Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Top Ad

Breaking News:

latest

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল অজানা রহস্য | বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ইতিহাস | বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্য

  বারমুডা ট্রায়াঙ্গল অজানা রহস্য | বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ইতিহাস  আটলান্টিক-ক্যারিবিয়ন সমুদ্র এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে প্রথমে জাহাজ ও পরে বিম...

 

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল অজানা রহস্য | বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ইতিহাস 

আটলান্টিক-ক্যারিবিয়ন সমুদ্র এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে প্রথমে জাহাজ ও পরে বিমান রহস্যজনক ভাবে অদৃশ্য হয়ে আসছে। এ ছাড়া নানা -রকম অলৌকিক কান্ডও ঘটছে বুদ্ধিতে যার, ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে না। সমুদ্রের এই এলাকাটিকে আজকাল বলা হচ্ছে বারমুডা ট্র্যাঙ্গল কিন্তু রহস্যজনক নিখোঁজ বা ঘটনাগুলি এই ত্রিকোণ সীমানার মধ্যে আবদ্ধ নয়, সীমানা আরও কিছু, বিস্তৃত, এবং সেই বিস্তৃত এলাকেতেও নানা ঘটনা ঘটেছে। আটলান্টিক-মহাসাগরের প্রায় 4 লক্ষ 40 হাজার মাইল এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে বার্মুডা ট্র্যাঙ্গল। বিশ্বের সবচেয়ে রহস্যময় স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম হলো বারমুডা ট্রায়াঙ্গল।

জাহাজ হোক বা বিমান— এই অঞ্চলে এক বার ঢুকলে তার হদিশ মিলত না।  আটলান্টিক মহাসাগরের তিন বিন্দু দ্বারা সীমাবদ্ধ ত্রিভূজাকৃতির এই এলাকাকে ডেভিল’স ট্রায়াঙ্গল-ও বলা হয়। যে তিনটি প্রান্ত নিয়ে কাল্পনিক এই ত্রিভূজ তৈরি হয়েছে তার এক প্রান্তে রয়েছে আমেরিকার ফ্লোরিডা, আর এক প্রান্তে পুয়ের্তো রিকো এবং অপর প্রান্তে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ।

১৯৪৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত একাধিক রহস্যজনক ঘটনা ঘটেছে এই অঞ্চলে। এই কাল্পনিক ত্রিভূজের মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করা বহু জাহাজ এবং বিমান রহস্যজনক ভাবে উধাও হয়ে গিয়েছে। আজ পর্যন্ত সেই ধ্বংসাবশেষ এর কোনও খোঁজ মেলেনি। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নিয়ে যাঁরা লিখেছেন, তাদের মতে ক্রিস্টোফার কলম্বাস সর্বপ্রথম এই ত্রিভুজ নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা লিখেছিলেন। তাঁর মতে, তাঁর জাহাজের নাবিকেরা এই অঞ্চলে আলো এবং বিদ্যুতের চমক এবং আকাশে ধোঁয়া দেখেছেন। এ ছাড়াও এখানে তিনি কম্পাসের উল্টোপাল্টা দিক নির্দেশের কথা বলেছেন।

১৯৪৫ সালের ৫ ডিসেম্বর ফ্লোরিডার ফোর্ড লডারডেল-এর নাভাল এয়ার স্টেশন থেকে দু'টো বেজে ১০ মিনিটে পাঁচটি গ্রুমান অ্যাভেঞ্জার আকাশে উড়েছিল। বিমানগুলো ছিল টর্পেডো বম্বার। প্রশিক্ষণের জন্য ফ্লাইট ১৯-এর সঙ্গে এই চারটি অ্যাভেঞ্জার রওনা দেয়। ফ্লাইট ১৯-এর কম্যান্ডার ছিলেন চার্লস টেলর। এ ছাড়াও তাঁর সঙ্গে ১৩জন শিক্ষানবিশ ছিলেন। টেলর-ই ছিলেন তাঁদের মধ্যে একমাত্র অভিজ্ঞ। দলনেতাকে অনুসরণ করেই বাকি চারটি বিমান অগ্রসর হয়। বিমানগুলো যখন উড়ান শুরু করে, তখন আকাশ ছিল পরিষ্কার। ঝড়ের কোনও পূর্বাভাস ছিল না। কিন্তু শেষ বারের মতো ঘোরার সময় অদ্ভুত সমস্যা দেখা দেয়। টেলর বুঝতে পারেন তিনি সঠিক পথে নেই। টেলর জানান, ফ্লাইট ১৯-এর কম্পাস কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। একই সঙ্গে বাকি বিমানগুলির কম্পাসও কাজ করা বন্ধ করে দেয়। 

