Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Top Ad

Breaking News:

latest

B.ED 4th Semester Assignment | Course Code : 1.4.6 ( Gender, School and Society)

  Consideration of Gender issues in curriculum framework with reference to NCF, 2005 : An analysis | B.ED 4th Semester Assignment ❐ লিঙ্গ পর...

 
Consideration of Gender issues in curriculum framework with reference to NCF, 2005 : An analysis | B.ED 4th Semester Assignment

লিঙ্গ পরিচয়চর্চা শুধুমাত্র নারীদের বিষয়ে চর্চার একটি বিষয় নয়, এটি জনসাধারণের বিষয়েও চর্চার যোগ্য। 'নারীত্ব' 'ও 'পুরুষত্ব' বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করে না। একটির গঠন ও ক্ষমতা আর-একটির গঠন ও ক্ষমতাকে নির্ধারণ করে থাকে। লিঙ্গ পরিচয় সম্পর্ক না ‘স্বাভাবিক' না 'অর্পিত, সমাজে নারী-পুরুষের এই অসম সম্পর্ক সামাজিকীকরণের প্রভাবে গড়ে ওঠে। ছোটো থেকে বড়ো হয়ে ওঠার পথে জন্মসূত্রে ছেলে ও মেয়েদের সমাজের লিঙ্গ-নির্দিষ্ট মানগুলি অনুসরণ করতে পরোক্ষভাবে বাধ্য করা হয়। সামাজিকীকরণের এই প্রক্রিয়ায় একদিকে যেমন মেয়েদের অবাঞ্ছিত সামাজিক নিয়ন্ত্রণ, বৈষম্য ও বশ্যতা স্বীকার করতে শেখানো হয়, তেমনি অন্যদিকে ছেলেদের গতানুগতিক পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় তাদের জন্য নির্দিষ্ট আচার-আচরণ মেনে চলতে শেখানো হয়।

একদিকে মেয়েদের ভিতরে এই ধারণা গড়ে তোলা হয় যে নারীরা সংসারের লক্ষ্মী, স্বামীর কাছে প্রেমময়ী স্ত্রী, সন্তান-সন্ততিদের কাছে স্নেহশীলা মা, অতিথিদের কাছে সুমধুর আপ্যায়নকারিণী, বহির্জগতের সবরকম রুক্ষ আচরণে প্রভাবিত ক্ষোভের প্রশমনস্থল ইত্যাদি। এইসব ভূমিকা পালনের জন্য শিক্ষার মাধ্যমে তাদের তৈরি করা হয়। তেমনি অন্যদিকে সুকুমার প্রবৃত্তি, আবেগ, ভয় ইত্যাদির দ্বারা পরিচালিত হওয়ার পরিবর্তে ছেলেদের পরিবারের উপার্জনকারী, রক্ষাকারী ও সংগ্রামী মনোভাবাপন্ন হয়ে গড়ে উঠতে পারিবেশিক উদ্দীপকগুলিকে ব্যবহার করা হয়। এইভাবে, অসম লিঙ্গ-পরিচয় সম্পর্ক সব ছেলেমেয়েদের মধ্যে স্বাধীন ও স্বাভাবিক মানবিক ক্ষমতাগুলির নিরপেক্ষ বিকাশে বাধাদান করে। তাই, পুরুষ ও নারী উভয় লিঙ্গের মানুষের স্বার্থেই দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা স্ত্রী-পুরুষের গতানুগতিক সম্পর্ক থেকে মুক্ত হওয়া দরকার। যদিও পরিবারই সমাজের মূল একক – যেখানে প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে নারী-পুরুষের দাম্পত্য সম্পর্কে আবদ্ধ থেকে পারস্পরিক নির্ভরতার মাধ্যমে সুখ ও শান্তির বাতাবরণে সন্তান সৃষ্টি ও লালন পালনের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রস্তুত করা ও সমাজের বহমান এগিয়ে চলার ধারাকে বজায় রাখা হয়। সুদুর অতীতে পরিবারে নারী-পুরুষের সাম্য ও সমানাধিকার নানারূপ পারিপার্শ্বিক কারণে বিনষ্ট হয়ে বর্তমান পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার সৃষ্টি করেছে ও নারীদের অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করেছে। যার ফলে আজ সমাজে স্ত্রী--পুরুষের স্বাভাবিক সম্পর্ক বিনষ্ট হয়েছে ও পারিবারিক শান্তি ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু।
দুটি শিশু আপনমনে খেলা করে, তারা দেখে না তার সাথি কোন্ লিঙ্গের বা সাথির লিঙ্গ পরিচয় কোনোভাবেই তাদের খেলাকে প্রভাবিত করে না। কানামাছি, চোর-পুলিশ, এক্কা-দোক্কা ইত্যাদি খেলতে গিয়ে ছেলে বা মেয়ে — এই পরিচয় তাদের কাছে বিচার্য নয়। অথচ, একটু বড়ো হয়ে, সামাজিক প্রভাবে তারা লিঙ্গ ভেদে পুরোনো খেলার সাথি পালটে ফেলে, যা পরবর্তীকালে তাদের পারস্পরিক আচার-আচরণে প্রকাশ পায়। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, লিঙ্গ-ভেদজনিত আচরণ শিক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তি আয়ত্ত করে। তাই শিক্ষার বিষয়বস্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার বিষয়বস্তু বা পাঠক্রমে লিঙ্গ-ভেদের অস্তিত্ব অতীতেও ছিল এবং বর্তমানেও আছে। সমাজে দীর্ঘদিন ধরে লালিত লিঙ্গভেদের ধারণাই পাঠক্রমে প্রতিফলিত হয়েছে। কিছু কিছু বিষয়ে জ্ঞান ও দক্ষতা, যেগুলি মেয়েদের একান্ত বলে মনে করা হয়েছে, যেমন— গার্হস্থ্যবিজ্ঞান, খাদ্য ও পুষ্টি, সন্তান পালন, সুচি ও বয়ন শিল্প, নৃত্য-গীত ও চারুকলা ইত্যাদিকে বিশেষভাবে মেয়েদের পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত, প্রযুক্তি ইত্যাদির মতো বিষয়গুলিকে ছেলেদের পাঠ্যসূচিতে রাখা হয়েছে।

