Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Top Ad

Breaking News:

latest

b.ed 1st semester assignment pdf mark 10 and 5 | বি.এড ফার্স্ট সেমিস্টার এসাইনমেন্ট

   বি.এড ফার্স্ট সেমিস্টার এসাইনমেন্ট | B.ed 1st Semester Assignment in Bengali Version | Free PDF Download ❐  আরো পড়ুনঃ   B.Ed Notes A2z  ...

 
বি.এড ফার্স্ট সেমিস্টার এসাইনমেন্ট

 বি.এড ফার্স্ট সেমিস্টার এসাইনমেন্ট | B.ed 1st Semester Assignment in Bengali Version | Free PDF Download

❐ আরো পড়ুনঃ B.Ed Notes A2z
 
 Course - 1.1.1 (1st Half)
 
  1.  বৃদ্ধি ও বিকাশের উপর প্রভাব বিস্তারকারী সামাজিক উপাদানসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা করুন।
  2. বিকাশ সম্পর্কিত তথ্য জানার জন্য উপাদান গুলি লেখ।
  Course - 1.1.1 (2nd Half)
  1. গিলফোর্ডের তত্ত্বটি কী এবং তার তত্বের শিক্ষাগত তাৎপর্য লেখ।
  2. প্রেষণা চক্রটি আলোচনা করো।

1.বৃদ্ধি ও বিকাশের উপর প্রভাব বিস্তারকারী সামাজিক উপাদানসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা করুন।


জীবনব্যাপী ক্রমোন্নতিশীল সামগ্রিক পরিবর্তনের প্রক্রিয়াই হল বিকাশ। বিকাশের ফলে ব্যক্তি উৎকর্ষতার সঙ্গে কর্মসম্পাদনে সক্ষম হয়।মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তি-সম্ভাবনাগুলি নমনীয় ও পরিবর্তনশীল। প্রত্যেক শিশু তার বংশগতির ধারায় যে সহজাত প্রবৃত্তিগুলি নিয়ে জন্মায় সেগুলি পরিবেশের সঙ্গে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয় ও সংগতিবিধানের মধ্য দিয়ে ক্রমবর্ধমান হতে থাকে। সহজাত ও অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে শিশু সুনির্দিষ্ট বিকাশের দিকে এগিয়ে যায়। কাজেই বিকাশ প্রক্রিয়ায় কতকগুলি বিষয়ের প্রভাবকে অস্বীকার করা যায় না। বৃদ্ধি ও বিকাশের উপর প্রভাব বিস্তারকারী কতকগুলি উপাদান সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল-

(i) দারিদ্র্য (Poverty):
সাধারণত দারিদ্র্য বলতে যে বিষয়গুলি বোঝায় সেগুলি হল—
  • জীবনযাপনের সমাজভিত্তিক স্বাভাবিক মানের অভাব।
  • জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম বিষয়, যেমন— খাদ্য, বাসস্থান, পোশাক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ইত্যাদি প্রয়োজনীয় মাত্রায় সংগ্রহ করতে না পারা।
  • অর্থ, জমি, ঋণ ইত্যাদি আহরণে অসমর্থ।
  • সম্পদের অভাবে সামাজিক সম্পর্ক স্থাপন ও তা রক্ষার অক্ষমতা।
  • নিরাপত্তার অভাববোধ থেকে হতাশাগ্রস্ত অবস্থা।
  • প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন বয়সে শিশুকে যে প্রতিষেধক (টিকা) দেওয়া প্রয়োজন দরিদ্র পরিবার অনেক সময় তারও ব্যবস্থা করতে পারে না। অর্থাৎ পরিদ্র্যতা শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি ও বিকাশের উপর প্রত্যক্ষভাবে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে। দরিদ্র পরিবারের বেশিরভাগ পিতামাতা উভয়েই উপার্জনের জন্য নিযুক্ত থাকেন। তারা
  • শিশুর ন্যূনতম পরিচর্যা করারও সময় পান না। ফলে তাদের শিশুরা নিজেদের বঞ্চিত মনে করে এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে যা শিশুর মানসিক, সামাজিক ও প্রাক্ষোভিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে।
সুতরাং শিশুর সুষম বিকাশের পথে একটি বিরাট বাধা হল দারিদ্র্য। দারিদ্র্যের প্রধান প্রভাব পড়ে শিশুদের দৈহিক সুষম বৃদ্ধির উপর। দরিদ্র পরিবারের শিশুরা সঠিক পুষ্টিকর খাবার পায় না। ফলে দরিদ্র পরিবারের বেশিরভাগ শিশুই অপুষ্টিতে
ভোগে এবং অপুষ্টিজনিত রোগের ফলে শিশুর মধ্যে প্রতিরোধ শক্তি গড়ে ওঠে না।

