Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Top Ad

Breaking News:

latest

madhyamik abta test paper geography answer 2023 | abta all page 56 to 59

2023 Madhyamik Geography Abta Question And Answer Hello Students এবার যারা ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে চলেছো So, তোমাদের জন্য এখানে এব...

madhyamik abta test paper 2023 geography

2023 Madhyamik Geography Abta Question And Answer


Hello Students এবার যারা ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে চলেছো So, তোমাদের জন্য এখানে এবিটিএ টেস্ট পেপারের ভূগোল সাবজেক্ট এর পৃষ্ঠা নম্বর-৫৬,৫৭,৫৮,৫৯ পর্যন্ত যতগুলো প্রশ্ন রয়েছে সেগুলোর সঠিক উত্তর সমাধান খুব সুন্দর ভাবে পরপর নম্বর অনুযায়ী নীচের দিকে দেওয়া রয়েছে ম্যাপ পয়েন্টিং উত্তর এখানে দেওয়া হয়নি।

    ❐ আরো পড়ুনঃ

বিভাগ-‘ক’ ১। বিকল্পগুলির থেকে সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখো : ১৪×১=১৪
১.১ ‘ক্ষয়সীমা’ ধারণার (Base Level) প্রবর্তক হলেন一
(ক) এল সি কিং 
(খ) ডব্লিউ পেঙ্ক 
(গ) জে ডব্লিউ পাওয়েল 
(ঘ) ডব্লিউ এম ডেভিস। 

১.২ হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট দীর্ঘ, আঁকাবাঁকা শৈলশিরার ন্যায় ভূমিরূপকে বলে—
(ক) এসকার 
(খ) কেম্ 
(গ) ড্রামলিন 
(ঘ) কেল। 

১.৩ ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত ফিলিপাইনস-এ যে নামে পরিচিত
(ক) টুইস্টার 
(খ) তাইফুন 
(গ) হ্যারিকেন 
(ঘ) ব্যাগুই।

১.৪ পর্বতের ঢাল বেয়ে উপরের দিকে বয়ে চলা বায়ুকে বলে—
(ক) ক্যাটাবেটিক বায়ু
(খ) অ্যানাবেটিক বায়ু 
(গ) পশ্চিমা বায়ু 
(ঘ) আয়ন বায়ু। 

১.৫ উষ্ণ কুরোশিও স্রোত প্রবাহিত হয় যে মহাসাগরে
(ক) আটলান্টিক মহাসাগর 
(খ) প্রশান্ত মহাসাগর
(গ) ভারত মহাসাগর 
(ঘ) উত্তর সাগর। 

১.৬ পৃথিবীর বৃহৎ মৎস্যক্ষেত্রগুলি গড়ে উঠেছে যে দুই ধরনের সমুদ্রস্রোতের মিলন স্থলে তা হল—
(ক) দুটি উষ্ণস্রোতের
(খ) উষ্ণ ও শীতল স্রোতের 
(গ) দুটি শীতল স্রোতের 
(ঘ) কোনটাই নয়। 

১.৭ বর্জ্য সৃষ্টি হয় না নীচের যে উৎস থেকে—
(ক) বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র 
(খ) সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র
(গ) জোয়ার ভাটা শক্তি কেন্দ্র 
(খ) সবগুলিই প্রযোজ্য। 

১.৮ গাঙ্গেয় সমভূমির নদীতীরবর্তী নবীন পলিমাটিকে বলে—
(ক) ভাবর 
(খ) ভুর 
(গ) খাদার 
(ঘ) ভাঙর।        
                                                                                 
১.৯ পশ্চিমঘাট পর্বতের একটি গিরিপথ যা নীলগিরি পর্বতের নিকটবর্তী তা হল
(খ) থলঘাট্ 
(খ) ভোরঘাট 
(গ) পলঘাট 
(ঘ) কাসারা ঘাট। 

১.১০ গোদাবরীর একটি উপনদী হল—
(ক) ধানসিড়ি 
(খ) তুঙ্গভদ্রা 
(গ) কোশি 
(ঘ) ইন্দ্রাবতী।

১.১১ ভারতের মৃত্তিকা সংরক্ষণের একটি পদ্ধতি হল 
(ক) জলসেচ 
(খ) ঝুম চাষ 
(গ) ফালি চাষ 
(ঘ) পশুচারণ। 

১.১২ উত্তর ভারতের একটি ডিজেল রেলইঞ্জিন নির্মাণ কেন্দ্র হল
(ক) কানপুর 
(খ) কাপুরথালা 
(গ) বারানসী 
(ঘ) গুরগাঁও।

১.১৩ পূর্ব উপকূলের গভীরতম সমুদ্র বন্দরটি হল 
(ক) চেন্নাই 
(খ) তুতিকোরিন 
(গ) পারাদ্বীপ
(ঘ) বিশাখাপত্তনম।

১.১৪ নীচের যেটি ‘জিও স্টেশনারি’ উপগ্রহ নয়, তা হল
(ক) INSAT 
(খ) LANDSAT 
(গ) GOES 
(ঘ) METEOSAT


 বিভাগ-‘খ’ ২.১ নিম্নলিখিত বাক্যগুলি শুদ্ধ হলে পাশে ‘শু’ এবং অশুদ্ধ হলে ‘অ’ 
লেখো। 
(যে কোনো ছয়টি) :  ৬×১=৬ 
২.১.১ সমপ্রায় ভূমিতে ইনসেলবার্জ দেখা যায়।
উত্তরঃ অশুদ্ধ   
২.১.২ পর্বতের অনুবাত ঢালে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটে। 
উত্তরঃ অশুদ্ধ  
২.১.৩ চিল্কা হল ভারতের বৃহত্তম উপহ্রদ। 
উত্তরঃ শুদ্ধ
২.১.৪ দুটি মুখ্য জোয়ারের সময়ের ব্যবধান ২৪ ঘণ্টা। 
উত্তরঃ অশুদ্ধ  
২.১.৫ মরু অঞ্চলে লবণাম্বু উদ্ভিদ দেখা যায়। 
উত্তরঃ অশুদ্ধ  
২.১.৬ ১নং জাতীয় জলপথটি হলদিয়া থেকে এলাহাবাদ পর্যন্ত বিস্তৃত।
উত্তরঃ শুদ্ধ
২.১.৭ মৌজা ম্যাপ হল একটি বৃহৎ স্কেলের মানচিত্র।
উত্তরঃ শুদ্ধ

