Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Top Ad

Breaking News:

latest

Matir Ghorer Deol Chitra Class 6 Bengali Hate Kolome Question Answer

  ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা বইয়ের হাতেকলমে প্রশ্নোত্তর আলোচনা      ❐ আরো পড়ুনঃ ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা প্রশ্নোত্তর সূচিপত্র   খোজা খিজির উৎসব – বিনয় ঘো...

 
class 6 khoja khijir utsab


ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা বইয়ের হাতেকলমে প্রশ্নোত্তর আলোচনা


খোজা খিজির উৎসব – বিনয় ঘোষ

১। এককথায় প্রশ্নোত্তর :
(ক) বেরা উৎসব কোথায় হয়?
উত্তর : মুরশিদাবাদে।
(খ) কোন সময় বেরা উৎসব পালিত হয়?
উত্তর : ভাদ্রমাসে।
(গ) হাজার দুয়ারি প্রাসাদের সামনের ঘাটের নাম কী?
উত্তর : তোপখানার ঘাট।
(ঘ) কখন ভেলার দড়ির বাঁধন কাটা হয়?
উত্তর : তোপখানার কামান দাগলে।

❐ খোজা খিজির উৎসব বিষয়বস্তু :
উৎসবের দেশ বাংলাদেশ। অতীত কাল থেকেই হিন্দু-উৎসব আর মুসলমানদের উৎসবে মিলে গড়ে উঠেছে এই বাংলাদেশ। খোজা খিজির উৎসব বা বেরা উৎসব হয় মুরশিদাবাদে। মুসলমানদের উৎসব হলেও সর্বশ্রেণির মানুষের কাছে এক পরম উপভোগ্য উৎসব। এই উৎসব নবাবি আমলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। ভাগীরথীর বুকে জাগিয়ে তোলা হয় নাগরা, ঢোল কাড়া নাকাড়া সহযোগে শিঙা সানাই ইত্যাদি সুরের মিশ্রণে এক করুণ রাগিণী। এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয় মুরশিদাবাদের ভাদ্রে ঝরা ভাগীরথীর সুবিস্তৃত জলময় প্রাঙ্গণে। ভাদ্রমাসের শেষ বৃহস্পতিবার। আলোর ভেলায় ও ছোটোবড়ো জলযানে মেলাপ্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে অপূর্ব বর্ণময়। মুরশিদাবাদ নগরের কাছে জাফরগঞ্জের এক শ্রেণির দক্ষ কারিগর এই ভেলা ও জলযান নির্মাণের কাজ নবাবি আমল থেকে বংশানুক্রমে করে আসছে। অভ্রের তৈরি আলোকে কোরানের বাণী, মসজিদ, গাছপালা ও নানারকমের মূর্তি চিত্রিত করেন শত শত উচ্চাঙ্গের শিল্পী। কলাগাছ জলে ভাসিয়ে তার ওপর বাঁশ-বাখারি-ছেঁচা-চাটাই দিয়ে মিনার তোরণ গম্বুজ নিশান দুর্গ ইত্যাদির কাঠামো বহু বর্ণের দীপালোকে সাজানো হয়।

নানারকম রঙিন কাগজ অভ্র রাংতা ইত্যাদি দিয়ে দ্বিতল-ত্রিতল রণতরির মতো জলযানগুলিকে মুড়ে দেওয়া হত। জলযানে ঝুলিয়ে দেওয়া হত রুপালি আচ্ছাদনে আবৃত কৃত্রিম ঝাড়লণ্ঠন। লালবাগ থেকে মহীনগর পর্যন্ত গঙ্গার তীর আলোয় আলোকময় হয়ে ওঠে প্রতিবছর এই দিনটিতে, সেই নবাবি আমল থেকেই। হাজার দুয়ারি প্রাসাদের সামনে তোপখানার ঘাটে নবাববাড়ির উত্তরে প্রায় মাইল দুই দূরে মহীনগরের নীচে ভাগীরথীর জলে ভেলা সাজিয়ে রাখা হয়। তোপখানা থেকে কামান দাগার সঙ্গে সঙ্গে ভেলা ভাসানো শুরু হয়। সেকালের দাগরি ডিঙ্গার মতো কয়েকটি চারচালা বাংলো নির্মিত মকরমুখো অর্থাৎ কুমিরের মুখের মতো নৌকাও থাকত এই জলযানগুলির সঙ্গে। মতিমহল থেকে এই সময় বেশ বড়ো একটি জৌলুসের অনুগামী সুসজ্জিত হাতি ঘোড়া উট অশ্বারোহী ও পদাতিক নিয়ে মন্থরগতিতে সুবিপুল বাদ্যসংগীত
নিয়ে এগিয়ে চলে। অবশ্য মোগল আমল থেকেই এই উৎসব রাজধানী ঢাকাতেও মহা সমারোহে অনুষ্ঠিত হত।

: Direct Table Of Content :

হাট কবিতা যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত প্রশ্ন উত্তর

হাট - যতীন্দ্রনাথ উত্তর

❐ হাট যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত কবিতার বিষয়বস্তু
দূরে দূরে দশ বারোখানি গ্রামের মাঝে একটি হাট। সেখানে সকালে ঝাঁট পড়ে না। সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বলে না। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বেচাকেনা চলে। তারপর যে যার ঘরে ফিরে যায়। পুবের মাঠে বক উড়ে গেলে মনে হয় যেন তারই পাখায় সূর্যের আলো লুকিয়ে গেল। দূরে দূরে গ্রামে প্রদীপ জ্বলে ওঠে। হাট পড়ে থাকে অন্ধকারে। নদীর পাশে থাকা পাকুড়ের পাতায় নির্জন রাতের অন্ধকারে হাওয়া লেগে মনে হয় নদী দুঃখের নিশ্বাস মেলছে। হাটের দোচালায় ভাঙা বাঁশের ফাঁকেও হাওয়া লেগে বিদ্রুপের মতো শোনায়। সঙ্গীহারা কাক দোচালায় বসে দুঃখের ডাক দেয়। হাটে সকালে ক্রেতাবিক্রেতার হইচই হয় চেনা-অচেনার ভিড়, আর বিকেলে ধুলোয় হাজার লোকের এলো-গেলো পদচিহ্ন পড়ে থাকে। এভাবে পৃথিবী নামক মহাবিশ্বের হাটে নিত্য নতুন হাট বসছে আর ভাঙছে। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষ এই বিশাল হাটে কেনা আর বেচা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। মৃত্যুর সময় কেউ কাঁদতে কাঁদতে যায়। কেউ বা যায় তার গাঁটের কড়ি ভরে অর্থাৎ জীবনে অফুরন্ত সুখ ভোগ করে।