(ii) সুযোগের অভাব (Lack of Opportunities):
প্রত্যেকটি শিশু জন্মসূত্রে ক্ষমতা, প্রবণতা ইত্যাদি প্রাথমিক মানসিক উপাদান নিয়ে জন্মায়। এই ক্ষমতা এবং প্রবণতাগুলির সঠিক বিকাশের জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন সুযোগসুবিধা। রাষ্ট্র, সমাজ বা পরিবারের কাছ থেকে  জীবনধারণের জন্য কিছু সাধারণ সুযোগসুবিধা পাওয়া শিশুর স্বাভাবিক অধিকার। সুযোগসুবিধাগুলি যখন শিশু সঠিকভাবে পায় না বা পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় তখনই তাকে বলা হয় সুযোগের অভাব। কোনো শিশু যদি জীবনবিকাশের বিভিন্ন স্তরে নির্দিষ্ট সুযোগসুবিধাগুলি না পায় তাহলে তার স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হয়। বিভিন্ন ধরনের সুযোগের অভাবে শিশুর বিকাশ কীভাবে ব্যাহত হয় তা নীচে আলোচনা করা হল- 
  • আর্থিক সুবিধার অভাব (Lack of Economical Opportunities): নিম্নবিড় পরিবারের শিশুদের খুব কম বয়সেই অর্থ উপার্জনের জন্য কাজে লাগানো হয়। লোকের বাড়িতে, দোকানে, কলকারখানায়, কৃষিতে, খনিতে ইত্যাদি কাজে এবং অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুরা নিযুক্ত হয়। এই শিশুদের দৈহিক, মানসিক, সামাজিক,প্রক্ষোভিক ইত্যাদি বিভিন্ন দিকের বিকাশই ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
  • পুষ্টির অভাব (Lack of Nutrition): দরিদ্র পরিবারের মানুষ তাদের শিশুকে যথাযথ পুষ্টিকর খাবার দিতে পারে না। ফলে শিশুর দৈহিক বিকাশ ব্যাহত হয় এবং বিভিন্ন অপুষ্টিজনিত রোগ, যেমন—রিকেট, রক্তাল্পতা ইত্যাদিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পুষ্টির অভাবে শিশুর বৌদ্ধিক বিকাশও ব্যাহত হয়। আবার শৈশবেই অর্থ উপার্জনের জন্য কাজে নিযুক্ত হওয়ায় খেলাধুলা বা শরীরচর্চার সুযোগ পায় না ফলে দৈহিক বিকাশ ব্যাহত হয়। 
  • বাসস্থানের অভাব (Lack of Proper Housing): দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী বেশিরভাগ মানুষেরই নিজেদের নির্দিষ্ট কোনো বাসস্থান থাকে না আর থাকলেও তা খুবই নিম্নমানের। ফলে এইসব পরিবারের শিশুরা নিশ্চিত বাসস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এইসব শিশুদের অনেক সময়ই ফুটপাথে বা প্ল্যাটফর্মে রাত্রিবাস করতে হয়।এইসব শিশুদের সার্বিক বিকাশ খুবই ব্যাহত হয়।
  • শিক্ষার অভাব (Lack of Education): দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী শিশুরা উপযুক্ত শিক্ষার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়। এইসব পরিবারের শিশুরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার বয়স হওয়ার আগেই অর্থ উপার্জনের জন্য বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয়ে পড়ে। এদের অভিভাবকদের পক্ষেও যথাযথ শিক্ষা দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে এদের মধ্যে পরিচ্ছন্নতাবোধ বা স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি হয় না। শিক্ষার অভাবে এইসব শিশুদের দৈহিক, মানসিক, সামাজিক এবং প্রাক্ষোভিক বিকাশ ব্যাহত হয়।
  • যত্ন ও ভালোবাসার অভাব (Lack of Caring and Love): শিশুর স্বাভাবিক বিকাশের জন্য সবচাইতে যেটা প্রয়োজন তা হল পিতামাতার ভালোবাসা ও যত্ন। পিতা ও মাতার মৃত্যু বা বিবাহবিচ্ছেদের কারণে অনেক শিশু পিতামাতা উভয়ের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়। দরিদ্র পরিবারের শিশুর পিতামাতা উভয়েই উপার্জনে নিযুক্ত থাকে বলে শিশুর সঠিক যত্ন করতে পারে না। ফলে এইসব শিশুদের মানসিক, প্রাক্ষোভিক ও সামাজিক বিকাশ ব্যাহত হয়।
 (iii) বঞ্চনা (Deprivation): মানুষের জীবনধারাণের জন্য যা প্রয়োজন তা না পাওয়ার অবস্থাকে বলা হয় বঞ্চনা। অর্থাৎ শিশুর সার্বিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাভাবিক বিষয়গুলি থেকে কোনো না কোনো কারণে তার দূরত্ব তৈরি হওয়া। যেসব কারণে শিশু বঞ্চিত হয় সেগুলি নীচে আলোচনা করা হলো
  • মা-বাবার স্নেহ-ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হলে শিশুর দৈহিক, মানসিক ও প্রাক্ষোভিক বিকাশ ব্যাহত হয়।
  • আর্থিক ও সামাজিক সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হলে শিশুর সামাজিক ও নৈতিক বিকাশ সঠিক হয় না।
  • শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলে শিশুর সঠিক জ্ঞানমূলক বিকাশ ও বৌদ্ধিক বিকাশ ঘটে না।
  • সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা থেকে বঞ্চিত হলে শিশুর সামাজিক বিকাশ ব্যাহত হয়।
  • দৈহিক বিকাশে: শিশু যদি তার পরিবারের কাছ থেকে সঠিক পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত হয় তাহলে তার দৈহিক বিকাশ ব্যাহত হয়, অপুষ্টিহীনতায় ভোগে এবং নানারকম দৈহিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়। শিশু উপযুক্ত খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হলেও তার দৈহিক বিকাশ ব্যাহত হয়।
  • মানসিক বিকাশে: শিশু মা-বাবা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের ভালোবাসা ও মনোযোগ থেকে বঞ্চিত হলে তাহলে সে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এবং সে ধীরে ধীরে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তার কল্পনাশক্তি, সৃজনশীলতা, কৌতূহল প্রবৃত্তি, চিন্তন ক্ষনতা, মনোযোগ প্রভৃতি প্রবৃত্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • প্রাক্ষোভিক বিকাশে: শিশু খাদ্য, নিরাপত্তা ও যত্ন থেকে বঞ্চিত হলে শিশুর মধ্যে রাগ ও ভয় প্রবল মাত্রায় বিকশিত হয়। ভালোবাসার প্রক্ষোভটি অবলুপ্ত হয়ে যায়। তার ব্যক্তিত্বের বিকাশও সঠিকভাবে হয় না। স্বাধীন চিন্তা করার ক্ষমতা তৈরি হয় না। অনেক শিশুর ক্ষেত্রে মানসিক অসুস্থতাও দেখা দেয়।
  • সামাজিক বিকাশে: শিশু পরিবারের মা-বাবা এবং অন্য সদস্যদের মনোযোগ থেকে বঞ্চিত হলে শিশুর সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়। শিশু অন্তর্মুখী হয়ে পড়ে, সবার সঙ্গে মেলামেশা করতে পারে না এবং অনেকসময় সমাজের প্রতি প্রচণ্ড ঘৃণা তৈরি হয় যার জন্য অনেক শিশু কৈশোরে অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে।
(iv) বিচ্ছিন্ন পরিবার (Disrupted Family): মানবসমাজে পরিবার হল একটি ক্ষুদ্র মৌলিক একক যা শিশুর প্রকৃতি ও ব্যক্তিত্ব বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। কালের নিয়মে সমাজ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পরিবারেরও অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। পরিবারের সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে পরিবর্তন এসেছে। একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে অণু পরিবার তৈরি হয়েছে। শিল্পবিপ্লব, নারীমুক্তি আন্দোলন, যন্ত্রসভ্যতা, সামাজিক নিয়ন্ত্রণের শৈথিল্য, আর্থিক বিপর্যয়, মেয়েদের বেশি পরিমাণে কর্মে নিযুক্তি ইত্যাদি কারণে সমাজের মধ্যে যে পরিবর্তন এসেছে তা নিয়ন্ত্রণ প্রায় অসাধ্য। সামাজিক এই অস্থিরতার প্রভাবে অনেক পরিবারেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। ফলে দিনের পর দিন ভগ্ন পরিবার বা বিচ্ছিন্ন পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিচ্ছিন্ন পরিবার বলতে বোঝায়— 
  • যেসব পরিবারে বাবা-মা সবসময় ঝগড়া করে।
  • বাবা-মার নিজেদের মধ্যে কোনো বোঝাপড়া নেই।
  • দুশ্চরিত্র মদ্যপ পিতা বা স্বার্থপর উদাসীন মার জন্য যে পরিবারে শান্তি নেই।
  • মৃত্যু বা বিবাহবিচ্ছেদ বা অন্য কোনো কারণে শিশু অল্প বয়সে বাবা বা মাকে হারিয়েছে এমন পরিবার।
এইসব পরিবারের শিশুর সার্বিক বিকাশ বিভিন্নভাবে ব্যাহত হয়। ভালোবাসার অভাব, কঠোর শৃঙ্খলা, অবহেলা বা প্রবল শৃঙ্খলাহীনতা ইত্যাদি নানা কারণে শিশুর মানসিক অস্থিরতা দেখা দেয়। তারা প্রক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আবেগের অস্থিরতার ফলে তারা অনেক সময় অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে।
 