২.২ উপযুক্ত শব্দ বসিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো (যে কোনো ছয়টি) : 
৬×১=৬
২.২.১ ___
হল পৃথিবীর বৃহত্তম পাদদেশীয় হিমবাহ।
উত্তরঃ মালাস্পিনা  
২.২.২ ঘনীভবনের 
সময়_____ নির্গত হয়। 
উত্তরঃ জলকণা 
২.২.৩ পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝে চাঁদ অবস্থিত হলে তাকে ___বলে। 
উত্তরঃ সংযোক 
২.২.৪ জৈব ভঙ্গুর বর্জ্যের জীবাণু দ্বারা বিয়োজনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে____বলে। 
উত্তরঃ কম্পোস্টিং 
২.২.৫ অণুস্রাবণ (Leaching) প্রক্রিয়াটি গুরুত্বপূর্ণ____মৃত্তিকার উৎপত্তিতে। 
উত্তরঃ ল্যাটেরাইট  
২.২.৬______হল একটি বিশুদ্ধ কাঁচামাল ভিত্তিক শিল্প। 
উত্তরঃ কার্পাস বয়ন 
২.২.৭ উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার বলা হয়___শহরকে।
উত্তরঃ শিলিগুড়ি 

২.৩ একটি বা দুটি শব্দে উত্তর দাও। (যে কোনো ছয়টি প্রশ্নের উত্তর দাও) : ৬×১=৬
২.৩.১ হিমবাহের উপর সৃষ্টি হওয়া সমান্তরাল ও আড়াআড়ি ফাটলকে কী বলে? 
উত্তরঃ ক্রেভাস  
২.৩.২ রকি পর্বতের পূর্বঢালে প্রবাহিত উষ্ণ বায়ুটির নাম কী? 
উত্তরঃ চিনুক 
২.৩.৩ ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে কোন সমুদ্রস্রোতের দিক পরিবর্তন ঘটে? 
উত্তরঃ মৌসুমী স্রোত 
২.৩.৪ কালবৈশাখি আসামে কী নামে পরিচিত? 
উত্তরঃ বরদৈছিলা 
২.৩.৫ পৃথিবীর দ্রুতগামী সমুদ্র স্রোতটির নাম কী?
উত্তরঃ উপসাগরীয় 
২.৩.৬ কোন ক্ষতিকারক ধাতুর প্রভাবে ‘ডিসলেক্সিয়া’ রোগ হয়। 
উত্তরঃ সীসা 
২.৩.৭ সিকিমের কোন গিরিপথ দ্বারা ভারত এবং চিনের মধ্যে বাণিজ্যিক আদানপ্রদান হয়? 
উত্তরঃ নাথুলা 
২.৩.৮ ISRO-র সদর দপ্তর কোথায় অবস্থিত?
উত্তরঃ ব্যাঙ্গালুরুতে অবস্থিত

২.৪ বামদিকের সাথে ডানদিকেরগুলি মিলিয়ে লেখো : ১×৪=৪




বিভাগ-‘গ’ ৩। নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।

(বিকল্প প্রশ্নগুলি লক্ষণীয়): ৬×২=১২
৩.১ ওয়াদি কীভাবে সৃষ্টি হয়? 
উত্তরঃ ওয়াদি হল মরুভূমির শুষ্ক নদীখাত। স্বল্পমেয়াদি প্রবল বর্ষণে মরুভূমির কোনো অংশ দিয়ে প্রবলবেগে জল বাহিত হলে সেই অংশের শিথিল বালি অপসারিত হয় এবং নদীখাতের উৎপত্তি ঘটে। যেহেতু মরুভূমিতে বৃষ্টি খুব কম বা হয় না তাই এই নদীখাতটি শুষ্ক এভাবেই ওয়াদি সৃষ্টি হয়। 
অথবা, হিমরেখা কাকে বলে? 
উত্তরঃ ভূপৃষ্ঠে যে কাল্পনিক সীমারেখার ওপর সারাবছর তুষার জমে থাকে এবং যে সীমারেখার নীচে তুষার গলে জলে পরিণত হয় তাকে হিমরেখা বলে। হিমরেখাতেই হিমবাহ গলে নদীর উৎপত্তি ঘটে। 

৩.২ অ্যালবেডো কী?
উত্তরঃ সূর্য থেকে আগত (200 কোটি ভাগের 1 ভাগ) মোট শক্তির প্রায় 34% মেঘপুঞ্জ, ধূলিকণা দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে মহাশূন্যে ফিরে যায়। এই রশ্মি পৃথিবী ও বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করতে পারে না, একেই পৃথিবীর অ্যালবেডো বলে এটি নিষ্ক্রিয় সৌরতাপ নামেও পরিচিত। 
অথবা, বানডাকা কাকে বলে? 
উত্তরঃ ভরা কোটালের সময় সমুদ্রের জল নদীর মোহনা দিয়ে প্রবল বেগে উলটো খাতে প্রবেশ করেই প্রবল জলোচ্ছ্বাস ঘটায় একে বানডাকা বলে। বানডাকার ফলে নদীর দু-পাশে বন্যা হয়, জমি লবণাক্ত হয়, জাহাজ, স্টিমার, নৌকার ক্ষতি হয়, বাড়িঘর ভাঙে।

৩.৩ বর্জ্যের পুনর্নবীকরণ কাকে বলে? 
উত্তরঃ বর্জ্যের পুনর্নবীকরণ বলতে বোঝায় বিশেষ কোনো বৈজ্ঞানিক উপায়কে অবলম্বন করে কোনো ব্যবহৃত দ্রব্যকে আবার সম্পূর্ণরূপে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা। উদাহরণ : কলকাতা শহরের বুকে অবস্থিত বিশেষ বিশেষ জলাধারগুলিতে সংগৃহীত জল, সাধারণত পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা-নির্গত জলকে বিশুদ্ধিকরণের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় জল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
অথবা, ভার্মিকম পোস্টিং কী? 
উত্তরঃ কেঁচোর স্বাভাবিক জীবনযাত্রার মাধ্যমে জৈব বর্জ্যের বিয়োজন ঘটে হিউমাসে পরিণত হওয়ার পদ্ধতিকে ভার্মিকম পোস্টিং (ভার্মি-কম্পোস্টিং) বলে।

