতি গুরুত্বপূর্ণ। বণিকদের সুবিধার জন্য গ্রিক ভাষায় ‘পেরিপ্লাস অফ দ্য ইরিথ্রিয়ান সী’ নামে একটি বই লেখা হয়েছিল, যার মধ্যে ব্যাবসাবাণিজ্যের নানা বিষয়ে খুঁটিনাটি বর্ণনা রয়েছে। বইটির লেখকের নাম জানা যায়নি। তার সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষজন, সমাজ, গাছপালা, পশুপাখি বিষয়েও নানা কথা। ওই বইটি পড়ে মৌসুমি বায়ু সম্বন্ধে ধারণা ও ইরিথ্রিয়ান সাগরে যাতায়াত ও বাণিজ্য সহজ হয়েছিল।
৫। হাতেকলমে করো :
৫.১ নবম অধ্যায়ের মুদ্রার ছবিগুলির সঙ্গে ষষ্ঠ ও সপ্তম অধ্যায়ের মুদ্রার ছবিগুলির মিল ও অমিলগুলি খুঁজে বের করো।
উত্তর : ছবিগুলি দেখে নিজে উত্তর লেখো।
৫.২. ৯.২ মানচিত্রটি ভালো করে দেখো। ফাসিয়ান ও সুয়ান জাং ভারতীয় উপমহাদেশের কোন কোন জায়গায় গিয়েছিলেন? কোন কোন জায়গায় দুজনেই গিয়েছিলেন? তার একটি তালিকা তৈরি করো।
উত্তর : ফাসিয়ান : বলখ, পেশোয়ার, লাং মো, তাসখন্দ, মথুরা, পাটলিপুত্র, কাসগড়, ভুবনেশ্বর, তাম্রলিপ্ত, জুনাগড়, খোটান, বাসিয়াল, শিয়ালকোট, কুলু, মুলতান।
সুয়ান জাং : বলখ, পেশোয়ার, লাং বো, তাসখন্দ, মথুরা, শ্রাবস্তী, কুচা, শ্রীনগর, জালালাবাদ, সারনাথ, বুদ্ধগয়া, বিজয়ওয়াড়া, কপিলাবস্তু, কুশিনগরী, পাটলিপুত্র, বারাণসী।
ফ্রি ইতিহাস নোটস প্র্যাকটিস : ভারত ও সমকালীন বহির্বিশ্ব
❐ সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :
১.ব্যাকট্রিয়ার গ্রিক বলা হত –
🄰 যবন
🄱 ম্যাট্রাপ
🄲 ক্ষত্রপ
🄳 ম্যাত্তারিন
২. সুমেরের লিপিকে ইংরেজিতে বলে?
🄰 কিউফর্ম
🄱 কিউনিফর্ম
🄲 কিনিফর্ম
🄳 কিফর্ম
৩. জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার একটি বিখ্যাত বই ছিল—
🄰 যবন
🄱 জাতক যবন
🄲 জাতকী
🄳 যবন যাতক
৪. ফাসিয়ান তাম্রলিপ্ততে কত বছর কাটিয়েছিলেন?
🄰 দুই বছর
🄱 চার বছর
🄲 ছয় বছর
🄳 দশ বছর
৫. পঞ্চ সিদ্ধান্তিকা বইটির লেখক ছিলেন—
🄰 বাণভট্ট
🄱 কুমারজীব
🄲 বরাহমিহির
🄳 কালিদাস
৬. ফাসিয়ান তাঁর অভিজ্ঞতার কথা লিখেছিলেন—
🄰 ফো ফুয়া কি
🄱 ফুয়াং থু বইতে
🄲 ফো-কুয়ো-কিং
🄳 কোনোটাই নয়
৭. পেরিপ্লাস কথাটির মানে?
🄰 জলযান করে ঘুরে বেড়ানো
🄱 জলযান
🄲 জাহাজ
🄳 ছয়বছর
৮. যবন যাতক কী ধরনের গ্রন্থ?
🄰 ব্যাকরণ
🄱 গণিত শাস্ত্র
🄲 জ্যোতির্বিজ্ঞান
🄳 জ্যোতিষচর্চা বিষয়ক
❐ একটি বাক্য উত্তর দাও :
১. গ্রিক শাসক সেলিউকাসের দূতের নাম কী ছিল?
উত্তর : গ্রিক শাসক সেলিউকাসের দূতের নাম ছিল মেগাস্থিনিস।
২. শক শাসনের বাধা কারা ছিল?
উত্তর : শক শাসনের বাধা ছিল পহ্লব শাসকরা।
৩. ভারতীয় উপমহাদেশে মিশর থেকে কী আমদানি করা হত।
উত্তর :মিশর থেকে ভারতীয় উপমহাদেশে ল্যাপিস লাজুলি পাথর আমদানি করা হত।
৪.আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমণকালে তক্ষশিলার রাজার নাম কী ছিল?
উত্তর : তখন তক্ষশিলার রাজার নাম ছিল অন্তি।
৫. বৌদ্ধ সাহিত্যে মিনান্দার কী নামে পরিচিত?
উত্তর : বৌদ্ধ সাহিত্যে মিনান্দার মিলিন্দ নামে পরিচিত।
৬.মিনান্দারের শাসন কোথায় ছিল?
উত্তর : প্রাচীন গন্ধার ও কান্দাহার অঞ্চলে মিনান্দারের শাসন ছিল।
৭. নাগসেন কে ছিলেন?
উত্তর : নাগসেন ছিলেন একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু।
৮. মিনান্দারের রাজধানীর নাম কী ছিল?
উত্তর : মিনান্দারের রাজধানীর নাম ছিল সাকল, যা বর্তমানে পাকিস্তানের শিয়ালকোট নামে পরিচিত।
৯. ব্যাকট্রিয়ার গ্রিক শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে প্রধান কে ছিলেন?
উত্তর : ব্যাকট্রিয়ার গ্রিক শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে প্রধান ছিলেন স্কাইথীয়রা।
১০. গন্ডোফারনেস কখন শাসন শুরু করেন?