হাট বেচাকেনার জায়গা। দেওয়া আর নেওয়া অর্থাৎ বিনিময়ের স্থান। ক্রেতা অর্থ দিয়ে পণ্য কেনে, বিক্রেতা অর্থ নিয়ে পণ্য বিক্রি করে। দশ-বারোখানি গ্রামের মধ্যে একখানি হাট। সেখানে সকালে ঝাঁট পড়ে না, বিকালে লোক কেনাবেচা সেরে ঘরে ফিরে আসে। রাতে অন্ধকারে হাট পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে থাকে। দিনেরবেলায় সেখানে কত চেনা-অচেনা মানুষের ভিড় ও কোলাহল, কত দর কষাকষি, মাল টানাটানি, কথা কাটাকাটি। কত লোক আসে, কেনাবেচা করে। কেউ লাভ করে, কেউ লোকসান খায়, কেউ হাসে, কেউ কাঁদে। এভাবে হাট বসে, হাট ভাঙে। নিত্য নিয়ত এই বসা ও ভাঙার খেলা চলে। চলেছে। কবি তাঁর কবিতায় স্পষ্ট এই ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, আমাদের এই পৃথিবীও একটি হাট। এখানে প্রতিদিনই কত মানুষ আসছে অর্থাৎ জন্মগ্রহণ করছে। কেউ বা জন্ম নিয়ে এই সুন্দর পৃথিবী নামক হাটে দু-চারদিন বা পনেরো দিন বেঁচে থেকে চলে যাচ্ছে অর্থাৎ মারা যাচ্ছে। কেউ বা দু-চার বছর কিংবা পঁচিশ-তিরিশ বছর কাল কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। কেউ বা আশি-নব্বই বছর থেকে এখান থেকে চিরতরে বিদায় নিচ্ছে। মহাবিশ্বের এই সুবিশাল হাটে প্রতিদিনই চলেছে মানুষের দেওয়া-নেওয়া অর্থাৎ বেচাকেনার খেলা। তাই ‘হাট’ নামকরণ সম্পূর্ণ সার্থক বলা যেতে পারে।

হাট যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত অনুশীলনীর প্রশ্ন উত্তর

✐ হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর :
১.১. কোন সাহিত্যিক গোষ্ঠীর সঙ্গে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল? 
উত্তর : কল্লোল গোষ্ঠীর সঙ্গে।
১.২. তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো। 
উত্তর : দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম মরীচিকা, ত্রিযামা।
২. নীচের বাক্যগুলি থেকে এমন শব্দ খুঁজে বের করো যার প্রতিশব্দ কবিতার মধ্যে আছে। কবিতার সেই শব্দটি পাশে লেখো।
২.১. 'আঁধারে-সাঁঝে বনের মাঝে উল্লাসে প্রাণ ঢেলেছে।'
উত্তর : আঁধার-সাঁঝে—সন্ধ্যায়।
২.২. 'আলো, আমার আলো, ওগো আলো ভুবন-ভরা।’
উত্তর : আলো—দীপ।
২.৩. 'তুমি আমার সকালবেলার সুর।'
উত্তর : সকালবেলার—প্রভাতের।
২.৪. ‘আমার রাত পোহাল শারদ প্রাতে।'
উত্তর : রাত—রাত্রি।
২.৫. 'দিনের বেলা বাঁশী তোমার বাজিয়েছিলে।'
উত্তর : দিবসেতে—দিনেরবেলা।
৩. সমোচ্চারিত বা প্রায়-সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দযুগলের অর্থ পার্থক্য লেখো।
  • দীপ—প্রদীপ
  • দ্বীপ—জলবেষ্টিত স্থান
  • দর—দাম, মূল্য
  • দড়—পটু, চালাক, কর্মঠ
  • শাখ—শাখা, গাছের ডাল
  • শাঁখ—শঙ্খ
  • বাধা—রুদ্ধ, বিঘ্ন
  • বাঁধা—বন্দি, আটক
  • নিত্য—প্রতিদিন, রোজ
  • নৃত্য—নাচ
৪. নীচের শব্দগুলি গদ্যে ব্যবহার করলে কেমন হবে লেখো:
সহিয়া, সেথা, সহি, সবে, তবে, মুদিল।
উত্তর : সহিয়া—সহ্য করিয়া। সেথা—সেখানে। সহি—সহ্য করে। সবে—সকলে। তবে—তাহলে। মুদিল—বন্ধ করিল।
৫. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর লেখো :
৫.১. কতগুলি গ্রামের পরে সাধারণত একটি হাট চোখে পড়ে? 
উত্তর : দশ-বারোখানি গ্রামের পরে।
৫.২. হাটে সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বলে না কেন?
উত্তর : হাটে সন্ধ্যায় কেউ থাকে না বলে।
৫.৩. কার ডাকে রাত্রি নেমে আসে?
উত্তর : শ্রেণিহারা একা ক্লান্ত কাকের ডাকে।
৫.৪. ও পারের লোক কেন এ পারেতে আসে? 
উত্তর : ওপারের লোক পসরা নামালে এপারের লোক ছুটে আসে।
৫.৫. 'হিসাব নাহিরে—এল এর গেল কত ক্রেতা বিক্রেতা।'—কোনো হিসাব নেই কেন?
উত্তর : হাটে যারা কেনাবেচা করে তাদের হিসাব রাখার নির্দিষ্ট কোনো লোক নেই।

৬. কবিতায় বর্ণিত হাটের চেহারাটি কেমন লেখো :
হাট বসার আগে হাট চলাকালীন হাট ভাঙার পর
নির্জন থাকে, সকালে ঝাঁট পড়ে না। বেচাকেনা চলে, খুব কোলাহল হয়, অসংখ্য লোকের পায়ের চিহ্ন পড়ে, মাল দেখেশুনে দরদাম করা, হাজার কথার বিনিময়, ওপারে পসরা নামালে এপারের লোক দৌড়ে আসে। সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বলে না, লোকে যে-যার বাড়ি ফিরে যায়, ক্লান্ত কাকের ডাকে হাটে অন্ধকার নামে, হাটের দোচালার ঘুম এসে যায় জীর্ণ বাঁশের ফাঁকে বাতাস হাটকে বিদ্রূপের বাশি বাজায়।
 
৭. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
৭.১. হাটের স্থান ছাড়িয়ে দূরের গ্রামের ছবি কীভাবে কবিতায় ফুটে উঠেছে?
উত্তর : দূরে দূরে গ্রামে প্রদীপের আলো জ্বলে ওঠে। সাধারণত গ্রামবাংলায় সন্ধ্যায় অন্ধকার নামলে হিন্দু গৃহবধূরা তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালায়। সেই প্রদীপের আলো উঠোন ছাড়িয়ে বহুদুর অবধি দেখা যায়।

