B.Ed 4th Semester Assignment | Course Code : X (1.4.10) Creating an Inclusive School আরো পড়ুনঃ Click Now ☟ Course : VI (1.4.6) Assignm...
B.Ed 4th Semester Assignment | Course Code : X (1.4.10) Creating an Inclusive School
১. UNCRPD-এর প্রধান সিদ্ধান্তসমূহ গুলি আলোচনা করুন।
Briefly write the main decision of UNCRPD.
২. পাঠ্যবস্তুর অভিযোজন সম্পর্কিত নীতিগুলি সংক্ষেপে লিখুন।
Briefly write the principles of textual adaptalion.
---------------------------------------------------------
১. UNCRPD-এর প্রধান সিদ্ধান্তসমূহ গুলি আলোচনা করুন।
Briefly write the main decision of UNCRPD.
❏ UNCRPD-2006 প্রতিবেদনের যে সিদ্ধান্তগুলি ব্যাখ্যা ও গ্রহণ করা হয়েছে তা ৫০টি অনুচ্ছেদে বিভাজন করে আলোচনা করা হয়েছে। তার একটি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি গুলো নীচে আলোচনা করবো —
অনুচ্ছেদ– ১: প্রথম অনুচ্ছেদের বিষয়বস্তু হল উদ্দেশ্যজ্ঞাপন করা। সম্মেলনের উদ্দেশ্য ছিল অক্ষমতা ব্যক্তির সর্বরকম মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা ভোগ নিশ্চিত করা, বজায় রাখা ও উৎকর্ষ সাধন করা। অনুচ্ছেদ – ২ : দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে প্রতিবেদনে ব্যবহৃত শব্দগুলির সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। যেমন যোগাযোগ, বৈষম্য, সর্বজনীন পরিকল্পনা ইত্যাদি। এছাড়া আরও বলা হয়েছে যে, বোধগম্য হলেই সংযোগসাধনকে ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হবে, যেমন - Braille Language, Sign Language ইত্যাদি। অনুচ্ছেদ – ৩ : তৃতীয় অনুচ্ছেদে বিবৃত হয়েছে সাধারণ নীতিসমূহ। যেমন - বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিকে একীভূত সমাজে কার্যকারী সম্যক অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিতে হবে। অনুচ্ছেদ – ৪ : সাধারণ দায়দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহ আলোচিত হয়েছে চতুর্থ অনুচ্ছেদে। যেমন, প্রত্যেক রাষ্ট্র এই ব্যক্তিদের মানবাধিকার রক্ষাকল্পে গৃহীত নীতিগুলি প্রশাসনিক মর্যাদা দিয়ে আইনে পরিণত করবে। অনুচ্ছেদ – ৫ : সমতাবিধান ও বৈষম্যবিলোপ হল পঞ্চম অনুচ্ছেদে উল্লেখিত বিষয়। যেমন, প্রত্যেক রাষ্ট্র এই আইনগত স্বীকৃতি দেবে যে, প্রতিটি ব্যক্তিই সমান এবং আইনগত স্বীকৃত দ্বারা বৈষম্য দূর করতে হবে। অনুচ্ছেদ – ৬ : এই অনুচ্ছেদে নির্দিষ্টভাবে অক্ষম নারীদের কথা বলা হয়েছে। মেয়েদের পরিপূর্ণ সুরক্ষা প্রদান ও সমসুযোগ প্রদান বিষয়ে রাষ্ট্রকে উদ্যোগ নিতে হবে। অনুচ্ছেদ – ৭ : অক্ষম শিশুরাই এই অনুচ্ছেদের মূল বিষয়বস্তু। এই শিশুদের স্বার্থ সর্বাগ্রে রক্ষা করতে হবে এবং রাষ্ট্রকে শিশুদের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করে তাদের মৌলিকতা ও অংশগ্রহণকে মান্যতা দিতে হবে। অনুচ্ছেদ – ৮ : বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গের বিষয়ে সচেতনতা বিস্তার করাই হল এই অনুচ্ছেদের আলোচনার মুখ্য বিষয়। সচেতনতা বিস্তারের লক্ষ্যে সরকারি, বেসরকারি সংস্থাসমূহ ও যে-কোনো সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে। অনুচ্ছেদ – ৯ : এই অনুচ্ছেদে যাবতীয় অধিগম্যতা সুনিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, কর্মক্ষেত্রে, যানবাহন ব্যবস্থায়, সর্বত্র এই ব্যক্তিদের প্রবেশ ও অংশগ্রহণ করবার অধিকারকে রাষ্ট্রীয় নির্দেশিকা সহযোগে নিশ্চিত করতে হবে।