উত্তরঃ গন্ডোফারনেস আনুমানিক ২০ বা ২১ খ্রিস্টাব্দে শাসন শুরু করেন।
১১. গন্ডোফারনেস নিজের মুদ্রায় কী উপাধি ব্যবহার করেছিলেন?
উত্তর : গন্ডোফারনেস নিজের মুদ্রায় ‘রাজাধিরাজ’ উপাধি ব্যবহার করেছিলেন।
১২. উপমহাদেশ ও বাইরের পৃথিবীর মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম কী ছিল?
উত্তর : উপমহাদেশ ও বাইরের পৃথিবীর মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম ছিল দূত বিনিময়।
১৩. ডায়ামাকাস কে ছিলেন?
উত্তর : ডায়ামাকাস ছিলেন সেলিউকাসের দূত।
১৪.বিন্দুসারের সঙ্গে কার যোগাযোগ ছিল?
উত্তর : বিন্দুসারের সঙ্গে সিরিয়ার শাসক প্রথম অ্যান্টিয়োকস-এর যোগাযোগ ছিল।
১৫.বিন্দুসার গ্রিক রাজার কাছে কী চেয়েছিলেন?
উত্তর: বিন্দুসার গ্রিক রাজার কাছে একজন পণ্ডিত চেয়েছিলেন।
১৬. উপমহাদেশের বাইরে প্রথম কে বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেছিলেন?
উত্তর : সম্রাট অশোক প্রথম উপমহাদেশের বাইরে বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেছিলেন।
১৭. অশোক কোথায় কোথায় দূত পাঠিয়েছিলেন?
উত্তর : অশোক সিরিয়া, মিশর, ম্যাসিডন, সিংহল প্রভৃতি জায়গায় দূত পাঠিয়েছিলেন।
১৮. রাজগৃহে পাওয়া একটি লেখ থেকে কী পাওয়া যায়?
উত্তর: রাজগৃহে পাওয়া একটি লেখ থেকে হর্ষবর্ধনের সময় চিনের সঙ্গে দূত বিনিময়ের বিষয়ে জানা যায়।
১৯. ইরিথ্রিয়ান কী?
উত্তর : ইরিথ্রিয়ান একটি সাগর।
২০. সমুদ্রে যাতায়াত ও বাণিজ্য বিষয়ে যে বইটি লেখা হয়েছিল তার নাম কী?
উত্তর : সমুদ্রে যাতায়াত ও বাণিজ্য বিষয়ে যে বইটি লেখা হয়েছিল তার নাম ‘পেরিপ্লাস অভ দি ইরিথ্রিয়ান সী’।
❐ সংক্ষেপে (২০-৩০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও :
[প্রতিটি প্রশ্নের মান-৩]
১. অতীতে ভারত ও বহির্বিশ্বের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম কী হয়েছিল?
উত্তর : অতীতে ভারত ও বহির্বিশ্বের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম ছিল গিরিপথ। উত্তর-পশ্চিম দিকে রয়েছে বেশ কয়েকটি গিরিপথ। এই গিরিপথ ধরেই পশ্চিম ও মধ্য এশিয়ার সঙ্গে উপমহাদেশের যোগাযোগ ঘটত। অন্যদিকে হিমালয় পর্বতশ্রেণির গিরিপথ দিয়ে চিন ও তিব্বতের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় ছিল। বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিমের গিরিপথের মধ্য দিয়েই বিদেশিরা উপমহাদেশে এসেছে। ওই পথ ধরেই বিদেশি রাজনৈতিক শক্তিগুলি উপমহাদেশে ক্ষমতা কায়েম করেছে।
২. কুমারজীব কে ছিলেন? তাঁর সম্বন্ধে যা জানো লেখো।
উত্তর : কুমারজীব ছিলেন একজন বিখ্যাত বৌদ্ধ পণ্ডিত। কুমারজীবের বাবার নাম কুমারাযান। মায়ের নাম জীব। ন-বছর বয়সে কুমারজীব মায়ের সঙ্গে কাশ্মীর চলে যান। কুমারজীবের বাবা রাজগুরুর পদ পেয়ে কুচিতে চলে গিয়েছিলেন। কুমারজীব বুদ্ধদত্তের কাছে বৌদ্ধধর্ম ও সাহিত্য বিষয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল ঘোরেন। ততদিনে কুমারজীব বিখ্যাত পণ্ডিত হয়ে ওঠেন। কিছুদিন পর চিনের শাসক কুচি আক্রমণ করেন। কুমারজীব তখন কুচিতেই ছিলেন। সম্রাটের অনুরোধে ৪০১ খ্রিস্টাব্দে তিনি চিনের রাজধানীতে যান। সংস্কৃত ও চিনা দু-ভাষাতেই কুমারজীব দক্ষ ছিলেন। চিনে বৌদ্ধধর্ম ও দর্শন প্রচারের ক্ষেত্রে কুমারজীবের ভূমিকা বিখ্যাত।
৩. চিন থেকে মানুষ কোন উৎসাহে ভারতে এসেছিলেন?
উত্তর : ভারত থেকে চিনে শিক্ষকদের যাতায়াতের ফলে ভারতীয় সংস্কৃতি ও বৌদ্ধধর্ম বিষয়ে চিনের উৎসাহ তৈরি হয়। সেই উৎসাহের ফলেই চিন থেকে বেশ কিছু মানুষ ভারতে আসতে থাকেন। তাঁরা ভারতে পড়াশোনা করেছিলেন। তা ছাড়া বিভিন্ন বৌদ্ধধর্ম কেন্দ্রগুলি ঘুরেও দেখেছিলেন। এমনকি তাও-নান নামে একজন চিনা পণ্ডিত বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের ভারতে আসার উৎসাহ দেখিয়েছিলেন।
৪. মিনান্দার সম্বন্ধে যা জানো লেখো।
উত্তর : গ্রিক রাজাদের মধ্যে সব থেকে বিখ্যাত ছিলেন মিনান্দার। ব্যাকট্রিয়া এলাকায় তাঁর শাসন ছিল। প্রাচীন গন্ধার ও কান্দাহার অঞ্চলে মিনান্দারের শাসন ছিল। ব্যাকট্রিয়ার কিছু অংশ ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত এলাকা খানিকটা তাঁর অধীনে ছিল। বৌদ্ধ সাহিত্যে তিনি মিলিন্দ নামে পরিচিত। বৌদ্ধ ভিক্ষু নাগসেনের প্রভাবে মিনান্দার বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন। পাকিস্তানের শিয়ালকোটে মিনান্দারের রাজধানীর নাম ছিল সাকল।
৫. কার শাসনকালে হুনরা উপমহাদেশে অভিযান করেছিল? হুনদের নেতা কে ছিলেন? হুন শাসনের ফলে কী ঘটেছিল?