৩.৪ কয়াল কী? 
উত্তরঃ কেরালার মালাবার উপকূলে যে অসংখ্য জলাভূমি বা ব্যাকওয়াটারস রয়েছে সেগুলিকে স্থানীয় ভাষায় কয়াল বলে। উদাহরণ : ভেম্বানাদ (বৃহত্তম), অষ্টমুডি, পারাভুর প্রভৃতি।
অথবা, দুন কাকে বলে? 
উত্তরঃ উত্তরাখণ্ডের শিবালিক ও হিমাচল হিমালয়ের মধ্যবর্তী গঠনগত উপত্যকাগুলিকে ‘দুন’ বলে। উদাহরণ : দেরাদুন (বৃহত্তম), চৌখাম্বা, পাটলি হল ‘দুন’ উপত্যকা।

৩.৫ জীবিকাসত্তা ভিত্তিক কৃষি কাকে বলে? 
উত্তরঃ কৃষক তার নিজ পরিবারের খাদ্যের প্রয়োজনের উদ্দেশ্যে যে কৃষিকাজ সম্পাদন করে তা জীবিকাসত্তাভিত্তিক কৃষি। উদাহরণ : ভারতসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ধান চাষ জীবিকাসত্তাভিত্তিক কৃষির অন্তর্গত।
অথবা, আদমসুমারী কাকে বলে? 
উত্তরঃ কোনো নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চল বা রাজনৈতিক অঞ্চলে (দেশ, রাজ্য, জেলা ইত্যাদি) নির্দিষ্ট সময় অন্তর জনসংখ্যা সংক্রান্ত (মোট জনসংখ্যা, নারী-পুরুষ জনসংখ্যা, জন্মহার, মৃত্যুহার ইত্যাদি) তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পদ্ধতি হল সেনসাস বা আদমসুমারী।

৩.৬ সেন্সর কাকে বলে? 
উত্তরঃ  সেন্সর হল একপ্রকার ক্যামেরা যা কৃত্রিম উপগ্রহে রাখা থাকে। এর সাহায্যেই পৃথিবীপৃষ্ঠের বিভিন্ন উপাদানকে
সংবেদন করা হয়। এই যন্ত্রের মাধ্যমে মহাকাশ থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন উপাদান থেকে প্রতিফলিত সূর্যরশ্মির পরিমাণ সংগ্রহ করে তার বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরতে সাহায্য করে। উদাহরণ : Radar, Multispectral Camera প্রভৃতি হল সেন্সর।
সেন্সর
অথবা, উপগ্রহ চিত্রের দুটি গুরুত্ব লেখো।
উত্তরঃ উপগ্রহ চিত্রের দুটি গুরুত্ব হল— (i) কৃষি ও ভূমি ব্যবহার : কোথায় কী ধরনের ফসল উৎপাদন হয়, হেক্টর প্রতি উৎপাদন নির্ণয়, ভূমি ব্যবহারের মানচিত্র প্রস্তুত, বন্যা ও খরাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিতকরণ প্রভৃতি কাজ উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে অনেকটা নিখুঁত ও সহজে করা সম্ভব হচ্ছে। (ii) জলসম্পদ : ভৌমজলের মানচিত্র তৈরি, জলাভূমির মানচিত্র তৈরি, মৃত্তিকাক্ষয় অঞ্চল চিহ্নিতের কাজ এই চিত্রের মাধ্যমে করা হয়।

বিভাগ-‘ঘ’৪। সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক উত্তর দাও। 
(বিকল্প প্রশ্নগুলি লক্ষণীয়): ৩×৪=১২
৪.১ ড্রামলিন ও রসেমতানের মধ্যে পার্থক্য করো। 

Responsive table
বিষয় রসে মতানে ড্রামলিন
1.আকৃতি হিমবাহ ক্ষয়কার্যের মাধ্যমে সৃষ্ট উঁচু ঢিবির ন্যায় শিলাস্তূপকে রসে মতানে বলে। হিমবাহ সঞ্চয়কার্যের ফলে ওলটানো নৌকার মতো আকৃতিবিশিষ্ট ভূমিরূপকে ড্রামলিন বলে।
2.প্রকৃতি এটি কঠিন শিলাস্তর দ্বারা গঠিত ভূমিরূপ। এটি পলি, নুড়ি, গ্রাভেল সঞ্চয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ।
3.অবস্থান উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে এটি গঠিত হয়। পর্বতের পাদদেশে হিমবাহ ও জলধারার মিলিত সঞ্চয়কার্যে এটি গঠিত হয়।
4.বৈশিষ্ট্য রসে মতানে ভূমিরূপের প্রতিবাত অংশ মসৃণ এবং অনুবাত অংশ অমসৃণ হয়। ড্রামলিনের প্রতিবাত অংশ অমসৃণ এবং অনুবাত অংশ মসৃণ হয়।
5.সম্মিলন রসে মতানে সাধারণত এককভাবে অবস্থান করে। অসংখ্য ড্রামলিন একত্রে অবস্থান করে, ‘Basket of eggs topography’ গঠন করে।

অথবা, আয়ন বায়ুর গতিপথে মরুভূমি সৃষ্টি হয় কেন? 
উত্তরঃ কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় দুটি থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে এই বায়ু প্রবাহিত হয়। নির্দিষ্ট পথে প্রবাহিত হয় বলে (আয়ন শব্দের অর্থ পথ) এই বায়ু আয়ন বায়ু নামে পরিচিত। জলবায়ুর প্রভাবে ক্রান্তীয় অঞ্চলে মহাদেশের পূর্বে প্রবল বৃষ্টি হয়, কিন্তু পশ্চিম অংশ বৃষ্টিহীন থাকে। তাই মহাদেশের পশ্চিম অংশে বড়ো বড়ো ক্রান্তীয় মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে। 