৭.২. প্রকৃতির ছবি কীরূপ অসীম মমতায় কবিতায় আঁকা হয়েছে— তা আলোচনা করো।
উত্তর : দূরে দূরে দশ বারোখানি গ্রাম আছে। সেগুলির মাঝখানে গ্রামের হাট বসে। সকালে এখানে কেউ ঝাঁট দেয় না। সন্ধ্যাতেও এখানে কেউ প্রদীপ জ্বালায় না। বেচাকেনা সেরে লোকে বিকেলে বাড়ি ফিরে যায়। সূর্য ডোবে। সূর্য ডোবার আগে পশ্চিমের ঢলে পড়া সূর্যের আলো পুবের মাঠে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সূর্য যখন অদৃশ্য হয় তখন আর সূর্যের আলো পড়ে না। তা আকাশের ওপরে উড়ে বেড়ানো বকের পাখায় ক্ষীণভাবে পড়ে চকচক করে। সূর্য যখন সম্পূর্ণ ওপারে চলে যায় তখন আর বকের পিঠেও আলো পড়ে না। মনে হয়, বকের পাখাতেই সূর্যের শেষ আলো লুকিয়ে গেল। অন্ধকার নামল। দূরে দূরে গ্রামে প্রদীপ জ্বলে উঠল। কিন্তু হাটে কেউ প্রদীপ জ্বালে না অন্ধকারেই পড়ে থাকে হাট।

দূরের আকাশে শ্রেণিহারা ক্লান্ত একা কাকের পাখায় রাত্রির অন্ধকার গাঢ় হল। নদীর পাড়ের পাকুড় গাছের শাখায় নদীর বাতাস প্রশ্বাস ছাড়ে। হাটের দোচালার চোখে ঘুম নামে। তার জন্য কারও কোনো আবাহন নেই। জীর্ণ বাঁশের ফাঁকে বাতাস বয়ে গেলে তার সুর যেন হাটকেই বিদ্রূপের বাঁশি শুনিয়ে যায়। সম্পূর্ণ নির্জন হাটের বুকে একটি কাকের শব্দেই যেন অন্ধকার গভীরতর হয়। প্রকৃতির বুকে নিত্য নিয়ত মুক্ত বাতাস বয়ে চলে। পরের দিন আবার হাট বসে আবার ভাঙে। নিত্য নতুন করে হাট বসে আর ভাঙে। নিত্য আসে হাটের ক্রেতা আর বিক্রেতা। এভাবে চলে আসছে সুদূর অতীত থেকে। আবার আগামী অনন্ত কাল ব্যাপী চলতেই থাকবে। হাট নামক এই মহাবিশ্বে যতদিন বাতাস বয়ে চলবে ততদিন মানুষ আসবে আর যাবে। এটাই প্রকৃতির চিরন্তন খেলা।

৭.৩. ‘বাজে বায়ু আসি বিদ্রুপ-বাঁশি'—কবির এমন মনে হওয়ার কারণ কী বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর : কবিতায় বর্ণিত উপরিউক্ত পঙ্ক্তিতে কবি যা বলতে চেয়েছেন তা আমি মনে করি এইরকম— হাট কাউকেই ভালোবেসে আঁকড়ে ধরতে শেখেনি। তার কাছে নিত্য নতুন নতুন লোক আসে। আবার চলেও যায়। হাটের বুকে কেউ থাকে না। যে ব্যক্তি অন্যকে চিরন্তন ভালোবাসে সে তাকে চিরকালই ভালোবাসে এবং পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা বিনিময় করে। তা ছাড়া হাট কাউকে ভালোবেসে ঘর বাঁধতে শেখেনি। তার স্থান দোচালার মুস্ত স্থানে। ফলে মুক্ত বাতাস হাটের জীর্ণ বাঁশের ফাঁকে আঘাত হেনে বিদ্রূপের বাঁশি বাজায়। অর্থাৎ, বাতাস হাটকে এই কথাই বোঝাতে চায় যে, তুমি ঘর বাঁধো তা না হলে পৃথিবীতে কোনো সুখের সন্ধান তুমি পাবে না।

৭.৪. উদার আকাশে মুক্ত বাতাসে চিরকাল একই খেলা”। কোন্ প্রসঙ্গে কবি আলোচ্য পঙ্ক্তিটি লিখেছেন! তিনি এখানে কোন্ ‘খেলা'-র কথা বলেছেন? ‘চিরকাল' চলে বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর : হাটের মুক্ত বাতাসে কারও আসা যাওয়ার কোনো বাধা নেই— এই প্রসঙ্গে কবি এই পঙ্ক্তিটি লিখেছেন। এখানে মানবজীবনের জীবনমৃত্যুর খেলার কথা বলেছেন কবি। চিরকাল বলতে কবি বলতে চেয়েছেন যে, পৃথিবীতে যতদিন মানুষ থাকবে ততদিন এভাবে আসা-যাওয়ার খেলা চলবে। পৃথিবী নামক সুবিশাল হাটে একদল মানুষ বেচাকেনা, দেওয়া নেওয়া, জিনিস নিয়ে টানাটানি হানাহানি করবে। কেউ হাসবে কেউ কাঁদবে। যে যার ঘরে ফিরে যাবে। আবার একদল মানুষ আসবে আবার যাবে। নিত্য নতুন চলবে এভাবে পৃথিবীর খেলা।

৭.৫. তোমার দেখা কোনো হাটের/বাজারের অভিজ্ঞতা জানিয়ে দূরে থাকে এমন কোনো বন্ধুর কাছে একটি চিঠি লেখো।