উত্তর : স্কন্দগুপ্তের শাসনকালে হুনরা উপমহাদেশে অভিযান করেছিল। হুনদের নেতা ছিলেন তোরমান এবং তাঁর ছেলে মিহিরকুল। হুন-শাসনের ফলে উত্তর-পশ্চিম ভারতের সঙ্গে মধ্য এশিয়ার স্থলবাণিজ্যে ভাটা দেখা দেয়।
৬. গন্ধার শিল্প কীভাবে বুদ্ধমূর্তির পরিবর্তন এনেছিল?
উত্তর : বৌদ্ধধর্মকে ঘিরে গন্ধার শিল্প গড়ে উঠেছিল। আগে বৌদ্ধ মূর্তি বানানো ও পুজো করা নিষিদ্ধ ছিল। গন্ধারের শিল্পীরা নতুন ধরনের বুদ্ধ মূর্তি তৈরি করেন। টিকালো নাক, টানা ভুরু ও আধবোজা চোখ ছিল মূর্তিগুলির বৈশিষ্ট্য। মূর্তির পায়ের জুতোগুলিও রোমান জুতোর মতো দেখতে হত। মূর্তিগুলিতে সোনালি রং ব্যবহার করা হত। গন্ধার অঞ্চলে ভৌগোলিক অবস্থার কারণে নানান শিল্পের প্রভাব সেখানে মিলেমিশে গিয়েছিল।
৭. শক-পহ্লবরা যুদ্ধে কী কী বিষয় উন্নত করেছিল?
উত্তর : শক-পহ্লবরা যুদ্ধে ঘোড়ার ব্যবহারকে উন্নত করেছিল। তারা চলন্ত ঘোড়ায় বসে পিছন ঘুরে তির ছোড়ার কৌশল চালু করে। তারা ভারতীয় উপমহাদেশে ঘোড়ার লাগাম ও জিনের ব্যবহার শুরু করেছিল। তারা ঘোড়ায় চড়ে যুদ্ধ করতে খুব পটু ছিল। শক-কুষাণরা নানারকম পোশাক চালু করেছিল। যেমন— জামা, পাজামা, লম্বা জোব্বা, বেল্ট, জুতো প্রভৃতি। লাল মাটির পাত্র, ইটের পাঁচিল শক-কুষাণরাই চালু করেছিল।
৮. হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীদের বাইরের দেশের সঙ্গে কীরূপ যোগাযোগ ছিল?
উত্তর : সিন্ধু সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ থেকে ঝিনুকের তৈরি হাতা বা চামচ, ঝিনুকের বলয় ও মুক্তা লাগানো অলংকার পাওয়া গেছে। ঝিনুক বা মুক্তা গভীর সমুদ্র থেকেই এরা সংগ্রহ করত। ঐতিহাসিকদের মতে, সমুদ্রপথেই সিন্ধুদেশের সঙ্গে সুমের, মিশর, ইলম প্রভৃতি দেশের যোগাযোগ ছিল। গুজরাটের অন্তর্গত ‘লোথালে’ আবিষ্কৃত পোতাশ্রয়ের ধ্বংসাবশেষ দেখে এই সত্যই প্রমাণিত হয়।
৯. গুপ্তযুগে বহির্বাণিজ্যের পরিচয় দাও।
উত্তর : ভারতবর্ষে গুপ্তযুগ ছিল অভ্যন্তরীণ শান্তিশৃঙ্খলার যুগ। ফলে গুপ্তযুগে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের পাশাপাশি বৈদেশিক বাণিজ্যও যথেষ্ট বিস্তৃত হয়েছিল। গুপ্তযুগে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রধান কারণ ছিল বৈদেশিক বাণিজ্য। গুপ্তযুগে উল্লেখযোগ্য বন্দরগুলির মধ্যে উত্তর-পশ্চিমে সিন্ধু, পশ্চিম উপকূলে কল্যাণ ইত্যাদি।
১০. সুয়ান জাং সম্পর্কে কী জান?
উত্তর : সুয়ান জাং ছিলেন চিনের অধিবাসী। ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারতীয় উপমহাদেশে পৌঁছোন। তখন এই উপমহাদেশ শাসন করতেন হর্ষবর্ধন। চোদ্দো বছর সুয়ান জাং ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে বেড়ান। নালন্দা মহাবিহারে তিনি পড়াশোনা করেন।
১১. চিনা পর্যটক ফাহিয়েন এদেশ সম্পর্কে কী কী লিখেছেন?
উত্তর : ৪০৫ খ্রিস্টাব্দে গুপ্ত শাসনকালে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের রাজত্বে চিন দেশ থেকে বৌদ্ধধর্ম সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য ভারতবর্ষে এসেছিলেন ফা-হিয়েন-সাং। তাঁর বিবরণ থেকে জানা যায় যে, সেই সময় ভারতে রাজনৈতিক শৃঙ্খলা বজায় ছিল। সাধারণ ভাবে মানুষ ছিল সুখী। অবশ্য তিনি একথাও বলেছেন যে তখন চণ্ডালরা ছিল অস্পৃশ্য। জানা যায় যে, প্রাচীন যুগে কড়ির মাধ্যমে দৈনন্দিন জিনিসপত্র কেনাবেচা হত।
১২. এদেশ সম্পর্কে বিদেশি পর্যটকদের লেখা সম্পর্কে তোমার মতামত জানাও?
