Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Top Ad

Breaking News:

latest

ষোড়শ মহাজনপদ কাকে বলে? মহাজনপদগুলির নাম-উৎস-রাজধানী-বৈশিষ্ট্য-মানচিত্র

❏ ষোড়শ মহাজনপদ কাকে বলে? ▹খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের সূচনা থেকে সাম্রাজ্য হিসেবে মগধের উত্থান পর্যন্ত সময়কালকে ‘ষোড়শ মহাজনপদের যুগ’ বলা হয়।...

ষোড়শ মহাজনপদ মানচিত্র
ষোড়শ মহাজনপদ কাকে বলে?
▹খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের সূচনা থেকে সাম্রাজ্য হিসেবে মগধের উত্থান পর্যন্ত সময়কালকে ‘ষোড়শ মহাজনপদের যুগ’ বলা হয়। বৌদ্ধগ্রন্থ ‘অঙ্গুত্তরনিকায়’, জৈন গ্রন্থ ‘ভগবতীসূত্র’ এবং ‘পুরাণ’ থেকে ষোড়শ মহাজনপদের কথা জানা যায়। এ ছাড়াও বৌদ্ধগ্রন্থ ‘দীর্ঘনিকায়’, ‘মহাবস্তু’, পাণিনির ‘অষ্টাধ্যায়ী’ থেকে মহাজনপদগুলি সম্পর্কে কমবেশি তথ্য মেলে।

ষোড়শ মহাজনপদগুলির নাম : (১) কাশী (২) কোশল (৩) অঙ্গ (৪) মগধ (৫) বৃজি বা বজ্জি (৬) মল্ল বা মালব (৭) চেদী (৮) বৎস (৯) কুরু (১০) পাঞ্চাল (১১) মৎস্য (১২) শুরসেন (১৩) অস্মক (১৪) অবন্তী (১৫) গান্ধার (১৬) কম্বোজ।

ষোড়শ মহাজনপদ মানচিত্র

ষোড়শ মহাজনপদের নাম গুলো কি কি :
(১) কাশী : প্রাচীন ভারতের অন্যতম সমৃদ্ধ রাজ্য হল কাশী। রাজ্যের রাজধানী ছিল বারাণসী।
(২) কোশল  : উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা অঞ্চল নিয়ে গঠিত ছিল এই রাজ্য। রাজ্যটি ছিল সমৃদ্ধ এবং শক্তিশালী। অযোধ্যা, শ্রাবস্তী প্রভৃতি বিখ্যাত নগর এই রাজ্যে অবস্থিত ছিল। কোশলরাজ মহাকোশল ছিলেন মহাভারতের ইক্ষ্বাকুবংশীয়।
(৩) অঙ্গ : বিহারের পূর্বে এই রাজ্য অবস্থিত ছিল। মহাভারতের কর্ণ এই রাজ্যের রাজা ছিলেন। রাজ্যের রাজধানী চম্পকে বৌদ্ধ সাহিত্যে শ্রেষ্ঠ নগর বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
(৪) মগধ : বর্তমান পাটনা এবং গয়া জেলা নিয়ে গঠিত এই রাজ্য। রাজ্যের আদি রাজধানী ছিল রাজগৃহ বা রাজগির।
(৫) বৃজি বা বজ্জি : হিমালয়ের পাদদেশে এই রাজ্যটি ছিল প্রজাতন্ত্রী। মোট আটটি গোষ্ঠী নিয়ে গঠিত
ছিল সেই প্রজাতন্ত্র। আটটির মধ্যে অন্যতম গোষ্ঠী হল শাক্যগোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীতেই জন্ম হয় বুদ্ধদেবের।
(৬) মল্ল বা মালব : এই রাজ্যের অবস্থান ছিল উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর জেলায়। রাজধানী ছিল কুশীনগর। এই রাজ্যও ছিল প্রজাতন্ত্রী।
(৭) চেদী : বর্তমান বুন্দেলখণ্ড নিয়ে গঠিত ছিল এই রাজ্য।
(৮) বৎস : বর্তমান এলাহাবাদের কাছে এই রাজ্য অবস্থিত ছিল। রাজ্যটি ছিল কৃষিতে খুবই উন্নত।
(৯) কুরু : এই রাজ্য ছিল দিল্লির কাছে অবস্থিত। মহাভারতের যুগে এই রাজ্যের বিশেষ গুরুত্ব ছিল।
(১০) পাঞ্চাল : বর্তমান উত্তরপ্রদেশের গঙ্গা-যমুনা-দোয়াব অঞ্চলে এই রাজ্য অবস্থিত ছিল।
(১১) মৎস্য : বর্তমান রাজস্থানের জয়পুর, ভরতপুর ও আলোয়ার নিয়ে এই রাজ্য গঠিত ছিল। মহাভারতের বিরাট রাজা ছিলেন এই রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। পরবর্তীকালে এই রাজ্য চেদিরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়।
(১২) শুরসেন :  বর্তমান মথুরা অঞ্চলে এই রাজ্য অবস্থিত ছিল। মহাভারতের যুগে এখানে যদুবংশ রাজত্ব করত।
(১৩) অস্মক : অনুমান করা হয় এই রাজ্যের অবস্থান ছিল গোদাবরীর দক্ষিণে।
(১৪) অবন্তী : এই রাজ্য ছিল মালব ও মধ্যপ্রদেশের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত। উজ্জয়িনী এই রাজ্যের এক বিখ্যাত নগর।
(১৫) গান্ধার : গান্ধার বলতে সিন্ধুনদের পশ্চিম তীরের পাঞ্জাবকে বোঝায়। সামরিক দিক থেকে এই রাজ্যের অবস্থান ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
(১৬) কম্বোজ: এই রাজ্য ভারতের উত্তর-পশ্চিমে পাঞ্জাবের কাছে অবস্থিত ছিল । কম্বোজ ছিল বৈদিক সংস্কৃতির কেন্দ্র। আর্যরা ভারতে এসে এখানে কিছুদিন বসবাস করে।