৪.২ ভাগীরথী ও হুগলী নদীর উপর বর্জ্যের প্রভাব আলোচনা করো। 
উত্তরঃ ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে মিশে আছে প্রায় 2525 কিমি দীর্ঘ গঙ্গা তথা ভাগীরথী-হুগলি নদী। বর্জ্যের প্রভাব থেকে গঙ্গাও মুক্ত নয়। নদীতীরবর্তী প্রায় 100 টিরও বেশি শহর এই গঙ্গানদীতেপ্রায় 16 মিলিয়ন লিটার তরল বর্জ্য নিষ্কাশন করে। এছাড়া ভাগীরথী ও হুগলী নদীর উপর - (i) বর্জ্য পদার্থের সঙ্গে মিশে থাকা দূষিত দ্রব্যে জলের ভৌত, রাসায়নিক ও জৈবিক ধর্মের পরিবর্তন ঘটছে। (ii) কঠিন বর্জ্যভারে নদীগর্ভ ভরাট হয়ে পড়ায় নদীর নাব্যতা কমে যাচ্ছে। জাহাজ চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।

অথবা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থীর ভূমিকা আলোচনা করো। 
উত্তরঃ পরিবেশকে বর্জ্য মুক্ত করতে শিক্ষার্থীকেই প্রাথমিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। শিশুমনে পরিবেশ সচেতনতা যত বাড়বে, পৃথিবী ও পরিবেশ ততই বাসযোগ্য ভূমিতে পরিণত হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থীরা যেসব উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে সেগুলি হল— (i) জৈব ভঙ্গুর, জৈব অভঙ্গুর, বিষাক্ত, বিষহীন বর্জ্য সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। চেষ্টা করতে হবে জৈব অভঙ্গুর ও বিষাক্ত বর্জ্যগুলির ব্যবহার হ্রাস করা। যেমন—Use & Throw পেনের পরিবর্তে কালির পেন ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তোলা। (ii) পরিবেশ পরিচ্ছন্নতায় রোগমুক্তি ঘটে। এই বিষয়ে বিদ্যালয় সচেতনতার দৃষ্টি দেখালে, বাড়ির চারপাশে বর্জ্য নিক্ষেপে নির্দিষ্ট ডাস্টবিন ব্যবহার করার ওপর গুরুত্ব বাড়াতে হবে। (iii) ছাত্ররা গ্রুপ তৈরি করে নিজের নিজের এলাকায় বর্জ্যের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করবে।

৪.৩ ভারতীয় কৃষির তিনটি সমস্যা ব্যাখ্যা করো। 
উত্তরঃ যদিও ভারত কয়েকটি ফসল উৎপাদনে অন্যতম শীর্ষস্থানের অধিকারী এবং খাদ্য উৎপাদনে মোটামুটি স্বয়ম্ভর তবু এদেশে কৃষি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন যেমন—(i) চাষিদের মাথাপিছু জমি উন্নত দেশগুলির তুলনায় খুবই কম। আবার জমিগুলি আয়তনে এত ছোটো এবং ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে যে তাতে উন্নত কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহার সম্ভব নয়। (ii) উন্নত বীজ, সার, কীটনাশক, কৃষিজ যন্ত্রপাতির ব্যবহার সীমিত। সব ফসলে উন্নত বীজ ব্যবহার হয় না। সবুজবিপ্লবের প্রভাব ভারতের সকল স্থানে পড়েনি, ফলে উৎপাদনশীলতা কম।(iii) বেশিরভাগ কৃষিজমি খাদ্যফসল উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। অধিক লাভজনক হর্টিকালচার (ফল, ফুল, শাকসবজি) চাষ এখানে কম। 

অথবা, পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষির উন্নতির কারণ হিসাবে সবুজ বিপ্লবের প্রভাব ব্যাখ্যা করো। 
উত্তরঃ পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুব বেশি না হলেও উন্নত জলসেচ ব্যবস্থা এই অঞ্চলের কৃষির উন্নতির অন্যতম প্রধান কারণ। উচ্চফলনশীল বীজ, জলসেচ, সার ও কীটনাশকের জোগান, ঋণদান প্রভৃতি আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি ও পদ্ধতির মাধ্যমে পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় গম চাষ দিয়ে প্রথম সবুজবিপ্লবের সূচনা হয় এবং পরে অন্যান্য ফসলে তার প্রভাব পড়ে। সবুজবিপ্লবের প্রভাবেই এই দুই রাজ্যে সকল ফসলের উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদন বাড়ে। পার্শ্ববর্তী রাজ্য তথা সমগ্র ভারতে ব্যাপক চাহিদার জন্য পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় উৎপন্ন ফসলের সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে এই অঞ্চলে কৃষির উন্নতি সার্থক রূপ পেয়েছে।

৪.৪ ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের স্কেলের বিবরণ দাও। 



অথবা, জিও স্টেশনারি ও সানসিনক্রোনাস উপগ্রহের মধ্যে পার্থক্য করো।

জিও স্টেশনারি ও সানসিনক্রোনাস উপগ্রহের মধ্যে পার্থক্য
ভিত্তি জিও স্টেশনারি সানসিনক্লোনাস
1.বিষয় পৃথিবীর আবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে পশ্চিম থেকে পূর্বে নিরক্ষরেখা বরাবর প্রদক্ষিণ করে। সূর্যের আপাতকোণের সাথে সামঞ্জস্য রেখে উত্তর-দক্ষিণে একটি নির্দিষ্ট দ্রাঘিমা বরাবর প্রদক্ষিণ করে।
2.উচ্চতা ভূপৃষ্ঠ থেকে 35786 এবং পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে 42157 কিমি উচ্চতায় অবস্থান করে। ভূপৃষ্ঠ থেকে 600–800 কিমি এবং কেন্দ্র থেকে 6971-7171 কিমি উচ্চতার মধ্যে অবস্থান করে।
3.কক্ষপথ পরিধি প্রায় 2.25 লক্ষ কিমি, যেটি 23 ঘণ্টা 56 মিনিট 04 সেকেন্ড অতিক্রম করে এবং বেগ 3 কিমি/সেকেন্ড। পরিধি 43800–45075 কিমির মধ্যে যেটি বিভিন্ন উপগ্রহ বিভিন্ন সময়ে (70–100 মিনিট) পরিক্রমণ করে, বেগ 7.5 কিমি/সেকেন্ড।
4.গুরুত্ব রেডিয়ো, টেলিভিশন, নেভিগেশন প্রভৃতি যোগাযোগ ও আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ। জরিপকাজ, ভূমিব্যবহার, সম্পদ বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ, আবহাওয়া তথ্য সংগ্রহ।
5.উদাহরণ ভারতের INSAT, ইউ.এস.এ-র GOEs, রাশিয়ার GOMs ভারতের IRS, ইউ.এস.এ.-র LANDSAT, ফ্রান্সের SPOT