সাড়ে ৩টে নাগাদ টেলর কন্ট্রোল রুমকে মেসেজ করে বলেন, দিক নির্ণয়ের কোনও যন্ত্রপাতি কাজ করছে না। ফ্লাইট ১৯ ঠিক করে পশ্চিম দিক দিয়ে অগ্রসর হবে। কিন্তু পশ্চিম দিক ঠিক কোন দিকে? সমস্ত যন্ত্র খারাপ হয়ে যাওয়ায় সেটাই বোঝা যাচ্ছিল না তখন। পৌনে ৫টা নাগাদ কন্ট্রোল রুম বুঝে যায়, ফ্লাইট ১৯-সহ বাকি বিমানগুলির কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ রেডারে একবার দেখা যায় ফ্লাইট ১৯-কে। তারপর রেডিও যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ফ্লাইট ১৯-এর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার জরুরি বার্তা রেডিও-র মাধ্যমে এলাকার জাহাজ এবং বিমান বাহিনীকে দেওয়া হয়। পিবিএম-৫ মডেলের একটি বিমান ফ্লাইট ১৯-কে খুঁজতে বের হয়। এই বিমানটিকে ২৯ ডিগ্রি উত্তর এবং ৭৯ ডিগ্রি পশ্চিমে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে এই বিমানটিরও মাঝ আকাশে হারিয়ে যায়। 

২৮শে ডিসেম্বর, ১৯৪৯ সাল নির্মেঘ অন্ধকার আকাশে রাশি রাশি তারা ঝিকমিক করছে। পরিষ্কার আকাশ। মৃদু মৃদু হাওয়া বইছে। ডগলাস ডিসি-৩, বিমান, নম্বর N16002,মিয়ামি এয়ার- পোর্টের দিকে এগিয়ে চলেছে। বিমানে রয়েছে পুয়েরটো রিকোব একদল যাত্রী। ওরা আমেরিকায় কাজকর্ম করে। আর একটু পরেই বিমান ল্যাণ্ড করবে। ককপিটে বিমানের ক্যাপটেন রবার্ট লিনকুইস্ট মাইক্রোফোনের সামনে মুখ রেখে বলতে লাগল : মিয়ামি টাওয়ার, দিস ইজ এয়ারবোর্ন ট্রান্সপোর্ট N16002 'ওভার'।  মিয়ামি টাওয়ার উত্তর দিলেন: 'এয়ারবোর্ন ট্রান্সপোর্ট (N16002) এন ওয়ান সিক্স জিরো জিরো টু, দিস ইজ মিয়ামি টাওয়ার, গো অ্যাহেড।' মিয়ামি টাওয়ার বলছি। ঠিক আছে,  তোমরা এগিয়ে এসো, এয়ারপোর্ট দেখতে পেলে আমাদের বলবে'।

কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে মিয়ামি টাওয়ার আবার বলল : ‘এয়ারবোর্ন ট্রান্সপোর্ট N-16002। মিয়ামি টাওয়ার বলছি। শুনতে পাচ্ছ? শুনতে পাচ্ছ ? উত্তর দাও' । কিন্তু N১৬০০২ কিছু সংখ্যক যাত্রী বোঝাই সেই ডিসি-৩, বিমান কোনো উত্তরই দেয় নি।  এয়ার বোর্ন ট্রান্সপোর্ট কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে মিয়ামি টাওয়ার আবার বলল : ‘এয়ারবোর্ন ট্রান্সপোর্ট N-16002 মিসিং,বিমান নিখোঁজ। সমুদ্রের বুকে তখন অনেক জাহাজ ছিল, আকাশেও বিমান ছিল, অনুসন্ধানের জন্যে কিছু বিমান আকাশে উঠলো। পরিষ্কার আবহাওয়া, শাস্ত সমুদ্র, প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগের খবর নেই । সান জুয়ান, পুয়ের্তো রিকো থেকে মিয়ামি যাওয়ার সময় রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায় বিমানটি। স্থান জুয়ান থেকে ফ্লোরিডা পর্যন্ত সমুদ্র, গালফ অফ মেক্সিকো, ক্যারিবিয়ান, এভার- :স্লেভ, ফ্লোরিডা বে, কিজ, কিউবা, হিসপ্যানিওলা এবং বাহামা; সর্বত্র খোঁজা হলো। পাইলট, কো-পাইলট এয়ার-হস্টেস এবং সাতাশ জন যাত্রী ও দু'জন শিশু সমেত সেই বিমান আজও নিখোঁজ।  

প্রশান্ত মহাসাগরে জাপানের উপকূলের কাছেই এই ‘ডেভিল সি’-র ভৌগোলিক অবস্থান। বারমুডা ট্রায়াঙ্গল উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিমে। এটি জাপানের দক্ষিণে। জাপানের রাজধানী টোকিও থেকে ১০০ কিমি দূরে মিয়াকের কাছেই নাকি আজব সব ঘটনা ঘটে। সেই পঞ্চাশের দশক থেকেই নাকি এখানে অসংখ্য জাহাজ উধাও হয়ে গিয়েছে। খোঁজ করতে গিয়েও আর নাকি ফিরে আসেননি কেউ। ১৯৫২-১৯৫৪ সাল নাগাদ নাকি পরপর বেশ কয়েকটি জাহাজ হারিয়ে যাওয়ার সময় প্রায় ৭০০ জন সৈন্যও গায়েব হয়ে যান। কারও নাকি আর খোঁজই মেলেনি। এ ছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও নাকি ৫০০টি বিমান, ১০টি যুদ্ধজাহাজ, ১০টি নৌ-যান ওই এলাকাতেই ধ্বংস হয় বা হারিয়ে যায়।