(v) নিম্নমানের প্রতিবেশিত্ব (Poor Neighborhood): যে পরিবেশে শিশু বড়ো হয়। তার চারদিকের পরিবেশ ও প্রতিবেশী শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে সাধারণত প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় পরিবেশকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। শিশুর বিকাশের উপর প্রভাব বিস্তারকারী এই জাতীয় উপাদানগুলি হল—
  • প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব যেমন—প্রাকৃতিক বিপর্যয় (বন্যা, খরা)।
  • সমবয়সি বন্ধু যেমন—সহপাঠী বা খেলার সাথিদের প্রভাব।
  • সংগঠিত সংস্থা যেমন—ক্লাব, বিদ্যালয়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির প্রভাব। 
সমাজ পরিবর্তনের অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে সমাজের এবং জীবনের প্রচলিত মূল্যবোধের মানুষ আস্থা হারায়। এই সময়ে প্রাপ্তবয়স্কদের আচরণে সংগতির যে অভাব দেখা দেয় তার দ্বারা শিশুরা বিভ্রান্ত হয়। আস্থাহীন মূল্যবোধের ফলে শিশুরা অপরাধপ্রবণ হয়ে পড়ে। প্রতিবেশীদের নীতিগত আদর্শ সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট নীতি না থাকলে সমাজ গঠনের মৌলিক যোগ সূত্রাবলি দুর্বল হয়ে পড়ে যা অসংযম ও আদর্শহীনতার রুপ নিয়ে শিশুর মনে প্রতিফলিত হয়। ফলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হয় এবং সে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। এই শিশুরাই অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে। 
 