অনুচ্ছেদ – ১০ : জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে এই অনুচ্ছেদে। অনুচ্ছেদ – ১১ : মানবিক জরুরি অবস্থা মোকাবিলা করার উপযুক্ত বিধান দেবার কথা বলা হয়েছে এই অনুচ্ছেদে। আন্তর্জাতিক আইনের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রগুলিকে মানবিক জরুরি অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করতে হবে। অনুচ্ছেদ – ১২ এবং ১৩ : বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গের যে আইনগত এবং আইনি সুবিধা পাবার সম্পূর্ণ অধিকার আছে তা সুনিশ্চিত করবার কথা বলা হয়েছে। অনুচ্ছেদ – ১৪, ১৫ ও ১৬ : আইনগত সুযোগ প্রদানের আলোচনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এই তিনটি অনুচ্ছেদে আলোচনা করা হয়েছে যে এই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ যেন অত্যাচারহীন, নিষ্ঠুরতাহীন, নিরাপদ জীবনযাপন করতে পারে তার উপযুক্ত পরিপ্রেক্ষিত গড়ে তুলতে হবে। অনুচ্ছেদ – ১৭, ১৮, ১৯ এবং ২০ : এই অনুচ্ছেদগুলিতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তির অহিংস, স্বনির্ভর, নিরূপদ্রব জীবন যাপন সুনিশ্চিত করবার দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ব্যক্তির নিজস্ব স্বাধীন চলাফেরা ও প্রয়োজনে চলনের প্রশিক্ষণ ইত্যাদির সুব্যবস্থা করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অনুচ্ছেদ – ২১, ২২, ২৩ ও ২৪ : মত প্রকাশের স্বাধীনতা, তথ্য জানবার অধিকার ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তির বোধগম্য ভাষাতে তথ্য পাবার অধিকার ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচিত হয়েছে একুশ ও বাইশতম অনুচ্ছেদে। তেইশতম অনুচ্ছেদে সন্তান লালন-পালন ও প্রয়োজনে দত্তক গ্রহণ করবার অধিকার সম্পর্কে বলা হয়েছে। চব্বিশতম অনুচ্ছেদে ব্যক্তির শিক্ষার অধিকার বিষয়ে বলা হয়েছে। অনুচ্ছেদ – ২৫, ২৬, ২৭ ও ২৮ : প্রথম তিনটি অনুচ্ছেদে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তির স্বাস্থ্যের অধিকার (Right to health), অভিবাসন ও পুনর্বাসনের (Right to habilitation and rehabilitation) অধিকার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ২৮ অনুচ্ছেদে ব্যক্তিবর্গের জীবনযাত্রার গুণগত মান এবং সামাজিক সুরক্ষার বিষয়ে বলা হয়েছে। জীবনযাত্রার মান ও সামাজিক নিরাপত্তা যেন বজায় থাকে— রাষ্ট্রকে এ বিষয়ে যত্ন নিতে হবে। অনুচ্ছেদ – ২৯ ও ৩০: এই অনুচ্ছেদগুলিতে প্রধানত ব্যক্তির ভোটাধিকার, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অবসরকালীন জীবনে অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে। ব্যক্তি সমাজজীবনের অঙ্গ হিসেবে এই প্রক্রিয়ায় যেন অবাধে অংশগ্রহণ করতে পারে তা নিশ্চিত করবার কথা বলা হয়েছে। অনুচ্ছেদ – ৩১ থেকে ৫০ : তিরিশ পরবর্তী এই অংশের অনুচ্ছেদগুলিতে প্রত্যক্ষভাবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তির অধিকার বিষয়ে বলা হয়নি। এই ব্যক্তিবর্গের যাবতীয় মানবাধিকার রক্ষা করতে গেলে যে প্রশাসনিক রাষ্ট্রগুলিকে গ্রহণ করতে হবে, সেই কথাই এই অংশে বলা হয়েছে। সুতরাং শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে এই উদ্যোগগুলি গ্রহণ করার জন্য রাষ্ট্রকে কিছু দল বা কমিটি গঠন করতে হবে। সেই কমিটিগুলির সাংগঠনিক রূপরেখা, কার্যসূচি ও তথ্য সংরক্ষণ বিষয়ে বিশদ আলোচনা আছে এই অনুচ্ছেদগুলিতে।
২. পাঠ্যবস্তুর অভিযোজন সম্পর্কিত নীতিগুলি সংক্ষেপে লিখুন।
Briefly write the principles of textual adaptalion.