উত্তর : বিদেশীয় পর্যটকদের বিবরণ আমাদের দেশের ইতিহাসের সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হলেও তাঁদের লিখিত সমস্ত তথ্য একেবারে নির্ভুল নয়। কারণ তাঁদের বেশির ভাগ বিবরণই লোকমুখে শুনে লেখা। তা ছাড়া এ দেশের ভাষা সম্পর্কেও তাঁদের ভালো ধারণা ছিল না। শুধু তাই নয়, ভারতের সমস্ত এলাকা তাঁদের পক্ষে ভ্রমণ করা সম্ভব হয়নি। কেবল কয়েকটি এলাকায় ঘুরে তার ভিত্তিতে সমগ্র ভারতের অবস্থা বোঝা সম্ভব নয়। সবচেয়ে বড়ো কথা হল, তাঁদের লেখায় সমকালীন শাসকের প্রতি পক্ষপাতিত্ব বোঝা যায়।
১৩. আলেকজান্ডার কীভাবে মগধে ক্ষমতা বিস্তার করেন?
উত্তর : আলেকজান্ডার পৃথিবী জুড়ে এক বিরাট সাম্রাজ্য তৈরি করতে চেয়েছিলেন। তাঁর জন্যই পারসিকদের সঙ্গে আলেকজান্ডারের যুদ্ধ বাঁধে। এই যুদ্ধে পারসিকরা পরাজিত হয় এবং আলেকজান্ডার ভারতীয় উপমহাদেশে পৌঁছে যান। আলোকজান্ডার বেশিদিন এই উপমহাদেশে ছিলেন না। ফলে তাঁর ওই অভিযানের প্রভাব ভারতীয় উপমহাদেশে খুব গভীরভাবে পড়েনি। ভারতীয় অনেক শাসক গ্রিক বাহিনীকে সহযোগিতা করেছিল। তক্ষশিলার রাজা অম্ভি আলেকজাণ্ডারকে সাহায্য করেছিলেন। তবে, আলেকজান্ডারের অভিযানের ফলে উপমহাদেশের ছোটো ছোটো শক্তিগুলি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। তার ফলেই পরবর্তীসময়ে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের পক্ষে মগধের ক্ষমতা বিস্তার সহজ হয়।
১৪. ইরিথ্রিয়ান সাগরে যাতায়াত ও বাণিজ্য সহজ হয়েছিল কেন?
উত্তর : ইরিথ্রিয়ান সাগরে যাতায়াত ও বাণিজ্য সহজ হয়েছিল একটি বইয়ের মাধ্যমে। ওই বইটির নাম ‘পেরিপ্লাস অভ দি ইরিথ্রিয়ান সী'। পেরিপ্লাস কথাটির মানে হয় দুটি। এক, জলযানে করে ঘুরে বেড়ানো। অন্যটি জলপথে যাতায়াতের বর্ণনা। ‘পেরিপ্লাস অভ দি ইরিথ্রিয়ান সী’ কথার বাংলা মানে হতে পারে ইরিথ্রিয়ান সাগরে ভ্রমণ এটি গ্রিক ভাষায় লেখা। বইটির লেখকের নাম জানা যায়নি। বইটি যে একজন গ্রিক তাঁর মাতৃভাষায় লিখেছেন তা বোঝা যায়। তিনি মিশরে থাকতেন। ওই বইটিতে ইরিথ্রিয়ান সাগরের বন্দর ও ব্যাবসাবাণিজ্যের নানা বিষয়ের খুঁটিনাটি বর্ণনা রয়েছে। এই বইটি বণিকদের খুব সাহায্য করেছিল। বইটি পড়ে দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু বিষয়ে ধারণা তৈরি হয়। ওই বায়ুর সাহায্যে ইরিথ্রিয়ান সাগরে যাতায়াত ও বাণিজ্য সহজ হয়েছিল।
১৫. গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলির সঙ্গে কীভাবে ওই বন্দরগুলির ব্যাবসা চলত?
উত্তর : পশ্চিম উপকূলের বন্দরগুলির সঙ্গে রোমের বাণিজ্য চলত। পশ্চিম উপকূলের সেরা বন্দর ছিল নর্মদা নদীর মোহনায় ভৃগুচ্ছ। উত্তরের কোঙ্কন উপকূলে বেশ কয়েকটি বন্দর ছিল। তার মধ্যে বিখ্যাত ছিল কল্যাণ বন্দর। শক শাসক নহপান ওই বন্দরটি অবরোধ করেছিলেন। মালাবার উপকূলের বন্দরগুলি দিয়ে গোলমরিচ ও অন্যান্য মশলার বাণিজ্য চলত। তামিলনাড়ুতেও বেশ কিছু বন্দর ছিল। কাবেরী নদীর বদ্বীপ এলাকায় বিখ্যাত বন্দর ছিল কাবেরীপট্টিনম। অন্ধ্ৰ উপকূলেও বন্দর ছিল। সেখান থেকে জাহাজ ছাড়ত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের
ক্ষেত্রে পূর্ব উপকূলের খুব গুরুত্ব ছিল।
১৬.তাম্রলিপ্ত কী? কীভাবে এর খ্যাতি নষ্ট হয়?
উত্তর : তাম্রলিপ্ত হল প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের একটি পরিচিত বন্দর ও নগর। তাম্রলিপ্তকে দামলিপ্ত নামেও পরিচয় দেওয়া হত। বিদেশি লেখকদের বর্ণনায় এর তামালিতেস গ্রিক নামও পাওয়া যায়। খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম-অষ্টম শতক পর্যন্ত এই সামুদ্রিক বন্দরের কাজকর্ম চলেছিল। এই বন্দরটিতে স্থলপথ ও জলপথ দুই-ই ছিল। সম্ভবত এটি ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের কাছাকাছি। ওই বন্দর থেকেই ফাসিয়ান জাহাজে উঠেছিলেন। স্থলপথেও তাম্রলিপ্ত যাতায়াত করা যেত। বাণিজ্য ছাড়াও তাম্রলিপ্ত নগর পড়াশোনার কারণে বিখ্যাত ছিল। এক সময় নদীখাতটি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে বন্দর ও নগরটির গুরুত্ব কমে যায়। নগর হিসেবেও তার খ্যাতি নষ্ট হয়।
১৭. উপমহাদেশের সঙ্গে বাইরের অঞ্চলগুলির মধ্যে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বৈচিত্র্য কীভাবে তৈরি হয়েছিল?