(vi) নিম্নমানের গৃহপরিবেশ (Poor Housing): শিশুর গৃহ পরিবেশ তার বিকাশকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। যেমন—
  • অবাঞ্ছিত নিম্নমানের গৃহপরিবেশ শিশুর বিকাশকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। বিশেষ করে নির্ভরযোগ্য কাঠামো, ন্যূনতম আধুনিক পরিসেবা (জল, ইলেকট্রিসিটি, শৌচালয়) বা দূষণমুক্ত গৃহপরিবেশ না হলে তা শিশুর দৈহিক, মানসিক ও প্রাক্ষোভিক বিকাশ ব্যাহত হয়।
  • অস্বাস্থ্যকর, অপরিচ্ছন্ন গৃহ পরিবেশ এবং গৃহে প্রয়োজনীয় থানাভাব শিশুকে গৃহের প্রতি বিরুপ করে তোলে। ফলে পরিবারের বন্ধন শিথিল হয় এবং মূল্যবোধ হ্রাস পায়।
  • পরিবারে শিশু যদি পিতামাতার যত্ন, ভালোবাসা ও মনোযোগ থেকে বর্গিত হয় তাহলে সে তার প্রয়োজনীয় চাহিদা পরিতৃপ্ত করার জন্য নানাপ্রকার অপরাধমূলক আচরণ করে থাকে।
  • তাকে শিক্ষার আওতায় আনাও সম্ভব হয় না। অতিরিক্ত আদর বা মনোযোগ পেলেও শিশুর ব্যক্তিত্বের সুষ্ঠু বিকাশ ব্যাহত হয়।
  • পিতামাতার বৈষম্যমূলক আচরণ শিশুর মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করে পরিবারে শৃঙ্খলাহীনতা শিশুকে স্বেচ্ছাচারী করে তোলে। কঠোর নিপীড়নমূলক শৃঙ্খলা শিশুর আত্মবিশ্বাস ও নিরাপত্তাবোধকে ক্ষুণ্ন করে ফলে শিশুর মধ্যে অসন্তোষ ও অতৃপ্তি দেখা দেয়। 
 ---------------------
 