❏ পাঠ্যবিষয়ের অভিযোজন কথাটির প্রকৃত অর্থ বিষয়বস্তুর একাধিক বিকল্প রূপ প্রস্তুত করে রাখা। যখন কোন বিশেষ শিক্ষার্থী বা কয়েকজন পাঠ্যবস্তু যা সাধারণভাবে তাদের পড়তে হয়, তা নানা কারণে বুঝতে অক্ষম অথবা ধারণ করতে অক্ষম হয় তখন তাদের ক্ষেত্রে উপযুক্ত একটি বিকল্প রূপ ব্যবহার করা হলে পঠনপাঠনের উদ্দেশ্য সিদ্ধ হতে কোনো বাধা থাকে না। এই সংক্রান্ত নীতিগুলি হল―
১. পাঠ্যবস্তুর Audio Tape তৈরি করা (Preparing Audio Tape of Textual Material): যাদের পড়ার সমস্যা আছে তাদের কাছে শেখার কাজ সহজ হতে পারে। কিন্তু সমগ্র পাঠ্য বিষয় Audio tape হিসেবে উপস্থাপিত করা কঠিন এবং তার কার্যকারিতা সম্বন্ধেও দ্বিমত আছে। সেক্ষেত্রে সমস্যা এই যে নির্বাচিত অংশ কিংবা সংক্ষিপ্তসার হিসেবে টেপ করলে তা পাঠ্যপুস্তক পড়ার সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারে না।
২. জোরে জোরে পড়া (Reading aloud): এই কাজ অনেক সময় সাধারণ ক্লাসেও শিক্ষকরা করেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে কখনোই একটানা সমগ্র বিষয়টি পড়েন না। প্রয়োজনীয় অংশ পড়েন, তারপর অন্যান্য কাজ করে আবার পড়েন। এক্ষেত্রেও প্রকৃত পাঠ্যপুস্তক পাঠের উপকারিতা পাওয়া যায় না। আবার শিক্ষকের পক্ষেও একটানা দীর্ঘসময় পড়ে শোনানো সম্ভব নয়।
৩. যুগ্ম প্রয়াস (Paired effort): দুজন ছাত্রকে নিয়ে একটি করে জোড়া তৈরি করে তাদের উপর দায়িত্ব দেওয়া, পরস্পর সহযোগিতায় বিষয়টি আয়ত্ত করে (Acquiring mastery) নেওয়ার এই পরিবর্তন কার্যকর এবং গ্রহণযোগ্য।
৪. অন্যান্য উপায় (Other ways): সরাসরি অভিজ্ঞতা লাভ, মডেলিং, Comic strips, ভিডিয়ো ইত্যাদি যেখানে যে ধরনের উপায় অবলম্বন করা সম্ভব তার প্রয়োগ।
৫. ছোটোদলের সঙ্গে অথবা এককভাবে সাহায্য করা (Helping in Small Groups or Individually) : শিক্ষক এবং তার পরিবর্ত কোনো ছাত্র বা ছাত্রী অথবা দুই-ই দলের অংশবিশেষ হিসেবে একত্রে কাজ করা এবং পড়া ও শেখায় সাহায্য করা। দলের মধ্যে পালা করে প্রত্যেকে পড়ায় অংশগ্রহণ করা ভালো পদ্ধতি।
৬. বহুস্তরীয় এবং বহুবিষয়ের নীতির ব্যবহার (Use of Multilevel and Multimaterial Approach) : একই পাঠ্যবস্তুর একাধিকভাবে এবং একাধিক বোধগম্যতার স্তর অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন প্রকাশ। যে শিক্ষার্থীর পক্ষে যে প্রকার প্রকাশ (Version) তার জন্য সেটি নির্দিষ্ট করা।
৭. পাঠ্যবিষয়ের সংক্ষিপ্তরূপে প্রকাশ (Develop Abridged Version of Textual Material) : শুধু প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ সারসংক্ষেপ হিসেবে তৈরি করা এবং পড়তে বলা। মনোযোগহীনতা, মানসিক প্রতিবন্ধিতা ইত্যাদি অবস্থায় এরকম পাঠ্যবস্তু কাজে লাগে। তবে অনেক গবেষক এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেন না।