উত্তর : জাতি ও উপজাতিগুলি মিশে গিয়েছিল উপমহাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতিতে। পারসিক সাম্রাজ্যের অধীন এলাকাগুলিতে আরামীয় ভাষা ও লিপি চলত। সম্রাট অশোকও ওই আরামীয় ভাষা ও লিপি ব্যবহার করেন। আরামীয় লিপি থেকে খরোষ্ঠী লিপি তৈরি হয়েছিল। দুটি লিপিই ডানদিক থেকে বাঁদিকে লেখা হত। পারসিক শাসকরা উঁচু পাথরের স্তম্ভ বানাতেন। তার প্রভাব পড়েছিল মৌর্য শাসকদের উঁচু পাথরের স্তম্ভ বানানোর ভাবনায়। পারসিক শিল্পীদের হাতে ইন্দো-পারসিক স্থাপত্যশিল্প শুরু হয়েছিল। ধীরে ধীরে গ্রিকরাও ভারতীয় উপমহাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে যায়। তাঁরা বৌদ্ধধর্মেরও চর্চা করতে থাকে। আবার, অপরদিকে গ্রিকদের থেকে নতুন ধরনের মুদ্রাও তৈরি করতে শিখেছিল ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ। শিল্প, গণিত ও জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চায় গ্রিক ও ভারতীয় ভাবনাচিন্তার বিনিময় দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় গন্ধার শিল্প।
১৮. বৈদিক যুগে বাইরের দেশের সঙ্গে কেমন যোগাযোগ ছিল?
উত্তর : কৃষি ও পশুপালন বৈদিক আর্যদের প্রধান জীবিকা হলেও ওই যুগে কিছু কিছু ব্যাবসাবাণিজ্যেরও খবর পাওয়া যায়। ওই যুগে বিভিন্ন প্রকার শিল্পদ্রব্য তৈরি হত। শিল্পের মধ্যে ছিল বস্ত্রশিল্প, মৃৎশিল্প, চারুশিল্প ইত্যাদি। ব্যাবসাবাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন আর্যদের অতিরিক্ত আয়ের উৎস হিসেবে মনে করা হত। তখন মূলত বিনিময়-বাণিজ্য চলত। তবে ওই যুগে ‘মনা’ ও ‘নিষ্ক’ নামক স্বর্ণমুদ্রার কথা জানা যায়। মনা ও নিস্ক নামক মুদ্রা ও গোরু ছিল বিনিময়ের মাধ্যম। বৈদিক যুগে প্রধানত স্থলপথেই ব্যাবসাবাণিজ্য চলত। তবে ঋবেদে সমুদ্রের উল্লেখ দেখে অনেকে মনে করেন, ওই সময় সমুদ্র সম্পূর্ণ অজানা ছিল না। তবে জলপথ ব্যবহার হত কিনা—এ বিষয়ে নিশ্চিত কিছু বলা যায় না।
১৯. মৌর্যযুগে বাইরের দেশের সঙ্গে কেমন যোগাযোগ ছিল বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর : মৌর্যযুগে অন্তর্দেশীয় ও বহির্বাণিজ্য ভীষণ উন্নতি লাভ করেছিল। দেশের মধ্যে মূলত নদীপথে নৌকায় এবং স্থলপথে গোরুরগাড়ি ও উটের পিঠে ব্যাবসাবাণিজ্য চলত। স্থলপথে বণিকদের পথ দেখাবার জন্য স্থলনিয়ামক নামে সম্রাটের বেতনভুক্ত এক শ্রেণির লোক থাকত। মৌর্যযুগে বহির্বাণিজ্যও যথেষ্ট উন্নত ছিল। আলেকজান্ডারের ভারত অভিযানের সময় থেকেই পশ্চিম এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক লেনদেন গড়ে উঠেছিল। বাণিজ্য চলত জল ও স্থল উভয়পথেই। খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে ভারত ও রোমের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মৌর্যযুগে চিন, শ্রীলঙ্কার সঙ্গেও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়। মৌর্যযুগে ভারতবর্ষ যেসব জিনিস আমদানি করত তার চেয়ে রপ্তানি করত বেশি। অর্থাৎ, বাণিজ্যে ভারতের লাভের পরিমাণ ছিল বেশি।
২০. হুনদের আদি বাসস্থান কোথায় ছিল? হুনদের ক-টি শাখা ছিল? তারা কখন কীভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল? রাজপুত কারা?
উত্তর : হুন জাতির বাসস্থান ছিল মধ্য এশিয়ায়। খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতক নাগাদ হুন জাতির এক অংশ চিনের ইউ-চিদের বিতাড়িত করে সেখানে বসবাস আরম্ভ করে। ইউ-চি হুন গোষ্ঠী আবার দুটি শাখায় ভাগ হয়ে যায়। যথা—(১) কৃষ্ণ হুন ও (২) শ্বেত হুন। শ্বেত হুনরা খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতকে ভারত আক্রমণ করে। তখন গুপ্ত রাজারা ভারত শাসন করছিলেন। গুপ্তদের শাসন দুর্বল হয়ে পড়লে হুন নেতা তোরমান ভারত আক্রমণ করেন। পরে তাঁর পুত্র মিহিরকুল গন্ধার, কাশ্মীর দখল করে বর্তমান পাকিস্তানের শিয়ালকোটে তাঁর রাজধানী প্রতিষ্ঠা করেন। মিহিরকুলের মৃত্যুর পর হুনজাতি দুর্বল হয়ে পড়ে। শেষে তারা ভারতীয় সংস্কৃতি গ্রহণ করে এবং ভারতের মূল স্রোতে মিশে যায়। হুন জাতির সঙ্গে ভারতীয়দের মিশ্রণে সৃষ্টি হয় শক্তিশালী রাজপুত জাতি।
২১. প্রাচীন কালে কোন কোন দেশের সঙ্গে ভারতবর্ষের বাণিজ্যিক যোগাযোগ ঘটেছিল?