2.বিকাশ সম্পর্কিত তথ্য জানার জন্য উপাদান গুলি লেখ।

শিশু মাতৃগর্ভ থেকেই ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। আর বড় হওয়ার ক্ষেত্রে দু'টি প্রক্রিয়া ক্রিয়াশীল। এর একটি হলো বর্ধন ও অন্যটি বিকাশ। প্রক্রিয়া দু'টি পরস্পর নির্ভরশীল হলেও এদের রয়েছে সমাজস্যপূর্ণ গতিময় ধারা। শিশুর বিকাশ কতগুলো নীতি অনুসারে অগ্রসর হয়। এ অংশে বিকাশের নীতি সম্পর্কে তথ্য জানার জন্য বিভিন্ন উপাদান গুলি নীচে আলোচনা করা হলো — 
 
(ক) বিকাশ সুনির্দিষ্ট ও পূর্বোক্তিযোগ্য ধারা মেনে চলে : বিকাশ সুনির্দিষ্ট ও পূর্বোক্তিযোগ্য ধারা মেনে চলে। অর্থাৎ
বিকাশের ক্ষেত্রে আগের কাজটি আগেই হবে পরের কাজটি পরে হবে। পরের কাজটি কখনো আগে সংঘটিত হবে না। উদাহরণস্বরূপ, শিশুর ভাষার বিকাশের ক্ষেত্রে প্রথমে কূজন, তারপর পর্যায়ক্রমে অস্পষ্ট উচ্চারণ, আধো আধো বোল, এক শব্দ দ্বারা মনের ভাব প্রকাশ এবং পরবর্তীতে অর্থপূর্ণ বাক্যের মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ।
(খ) বিকাশ অগ্রসর হয় কতগুলো ধাপের মাধ্যমে : মনোবিজ্ঞানীগণ আমাদের জীবন চক্রকে কতগুলো পর্যায়ে ভাগ
করেছেন। শিক্ষার্থীবৃন্দ, পূর্ববর্তী অংশে এ পর্যায় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে বলে এখানে আর তার পুনরাবৃত্তি করা হলো না। বিকাশের প্রত্যেকটি ধাপ বা পর্যায়ের রয়েছে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য এবং ক্রমবিকাশমূলক কাজ। প্রতিটি পর্যায়ে বিশেষ কাজগুলো যদি কেউ সম্পন্ন করতে না পারে তবে বলা যায় তার বিকাশের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে।
(গ) বিকাশ নিরবিচ্ছিন্নভাবে চলে : বিকাশ একটি নিরবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। এর গতি কখনো থেমে থাকে না। তবে এই গতি কখনো দ্রুত আবার কখনো মন্থর হতে পারে, যেমন- জন্মের পর থেকে ২ বৎসর বয়স পর্যন্ত শিশু দ্রুত গতিতে বাড়ে এবং প্রারম্ভিক শৈশবকালে বিকাশের গতিতে মন্থরতা আসে। বয়ঃসন্ধিকালের দৈহিক ও মানসিক পরিবর্তনগুলো দ্রুত হয় যা পরবর্তী পর্যায়গুলোতে পরিলক্ষিত হয় না। বিকাশের বিভিন্ন দিকের রয়েছে বিভিন্ন গতি বা হার। জন্মের পর শিশুর দেহের সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ একই হারে বৃদ্ধি পায় না।
(ঘ) বিকাশ ধারায় ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় : বিকাশের নিজস্ব ধারা থাকলেও বিকাশের ক্ষেত্রে
ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। যেমন, কেউ হাঁটতে শুরু করে দেরীতে কেউবা যথাসময়ে। ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে এই পার্থক্য বংশগতি, পরিবেশ, পুষ্টিকর খাবার, জলবায়ু, দৈহিক অবস্থা ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে।
(ঙ) বিকাশ পরিণমন ও শিখনের উপর নির্ভশীল : একটি শিশু কতটুকু শিখতে পারবে তা নির্ভর করে তার পরিণমনের উপর। পরিণমন (Maturity) হলো শিশুর আভ্যন্তরীণ বৃদ্ধি। পরিণমনের পূর্বে শিখন বা বিশেষ ধরনের প্রশিক্ষণের কোনরূপ সার্থকতা নেই। পরিণমন না হওয়া পর্যন্ত শিশুকে দিয়ে জোর করে কোন কিছু শেখানো যাবে না। উদাহরণস্বরূপ, পেন্সিল ধরার জন্য সে পরিপক্বতা প্রয়োজন তা আসেনা বলেই ৩ মাস বয়সের একটি শিশুকে দিয়ে লেখানো সম্ভব হয়না।
(চ) বিকাশের ধারায় বিচ্ছিন্নতার সাথে সমন্বয়ও রয়েছে : বিকাশের ধারার যেমন বিচ্ছিন্নতা রয়েছে তেমনি সমন্বয়ও রয়েছে, যেমন- আমাদের বুদ্ধি, মনোযোগ, আবেগ, প্রেষণা, স্মৃতি ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্নভাবে নিজস্ব কাজ করলেও তাদের মাঝে সমন্বয়ও আছে। অর্থাৎ একে অপরের সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে। 