রহস্য সন্ধানে কায়ো মারু নামে একটি জাহাজ পাঠিয়েছিল জাপান। সেখানে নাকি বিজ্ঞানীরাই ছিলেন। কিন্তু রহস্যভেদ করতে গিয়েও তাঁরাও আর ফিরে আসেননি। পাল প্রশিক্ষণ জাহাজ এইচএমএস আটলান্টা (পূর্ব নাম এইচএমএস জুনো ) রয়্যাল নেভাল ডকইয়ার্ড, বারমুডা থেকে ৩১ জানুয়ারি ১৮৮০ সালে ইংল্যান্ডের ফালমাউথের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার পর তার পুরো ক্রুসহ অদৃশ্য হয়ে যায় এটা অনুমান করা হয়েছিল যে এটি একটি শক্তিশালী ঝড়ে ডুবেছিল যা কয়েক দশক পরে রহস্যময় ত্রিভুজের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। এই ত্রিকোণ রহস্যের মধ্যে ১০০ বছরে প্রায় এক হাজারের ও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। কলরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এখন এক নতুন তথ্য সামনে নিয়ে এসেছেন। তাদের মতে, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্যের পিছনে রয়েছে এক রকম ষড়ভুজাকৃতি মেঘ(হেক্সাগোনাল ক্লাউড)। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের বারমুডা দ্বীপে ২০ থেকে ৫৫ মাইল জুড়ে ষড়ভুজাকৃতি মেঘ তৈরি করে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বায়ু। যার গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭০ মাইল। এই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বায়ুকে বলা হয় ‘এয়ার বম্ব’। ঝড়গুলি এতোই শক্তিশালী বলে মনে করা হয় যে তাঁর জেরে জাহাজ ও প্লেনগুলি জলের তলায় চলে যেতে পারে।

আটলান্টিক মহাসাগরের বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের মতো ভারতেরও এমনই এক রহস্যজনক ত্রিভূজ রয়েছে। তাকে ‘ভারতের বারমুডা ট্রায়াঙ্গল’ বলা হয়। শুধু তাই নয় চিনের কাছে প্রশান্ত মহাসাগরেও এ রকম এক কাল্পনিক ত্রিভূজ রয়েছে। তাকে আবার ‘চিনের বারমুডা ট্রায়াঙ্গল’ বা ‘ড্রাগন ট্রায়াঙ্গল’ বলা হয়। ‘ভারতের বারমুডা ট্রায়াঙ্গল’ যে তিন কাল্পনিক বিন্দু নিয়ে গঠিত হয়েছে তার একটি বিন্দু রয়েছে ওড়িশার আমারদা রোড এয়ারফিল্ডে, দ্বিতীয় বিন্দু রয়েছে ঝাড়খন্ডের চাকুলিয়ায় এবং তৃতীয় বিন্দুটি রয়েছে বাঁকুড়ার কাছে পিয়ারডোবায়। এই তিনটি কাল্পনিক বিন্দু যোগ করলে একটি ত্রিভূজ তৈরি হয়। এই কাল্পনিক ত্রিভূজই হল ভারতের রহস্যময় বারমুডা ট্রায়াঙ্গল।

শয়তানের ত্রিভুজ বা "বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল" এই জায়গাটি সম্পর্কের কে না জানে? এই অঞ্চল থেকে হারিয়ে যাওয়া জাহাজ, প্লেনগুলির ধ্বংসাবশেষ আজ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিগত বেশ কিছু বছর ধরে এই বিশেষ অঞ্চল বিজ্ঞানী থেকে সাধারণ মানুষের মনে বেশ কিছু প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। ঠিক কী কারণে ওই অঞ্চলে জাহাজ বা বিমান অদৃশ্য হয়ে যায়, তা সঠিক ভাবে জানা যায়নি আজও। কিছু বিজ্ঞানীরা এই বারমুডা ট্রায়েঙ্গেলে তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গের তত্ত্ব, এই রহস্যের কারণ হতে পারে বলে উল্লেখ করেন। তবে  বিজ্ঞানীরা এই বারমুডা ট্রায়েঙ্গেলের রহস্যের সম্পর্কে , এখনো গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।


Tags: বারমুডা ট্রায়াঙ্গল, বারমুডা ট্রায়াঙ্গল মুভি বাংলা, বারমুডা ট্রায়াঙ্গল মুভি, বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্য মায়াজাল, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল ভিডিও, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের ইতিহাস, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল কার্টুন

No comments

Hi Welcome ....