উত্তর : খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকেই ভারতবর্ষের সঙ্গে বহির্জগতের যোগাযোগ ছিল। সিন্ধু সভ্যতার সময় মেসোপটেমিয়ার সঙ্গে ভারত যে বাণিজ্য করেছে তা তাদের লিখিত তথ্যে এবং তখনকার শীলমোহরে পাওয়া যায়। পারস্য উপসাগরে বাহরিন ছিল একটি বাণিজ্যকেন্দ্র। বাণিজ্য চলত দক্ষিণ ভারতীয় উপকূলগুলোর সঙ্গেও। মধ্য এশিয়া, আরব, গ্রিস, মালয়, রোম, চিন, সুমাত্রা, জাভা অঞ্চলের সঙ্গেও ভারতের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময় ছিল। ভারতে তখন অনেকগুলি সামুদ্রিক বন্দরের কথাও জানা গেছে। ভারতের বাইরে চিন থেকে ব্যাকট্রিয়া দিয়ে রোমান সাম্রাজ্যের পূর্বে পলেমিয়া পর্যন্ত একটি বাণিজ্য রাস্তার নামই ছিল ‘রেশমের রাস্তা'। এ পথে বাণিজ্য ছাড়া সংস্কৃতির আদানপ্রদানও হয়েছে।
২২. প্রাচীন যুগে ভারতের সঙ্গে বহির্ভারতের সাংস্কৃতিক বিনিময় সম্পর্কে যা জানো লেখো।
উত্তর : খ্রিস্টপূর্ব যুগে অশোক থেকে কনিষ্ক পর্যন্ত রাজাদের সময়ে নানা ভাবে ভারতীয় সংস্কৃতি ও বৌদ্ধধর্ম মধ্য এশিয়ায় এবং চিনে ছড়িয়ে পড়ার খবর জানা যায়। গ্রিস ও রোমের শিল্পধারা ভারতীয় শিল্পধারার সঙ্গে মিশে গন্ধার শিল্পের জন্ম দিয়েছিল। সংস্কৃতি, ধর্ম, সাহিত্যের পারস্পরিক আদানপ্রদানের মধ্য দিয়ে ভারতীয় সংস্কৃতি ও বহির্ভারতীয় সংস্কৃতি উন্নততর হল। চিনের সঙ্গে ভারতের নিবিড় যোগাযোগ ছিল চিরকালই। দুই দেশের মধ্যে সব সময়ই লোক যাতায়াত করেছে। বাণিজ্য, শিল্প, ধর্ম বা পড়াশোনা করার জন্য ফা-হিয়েন, হিউয়েন-সাং এদেশের মাটিতে পদার্পণ করেছেন। তাঁরা বৌদ্ধধর্ম সম্বন্ধে শিক্ষালাভ করেছেন। তাঁদের নানা গ্রন্থ আমাদের ইতিহাসের মূল্যবান উপাদান। ভারতীয় সংগীত, চিকিৎসা শাস্ত্র, ধর্ম, গণিত চিনদেশে সমাদর লাভ করেছে।
২৩. প্রাচীন কালে আরব ও আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের যে শিল্প-সাহিত্যের বিনিময় ঘটেছিল তার পরিচয় দাও।
উত্তর : সেই যুগে আফগানিস্তানের মানুষের সঙ্গে পোশাক-আশাক, খাওয়া- দাওয়ায় ভারতীয়দের খুব মিল ছিল। সেখানকার কোনো কোনো শহরে বহু বৌদ্ধবিহার ছিল। সেখানে অজন্তার মতো দেয়াল ও বহু সংস্কৃত ভাষায় পাণ্ডুলিপি পাওয়া গেছে। এখানকার চিত্রে পারসিক শিল্পের প্রভাব আছে। পারসিক, গ্রিক শিল্পের প্রভাব ভারতীয় শিল্পেও দেখা যায়। অনুমান করা যায়, খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতক থেকে আরব দেশেও ভারতের জ্যোতির্বিদ্যা, গণিত শাস্ত্র, চিকিৎসা বিদ্যা ও অন্যান্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপক বিস্তার ঘটে। এই যোগাযোগগুলি শুরু হয়েছিল মূলত ব্যাবসাবাণিজ্য ও ধর্মকে কেন্দ্র করে। পরে তা শিল্প, সংস্কৃতি ও সাহিত্যকেও প্রভাবিত করেছে। এই দেওয়া-নেওয়ার মধ্য দিয়েই বিদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। বিদেশি আক্রমণও হয়েছে ভারতের মাটিতে বারবার। ভারত কখনও তা প্রতিহত করেছে, কখনও বিপর্যস্ত হয়েছে। কিন্তু ভারতবর্ষ তার চিরকালীন হৃদয়বত্তা দিয়ে বহু বিদেশিকে আপন করে নিয়েছে। ফলে তারা আমাদের সঙ্গে মিলে মিশে এক মিশ্র সংস্কৃতি তৈরি করেছে।
২৪. ফাসিয়ান সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
উত্তর : ৩৯৯ খ্রিস্টাব্দে পাঁচজন সহসন্ন্যাসী সমেত ফাসিয়ান ভারতে পৌঁছোন। তিনি কাশ্মীর হয়ে উপমহাদেশে এসেছিলেন। উত্তর ভারতের বহু অঞ্চল ঘুরে বেড়ান তিনি। পাটলিপুত্র থেকে বৌদ্ধধর্ম ও সংস্কৃত সাহিত্যচর্চা করেছিলেন। দু-বছর তিনি তাম্রলিপ্ততেও ছিলেন। তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার কথা ‘ফো-কুয়ো-কি’ বইতে লিখেছিলেন। ফাসিয়ান দেশে ফেরার সময় ভারত ও সিংহল থেকে অনেক বৌদ্ধ পুঁথি নিয়ে গিয়েছিলেন।
❐ রচনাধর্মী প্রশ্নের উত্তর দাও :
[প্রতিটি প্রশ্নের মান-৮]
১. ভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গে পারস্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পর্কে যা জানো লেখো।