৮. পাঠ্যবস্তুর সহজসরল রূপ (Simplified Version of Textual Materials): অনেকে এই অভিযোজনকে বলেন পাঠ্যবস্তুর তরলীকরণ (Dilution of textual material)। এর অর্থ মূল বিষয়বস্তুর ক্ষতি না করে শুধুমাত্র বিষয়টিকে অত্যন্ত সহজ ও বোধগম্যভাবে প্রকাশ করা।
Course : EPC4 (1.4.EPC4) Assignment
Course : EPC4 অ্যাসাইনমেন্ট
Course Code : (1.4EPC4) Yoga education : Self Understanding & Development
১. যোগাভ্যাসের জন্য অবশ্য পালনীয় নিয়মগুলি লিখুন।
Write the rules which are must fulfilled in yoga practices.
২. যোগাসন অভ্যাসের গুরুত্বপূর্ণ নিয়মাবলি লিখুন।
Write the important rules for practice of yogasana.
১. যোগাভ্যাসের জন্য অবশ্য পালনীয় নিয়মগুলি লিখুন।
Write the rules which are must fulfilled in yoga practices.
❏ যোগাসন অভ্যাস করার আগে যোগাসনের কয়েকটি দিক সম্বন্ধে নিজেদের ধারণা পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত। কারণ যোগাসন যদি ঠিকমতো নির্দেশ না মেনে করা হয় তাহলে ফল উলটো হতে পারে। যোগ-ব্যায়াম অভ্যাসে শরীর সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকে এ বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। কিন্তু এর সঙ্গে চাই পরিমিত ও যতদূর সম্ভব নিয়মিত আহার,বিশ্রাম, সংযম, নিয়মানুবর্তিতা, আত্মবিশ্বাস, অটুট মনোবল ও একাগ্রতা।
❏ যোগাসন অভ্যাসের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়মাবলি:
১. পাঁচ থেকে ছয় বছর বয়স থেকে আরম্ভ করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যোগব্যায়াম অভ্যাস করা যায়, তবে প্রয়োজনমতো কয়েকটি বেছে নিতে হবে। সব বয়সে সব রকম আসনাদি অভ্যাস করা যায় না। ১২থেকে ১৩ বছরের কম বয়সি মেয়েদের কোনো আসন অর্ধমাত্রার বেশি করা ঠিক নয়। ছেলেদের ১৪ থেকে ১৫ বছর বয়সের পূর্বে আর মেয়েদের ঋতু প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত প্রাণায়াম ও মুদ্রা অভ্যাস করা ঠিক নয়।
২. সকাল, সন্ধ্যা, স্নানের পূর্বে বা রাত্রিবেলা যে-কোনো সময় আসন, মুদ্রা, প্রাণায়াম করা যায়, তবে কোনো সময় যেন পেট ভরা অবস্থায় না থাকে। অল্প কিছু খেয়ে আধ ঘণ্টা পরে আসন অভ্যাস করা যেতে পারে, কিন্তু প্রাণায়াম বা মুদ্রা খালি পেটে অভ্যাস করতে হয়। তবে অনুশীলন সকালের দিকে না করে বিকেলের দিকে করা অনেকটা সুবিধাজনক।
৩. আসন অনুশীলন করার আগে কয়েক মিনিট, কতকগুলি খালি হাতের ব্যায়াম অভ্যাস করে নিলে ভালো হয়। কারণ এর ফলে মাংসপেশিতে টান ধরার সম্ভাবনা কম থাকবে এবং দ্রুততর ফল লাভের সহায়ক।