বিভাগ-‘ঙ’ ৫। ৫.১ নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলি থেকে যে কোন দুটি প্রশ্নে উত্তর দাও: ৫×২=১০
৫.১.১ নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত যে কোন তিনটি ভূমিরূপের সচিত্র বিবরণ দাও।
উত্তরঃ উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ ক্ষয় সাধন করা। এবং ক্ষয় কার্যে ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপ গুলি হল- (i) ক্যানিয়ন (ii) জলপ্রপাত (iii) মন্থকূপ বা পট হোল
(i) ক্যানিয়ন : উচ্চ ও শুষ্ক অঞ্চলের গিরিখাত হল ক্যানিয়ন। উচ্চ ও শুষ্ক অঞ্চলে প্রবাহিত নদী অবঘর্ষ পদ্ধতিতে দ্রুত নিম্নক্ষয় করে কিন্তু বৃষ্টির অভাবে পার্শ্বক্ষয় পাড়ের ক্ষয় হয় না বলে উপত্যকা হয় অত্যন্ত গভীর ও সংকীর্ণ। শুষ্ক অঞ্চলের এরূপ সংকীর্ণ ও গভীর উপত্যকা হল ক্যানিয়ন। উদাহরণ : কলোরাডো নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন পৃথিবীবিখ্যাত ক্যানিয়ন। সাংপো নদীর সাংপো ক্যানিয়ন পৃথিবীর গভীরতম ক্যানিয়ন।



(ii) জলপ্রপাত : উচ্চগতিতে উপত্যকার ঢালের অধিক পার্থক্য ঘটলে জল প্রবলবেগে নীচের দিকে পড়ে। একে
বলে জলপ্রপাত।
উৎপত্তি : (a) নদীর প্রবাহপথে কঠিন ও নরম শিলা উল্লম্ব, তির্যক আড়াআড়ি অবস্থান করলে কঠিন শিলা অপেক্ষা নরম শিলা দ্রুত ক্ষয় হয়ে নীচু হয় এবং কঠিন শিলাস্তর থেকে নদীর জল প্রবল বেগে নীচে পড়ে সৃষ্টি হয় জলপ্রপাত এছাড়া (b) নদীর প্রবাহপথে চ্যুতি থাকলে, (c) মালভূমি খাড়া ঢালে সমভূমিতে মিশলে, (d) হিমবাহ ক্ষয়কার্যে সৃষ্ট ঝুলন্ত উপত্যকার, (e) পুনর্যৌবন লাভের ফলে সৃষ্ট নিক্‌বিন্দুতে জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়। উদাহরণ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সীমানায় নায়াগ্রা ভারতের যোগ হল বিখ্যাত জলপ্রপাত। দক্ষিণ আমেরিকার সাল্টো অ্যাঞ্জেল পৃথিবীর উচ্চতম জলপ্রপাত।



(iii) মন্থকূপ বা পট হোল :  পার্বত্য প্রবাহে নদীর স্রোতের সঙ্গে বাহিত বড়ো বড়ো প্রস্তরখণ্ড নদীগর্ভে আঘাত করে। নদীগর্ভের কোমল শিলাস্তর প্রস্তরখণ্ডের মাধ্যমে ক্ষয় হয়ে (অবঘর্ষ ক্ষয়) গর্তের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীকালে ওই গর্তের মধ্যে জলচক্রের আকারে প্রস্তরখণ্ড ঘুরতে ঘুরতে ক্ষয় করে গর্তকে আরও বড়ো ও গভীর করে। এই ধরনের গর্ত মন্থকূপ বা পট হোল নামে পরিচিত। উদাহরণ : হিমালয়ের নদীসমূহের (তিস্তা, ভাগীরথী, অলকানন্দা ইত্যাদি) নদীগর্ভে পট হোল দেখা যায়।



৫.১.২ বায়ুর উষ্ণতার তারতম্যের কারণ হিসাবে অক্ষাংশ ও উচ্চতার ভূমিকা উদাহরণ সহ আলোচনা করো। 
উত্তরঃ (i) অক্ষাংশের ভিত্তিতে অবস্থানের ভূমিকাঃ ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা নির্ভর করে কোনো স্থানে আগত সূর্যরশ্মির পরিমাণের ওপর এবং আগত সূর্যরশ্মির পরিমাণ নির্ভর করে সেই স্থানের অক্ষাংশের ওপর। অক্ষাংশের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সূর্যরশ্মির পতনকোণের যেমন তারতম্য হয়, তেমনি দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যেরও হ্রাসবৃদ্ধি ঘটে। নিরক্ষীয় অঞ্চল বরাবর সারাবছর গড় সূর্যরশ্মি লম্বভাবে, মধ্য অক্ষাংশে তির্যকভাবে ও উচ্চ অক্ষাংশে অতি তির্যকভাবে পতিত রশ্মি অপেক্ষা কম বায়ুস্তর ভেদ করে আসে এবং কম অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে—তাই উষ্ণতা বেশি হয়। এই কারণে নিরক্ষরেখা থেকে উত্তরে ও দক্ষিণে উষ্ণতা ক্রমশ কমতে থাকে।  উদাহরণ : এই কারণেই দিল্লি অপেক্ষা লন্ডন শীতলতর এবং লন্ডন অপেক্ষা নরওয়ের হ্যামারফেস্ট অধিক শীতলতর।