বাদলগঞ্জ, কাটোয়া
বর্ধমান, ১১/৬/২২
প্রিয় অবিনাশ,

আশা করি তুই ভালো আছিস এবং তোর পরিবারের সকলে ভালো আছে। তোর চিঠি আমি তিনদিন আগে পেয়েছি। কিন্তু কী লিখব কী লিখব ভেবে দু-দিন দেরি হয়ে গেল। আজ আমি তোকে আমার দেখা একটি হাটের অভিজ্ঞতা জানিয়ে এই চিঠি লিখছি। মাস দুয়েক হল আমার বাবার অফিসের কাজ খুব বেড়েছে। তাই বাবা বেলা ন-টার মধ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে
যান। আমি তাই প্রতিদিন আমাদের বাড়ির কাছে সকাল সাতটা নাগাদ একটি বাজারে যাই। ওই বাজারে কিছু দোকানদার বসে তাদের ছাউনির নীচে। আবার, কিছু দোকানদার বসে খোলা আকাশের নীচে। বাজারে এক-একদিন এত ভিড় হয় যে খুব ধাক্কাধাক্কি খেতে হয়। সেই বাজারে সবকিছুই পাওয়া যায়। একদল লোক কেনে একদল লোক বিক্রি করে। চলে ওজন নিয়ে কখনও অল্পবিস্তর ঝগড়াঝাঁটি। চলে মূল্যের হিসাব নিয়ে বাকবিতণ্ডা। কেউ বা সস্তায় মাল কিনে খুব খুশি হয়। আবার, কেউ বা এক দোকানে একই জিনিস বেশি দামে কিনেছে অথচ সেই জিনিস অন্য দোকানে গিয়ে কম দাম শুনে দুঃখে মুখখানা শুকনো করে বাড়ি ফিরছে। গতকাল সন্ধ্যায় বিশেষ এক জরুরি কাজে তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্য আমি সেই বাজারের ওপর দিয়ে যাচ্ছিলাম। দেখলাম দোকানে কোনো মানুষের চিহ্নমাত্র নেই। সেখানে কয়েকটি কুকুর এখানে-সেখানে লম্বা হয়ে সুখনিদ্রা যাচ্ছে। দেখে আমার খুব অবাক লাগল। ভাবলাম, সকালের এই বাজারে দেখেছি ঠেলাঠেলি ধাক্কাধাক্কি আর অসম্ভব কোলাহল। তুই চিঠি লিখিস। ভালোবাসা নিস।
ইতি 
ভজহরি
শ্রী অবিনাশ মণ্ডল
দিগন্তপুর, ঘোষপাড়া
উত্তর দিনাজপুর

৭.৬. তোমার দেখা একটি হাট বা বাজারের ছবি তুমি এঁকে দেখাও। 


৭.৭. এখন ‘হাট’ ও ‘বাজার’-এর মধ্যে কোনো তফাত খুঁজে পাও? এ বিষয়ে তোমার মতামত জানিয়ে পাঁচটি বাক্য লেখো।
উত্তর : হ্যাঁ, হাট ও বাজারের মধ্যে তফাত এখনও আমি দেখতে পাই। আমি থাকি জগদীশপুর নামক এক মফস্সল শহরে। সেখানে রোজই একটি বাজার বসে। সেই বাজারে সব কিছুই কেনাবেচা চলে। সেই বাজারে আমরা রোজ সবজি বা মাছ বা তেল, ডাল, চাল, নুন, আটা, ময়দা ইত্যাদি কিনি। এখানে পাশেই একটা বিশাল হাট বসে সপ্তাহের দুটি দিন। শনিবার ও মঙ্গলবার। এই দুটি দিনে প্রচুর মালপত্র আসে। দোকানদার সকলে প্রচুর মালপত্র বিক্রি করে যে যার বাড়ি ফিরে যায়। ওই দুটি দিনে ভিড় হয় মারাত্মক। সেখানে বেচাকেনার পরিমাণও প্রচুর।



class 6 মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র অনুশীলনী উত্তর

মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র উত্তর

❐ মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র বিষয়বস্তু : 
পূর্বতন মানভূম জেলার ভৌগোলিক সীমানাটিকে বাংলার দেয়ালচিত্র চর্চার পীঠস্থান বলা যায়। মূলত বৰ্তমান পুরুলিয়া জেলা ও তার সংলগ্ন বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান জেলার পশ্চিম অংশ, বীরভূম জেলাতেও দেখা যায় প্রচুর দেয়ালচিত্র। এগুলি সাধারণত ঘরের মেয়েরাই এঁকে থাকে। দেয়ালচিত্রে বিশেষ অগ্রণী হল সাঁওতাল পরিবারের মেয়েরা। এ ছাড়া হো, অসুর, ভূমিজ, মুন্ডা, ওঁরাও, খেড়িয়া, শবর, কোল, বীরহড় প্রভৃতি আদিবাসী গোষ্ঠীর মেয়েরাও কিছু কিছু দেয়ালচিত্র অঙ্কন করে। সাধারণত দুর্গাপূজা ও কার্তিকের অমাবস্যা বা দীপাবলি এই দুই প্রধান উৎসবকে কেন্দ্র করে দেয়ালচিত্র আঁকা হয়। গৈরিকবর্ণের মাটিতে ‘গিরিফল’ চুবিয়ে কৃষিজীবী সমাজের মেয়েরা এই রং তৈরি করে। এই উৎসবের সময় সাঁওতাল ভূমিজ, মাহাত বা কুর্সি, বাউরি, শবর ইত্যাদি গোষ্ঠীগুলি গো-বন্দনা, অলক্ষ্মী বিদায়, কাঁড়াখুঁটা, গোরুখুঁটা প্রভৃতি পালনের জন্য ছবি আঁকে। সাঁওতালদের আঁকা দেয়ালচিত্রে জ্যামিতিক পদ্ধতিতে চতুষ্কোণ ও ত্রিভুজের ছড়াছড়ি দেখা যায়। সাঁওতাল ছাড়া ভূমিজ, কুর্সি ও অন্যান্য গোষ্ঠীর মানুষেরা প্রধানত পদ্মফুল আঁকে। এ ছাড়া আরও একটি জনপ্রিয় ছবি হল ‘মোরগঝুঁটি’। এই ছবি বিস্তৃত আকার নিয়ে লাল, নীল, সাদা, গেরুয়া ইত্যাদি দিয়ে বিচিত্র করে সাজানো হয়। মোরগঝুঁটির সঙ্গে সঙ্গে আবার কোথাও কোথাও ‘কদমঝাড়’ কিংবা ‘শালুকলতা’ নামের ছবি আঁকা হয়। তবে সমস্ত ছবিই আঁকা হয় প্রকাশ্যে দেয়ালে।

মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র অনুশীলনী উত্তর

✐ হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর :
১.১. লেখক তপন করের লেখা একটি বই-এর নাম লেখো।
উত্তর :  তপন করের লেখা একটি বইয়ের নাম ‘অসামান্য মানভূম'।
১.২. পাঠ্য রচনাংশটি কোন বিষয়ে লেখা?
উত্তর : পাঠ্য রচনাংশটি দেয়ালে আঁকা চিত্র নিয়ে লেখা।
২. ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে লেখো :
২.১. দেয়াল চিত্র এঁকে থাকেন সাধারণত গ্রামের (পুরুষেরা/মেয়েরা/বালকেরা)
উত্তর : মেয়েরা।
২.২. মূলত (বৃত্তাকার/সরলরৈখিক/জ্যামিতিক) আকার-আশ্রিত বর্ণসমাবেশেই রচিত হয় সাঁওতালী দেয়ালচিত্রণ।
উত্তর :  জ্যামিতিক।
২.৩. সাধারণত মাটি থেকে (ছ'ফুট/চারফুট/আটফুট) পর্যন্ত উচ্চতায় চিত্রণটি বিস্তৃত হয়। 
উত্তর : ছ'ফুট।
২.৪. (শালুকটিকে/পদ্মটিকে/গোলাপটিকে) মানভূম দেয়ালচিত্রের প্রতীক বলা হয়।
উত্তর : পদ্মটিকে।
৩.পাঠ থেকে একই অর্থের শব্দ খুঁজে নিয়ে লেখো :
ছবি, জোগাড়, পঙ্কজ, পুষ্প, মাটি।
উত্তর : ছবি—চিত্র। জোগাড় — সংগ্রহ। পঙ্কজ—শতদল। পুষ্প—ফুল। মাটি—মৃত্তিকা।
৪. নীচের বিশেষ্য শব্দগুলিকে বিশেষণ ও বিশেষণ শব্দগুলিকে বিশেষ্যে রূপান্তরিত করো :
ভৌগোলিক, নির্বাচন, অঞ্চল, রচিত, অলংকার, জ্যামিতি।
উত্তর : ভৌগোলিক—ভূগোল। নির্বাচন—নির্বাচিত। অঞ্চল—আঞ্চলিক। রচিত — রচনা। অলংকার — অলংকৃতজ্যামিতি—জ্যামিতিক।
৫. নীচের বাক্যগুলি জুড়ে একটি বাক্যে পরিণত করো :
৫.১. এই মাটির রং ঈষৎ হরিদ্রাভ। এই মাটির রং ঈষৎ সাদাটে।
উত্তর : এই মাটির রং ঈষৎ হরিদ্রাভ ও ঈষৎ সাদাটে।
৫.২. দূর থেকে দৃশ্য হিসেবে মানানসই হওয়া চাই। এইভাবেই দেয়ালগুলি নির্বাচন করা হয়।
উত্তর : দূর থেকে দৃশ্য হিসেবে মানানসই হওয়ার মতো দেয়ালগুলি নির্বাচন করা হয়।
৫.৩. ঘরের চতুষ্পার্শ্ব ঘিরে থাকে একটি বেদী। তার রং কালো।
উত্তর :  ঘরের চতুষ্পার্শ্ব ঘিরে থাকা বেদিটির রং কালো।
৫.৪. বাংলার কৃষিজীবী সমাজের কিছু প্রাচীন উৎসব আছে। এগুলি হল গো-বন্দনা, কাঁড়াখুঁটা, গোরুখুটা প্রভৃতি।
উত্তর : বাংলার কৃষিজীবী সমাজের প্রাচীন উৎসবগুলি হল গো-বন্দনা, কাঁড়াখুঁটা, গোরুখুঁটা প্রভৃতি।

৬. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
৬.১. তোমার জানা কোন অঞ্চলের লোকসমাজে দেয়ালে ছবি আঁকার চল আছে?
উত্তর : আমার জানা পশ্চিম মেদিনীপুরের পশ্চিম অংশে (ঝাড়গ্রামে) কিছু অঞ্চলের লোকসমাজে দেয়ালে ছবি আঁকার চল আছে।
৬.২. মানভূম জেলা সংলগ্ন আর কোন্ কোন্ জেলায় দেয়াল চিত্রণ হয়ে থাকে? 
উত্তর : মানভূম জেলার সংলগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান জেলা, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম জেলাতে প্রচুর দেয়ালচিত্রণ হয়ে থাকে।
৬.৩. মানভূম জেলায় কোন কোন আদিবাসী গোষ্ঠীর বাস?
উত্তর : মানভূম জেলায় সাঁওতাল, ছো, অসুর, ভূমিজ, মুণ্ডা, ওঁরাও, খেড়িয়া, শবর, কোল, বীরহড় প্রভৃতি আদিবাসীগোষ্ঠীর বসবাস আছে।
৬.৪. মাটির দেয়াল চিত্রগুলি সাধারণত কোন কোন উৎসবে আঁকা হয়?
উত্তর : মাটির দেয়ালচিত্রগুলি সাধারণত আশ্বিনের দুর্গাপূজা ও কার্তিকের অমাবস্যা বা দীপাবলি, এই দুটি উৎসবকে কেন্দ্র করেই অঙ্কিত হয়।
৬.৫. দেয়াল চিত্র করার জন্য কী কী উপাদান ব্যবহৃত হয়? 
উত্তর : দেয়ালচিত্র করার জন্য সাধারণভাবে গিরিমাটি বা গৈরিকবর্ণের মাটি, গিরিফল এবং সাদা, কালো, আকাশি, গেরুয়া বা হলদে, দুধেমাটি ইত্যাদি উপাদান ব্যবহার করা হয়।
৬.৬. কোন তিথিতে কৃষিজীবীরা কীভাবে তাদের গৃহসজ্জা করে তা লেখো।
উত্তর : সাধারণত আশ্বিনের দুর্গাপূজা, কার্তিকের অমাবস্যা বা দীপাবলি ইত্যাদি তিথিতে গৃহাঙ্গনের প্রবেশদ্বার থেকে উঠোন, গোহাল অর্থাৎ গোয়াল, ধানের গোলা বা মরাই এবং মূল বাসগৃহ সর্বত্র আলপনা দিয়ে কৃষিজীবীরা সাজায়।
৬.৭. কোন কোন জাতির দেয়ালচিত্রের সাধারণ লক্ষণ পদ্ম?
উত্তর : সাঁওতাল ব্যতীত অন্যদের মধ্যে ভূমিজ, কুর্মি বা অন্যান্য জাতির দেয়ালচিত্রের সাধারণ লক্ষণ পদ্ম।
৬.৮. দুধেমাটির ওপর কীভাবে চিত্রণ করা হয়?
উত্তর : দেয়ালে দুধেমাটির প্রলেপ দিয়ে তা ভিজে থাকতে থাকতেই তার ওপর হাতের আঙুলের ডগা দিয়ে দাগ টেনে এঁকে দেওয়া হয় ছবি।
৬.৯. মোরগঝুঁটির চালচিত্রে আর কী কী নকশা থাকে?
উত্তর : মোরগঝুঁটিকে চালচিত্রের মধ্যে স্থাপন করে অন্যান্য মোটিফ সংযুক্ত করে জড়োয়া সাজ করানো হলে তাকে মোরগঝুঁটির ঝাড় বা মুরগা ঝাড় বলা হয়। চালচিত্রটির ধারে ধারে সারিবদ্ধ থাকে উদীয়মান সূর্যের নকশা। সূর্যগুলির ফাঁকে ফাঁকে উঠে আসে একটি করে আধফোটা পদ্ম। এর বাইরে যে শূন্যস্থান পড়ে থাকে সেখানে বসানো হয় নানা রকমের ছোটো ছোটো মোটিফ। সেগুলির মধ্যে পদ্ম তো থাকেই, তার সঙ্গে ইস্কাবন, হরতনের চিহ্ন ও সাধারণ লতাপাতা, পাখি, ময়ূর ইত্যাদিও থাকে। এই ধরনের বিস্তৃত আকারের ছবি যেমন লাল, নীল, সাদা, গেরুয়া ইত্যাদি বিচিত্র বর্ণের সমাবেশ আঁকা হয়, তেমন বর্ণ ছাড়াও আঁকা হয়।