____________
 

1.গিলফোর্ডের তত্ত্বটি কী এবং তার তত্বের শিক্ষাগত তাৎপর্য লেখ।

◻ গিলফোর্ড-এর মতে সমস্ত কাজই কোনো না কোনো বৌদ্ধিক কাজ এবং প্রতিটি বৌদ্ধিক কাজের তিনটি মাত্রা বা দিক রয়েছে। এইজন্য গিলফোর্ডের তত্ত্বকে বুদ্ধির ত্রিমাত্রিক তত্ত্ব বলে। গিলফোর্ডের মতে বুদ্ধির এই তিনটি মাত্রা (dimension) নিম্নরূপ
  1. প্রক্রিয়াগত মাত্রা (Operation dimension)
  2. বিষয়বস্তুগত মাত্রা (Content dimension)
  3. ফলাফলগত মাত্রা (Product dimension)
1. প্রক্রিয়াগত মাত্ৰা (Operation dimension) : এটি হল ব্যক্তির প্রাথমিক মানসিক উপাদান যার সাহায্যে সে মানসিক বৌদ্ধিক প্রক্রিয়া পরিচালনা করে লক্ষ্যের দিকে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। গিলফোর্ডের মত অনুযায়ী প্রক্রিয়াগত মাত্রা পাঁচ ধরনের হতে পারে— 
  • বোধগম্যতা/প্রত্যাভিজ্ঞা
  • স্মৃতি
  • অভিসারী উৎপাদন
  • অপসারী উৎপাদন
  • মূল্যায়ন
 
2. বিষয়বস্তুগত মাত্রা (Content dimension) : নির্দিষ্ট উদ্দীপকের ওপরই ব্যক্তি তার মানবিক প্রক্রিয়া কার্যকারী করে। এই উদ্দীপককে বলে বিষয়বস্তুগত মাত্রা। অর্থাৎ ব্যক্তি বিষয়বস্তুগত মাত্রার ওপর মানসিক প্রক্রিয়া করে থাকে। গিলফোর্ডের মতে পাঁচধরনের বিষয়বস্তু হতে পারে—
  • দৃশ্যগত (Visual)
  • শ্রবণগত (Auditory)
  • সাংকেতিক (Symbolic)
  • অর্থগত (Semantic)
  • আচরণগত (Behavioral)
3. ফলাফলগত মাত্রা (Product dimension) : নির্দিষ্ট উদ্দীপক অর্থাৎ বিষয়বস্তুর ওপর উপযুক্ত বৌদ্ধিক প্রক্রিয়া প্রয়োগ করে যে লক্ষ্য অর্জিত হয় তাই হল ফলাফলগত মাত্রা। এটি ছয় ধরনের হতে পারে—
  • একক (Units)
  • শ্রেণি (Class)
  • সম্পর্ক (Relation)
  • সিস্টেম (System)
  • রূপান্তর/পরিবর্তন (Transformation)
  •  তাৎপর্য নির্ণয় (Implication)

গিলফোর্ড তিনটি মাত্রা ও প্রত্যেকটির অন্তর্গত বিভিন্ন পর্যায়কে একটি মডেলেরমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। যা Structure of Intellect বা SOI মডেল নামে পরিচিত। 
 