উত্তর : ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম দিকে ছিল গন্ধার রাজ্য। গন্ধারের মধ্য দিয়েই পারসিক সাম্রাজ্যের সঙ্গে উপমহাদেশের যোগাযোগ তৈরি হয়েছিল। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের দ্বিতীয় ভাগে পারস্যের হখামনীষীয় শাসকরা গন্ধার অভিযান করেছিলেন। তাঁদের শ্রেষ্ঠ সম্রাট ছিলেন দরায়ুষ। তাঁর শাসন উপমহাদেশের বেশ কিছু অংশে ছড়িয়ে পড়েছিল। দরায়ুষের লেখা একটি বইতে হিদুষ শব্দটি পাওয়া যায়। সিন্ধু নদ থেকেই ওই শব্দটি তৈরি হয়েছিল। গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাসের লেখা থেকে ইন্দুস বা ইন্ডিয়া ছিল পারসিক সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশ তা জানা যায়। সিন্ধু এলাকা দখল করার জন্য দরায়ুষ ওই অঞ্চল জয় করেন। উত্তর-পশ্চিম ভারত ও উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম অংশ পারসিক সাম্রাজ্যের সঙ্গে অনেক দিন যুক্ত ছিল। তৃতীয় দরায়ুষের সময়ে আলেকজান্ডার পারস্য অভিযান করেন। তাতে পারসিকরা হেরে যায়। ফলে হখামনীষীয় সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ে। সিন্ধু এলাকাতে পারসিক অধিকার নির্মূল হয়ে যায়।
২. আলেকজান্ডার সম্বন্ধে যা জানো লেখো।
উত্তর : গ্রিক শাসক আলেকজান্ডার পৃথিবী জুড়ে এক বিশাল সাম্রাজ্য তৈরি করতে চেয়েছিলেন। তার জন্য তিনি পারসিকদের বিতাড়িত করার কথা ভাবেন এবং এর ফলে তাঁর পারসিকদের সঙ্গে যুদ্ধ বাধে। সেই যুদ্ধে পারসিকরা পরাজিত হন। পারসিকদের হারিয়ে আলেকজান্ডার ভারতীয় উপমহাদেশে প্রবেশ করেন। আলেকজান্ডার বেশিদিন উপমহাদেশে ছিলেন না। সেইজন্য ভারতীয় উপমহাদেশে তাঁর প্রভাব বিশেষভাবে পড়েনি। তবে এই যুদ্ধে অনেক গ্রিক শাসক বাহিনী আলেকজান্ডারকে যুদ্ধে সাহায্য করেছিল। এই অভিযানের প্রভাবে এদেশের ছোটো ছোটো শক্তিগুলি নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়েছিল। ফলে মৌর্যসম্রাট-এর পক্ষে মগধের ক্ষমতা বিস্তার সহজ হয়ে পড়েছিল। আলেকজান্ডার পারসিক সাম্রাজ্যের পার্সিপোলিস নগরী ধ্বংস করে দেন। তিনি ভারতীয় উপমহাদেশে কয়েকটি নগর তৈরি করেছিলেন। সেগুলিতে গ্রিকরা থাকত। তাঁর প্রচেষ্টায় ভারতের সঙ্গে অন্যান্য দেশগুলির যাতায়াতের পথ তৈরি করেছিলেন আলেকজান্ডার।
৩. শক-কুষাণরা ভারতীয় উপমহাদেশে ধর্ম, শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রভাব কীভাবে ফেলেছিল তার বর্ণনা দাও। এই শিক্ষাদানের জন্য শিক্ষক হিসেবে কোন কোন পণ্ডিত ছিলেন?
উত্তর : মধ্য এশিয়া থেকে আসা শক-কুষাণ শাসকরা অনেকেই বিন্নুর উপাসক হয়ে পড়েন। অনেকে বৌদ্ধধর্মও গ্রহণ করেছিলেন। অসংখ্য কুষাণ শিবের উপাসনা করতেন। তাঁদের মুদ্রায় নানা দেবদেবীর মূর্তি খোদিত ছিল। আগে গৌতম বুদ্ধের কোনো মূর্তিকে সামনে বসিয়ে পুজো করা হত না। বুদ্ধের কোনো প্রতীক বা চিহ্নকে সামনে রেখে পুজো করা হত। অনেক পণ্ডিত-শিক্ষক উপমহাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে যেতেন, শিক্ষা দিতেন। এই বৌদ্ধধর্ম শিক্ষার চর্চা করতে বাইরে থেকেও বহু শিক্ষার্থীও আসতেন। যেসব শিক্ষার্থীরা এই শিক্ষা নিতে আসতেন তাদের মধ্যে চিন দেশে এই শিক্ষা খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। চিন দেশে বৌদ্ধধর্মের প্রচার খুব বেড়ে গিয়েছিল। কাশ্মীর অঞ্চলেও এই বৌদ্ধধর্ম শিক্ষার চর্চা হত। বুদ্ধযশ ছিলেন একজন কাশ্মীরি বৌদ্ধ পণ্ডিত। বৌদ্ধ পণ্ডিত পরমার্থও পড়াশোনার জন্য চিনে গিয়েছিলেন। উপমহাদেশের নাটকের চর্চার মধ্যেও গ্রিক প্রভাব পড়েছিল। নাটকের মঞ্চ বানানো, পর্দার ব্যবহার, সবের মধ্যেই ছিল গ্রিক প্রভাব। নাটকের পর্দাকে সংস্কৃতে যবনিকা বলা হয়। গ্রিকরাই এই পর্দা ফেলার প্রথা চালু করেছিল। তাদের যবন নাম থেকেই যবনিকা শব্দটি তৈরি হয়েছিল। সাহিত্যচর্চায়ও তাঁদের উৎসাহ চোখে পড়ার মতো।
৪. সিন্ধু সভ্যতার যুগে উপমহাদেশের সঙ্গে বহির্ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক কেমন ছিল?