ঝুমুর - দুর্যোধন দাস উত্তর

❐ ঝুমুর - দুর্যোধন দাস বিষয়বস্তু :
পশ্চিমবঙ্গে প্রায় প্রতিটি মাসেই কোনো-না-কোনো খাদ্যবস্তু বিশেষভাবে পাওয়া যায় এবং তা সেই-সেই মাসেই খেয়ে আনন্দ পাওয়া যায়। পশ্চিমবঙ্গে পুরুলিয়ার আঞ্চলিক ভাষায় রচিত ‘ঝুমুর’ কবিতায় কবি দুর্যোধন দাস বলছেন মাঘ মাসে আমাদের দেশে সিম হয়। মিষ্টি আর খুখড়ির ডিম লাগে মিষ্টি। ফাল্গুন মাসে গাছের টাটকা নিমপাতা লাগে খুব রুচিকর। চৈত্রমাসে শ্রীফল খেতে ভালো লাগে। কবির মতে, এই ফল এক সময় রামচন্দ্র খেয়েছিলেন। বৈশাখ মাসে গেঁতি মাছে আম মিশিয়ে খেতে দারুণ সুস্বাদু লাগে। জ্যৈষ্ঠ মাসে মিষ্টি লাগে আম। আষাঢ় মাসে দারুণ মিষ্টি মনে হয় কাঁঠাল। কবির মতে, বনবাসে গিয়ে কৌশল্যার দুলাল অর্থাৎ রামচন্দ্র কাঁঠাল খেয়েছিলেন। কবি আরও বলেছেন, শ্রাবণ মাসে মিষ্টি লাগে দই। ভাদ্র মাসে পাকা তাল দ্বিগুণ মিষ্টি হয়।

১। এককথায় প্রশ্নোত্তর :
(ক) বাগানে নিম কোন মাসে পাওয়া যায়?
উত্তর : ফাল্গুন মাসে।
(খ) বৈশাখে কী মিঠা লাগে?
উত্তর : গেঁতি মাছের আম।
(গ) কোন মাসে পাকা তাল দুই গুণ মিষ্টি হয়?
উত্তর : ভাদ্র মাসে।
(ঘ) কাঁঠাল কোন মাসে মিষ্টি হয়?
উত্তর : আষাঢ় মাসে।
(ঙ) বনবাসে, খাল্য কৌশল্যা_____________গো। 
উত্তর :  দুলাল।
(চ) ফাগুনেতে, মিঠা বাগানে__________
উত্তর : নিম।
২। গদ্য রূপ লেখো : মিঠা, ফাগুন, চৈত, শ্রীফল, দহি, ভাদর।
উত্তর : মিঠা—মিষ্টি, ফাগুন—ফাল্গুন, চৈত—চৈত্ৰ, শ্রীফল—বেল, দহি—দই, ভাদর-ভাদ্রা।
৩। পদান্তর করো : মাঘ, বৈশাখ, মাস, বন, দাস।
উত্তর : মাঘ—মাঘী, বৈশাখ—বৈশাখী, মাস—মাসিক, বন—বন্য, দাস—দাস্য।

পিঁপড়ে কবিতা প্রশ্ন উত্তর

পিঁপড়ে – অমিয় চক্রবর্তী উত্তর

❐ পিঁপড়ে – অমিয় চক্রবর্তী  বিষয়বস্তু :
কবি অমিয় চক্রবর্তী তাঁর ‘পিঁপড়ে’ কবিতাটি লিখেছেন শুধুমাত্র ‘পিঁপড়ে’ নামক একটি সুপরিচিত ক্ষুদ্র প্রাণী সম্পর্কে। পিঁপড়ের ঘোরাফেরা আমাদের সকলেরই চেনা। পিঁপড়েকে কবি এতই ভালোবেসেছেন যে তিনি পিঁপড়ের প্রতিটি কার্যকলাপ খুব আগ্রহের সঙ্গে নিরীক্ষণ করে দেখেছেন। পিঁপড়েদের দেখে তিনি এতই আপ্লুত হয়েছেন যে, তাঁর ইচ্ছা, পিঁপড়ের রাজত্ব ক্রমাগত বেড়ে চলুক।  ছোটো পিঁপড়ে। পিঁপড়ে ঘুরছে দেখছে। তার ব্যস্ত চলা দেখে মধুর লাগে। তার চলায় আছে স্তব্ধতা, স্তব্ধতা আছে তার কথা বলায়। ছোট্ট পিঁপড়ে দেখলে মায়া জাগে। কারণ অত ছোটো হয়তো সে আলোয় গন্ধে ছুঁয়ে মাটিতে ঘুরছে ফিরছে, ধুলোর রেণু মাখছে। ছোটো পিঁপড়েকে সরিয়ে দিতে মায়া জাগে, আহা, সেও তো প্রাণীর পরিচয় পেয়েছে। সে গাছের তলায় ভোরে চলেছে কোথায় গভীর অতলে। সেই অতলে পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীই একদিন হারিয়ে যাবে। সবাই যে পৃথিবীতে দু'দিনের জন্য আমরা এসেছি সেই কথাই অতলে ঢুকে পিঁপড়ে মনে করিয়ে দেয়।