ওপরের ঘনকে তিনটি তলে তিনটি মাত্রা (বিষয়বস্তু, প্রক্রিয়াগত ও ফলাফল) প্রতিস্থাপিত  হয়েছে। প্রতিটি তলকে যথাক্রমে পাঁচটি, পাঁচটি ও ছয়টি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। ঘনকটির মধ্যে মোট 5 × 5 × 6 = 150 টি ছোটো ছোটো ঘনক রয়েছে। গিলফোর্ডের মতে  বড়ো ঘনকটি হল ব্যক্তির সম্পূর্ণ বুদ্ধি, যা মোট 150টি উপাদান নিয়ে গঠিত। অর্থাৎ মানুষের  সবধরনের বৌদ্ধিক কার্যাবলির সংখ্যা 150 টি, যার জন্য 150 টি উপাদান প্রয়োজন।

গিলফোর্ডের শিক্ষাগত তাৎপর্য – গিলফোর্ডের তত্ত্ব অনুসারে মানুষের বুদ্ধির উপর  মোট 150 টি। এগুলি সবগুলিই শ্রেণিকক্ষের শিখনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয়। প্রথমে দেখে  নিতে হবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই উপাদানগুলি রয়েছে কিনা এবং এটি জানার জন্য প্রয়োজন  সক্ষম ও কোন উপাদানে দুর্বল তারা। শিক্ষার্থী যেগুলি উপাদানে দুর্বল সেগুলিকে শক্তিশালী কি  কোনো নির্দিষ্ট অভীক্ষা এবং এই অভীক্ষার মাধ্যমে বুঝতে পারা যায় কোন শিক্ষার্থী কোন উপাদান  সবল বা শক্তিশালী হয়। এভাবে সংশোধনী ক্রিয়ার ফলে শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক উপাদান শক্তি জন্য উপযুক্ত সংশোধনী (remedial) ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে যাতে শিক্ষার্থী দুর্বল উপাদান  হয় এবং শিক্ষার্থীর শিখন কার্যকারী হয়।
 
------------------
 

প্রেষণা চক্রটি আলোচনা করো।

প্রেষণার সংজ্ঞা : [1] মনোবিদ সুইফট্ (Swift)-এর মতে, ব্যক্তির নানান প্রকার চাহিদা পরিতৃপ্তির জন্য, যে পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া তার আচরণধারাকে সর্বদা নিয়ন্ত্রণ করে, তা হল প্রেষণা। [2] মনোবিদ উইনার (Weiner) বলেন যে, প্রেষণা এমন একটি অবস্থা যা ব্যক্তিকে বিশেষ একটি ক্রিয়া সম্পাদনে উদ্বুদ্ধ করে, ক্রিয়া সম্পাদনাকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমুখী করে এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ব্যক্তিকে কর্মসম্পাদনে ব্যস্ত রাখে। [3] মনোবিদ ক্লাইডার (Cryder) বলেন যে, আকাঙ্ক্ষা, প্রয়োজন এবং আগ্রহ, যা একটি প্রাণীকে সক্রিয় বা কর্মোদ্যোগী করে তোলে এবং একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর দিকে পরিচালিত করে, তাকে প্রেষণা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে
 
সুতরাং, মনোবিদগণের উপরিলিখিত সংজ্ঞার ভিত্তিতে বলা যায়, প্রেষণা কতিপয় মনস্তাত্ত্বিক ও ধারাবাহিক কাজের সমষ্টি যা কোনো বিশেষ কাজ সম্পাদনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে; এই ধারাবাহিক কাজগুলো পর্যায়ক্রমে পুনরায় শুরু হয় বিধায় এটিকে প্রেষণা চক্র বলা হয়। মানুষের প্রয়োজনের তাগিদে অভাব বোধ হয় যেখান থেকে চাহিদা সৃষ্টি, পরে অভাব পূরণে অনুপ্রাণিত হয়ে কার্য সম্পাদন করতে থাকে। মূলত মানুষের অভাব অসীম। মানুষ তার জীবনে কোনো না কোনো অভাব দ্বারা তাড়িত। মানুষের একটি চাহিদা পুরণ হলে অন্য একটি চাহিদা তার সামনে হাজির হয়। প্রেষণা চক্রের আকারে আবর্তিত হয়ে মানুষের সব নিত্য নতুন চাহিদা পূরণ করে থাকে। অর্থাৎ প্রেষণা একটি প্রক্রিয়া যা মানুষের অভাববোধ থেকে শুরু হয় এবং শেষ হয় সন্তুষ্টি অর্জনের মধ্য দিয়ে; প্রেষণা একটিচক্রের ন্যায় আবর্তিত হয় বিধায় এটিকে প্রেষণা চক্র বলা হয়।
 
