Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Top Ad

Breaking News:

latest

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস ভারতবর্ষ নামের উৎপত্তি (ভারতবর্ষ)

‘ভারতবর্ষ'— নামকরণ বা ‘'ভারতবর্ষ' নামের উৎপত্তি : সুপ্রাচীন কাল থেকেই উপযুক্ত ও বিজ্ঞানসম্মত তথ্য প্রমাণের অভাব সুপ্রাচীন ভারতব...

ভারত শব্দের অর্থ কি


‘ভারতবর্ষ'— নামকরণ বা ‘'ভারতবর্ষ' নামের উৎপত্তি : সুপ্রাচীন কাল থেকেই উপযুক্ত ও বিজ্ঞানসম্মত তথ্য প্রমাণের অভাব সুপ্রাচীন ভারতবর্ষের ইতিহাস রচনার কাজকে স্থবির করে তুলেছে। পক্ষান্তরে গ্রিসে হেরোডোটাস, থুকিডিডিস ও ইটালিতে লিভি ও ট্যাসিটাসের ভাস্বর উপস্থিতি সেই দেশের ইতিহাস রচনার কাজকে অনেক বেশি সহজ, সাবলীল এবং অগ্রগমনে সহায়তা করেছে। তথাপি বলাই বাহুল্য যে, ভারতের লিখিত মৌলিক ইতিহাস গ্রন্থের অভাব ইতিহাস রচনার কাজকে দুরূহ, দুঃসাধ্য করে তুললেও অসম্ভব করেনি। বর্তমানে ঐতিহাসিকগণ প্রাচীন যুগে রচিত বিভিন্ন জীবনচরিতমূলক গ্রন্থ, রাজপ্রশস্তি, লেখ, মুদ্রা ও বহু প্রত্ন নিদর্শনাদির সাহায্যে বহু নতুন নতুন তথ্য আবিষ্কারের, সংগ্রহের এবং তা প্রতিষ্ঠার নিরলস প্রচেষ্টায় প্রতিনিয়তই ব্যাপৃত আছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এটি স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয় যে পৃথিবীর সকল দেশের ইতিহাসের গতিধারা অভিন্ন নয়, প্রতিটি দেশের ইতিহাস তার আপন বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। অনুরূপভাবে বিশ্বের সর্বাপেক্ষা সুপ্রাচীন, মহান ও সুবিশাল দেশের প্রতিভূ আমাদের দেশ ‘ভারতবর্ষ’ বৈচিত্র্য ও বিভিন্নতার সমন্বয়ে স্বীয় বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল হয়ে উঠেছে, যার প্রজ্বলিত আলোকদ্যুতি সমগ্র বিশ্ববাসীকে মন্ত্রমুগ্ধ, বিস্ময়াবিষ্ট ও ঈর্ষান্বিত করে তুলেছে। এই কারণে সুপ্রাচীন কাল থেকেই ‘ভারতবর্ষ’ বৈদেশিক আক্রমণকারীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
বিশ্বের প্রাচীনতম দেশ ‘ভারতবর্ষ’ আমাদের পবিত্র মাতৃভূমি। প্রাচীন সাহিত্য, রামায়ণ, মহাভারত ও বিভিন্ন পুরাণে ‘ভারতবর্ষ’ নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। 'ভারতবর্ষ’ নামের উৎপত্তি নিয়ে বিভিন্ন মতবাদ প্রচলিত আছে। প্রথমত, কিংবদন্তী অনুসারে বৈদিক যুগে ভরত নামে এক রাজা ছিলেন। তাঁর নাম অনুসারে এই দেশের নাম হয় ভারতবর্ষ। বিষ্ণুপুরাণে বর্ণিত আছে “সমুদ্রের উত্তরে এবং হিমালয়ের দক্ষিণে অবস্থিত দেশের নাম ভারতবর্ষ, যেখানে ভরতের সন্তানেরা ('ভারতী') বাস করে।” দ্বিতীয়ত, ‘Ancient India' গ্রন্থে আধুনিক ঐতিহাসিক ড. রামশরণ শৰ্মা বলেছেন যে, ভরত নামে এক প্রাচীন উপজাতির নাম অনুসারে এই দেশের নাম হয়েছে ভারতবর্ষ এবং ভারতবর্ষে বসবাসকারী মানুষেরা ভারত-সন্ততি নামে পরিচিত। তৃতীয়ত, গ্রিক ও পারসিকদের কাছে সিন্ধু-গঙ্গা বিধৌত অঞ্চল বা সপ্তসিন্ধু অঞ্চল ‘হিন্দু’ নামে পরিচিত ছিল। কারণ পারসিকরা ‘সিন্ধু’কে ‘হিন্দু’ বলে উচ্চারণ করত। ‘হিন্দু’ শব্দটি সংস্কৃত শব্দ ‘সিন্ধু’ থেকে উদ্ভূত। এর থেকেই সেযুগে এদেশের নাম হয় ‘হিন্দুস্থান’ বা হিন্দুদের বাসভূমি এবং এদেশে বসবাসকারী মানুষেরা 'হিন্দু' নামে পরিচিত হয়। গ্রিক-রোমানরা ‘হিন্দু’কে উচ্চারণ করত ‘ইন্ডুস' বা 'ইন্ডাস' (Indus) বলে। প্রাচীন এই ‘ইন্ডাস’ থেকে পরবর্তী কালে ‘ইন্ডিয়া’ (ইংরেজি শব্দ) নামের উৎপত্তি হয়েছে।