পিঁপড়ে কবিতা অমিয় চক্রবর্তী প্রশ্ন উত্তর

✐ হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর :
১.১. অমিয় চক্রবর্তী কোথায় অধ্যাপনা করতেন? 
উত্তরঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যু পলজ্ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতেন।
১.২. তাঁর দুটি কবিতার বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর : তাঁর দুটি বইয়ের নাম পালাবদল, পুষ্পিত ইমেজ।
২. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
২.১. কবির কী দেখে ‘কেমন যেন চেনা লাগে’ মনে হয়েছে? 
উত্তর : পিঁপড়েকে দেখে।
২.২. ‘কেমন যেন চেনা লাগে’—কথাটির অর্থ বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : পিঁপড়ে সব জায়গাতেই থাকে। পিঁপড়ের সঙ্গে সকলের জন্ম থেকেই পরিচয়। তাই হঠাৎ কোথাও পিঁপড়েকে দেখলে ‘কেমন যেন চেনা মনে হয়'।
২.৩. কবি কাউকে দুঃখ দিতে চাননি কেন?
উত্তর : পৃথিবীতে আমরা প্রত্যেকেই এসেছি সুখলাভ করতে। প্রত্যেকেই চায় সে যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন সুখে থাকবে। সুতরাং কবি নিজের হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছেন যে কাউকে দুঃখ দিতে গেলে অন্য কেউ তাঁকে দুঃখ দিতে পারে। তাই তিনি কাউকে দুঃখ দিতে চাননি।
২.৪. ‘কোন অতলে ডাকুক’—কে কাকে এই ডাক দেয়?
উত্তর : কবিতায় কবিকে ডাক দেয় পিঁপড়ে।
২.৫. কবি আজ প্রাণের কোন পরিচয় পেয়েছেন?
উত্তর : কবি আজ প্রাণের পরিচয় পেয়েছেন যাতে বোঝানো হয়েছে যে, এই পৃথিবীর প্রত্যেকের দেহে প্রাণ আছে। প্রাণ আছে প্রতিটি মানুষের, প্রতিটি প্রাণীর, প্রতিটি কীটাণুকীটের।
২.৬. ‘দু-দিনের ঘর’ বলতে কী বোঝো?
উত্তর : যাদের শরীরে প্রাণ আছে তারাই একদিন মারা যাবে। দেহ থেকে প্রাণ চলে গেলে দেহ পড়ে থাকে। দেহটাই প্রাণের ঘর। মহাবিশ্বের অনন্তকালের মধ্যে একটি প্রাণী খুব অল্প দিনই বেঁচে থাকে। তাই বলা হয়েছে দু-দিনের ঘর।
৩. প্রার্থনা, নির্দেশ, অনুরোধ বোঝাতে বাংলায় ক্রিয়ার শেষে ‘উক’ যোগ হয়। (যেমন এই কবিতায় থাক্ + উক = থাকুক) কবিতা থেকে এমন আরো পাঁচটি শব্দ খুঁজে বের করো।)
উত্তর : ঘুরুক, দেখুক, মাখুক, রাখুক, ডাকুক।
৪. নীচের সমোচ্চারিতভিন্নার্থকশব্দগুলির অর্থ পার্থক্য দেখিয়ে প্রত্যেকটি ব্যবহার করে পৃথক পৃথক বাক্যরচনা করো।
  • ভরে—(পূরণ করে) অতিথিকে খেতে দিয়ে মা বলল, পেট ভরে খাও বাছা।
  • ভোরে—(সূর্য ওঠার আগের সময়) মেঘলা ছিল বলে আজ ভোরে সূর্য দেখা যায়নি।
  • ঘরে—(নিজের বাসস্থানে) ছেলেটি ঘরে না ফেরায় মা পড়েছেন চিন্তায়।
  • ঘোরে—(ঘোরাফেরা করে) ফেলিওয়ালা চুড়ি নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘোরে।
  • ছুঁয়ে—(স্পর্শ করে) মায়ের পা ছুঁয়ে ছেলেটি প্রণাম করল।
  •  চুঁয়ে—(অল্প ক্ষরণ হয়ে) কলশি ফুটো থাকায় জল সারাক্ষণ চুঁয়ে পড়ছে।
  • আনল—(নিয়ে এলো) সে তৎক্ষণাৎ ডাক্তার ডেকে আনল।
  • অনল—(আগুন) চিতায় শোয়ানোর পর মৃতদেহকে অনল গ্রাস করে নিল।
  • মধুর—(মিষ্ট, সুস্বাদু) শিশুর হাসি সবচেয়ে মধুর।
  • মেদুর —(স্নিগ্ধ) শ্রাবণের মেঘমেদুর আকাশে চেয়েছিলাম অনেকক্ষণ।
৫. পাশের শব্দঝুড়ি থেকে ঠিক শব্দ বেছে নীচের ছকটি সম্পূর্ণ করো।
(শব্দঝুড়ি— মাটি, পিপীলিকা, যারা, ধুলা)
  • পিপীলিকা > পিঁপড়ে
  • ধুলো > ধুলা 
  • মৃত্তিকা > মাটি 
  • যাহারা > যারা
৬. কবিতা থেকে সর্বনামগুলি খুঁজে বের করে আলাদা আলাদা বাক্যে ব্যবহার করো।
  1. তার—মানুষটিকে আমি চিনি কিন্তু তার নাম জানি না।
  2. ওই—অনেক দূরের ওই পাহাড়ের পিছনে সূর্য ওঠে প্রতিদিন।
  3. ওকে—কেন সাতসকালে ওকে তোমরা বিরক্ত করছ?
  4. কে—রবীন্দ্রনাথের বাবা কে ছিলেন?
  5. ওর—তুমি ওর গায়ে হাত দিলে ও তো ভয় পাবেই।
  6. যারাই—পাহাড়ে যারাই বেড়াতে গেছে তারাই মুগ্ধ হয়েছে।
  7. সেই—তারপর সেই দিন থেকে তার আর দেখা পাইনি।
  8. এই—আমরা সকলে এই স্কুলে পড়ি।
  9. সবাইকে—আমার জন্মদিনে তোমাদের সবাইকে নেমন্তন্ন জানাই।
৭. নীচের স্তম্ভ দুটি মেলাও :


৮. কবিতা থেকে সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়াগুলি খুঁজে নীচের খোপে যথাস্থানে বসাও :
সমাপিকা অসমাপিকা
ঘুরুক,দেখুক চলা
থাকুক,চেনা চলায়
থাকুক,চেনা কথা বলা
লাগে,স্তদ্ধ ছুঁয়ে
আনল,চলে নিতে
চাইনে ভরে
রাখুক সরিয়ে
ভয়করে দিতে

৯. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
৯.১. পিঁপড়ের ভাষাহীন চলাচলের মধ্যে বিনিময়ের ভঙ্গিটি কেমন? 
উত্তর : কবি চাইছেন পিঁপড়ে তাঁর সামনে ঘুরুক। পিঁপড়ে ঘুরে তাঁকে দেখুক। সে এখানে থাকুক। কবিও তাঁর মনের কথা নীরবে পিঁপড়েকে জানাচ্ছেন। পিঁপড়েও তাঁর নীরব ভাষায় বুঝে নিল যে কবি তার প্রতি অসন্তুষ্ট হচ্ছেন না। সে কবিকে ভালো করে দেখল। সে বুঝল কবি তাকে দেখছেন। কবি তাকে নীরব ভাষায় সেখানে থাকতে বললেন—এভাবে চলল তাঁদের বিনিময়ের ভঙ্গি।