(ii) উচ্চতার প্রভাবের ভূমিকাঃ : উষ্ণতার নিয়ন্ত্রণে উচ্চতাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ট্রপোস্ফিয়ারে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে উষ্ণতা 6.4° সেলসিয়াস/কিমি হারে হ্রাস পায়—একে ‘ল্যাপস্ রেট’ বলে। সাধারণভাবে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিকিরণের প্রভাব কমে, ধূলিকণার পরিমাণ কমতে থাকে এবং বায়ুর চাপও কম হয়। তাই উচ্চতা বৃদ্ধিতে উষ্ণতা হ্রাস পায়। এই কারণেই অধিক উচ্চ অঞ্চলের উষ্ণতা কম হয়। উদাহরণ : বেশি উচ্চতার জন্যই প্রায় নিরক্ষরেখা বরাবর অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও কেনিয়ার মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো পর্বতের ওপর সারাবছর বরফ জমে থাকে। এই কারণেই শিলিগুড়ি অপেক্ষা দার্জিলিং এবং দিল্লি অপেক্ষা সিমলার উষ্ণতা সারাবছর কম।

৫.১.৩ বিভিন্ন ধরনের বৃষ্টিপাতের সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ নিজে চেষ্টা করো উত্তর বানাতে পারবে। 
৫.১.৪ ভরা কোটাল এবং মরা কোটাল কীভাবে সৃষ্টি হয় চিত্রসহ ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ ভারা কটাল: আবর্তন কালে পূর্ণিমা ও অমাবস্যা তিথিতে পৃথিবী চাঁদ ও সূর্য একই সরলরেখায় অবস্থান করে সিজিগি অবস্থান। এই সময়ে জোয়ার অতি প্রবল হয় এবং সাধারণ জোয়ারের তুলনায় 20% জল বেশি ফুলে ওঠে একেই ভরা কটাল (তামিল শব্দ ‘কডাল’-এর অর্থ সমুদ্র) বলে।
⦿ পূর্ণিমার ভরা কটাল : পূর্ণিমা তিথিতে সিজিগি অবস্থানে পৃথিবী থাকে চাঁদ ও সূর্যের মাঝখানে (প্রতিযোগ)। এই অবস্থায় চাঁদের আকর্ষণে জোয়ার প্রবল আকার নেয় এবং বিপরীত অংশ কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাব ও সূর্যের আকর্ষণেও জোয়ার প্রবল হয়। একেই পূর্ণিমার ভরা কটাল বা তেজ কটাল বলে।



⦿ অমাবস্যার ভরা কটাল : অমাবস্যা তিথিতে সিজিগি অবস্থানে চাঁদ থাকে পৃথিবীর ও সূর্যের মাঝখানে (সংযোগ)। এই অবস্থায় পৃথিবীর যে অংশে চাঁদের আকর্ষণ বল কাজ করে সেখানেই সূর্যের আকর্ষণ বলও কাজ করে। ফলে জল প্রবলভাবে ফুলে ওঠে এবং জোয়ার অতি প্রবল আকার নেয়। একে অমাবস্যার ভরা কটাল বা তেজ কটাল বলে। পূর্ণিমার ভরা কটাল অপেক্ষা অমাবস্যার ভরা কটাল অনেক তেজি হয়।



⦿ মরা কটাল বা মরা জোয়ার : কৃষ্ণ ও শুক্ল পক্ষের অষ্টমী তিথিতে পৃথিবী অবস্থান করে চাঁদ ও সূর্যের সঙ্গে সমকোণে (90°)। এই অবস্থায় পৃথিবীর যে-অংশ চাঁদের সামনে আসে সেখানে হয় মুখ্য জোয়ার কিন্তু সূর্যের আকর্ষণ বল 90° কোণে কাজ করে বলে চাঁদের আকর্ষণে মুখ্য জোয়ার অতটা তেজি হয় না। একেই মরা কটাল বা মরা জোয়ার বলে। এই জোয়ারে জল সাধারণ জোয়ার অপেক্ষা 20% কম ফুলে ওঠে। 


৫.২ নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলি থেকে যে কোন দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫×২=১০
৫.২.১ উত্তর ভারতের নদনদীর সাথে দক্ষিণ ভারতের নদনদীর পার্থক্য করো। 
উত্তর ভারতের নদনদীর সাথে দক্ষিণ ভারতের নদনদীর পার্থক্য
ভিত্তি উত্তর ভারতের নদনদী দক্ষিণ ভারতের নদনদী
1.উৎপত্তি হিমালয় উত্থানের আগেও কিছু নদীর অস্তিত্ব ছিল। তাই এই নদীগুলি পূর্ববর্তী (antecedent) নদীর উদাহরণ। ভূমির প্রাথমিক ঢাল অনুযায়ী প্রবাহিত বলে নদীগুলি অনুগামী (consequent) নদী নামে পরিচিত।
2.দৈর্ঘ্য এই অঞ্চলের নদীগুলির দৈর্ঘ্য খুব বেশি। নদীগুলির দৈর্ঘ্য কম।
3.জলপ্রবাহ সুউচ্চ পর্বত ও হিমবাহ থেকে নদীগুলি উৎপন্ন। তাই দীগুলি বৃষ্টির জলের সঙ্গে বরফগলা জলে পুষ্ট ও চিরপ্রবাহী। অনুচ্চ পর্বত ও মালভূমি থেকে নদীগুলি উৎপন্ন এবংকেবলমাত্র বৃষ্টির জলে পুষ্ট বলে চিরপ্রবাহী নয়।
4.আদর্শ নদী নদীগুলির উচ্চ, মধ্য ও নিম্নগতি স্পষ্ট, তাই এগুলি এক একটি আদর্শ নদীর উদাহরণ। তিনটি গতি স্পষ্ট নয় বলে এগুলিকে আদর্শ নদী বলা যায় না।
5.নদী অববাহিকা নরম শিলাস্তরের ওপর দিয়ে নদীগুলি প্রবাহিত হওয়ায় ক্ষয়কার্যের পরিমাণ বেশি। তাই অববাহিকা বরাবর বিশালাকার পলিগঠিত সমভূমির সৃষ্টি হয়েছে। কঠিন শিলাস্তরের ওপর দিয়ে নদীগুলি প্রবাহিত এবং নদীগুলি প্রাচীন হওয়ায় ক্ষয়কার্যের পরিমাণ কম। তাই অববাহিকার ক্ষেত্রমানও কম।
6.বদ্বীপ প্রতিটি নদী মোহনায় সুবিশাল বদ্বীপ সৃষ্টি হয়েছে।গঙ্গা-পদ্মা বদ্বীপ পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ। নদীগুলির মোহনায় বদ্বীপ ক্ষুদ্র। নর্মদা ও তাপ্তির মোহনায় বদ্বীপ সৃষ্টিই হয়নি।
7.গতিবেগ পার্বত্য অংশে নদীগুলি তীব্র গতিবেগসম্পন্ন ও সমভূমিতে মৃদু বেগসম্পন্ন। উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত নদীগুলির বেগ প্রায় সব জায়গায় সমান।
৪.জলবিদ্যুৎ পার্বত্য অংশ ছাড়া নদীগুলিতে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিবেশ নেই। অসংখ্য জলপ্রপাতের উপস্থিতি এবং কঠিন শিলাস্তরের ওপর দিয়ে নদীগুলি প্রবাহিত হওয়ায় জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়ক।