৪. যাদের শরীরে কোনো রোগ বা অসমতা আছে অথবা যাদের বয়স অত্যন্ত কম বা বেশি তাদের জন্য অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিশ্চয়ই নিতে হবে। শুধু বই পড়ে বা ছবি দেখে তাদের যোগব্যায়াম করা ঠিক নয়। উপকারের পরিবর্তে অপকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৫. মন চঞ্চল বা অস্থির চিত্তে কখনোই যোগাসন করা উচিত নয়। যোগাসন শুরু করার আগে কিছুক্ষণ স্থিরভাবে সুখাসন বা পদ্মাসনে বসে কয়েক মিনিট চোখ বন্ধ করে মনকে স্থির করে নিতে হয়। আবার শরীরে বা মনে ক্লান্তি রেখে কখনও অনুশীলন করতে নেই। যোগাভ্যাসের মধ্য দিয়েই স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন গ্রন্থি, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও মাংসপেশির ওপর নিয়ন্ত্রণ আনাই হল যোগাসনের মূল লক্ষ্য।
৬. একেবারে ৭ ও ৮ টির বেশি আসন অভ্যাস করা ঠিক নয়। আসনের সঙ্গে বয়স অনুযায়ী ও প্রয়োজনমতো দু-একটি প্রাণায়াম, মুদ্রা অভ্যাস করলে আরও ভালো ফল অল্প সময়ে পাওয়া যায়। এক একটি আসন বা মুদ্রা অভ্যাসের পর প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিতে হবে। সপ্তাহে একদিন বিশ্রাম নিতে হবে।
৭. আসনাদি অভ্যাসকালে ঝাকুনি দিয়ে বা জোর করে কোনো ভঙ্গিমা বা প্রক্রিয়া আয়ত্ত করা ঠিক নয়। আসন অভ্যাসকালে মুখে যেন কোনো বিকৃতি না আসে।
৮. ধ্যানাসন বা স্বাস্থ্যাসন অভ্যাসকালে শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে কিন্তু মুদ্রা বা প্রাণায়াম অভ্যাসকালে নিয়মানুযায়ী শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রিত হবে। মুখ দিয়ে প্রশ্বাস নেওয়া উচিত নয়।
৯. কম্বল, প্যাড বা পাতলা তোশকের উপর আসন অভ্যাস করা উচিত। শক্ত মাটি বা পাকা মেঝে বা শোবার বিছানায় আসন অভ্যাস করা ঠিক নয়।
১০. আলো-বাতাসহীন বা বদ্ধ ঘরে যোগব্যায়ামের চর্চা করা ঠিক নয়। এমন জায়গায় অভ্যাস করতে হবে যেখানে প্রচুর আলো-বাতাস থাকবে এবং জানালা-দরজা খোলা রাখতে হবে।
১১. মেয়েদের যাদের বয়স ১২ থেকে ১৩ বছরের উপরে এবং ৪৫ থেকে ৪৬ বছরের নীচে তাদের স্বাভাবিক কারণে মাসে চার-পাঁচ দিন কোনো আসনাদি করা ঠিক নয়, তবে ধ্যানাসন, শবাসন প্রভৃতি অভ্যাস করা যায়।
১২. মেয়েরা সন্তানসম্ভবা হলে ৩ মাস পর্যন্ত কিছু সহজ আসন বা প্রাণায়াম করা যেতে পারে, কিন্তু মুদ্রা অভ্যাস একেবারে করা উচিত নয়। সন্তান প্রসবের ৩ মাস পর আবার ধীরে ধীরে সব আসন অভ্যাস করা যায়। গর্ভাবস্থায় সকাল ও সন্ধ্যায় খোলা জায়গায় পায়চারি করা মেয়েদের পক্ষে উপকারী।
১৩. যোগাসন অভ্যাসকালে এমন কোনো পোশাক ব্যবহার করা উচিত নয় যাতে রক্ত চলাচল, শ্বাসপ্রশ্বাস বা অঙ্গ সঞ্চালনে বিঘ্ন ঘটে। সুতরাং অনুশীলনের সময় আলগা বা ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করা বিধেয়।
১৪. যোগব্যায়াম অনুশীলনকালে অন্যমনস্ক হওয়া বা ‘কথাবলা' উচিত নয়, কারণ মনের সঙ্গে দেহের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ যোগব্যায়ামের মূলমন্ত্র। একাগ্রতা ঈপিত ফললাভে সাহায্য করে। আসন অভ্যাসকারী যে আসন অভ্যাস করছে তার উপকারিতা সম্বন্ধে চিন্তা করা এবং নিজ শরীর ও মনের উপর তার প্রভাব উপলব্ধি করতে চেষ্টা করা উচিত।
২. যোগাসন অভ্যাসের গুরুত্বপূর্ণ নিয়মাবলি লিখুন।
Write the important rules for practice of yogasana.