৯.২. 'মাটির বুকে যারাই আছি এই দু-দিনের ঘরে’ –‘এই দু-দিনের ঘরে' বলতে কী বোঝো? কে সবাইকে। কীভাবে ‘এই দু-দিনের ঘরে' আদরে ঘিরে রাখে?
উত্তর : একটু গভীর দৃষ্টি দিয়ে দেখলে বোঝা যাবে, এই পৃথিবীতে আমরা যারা এখন আছি, আমাদের আগেও আমাদের মতো সকলেই একদিন ছিল। অনেক অনেক দূরের অতীত কালেও ছিল। আবার আমাদের চলে যেতে হবে একদিন-না-একদিন । আর আমরা কোনোদিনই ফিরব না। যুগ যুগ সময় চলে যাবে আমাদের আর এখানে ফেরা হবে না। এই পৃথিবীতে যে অনন্ত সময় বয়ে চলেছে তার হিসাব করে দেখলে বোঝা যাবে যে, আমরা দু-দিনের জন্য এখানে বসবাস করতে এসেছি। আমাদের দেহ নামক ঘরখানিতে যে প্রাণ আছে সেই প্রাণ মহাকালের বিচারে মাত্র দু-দিনের জন্য আছে। আমাদের এই মানবশরীর নামক ঘরখানিকে আদরে ঘিরে রেখেছে পৃথিবী।

৯.৩. এই কবিতায় কবির কীরূপ মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে তা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : কবি দেখেছেন, অনুভব করেছেন, এই পৃথিবীতে মানুষ এবং অন্যান্য প্রতিটি প্রাণী অর্থাৎ কীটাণুকীট পর্যন্ত সকলেই সুখ ভোগ করতে চায়। পৃথিবী প্রত্যেককেই ভালোবাসে বলে প্রত্যেককে আদর করে ধরে রেখেছে। পৃথিবীর আছে অনন্ত সুখ, অনন্ত ভালোবাসা। তাই কবির হৃদয় গভীর মমতায় আকুল হয়ে ভাবছে। যার যতদিন দেহনামক ঘরখানি আছে— সেই ঘরে থেকে সে প্রাণভরে পৃথিবীর সুখভোগ করুক। অন্যের অনিষ্ট না করে যার যত খুশি মনপ্রাণ চাইবে সে ততখানি আনন্দ উপভোগ করুক।

৯.৪. বিভিন্ন রকমের পিঁপড়ে এবং তাদের বাসস্থান, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনপ্রণালী সম্বন্ধে তোমার পর্যবেক্ষণগুলি একটি খাতায় লেখো। প্রয়োজনে ছবিও আঁকতে পারো।
  • পিঁপড়ের রকম : পিঁপড়ে দেখা যায় অনেক রকমের। কালো পিঁপড়ে, লাল পিঁপড়ে, সাদা পিঁপড়ে, খুদে পিঁপড়ে, বড়ো পিঁপড়ে, রাক্ষুসে পিঁপড়ে, কাঠ পিঁপড়ে, জ্বালা ধরানো পিঁপড়ে ইত্যাদি।
  • পিঁপড়ের বাসস্থান : বেশির ভাগ পিঁপড়ে বাস করে মাটির ভিতরে। তবে এক ধরনের লাল পিঁপড়ে থাকে গাছে। তারা কামড়ালে ক্ষতস্থান ফুলে যায় এবং ভীষণ জ্বালা করে। আর এক ধরনের হালকা শরীর হালকা লাল পিঁপড়েও গাছের পাতায় পাতায় জোড়া লাগিয়ে তার ভিতর কোটরের মতো করে বাস করে। সেখানে তারা ডিম পাড়ে।
  • পিঁপড়ের খাদ্যাভ্যাস : পিঁপড়ে সবকিছুই খায়। তবে তারা যে-কোনো মৃতদেহ ভীষণ ভালোবাসে।
  • পিঁপড়ের জীবনপ্রণালী : পিঁপড়েরা ভীষণ পরিশ্রমী। তারা নিজের ওজনের দু-গুণ জিনিস বহন করতে পারে। তাদের মধ্যে একতা ভীষণ। তারা দলবদ্ধভাবে কাজ করে। খাদ্যসংগ্রহ বহন করে নিয়ে যাওয়ায় দলের একটি পিঁপড়ে মুখে তুলে খাদ্যকণা খানিকটা নিয়ে গিয়ে অন্য পিঁপড়ের মুখে ধরিয়ে দেয়। সে আবার বয়ে নিয়ে গিয়ে তাদের গর্তে নির্দিষ্ট বাসায় তা সজ্জিত করে রাখে। পিঁপড়েরা সবচেয়ে সঞ্জয়ী প্রাণী। তারা শীতকালের জন্য মাটির নীচে তাদের বাসায় খাদ্য সঞ্জয় করে লুকিয়ে রাখে। সারা শীতকাল তারা মাটির নীচেই থাকে এবং সারাবছরের সঞ্চিত খাদ্য ভক্ষণ করে।
৯.৫. একটি লাল পিঁপড়ে ও একটি কালো পিঁপড়ের মধ্যে একটি কাল্পনিক কথোপকথন রচনা করো।
  • লাল পিঁপড়ে : কেমন আছ তুমি কালো পিঁপড়ে-ভাই?
  • কালো পিঁপড়ে : ভালো আছি দাদা লাল পিঁপড়ে। আজ একটা লোক আমার গায়ে হাত দিতেই তাকে আমি কামড়ে পালিয়ে এসেছি।
  • লাল : বেশ করেছ। আমিও তো কেউ আমার সঙ্গে দুষ্টুমি করলে তাকে কামড়ে দিই। অনেকেই আছে যারা আমাদের থেকে অনেক বলবান মনে করে তারা ভাবে, ছোটো বলে আমরা কিছু করতে পারব না।
  • কালো : ঠিক বলেছ। কিন্তু আমাদের শরীরে প্রচুর শক্তি আছে। আমরা আমাদের ওজনের দু-গুণ মাল সহজেই বয়ে নিয়ে যেতে পারি। কিন্তু একটা হাতি তার ওজনের দু-গুণ মাল বইতে পারবে না।
  • লাল : তবে হাতির ধারেকাছে যেয়ো না ভাই, তার পায়ের তলায় পড়লে নিমেষে প্রাণ চলে যাবে।
  • কালো : হাতি মরে পড়ে থাকলে তা আমরা দল বেঁধে বহুদিন ধরে প্রাণ ভরে খাব। এখন তুমি কোথায় যাও?
  • লাল : শীতকালে ঘর থেকে বেরোতে পারব না। তাই খাবারের সন্ধানে এখন চলেছি। শুনেছি একটা আরশোলা মরেছে। তুমিও তাড়াতাড়ি যাও।

No comments

Hi Welcome ....