৫.২.২ চা চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশ বর্ণনা করো। 
 প্রাকৃতিক পরিবেশ :
⦿ জলবায়ু : চা উপক্রান্তীয় মৌসুমি অঞ্চলের উচ্চভূমির ফসল। (i) উত্তাপ : চা চাষের জন্য আদর্শ তাপমাত্রা 21°–29° সেলসিয়াস হলেও, 16° সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও চা চাষ করা যেতে পারে; (ii) বৃষ্টিপাত : বছরে 200-250 সেন্টিমিটার গড় বৃষ্টিপাত চা চাষের পক্ষে আদর্শ। তবে প্রতি মাসে নিয়মিত বৃষ্টিপাত চা গাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। (iii) তুষারপাত : চা গাছ একভাবে 10/20 দিন তুষারপাত সহ্য করতে পারলেও বেশি তুষারপাত চা গাছের ক্ষতি করে।
⦿ ভূপ্রকৃতি : পাহাড়ের জলনিকাশের সুবিধাযুক্ত ঢালু অংশ চা চাষের পক্ষে আদর্শ। তবে জলনিকাশি ব্যবস্থাযুক্ত ঈষৎ ঢালু সমভূমিতেও আজকাল চা বাগান করা হচ্ছে।
⦿ মৃত্তিকা : লৌহ মিশ্রিত উর্বর দোআঁশ মাটি চা চাষের পক্ষে বিশেষ উপযোগী। তবে মাটিতে ফসফরাস ও পটাশের উপস্থিতি চাষের সুগন্ধ বাড়ায় (যেমন – দার্জিলিং-এর চা)।
⦿ ছায়াপ্রদানকারী বৃক্ষ : প্রখর সূর্যতাপ থেকে চা গাছকে রক্ষা করার জন্য চা বাগানে মাঝে মাঝে ছায়াপ্রদানকারী গাছ
লাগাতে হয়।

 অপ্রাকৃতিক পরিবেশ :
⦿ সার প্রয়োগ : চা চাষের জমির উর্বরতা নষ্ট হয় বলে চা বাগানে পরিমিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়।
⦿ সুলভ শ্রমিক : চা গাছের পরিচর্যা, আগাছা পরিষ্কার, নিড়ানো, নিয়মিত গাছ ছাঁটাই, গাছ থেকে পাতা তোলা, সঞ্চয়, শুষ্ককরণ প্রভৃতি কাজের জন্য প্রচুর দক্ষ ও অভিজ্ঞ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। চা গাছ থেকে চা পাতা তোলার জন্য সাধারণত নারী শ্রমিকদের কাজে লাগানো হয়।
⦿ প্রচুর মূলধন : চা বাগানের জমি কেনা, চা গাছ লাগানো এবং রক্ষণাবেক্ষণের প্রতিটি পর্যায়ে প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন হয়।

৫.২.৩ পশ্চিম ভারতে কার্পাস বয়নশিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণ ব্যাখ্যা করো। 
উত্তরঃ পশ্চিম ভারতের মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় কার্পাস বয়ন শিল্পকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। মহারাষ্ট্রের প্রধান কেন্দ্রগুলি হল মুম্বাই, নাগপুর, পুণে, কোলাপুর, নাসিক এবং গুজরাটের প্রধান কেন্দ্রগুলি হল আমেদাবাদ, রাজকোট, ভাদোদরা, সুরাট প্রভৃতি। আমেদাবাদে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় কার্পাস বয়ন শিল্পকেন্দ্র গড়ে উঠেছে বলে একে ‘ভারতের ম্যাঞ্চেস্টার’ বলে।