ভারতবর্ষের নামকরণের ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা :  ভারতবর্ষ = ‘ভা’ বা জ্ঞান + ‘রত’ বা ধারা + ‘বর্ষ’ বা বৃহৎ দেশ অর্থাৎ যে বৃহৎ বা বড়ো দেশে জ্ঞানের ধারা প্রবহমান, সেই দেশই হল ভারতবর্ষ। ভারতবর্ষের নামকরণের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক তথা পণ্ডিতমহলে প্রবল মতদ্বৈধতা এখনও বিদ্যমান।

animated-new-image-0047  আরো পড়ুনঃ

১. ভারতবর্ষকে উপমহাদেশ’ বলা হয় কেন?
✒︎ ভারতবর্ষ হল একটি উপদ্বীপ। উত্তর-দক্ষিণে ভারতের দৈর্ঘ্য ৩,২১৪ কিমি; পূর্ব-পশ্চিমে ২,৯৩৩ কিমি এবং মোট আয়তন ৩২,৮৭,২৬৩ বর্গকিমি। ভারতবর্ষের আয়তন এবং ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, ভাষাগত ও জাতিগত বৈচিত্র্য একটি মহাদেশের মতো বলেই একে ‘উপমহাদেশ’ বলা হয়।
২. আমাদের দেশকে ভারতবর্ষ বলা হয় কেন?
✒︎ প্রাচীন উপাখ্যান অনুযায়ী দুষ্মন্ত ও শকুন্তলার পুত্র ভরত রাজার নাম থেকে আমাদের দেশের ‘ভারত’ নামের উৎপত্তি হয়েছে।
৩. আল-বেরুনি কে ছিলেন? তিনি কখন ভারতে আসেন?
✒︎ আল-বেরুনি গজনির সুলতান মামুদের সভাসদ ছিলেন। ভারত আক্রমণের সময় তিনি মামুদের সঙ্গে এদেশে আসেন।
৪. তারানাথ কে ছিলেন?
✒︎ লামা তারানাথ ছিলেন তিব্বতীয় ইতিহাসবিদ। তিনি ‘ভারতে বৌদ্ধধর্মের জন্ম’ গ্রন্থটি রচনা করেন, যা ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। তাঁর অপর দুটি গ্রন্থ হল ‘দুলভা’ ও ‘তাংগ্যুর’। তারানাথের রচনা থেকে বৌদ্ধধর্মের বিভিন্ন তথ্য এবং পাল রাজাদের রাজত্বকালের পরিচয় পাওয়া যায়।
৫. আল-বেরুনির আসল নাম কী? তার রচিত গ্রন্থটির নাম লেখো।
✒︎ আল-বেরুনির আসল নাম হল আবু রিহান। তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম ‘তহকক্-ই-হিন্দ’।
৬. এ সার্ভে অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ গ্রন্থটি কে কবে রচনা করেন?
✒︎ ‘‘এ সার্ভে অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ গ্রন্থটি গ্রিক ভূগোলবিদ হেকাটিয়াস খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দে রচনা করেন।
৭. কুষাণদের ইতিহাস জানা যায় এমন দুই চৈনিক গ্রন্থ ও তাদের রচয়িতার নাম লেখো।
✒︎ কুষাণদের ইতিহাস জানা যায় প্যান-কু রচিত ‘সিয়েন-হান-শু’ ও ফ্যান-ই রচিত ‘হৌ-হান-শু’ নামক দুটি গ্রন্থ থেকে।
৮. ভারতীয় ইতিহাসে প্রভাব রয়েছে এরকম দুই বিদেশি লিপির নাম লেখো। এই দুই লিপি কোথায় পাওয়া গেছে?
✒︎ ভারতীয় ইতিহাসে প্রভাব রয়েছে এমন দুই বিদেশি লিপি হল এশিয়া মাইনর অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত ‘বোঘাজ-কোই’ এবং ইরানের পার্সিপোলিস থেকে প্রাপ্ত ‘নকস-ই-রুস্তম' লিপি।
৯. প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের ওপর গবেষণা করেছেন এমন কয়েকজন ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদের নাম লেখো।
✒︎ প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের ওপর গবেষণা করেছেন এমন কয়েকজন ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ ছিলেন—হ্যামিলটন, বুকানন, জন মার্শাল, কানিংহাম, অরেলস্টাইন, জেমস্, বার্জেস প্রমুখ।
১০. অশোকের লেখর প্রথম পাঠোদ্ধার করেন কে? কোথায় এই লেখ পাওয়া গেছে?
✒︎ অশোকের লেখর প্রথম পাঠোদ্ধার করেন ‘এশিয়াটিক সোসাইটি অব্ বেঙ্গল’-এর সম্পাদক তথা টাঁকশালের কর্মী জেম্স প্রিন্সেপ (১৮৩৭ খ্রি.)। অশোকের এই লেখ পাওয়া গেছে গয়া জেলার নিকটবর্তী এক পাহাড়ের গুহায়।
১১. অশোকের অনুশাসনগুলি মূলত কোন ভাষায় এবং কোন হরফে লেখা?
✒︎ অশোকের অধিকাংশ অনুশাসন প্রাকৃত ভাষায় এবং ব্রাহ্মী হরফে লিখিত হয়েছিল।
১২. এপিগ্রাফি ও প্যালিওগ্রাফি বলতে কী বোঝ?
✒︎ শিলালিপি উৎকীর্ণ বিষয়ক পঠনপাঠনকে ইংরেজিতে এপিগ্রাফি এবং শিলালিপির বিষয়বস্তু অধ্যয়নকে ইংরেজিতে প্যালিওগ্রাফি বলে।

No comments

Hi Welcome ....