মহাজনপদগুলির নাম রাজধানী
(১) কাশী বারাণসী
(২) কোশল শ্রাবস্তী
(৩) অঙ্গ চম্পা
(৪) মগধ প্রথমে গিরিব্রজ; পরবর্তীকালে বৈশালী এবং শেষে পাটলিপুত্ৰ
(৫) বৃজি বা বজ্জি বৈশালী
(৬) মল্ল বা মালব কুশীনারা ও পাবা
(৭) চেদী শুকতি মতি
(৮) বৎস কৌশাম্বী
(৯) কুরু ইন্দ্ৰপ্ৰস্থ
(১০) পাঞ্চাল উত্তরভাগের অহিছত্র, দক্ষিণভাগের কাম্পিল্য
(১১) মৎস্য বিরাটনগর
(১২) শুরসেন মথুরা
(১৩) অস্মক পোটান বা পেটালি
(১৪) অবন্তী উত্তরাংশের উজ্জয়িনী, দক্ষিণাংশের মহিস্মতী
(১৫) গান্ধার তক্ষশীলা
(১৬) কম্বোজ রাজপুর



মহাজনপদগুলির ভৌগোলিক বণ্টন লক্ষ করলে দেখা যায় এগুলির অধিকাংশই ছিল বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্য ভারতে। দক্ষিণ ভারতে অস্মক ছাড়া কোনো মহাজনপদ ছিল না।

বৈশিষ্ট্য : (১) মহাজনপদগুলির মধ্যে তেরোটি ছিল রাজতন্ত্র শাসিত, বাকি তিনটি—বৃজি, কম্বোজ ও মল্ল ছিল গণরাজ্য (২) মহাজনপদগুলি ছিল পরস্পর বিবদমান (৩) মহাজনপদের শাসকরা সাম্রাজ্যবাদী মনোভাবাপন্ন ছিলেন। পরবর্তীতে কোশল, বৎস, অবন্তী ও মগধ অন্যান্য রাজ্য গ্রাস করে শক্তিশালী রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। শেষপর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে মগধ জয়লাভ করে এবং একটি অখণ্ড সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অগ্রসর হয়।

No comments

Hi Welcome ....