উত্তর : ব্যাবসাবাণিজ্যে সিন্ধুবাসী যথেষ্ট দক্ষ ছিল। তাদের সময়ে দেশে ও বহির্দেশে এই ব্যাবসা চলত। চাকাবিশিষ্ট গাড়ি ও নৌকার সাহায্যে ব্যাবসাবাণিজ্য চলত। মধ্য এশিয়া ও পশ্চিম এশিয়ার অনেক দেশের সঙ্গে হরপ্পার ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য সম্পর্ক ছিল। মিশর, ক্রীট এবং বিশেষভাবে মেসোপটেমিয়া এবং সুমের-এর সঙ্গে ব্যাপক বাণিজ্যিক বিনিময় চলত। শুধু স্থলপথেই নয়, জলপথেও বাণিজ্য চলত। সম্প্রতি লোথাল-এ খননকার্যের ফলে প্রাপ্ত তথ্যসমূহ ব্যাপক ভাবে সেই সময়ে সামুদ্রিক বাণিজ্যের পরিচয় বহন করে। রপ্তানি-দ্রব্যের মধ্যে প্রধান ছিল বিভিন্ন বিলাস দ্রব্য। যেমন—ময়ূর, হাতির দাঁত ও তা থেকে তৈরি নানা দ্রব্যাদি, মণিমুক্তা ও সুতিবস্ত্র ইত্যাদি। আমদানি হত প্রধানত রুপো ও নীলকান্তমণি। মেসোপটেমিয়ার বহু ভারতীয় বণিক স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন। এদেশের শিল্পের জন্য দেশ-বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি করা হত। যেমন – হিমালয় থেকে দেবদারু কাঠ, বেলুচিস্তান থেকে তামা, পারস্য থেকে রুপা প্রভৃতি। সিন্ধুর বিভিন্ন দ্রব্য মেসোপটেমিয়ায় রপ্তানি করা হত। তখন মুদ্রাব্যবস্থা চালু হয়নি। তাই বিনিময়ের মাধ্যমে কেনা-বেচা চলত। মেসোপটোমিয়ার সঙ্গে যে সুদৃঢ় বাণিজ্যিক যোগাযোগ ছিল, তা বোঝা যায় উভয় দেশের প্রাপ্ত পরস্পরের নিদর্শন থেকে। প্রকৃতপক্ষে সিন্ধু উপত্যকার অধিবাসীরা যে উন্নত ও বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত ছিলেন, সুসংগঠিত বাণিজ্য ছাড়া তা আজও সম্ভব হত না। মহেন-জো-দারো ও হরপ্পার নিরাপত্তার জন্য যে বড়ো বড়ো দুর্গ নির্মিত হয়েছিল, তার প্রমাণও পাওয়া গেছে। হরপ্পার দুর্গটির দেয়াল ১৩ মিটার চওড়া ছিল। দেয়ালের কোণগুলিতে গম্বুজ ছিল। এটিকে অনেকে পুরোহিত ‘নাসকের রাজপ্রসাদ' বলে মনে করেন।
৫. ভারতবর্ষে মৌর্য আমলে বহির্বাণিজ্য সম্বন্ধে যা জানো লেখো।
উত্তর : ভারতে গ্রিক আক্রমণের সময় থেকে মিশর, সিরিয়া ও গ্রিসের বাণিজ্যিক যোগাযোগ গড়ে ওঠে। মৌর্যযুগে ভারতে অভ্যন্তরীণ ও বহির্বাণিজ্য দুটিই প্রচলিত ছিল ব্যাপক হারে। এই সঙ্গে ভারতীয় পণ্য জাহাজ পশ্চিম উপকূলের বন্দরগুলি থেকে ছেড়ে আরব সাগর ও পারস্য সাগর পেরিয়ে পশ্চিমের দেশগুলিতে চলে যেত। কখনও আবার লোহিত সাগরের ওপর দিয়ে মিশরে পৌঁছোেত। স্থলপথে পারস্য, এশিয়া মাইনর, চিন, তিব্বত প্রভৃতি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চলত। স্থলপথে বাণিজ্যের বাহন ছিল উট ও গোরুরগাড়ি। মৌর্যযুগে সোপারা, ব্রোচ (ভারুচ) ও ভৃগুচ্ছ এবং তাম্রলিপ্ত ছিল প্রধান বন্দর। পশ্চিম এশিয়া থেকে মৌর্য রাজারা মিষ্টি মদ ও শুকনো ডুমুর আমদানি করতেন। এই দেশ থেকে রপ্তানি হত বিলাসসামগ্রী ও মসলিন বস্ত্র। সুদূর রোম থেকে আসত সোনা, রুপা, চিনামাটির বাসন। আর যেত সুতি, মসলিন কাপড় ও বিভিন্ন মশলা। এ ছাড়াও ভারত মূল্যবান পাথর, মণিমুক্তা, হাতির দাঁতের কাজ, সুগন্ধি কাঠ বিদেশে চালান দিত। চিন থেকে স্থলপথে ভারতে আসত রেশম।
৬. প্রাচীন ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো।
উত্তর : ভারতীয় উপমহাদেশে সুপ্রাচীন কাল থেকেই বিদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল। হরপ্পা সভ্যতার সময়ে ভারতের সঙ্গে সমকালীন সভ্যতাগুলির বাণিজ্যিক বিনিময় গড়ে উঠেছিল। মেসোপটেমিয়া সভ্যতায় পাওয়া হরপ্পার ছাপযুক্ত কাপড়ের গাঁট-এর নিদর্শন দেয়। এই সময়ে পণি নামে একটি শ্রেণি ব্যবসায়ে লিপ্ত ছিলেন। বৈদিক যুগের ঋগ্গ্বেদে একশো দাঁড়বিশিষ্ট নৌকার কথা জানা যায়। এ থেকে মনে করা হয় আর্যরা সমুদ্র বাণিজ্য করত। মৌর্যযুগে ভৃগুচ্ছ, সোপারা, তাম্রলিপ্ত প্রভৃতি বন্দরের মধ্য দিয়ে সিরিয়া, গ্রিস, মিশর, চিন, সিংহলে বাণিজ্যিক বিনিময় ছিল। কুষাণ যুগে ভারতের সঙ্গে চিন ও রোমের গভীর বাণিজ্যিক লেনদেন ছিল। রেশম পথের কিছু অংশ কুষাণদের আওতাধীন ছিল। গুপ্তযুগে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকায় দেশের ভিতরের বাণিজ্য এবং বহির্বাণিজ্যেরও সম্প্রসারণ ঘটেছিল। এ সময় তাম্রলিপ্ত বন্দরের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চোলরাজাদের সময়ে দক্ষিণ ভারত বহির্বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। পরবর্তী সময়ে বাংলার পাল ও সেন যুগে বহির্বাণিজ্য আগের চেয়ে কিছুটা কমে গিয়েছিল।
No comments
Hi Welcome ....