পশ্চিম ভারতে অধিক সংখ্যায় কার্পাস বয়ন শিল্পের একদেশীভবনের কারণগুলি হল—
  1. কাঁচাতুলা প্রাপ্তি : রেগুর মৃত্তিকা সমৃদ্ধ মহারাষ্ট্রের ডেকানট্র্যাপ ও গুজরাটের মালব্য মালভূমি অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে কার্পাস চাষ হয়। এই অঞ্চলের উৎপাদিত কার্পাস মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের কার্পাস বয়ন শিল্পকেন্দ্রগুলিতে ব্যবহৃত হয়। তা ছাড়া মুম্বাই বন্দরের মাধ্যমে বিদেশ থেকে (মিশর ও সুদান) উন্নত মানের তুলা আমদানি করা হয়।
  2. আর্দ্র জলবায়ু : আরব সাগরের নিকটবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় এখানকার জলবায়ু আর্দ্র প্রকৃতির। আর্দ্র জলবায়ুতে সুতো ছেঁড়ার সম্ভাবনা কম।
  3. বন্দরের অবস্থান : মুম্বাই, নভসেবা ও কান্দালা এই অঞ্চলের তিনটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর। এই বন্দরের মাধ্যমে বিদেশ থেকে যেমন দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলা ও যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা হয়েছে। তেমনি বিদেশে বস্ত্র রপ্তানির সুবিধা হয়েছে।
  4. শক্তি প্রাপ্তি : প্রাথমিক অবস্থায় এই অঞ্চলে বস্ত্র শিল্পে শক্তি জোগান দেওয়া হত আফ্রিকার নাটাল প্রদেশ থেকে কয়লা আমদানি করে। পরবর্তীকালে ভীবপুরী, ভীরা, খোপোলি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ বস্ত্র শিল্পে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে এই অঞ্চলে গড়ে ওঠা জলবিদ্যুৎ (কয়লা, উকাই), তাপবিদ্যুৎ (ট্রম্বে, ভুসওয়াল, আমেদাবাদ প্রভৃতি), পারমাণবিক বিদ্যুৎ (তারাপুর, কাকড়াপাড়) কেন্দ্রগুলি থেকে বস্ত্র শিল্পে বিদ্যুতের জোগান দেওয়া হয়।
  5. মূলধনের জোগান : প্রাথমিক অবস্থায় স্থানীয় পার্শি ও ভাটিয়া শিল্পপতিদের মূলধন, ব্যাবসায়িক দক্ষতা এবং পরিচালন ব্যবস্থা মুম্বাই অঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্প গড়ে তুলতে সাহায্য করে। বর্তমানে এখানে গড়ে উঠেছে অসংখ্য শিল্পে অর্থলগ্নিকারী সংস্থা (IDBI, UTI প্রভৃতি)। এই সংস্থাগুলি থেকে শিল্পের প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান দেওয়া হয়।
  6. শ্রমিক প্রাপ্তি : নিকটবর্তী কঙ্কন, শোলাপুর, সাতারা, সুরাট, মেহেসানা প্রভৃতি অঞ্চল কৃষিতে অনুন্নত হওয়ায় শিল্পে প্রয়োজনীয় সুলভ শ্রমিক পাওয়ার সুবিধা হয়েছে। এ ছাড়া, উন্নত সড়ক ও রেল পরিবহণ ব্যবস্থা, মুম্বাই ও আমেদাবাদ অঞ্চলে বস্ত্রের বিপুল চাহিদা, শিল্প কারখানায় পরিশুদ্ধ জলের জোগান প্রভৃতিও এই অঞ্চলে বস্ত্র শিল্প গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। 
৫.২.৪ ভারতে অসম জনবণ্টনের কারণগুলি আলোচনা করো।
উত্তরঃ 2011 সালের জনগণনা অনুযায়ী ভারতের জনসংখ্যা 121 কোটির বেশি এবং জনঘনত্বও বেশি, কিন্তু এই সুবিশাল জনসংখ্যা ভারতের সর্বত্র সমানভাবে ছড়িয়ে নেই। ভারতের অঞ্চল বিশেষে জনবণ্টনের এই তারতম্যের প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক কারণগুলি হল-
1. ভূপ্রাকৃতিক অবস্থা (Physiographic Condition) :
উত্তরের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল, উত্তর-পূর্বের পাহাড়ি ও মালভূমি অঞ্চল এবং দক্ষিণ ভারতের বিস্তীর্ণ মালভূমি ও পাহাড়ি অঞ্চলের উঁচুনীচু বন্ধুর ভূমি কৃষিকাজের অনুপযুক্ত ও কিছু কিছু অঞ্চল দুর্গম বলে এখানে জনসংখ্যা বেশ কম। অন্যদিকে উত্তরের সিন্ধু, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র সমভূমি অঞ্চল ও উপকূলের সমভূমি কৃষিকাজের ও বাসস্থান নির্মাণের, যোগাযোগ ব্যবস্থার পক্ষে ভালো বলে এখানে জনসংখ্যা অনেক বেশি।

2. জলবায়ুর বৈচিত্র্য (Climatic Variation) : সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে সমভাবাপন্ন জলবায়ুর উপস্থিতি, বৃষ্টিপাতের সমান বণ্টনের জন্য এখানে লোকবসতি ঘন। অপরদিকে, রাজস্থানের মরু অঞ্চল বা গুজরাটের কচ্ছ অঞ্চলে চরমভাবাপন্ন জলবায়ু ও বৃষ্টিপাতের অসম বণ্টনের জন্য জনসংখ্যা কম।

3. নদনদী (Rivers) : নদনদীর অবস্থানের জন্য; (i) যোগাযোগ ও পরিবহণ ব্যবস্থার সুবিধা ও (ii) নদীতীরবর্তী অঞ্চলের পলিসমৃদ্ধ উর্বর মৃত্তিকায় কৃষিকাজে সুবিধা (iii) জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, (iv) জলসেচ ও জলনিকাশি ব্যবস্থার সুবিধা আছে বলে উত্তর ভারতের গঙ্গা, সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্র ও দক্ষিণ ভারতের মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী নদী উপত্যকায় লোকবসতি বেশি।

4. খনিজ সম্পদ ও শিল্পাঞ্চল (Mineral resources) : প্রতিকূল জলবায়ু ও অনুর্বর মৃত্তিকা থাকা সত্ত্বেও যেখানে খনিজ সম্পদের প্রাচুর্য দেখা যায়, সেখানে ভূপ্রকৃতি দুর্গম হলেও জীবিকানির্বাহের সুবিধা থাকায় জনসংখ্যা বেশি হয়। ভারতের বিভিন্ন কয়লাখনি অঞ্চলে (রানিগঞ্জ ও ঝরিয়া) এইজন্য জনসংখ্যা বেশি। ছোটনাগপুর ও ছত্তিশগড় মালভূমি অঞ্চলের বিভিন্ন খনি ও শিল্পাঞ্চলে এই একই কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

5. অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক কেন্দ্র (Economic, Political & Administrative Centre) : ব্যাবসাবাণিজ্যে অর্থ বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ এবং রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কেন্দ্র হওয়ার জন্য দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা প্রভৃতি শহর ও তার আশপাশের অঞ্চলগুলিতে জীবিকানির্বাহের সুবিধা থাকায় ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসীদের আকৃষ্ট করে অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ মহানগরীতে রূপান্তরিত হয়েছে।


No comments

Hi Welcome ....