প্রেষণা চক্র : (Motivation Cycle)
প্রেষণা হল একটি অর্থবোধক আচরণ। আচরণ অভাববোধ বা প্রয়োজনবোধ দ্বারা সৃষ্টি হয় এবং কোনো উদ্দেশ্যসাধনের জন্য লক্ষ্যবস্তুর দিকে পরিচালিত হয়। প্রেষণাকে বিশ্লেষণ করলে, চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্তরের সন্ধান পাওয়া যায়
এই স্তরগুলি চক্রাকারে আবর্তিত হয়ে প্রেষণাচক্র সম্পন্ন করে। স্তরগুলি হল—[1] অভাববোধ বা চাহিদা (Need), [2] তাড়না (Drive), [3] সহায়ক বা যান্ত্রিক আচরণ (Instrumental behavior) এবং [4] লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য (Goal)
 
প্রেষণা চক্র : (Motivation Cycle)
[1] অভাববোধ বা চাহিদা: প্রাণীর প্রেষণা চক্রের প্রথম ধাপ হল অভাববোধ বা চাহিদা
নানান কারণে প্রাণীর মধ্যে অভাববোধ বা চাহিদা দেখা দিতে পারে। যেমন—
  • দেহের কলা-কোশে প্রয়োজনীয় কোনো উপাদানের ঘাটতি দেখা দিলে, তা থেকে শারীরিক প্রেষণার উন্মেষ ঘটে। ক্ষুধা, তৃষ্ণা ইত্যাদি হল শারীরিক প্রেষণা
  • বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অবস্থার কারণে ব্যক্তির মধ্যে অভাববোধ বা চাহিদা দেখা দিতে পারে। ব্যক্তির সুযোগ সুবিধা, ভোগবিলাসের জন্য প্রেষণার উন্মেষ ঘটতে পারে। স্বীকৃতি, প্রভাব বিস্তারের স্পৃহা এই-জাতীয় প্রেষণা।
  • বিভিন্ন অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি-নিঃসৃত রাসায়নিক পদার্থ তথা হরমোন রক্তস্রোতে মিশলে প্রাণী উত্তেজিত হয় এবং নানান ধরনের আচরণ করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বিভিন্ন প্রকার স্টেরয়েড-জাতীয় হরমোন প্রাণীদেহে যৌন প্রেষণা, মাতৃত্ব প্রেষণা ইত্যাদি সৃষ্টি করে।
[2] তাড়না: কোনো কিছুর অভাববোধ বা চাহিদা থেকে প্রাণীর মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। ওই অস্বস্তিকর অবস্থা প্রাণীকে অভাবপূরণের জন্য তাড়িত করে। অর্থাৎ, অভাবের তাড়নায় প্রাণী সক্রিয় হয়ে ওঠে।
[3] সহায়ক বা যান্ত্রিক আচরণ: প্রেষণাচক্রের তৃতীয় স্তর হল সহায়ক বা যান্ত্রিক আচরণ। প্রাণী তার অস্থিরতা নিবারণের জন্য বা তার লক্ষ্যবস্তুকে পাওয়ার জন্য কতকগুলি বিশেষ আচরণ প্রদর্শন করে। একে সহায়ক আচরণ বলে।
[4] লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য: প্রেষণাচক্রের চতুর্থ ও শেষ ধাপ লক্ষ্য- বস্তুতে উপনীত হওয়া বা উদ্দেশ্য সাধন করা। লক্ষ্যবস্তুতে উপনীত হতে পারলে প্রাণীর অস্বস্তিকর শারীরিক অবস্থা দূরীভূত হয়
প্রাণী তৃপ্তি লাভ করে এবং বিশ্রাম নেয়। প্রাণীর জীবনে প্রেষণার চারটি স্তর পর্যায়ক্রমে উপস্থিত হয়। একটি প্রেষণা শেষ হওয়ার পরমুহূর্তে অপর একটি প্রেষণার সৃষ্টি হয়জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রাণীর জীবনে প্রেষণা চক্রাকারে আবর্তিত হতে থাকে।
----------------
 
More Updated Soon ...

No comments

Hi Welcome ....