❏ স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন, “পরমাত্মার সঙ্গে জীবাত্মার মিলনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি হল যোগ।” যোগদর্শন প্রাচীন ভারতীয় ষড়দর্শনগুলির মধ্যে অন্যতম। যোগদর্শনের প্রবক্তা মহর্ষি পতঞ্জলি। তাই যোগদর্শনের অপর নাম পতঞ্জলি দর্শন। মহর্ষি পতঞ্জলি যোগের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন “যোগশ্চিত্তবৃত্তি-নিরোধঃ” অর্থাৎ যার দ্বারা বা যে উপায়ে চিত্তবৃত্তিকে রোধ করা যায় তাকে যোগ বলে। যোগশাস্ত্রের অন্যতম উদ্দেশ্য হল মানুষের মন এবং শরীরকে সুস্থ রাখা। যোগচর্চা করলে মন শান্ত ও একাগ্র হয়। এর ফলে মানুষের কর্মদক্ষতা বাড়ে। নিয়মিত যোগাভ্যাসের কতকগুলি নিত্যপালনীয় কর্তব্য রয়েছে, যেগুলিকে পালন না করলে যোগাভ্যাস মূল্যহীন হয়ে পড়ে। যোগশাস্ত্র অনুসারে নিয়মিত যোগাভ্যাস করতে গেলে নিম্নলিখিত নিয়ম বা নির্দেশগুলি পালন করতে হয়।
❏ যোগাসন অভ্যাসের গুরুত্বপূর্ণ নিয়মাবলি :
১. প্রতিদিন সূর্যোদয়ের এক ঘণ্টা আগে শয্যা ত্যাগ করতে হবে। এরপর প্রাতঃকৃত্য সেরে সামান্য কিছু খেয়ে যোগাভ্যাস করতে হবে। ২. কায়মনোবাক্যে হিংসাকে পরিত্যাগ করতে হবে। ৩. সতত সৎচিন্তা ও সৎসঙ্গ করতে হবে।
৪. কায়মনোবাক্যে অপরিগ্রহ হতে হবে। ৫. কাম ক্রোধাদি রিপু থেকে সবসময়ে সতর্ক থাকতে হবে। ৬. গুরুজনদের শ্রদ্ধা করতে হবে। ৭. সব সময়ে সদ্ আচরণ করতে হবে। ৮. চৌর্যবৃত্তিকে পরিত্যাগ করতে হবে। ৯. চা, কফি, তামাক প্রভৃতি নেশা থেকে বিরত থাকতে হবে। ১০. কায়মনোবাক্যে ব্রহ্মচর্য পালন করতে হবে। ১১. সদাসর্বদা সত্যপথে চলতে এবং সত্য কথা বলতে হবে। ১২. বিলাসিতা কিংবা কঠোরতাকে ত্যাগ করতে হবে। ১৩. সাত্ত্বিক ও নিরামিষ আহার গ্রহণ করতে হবে। ১৪. অতিরিক্ত ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবার পরিত্যাগ করতে হবে। ১৫. খাবার সময় জলপান করবে না। খাওয়ার এক ঘণ্টা পরে জল পান করতে হয়। ১৬. খাওয়ার কমপক্ষে এক ঘণ্টা পর শয্যা গ্রহণ করবে ইত্যাদি।
No comments
Hi Welcome ....