আমাদের দেশে সাম্প্রতিক অতীতে, এমনকি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও ছেলেদের ও মেয়েদের পাঠক্রমে এই বৈষম্য স্বাভাবিক হিসেবেই গণ্য করা হত। কিন্তু ধীরে ধীরে আধুনিকতা ও নারীবিদ্যা চর্চার অগ্রগতির ফলে পাঠক্রমে এই বৈষম্য কমে আসছে ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের যে-কোনো বিষয় চর্চায় ছেলে ও মেয়েদের সমান প্রবেশাধিকার স্বীকৃত হয়েছে। বিগত শতাব্দীর তুলনায় শিক্ষাঙ্গন ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের অধিক সংখ্যায় উপস্থিতি ও সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সাফল্য লিঙ্গ-ভেদজনিত বৈষম্য অবশ্যই কমিয়ে আনছে।
2000 খ্রিস্টাব্দের পর 2005 খ্রিস্টাব্দে আর একটি National Curriculum Framework প্রকাশিত হয় NCERT-র মাধ্যমে। এক্ষেত্রেও 21টি Focus Group আলোচনার ভিত্তিতে যে Position Paper সমূহ NCERT-র কাছে জমা দেয় তার ভিত্তিতে আরও আন্তর্জাতিক মানের এবং আরও আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, শিক্ষাব্যবস্থা, পাঠ্যপুস্তক পাঠক্রম রচনা সর্বক্ষেত্রেই বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সুপারিশ করে। এরপর জাতীয় পাঠক্রম কাঠামোর পর্যালোচনা (2008) হলেও নতুন করে আর কোনো কাঠামো প্রকাশিত হয়নি। 2005 খ্রিস্টাব্দের জাতীয় পাঠক্রম কাঠামোর কিছুটা বিস্তারিত আলোচনা আছে Course V-এর শেষ পরিচ্ছেদে এবং Course VIII (A)-র ব্যাবহারিক নির্দেশিকা অংশে। 2005 খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত জাতীয় পাঠক্রম কাঠামোতে আবার নতুন করে শিক্ষায় সমতা আনার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করা হয়েছে, তবে সেক্ষেত্রে মেয়েদের শিক্ষার চেয়েও গুরুত্ব বেশি দেওয়া হয়েছে সমাজের প্রান্তিক শ্রেণির শিক্ষায় সমতা আনার উপর। কিন্তু সমাজবিদ্যা সম্পর্কিত পাঠক্রমের কাঠামো, বিষয়বস্তু নির্বাচন এবং শিক্ষণ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে যে সংহতির কথা বলা হয়েছে সেখানে লিঙ্গ সম্পর্কিত সচেতনতা ও সংবেদনশীলতা সৃষ্টির একটি প্রয়াস উদ্দেশ্যমূলকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। তার কারণ কাঠামো রচয়িতারা মনে করেন, ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের মধ্যেই এই সংবেদনশীলতা একদিকে সামাজিক অসাম্য ও কুসংস্কার দূর করতে সক্ষম হবে এবং অন্যদিকে লিঙ্গ সমতা অর্জনের ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে। যেমন, জলকে কেন্দ্র করে সমাজবিদ্যার পাঠে (উদাহরণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে) বাড়িতে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় জলের উৎস সম্পর্কে অনুসন্ধান করার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বহু অঞ্চলে জল আনার জন্য মেয়েদের যে অমানুষিক পরিশ্রম, অপরিমিত সময় ব্যয় করতে হয় তার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

No comments

Hi Welcome ....