❐ আরো পড়ুনঃ উচ্চ মাধ্যমিক Philosophy MCQ সূচিপত্র ❍ বচন : অধ্যায়ের সংক্ষেপে আলোচনা নিরপেক্ষ বচনে সংযোজকের মাধ্যমে উদ্দেশ্য ও বিধেয়র...
❐ আরো পড়ুনঃ
❍ বচন : অধ্যায়ের সংক্ষেপে আলোচনা
নিরপেক্ষ বচনে সংযোজকের মাধ্যমে উদ্দেশ্য ও বিধেয়র মধ্যে যেরূপ সম্পর্ক প্রকাশ পায়, তার স্বরূপকে কেন্দ্র করে যুক্তিবিজ্ঞানীদের মধ্যে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন মতের উল্লেখ করা যায়। যেমন— (১) লৌকিক মতবাদ : যুক্তিবিজ্ঞানী ভেন মনে করেন যে, নিরপেক্ষ বচনের উদ্দেশ্য একটি ব্যক্তি বা বস্তুবাচক পদ এবং বিধেয়টি গুণবাচক পদরূপে উদ্দেশ্যকে সদর্থক বানঞর্থকভাবে বিশেষিত করে। যেমন—‘মানুষ হয় মরণশীল’ বলতে বোঝায় ‘মরণশীলতা’ ধর্মটি মানুষ নামক ব্যক্তিতে
আছে। এই মতানুসারে উদ্দেশ্য ও বিধেয়র সম্বন্ধ প্রকৃতপক্ষে দ্রব্য ও গুণের সম্বন্ধ। উদ্দেশ্য ও বিধেয়র সম্বন্ধ বিষয়ক এই
মতকে লৌকিক মতবাদ বলা হয় । (২) গুণসম্বন্ধবাদ : যুক্তিবিজ্ঞানী মিল মনে করেন যে, নিরপেক্ষ বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয়ই গুণবাচক পদ এবং সংযোজকের মাধ্যমে ওই দুটি গুণের মধ্যে সম্বন্ধ কেমন সেটিই প্রকাশিত হয়। যেমন— সকল 'মানুষ হয় মরণশীল’ বচনটিতে বলা হয়েছে যে, ‘মনুষ্যত্ব’ ও ‘মরণশীলতা’ ধর্ম দুটির মধ্যে একপ্রকার সম্বন্ধ আছে।
(৩) শ্রেণি-সম্বন্ধবাদ : যুক্তিবিজ্ঞানী কোপি মনে করেন যে, নিরপেক্ষ বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয়ই শ্রেণিবাচক
পদ এবং সংযোজকের মাধ্যমে ওই দুটি শ্রেণির মধ্যে সম্বন্ধ কীরুপ সেটিই প্রকাশিত হয়। কোপির মতে, নিরপেক্ষ বচনের
সংযোজকের মাধ্যমে উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদ নির্দেশিত দুটি শ্রেণির অন্তর্ভুক্তি বা বহির্ভুক্তি-র কথা বলা হয়। একটি শ্রেণি সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে অন্য শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত বা বহির্ভুক্ত এ কথাই নিরপেক্ষ বচনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। তাই কোপি মনে করেন যে, কোনো বিষয়ের বিধেয়টি যদি গুণবাচক পদরূপে থাকে তবে তাকে শ্রেণিবাচক পদে রূপান্তরিত করতে হবে। যেমন— ‘সকল দার্শনিক হয় বিচক্ষণ’ বচনটির বিধেয় পদ গুণবাচক হওয়ায় একে ‘সকল দার্শনিক হয় বিচক্ষণ ব্যক্তি’ –এভাবে শ্রেণিবাচক পদে রূপান্তরিত করতে হবে।
❐ নিরপেক্ষ বচনের শ্রেণি-সম্বন্ধ বিষয়ক মতবাদটি অ্যারিস্টটলের চতুর্বর্গ পরিকল্পনার অন্তর্গত A, E, I, O বচনের মাধ্যমে বোঝানো যায়—
❍ A বচন : ‘সকল মানুষ হয় বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন জীব’।
উপরোক্ত বচনটিতে উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ’ শ্রেণির সমস্ত সদস্য বিধেয় পদ নির্দেশিত ‘বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন জীব’ শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ, A বচনে উদ্দেশ্য পদের সমগ্র শ্রেণি-অন্তর্ভুক্তির কথা বলা হয়। অপরদিকে বিধেয় পদের আংশিক শ্রেণি-অন্তর্ভুক্তির কথা বলা হয়।
❍ E বচন : ‘কোনো মানুষ নয় পশু'।
উপরোক্ত বচনটিতে উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ’ শ্রেণির সমস্ত সদস্য বিধেয় পদ নির্দেশিত ‘পশু’ শ্রেণির বহির্ভুক্ত। স্পষ্টভাবেই E বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের সমগ্র শ্রেণি-বহির্ভুক্তির কথা বলা হয়।
❍ I বচন : ‘কোনো কোনো মানুষ হয় ব্যবসায়ী।
উপরোক্ত বচনটিতে উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ’ শ্রেণির কোনো কোনো সদস্য বিধেয় পদ নির্দেশিত ‘ব্যবসায়ী’ শ্রেণির অন্তর্গত। অর্থাৎ I বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের আংশিক শ্রেণি-অন্তর্ভুক্তির কথা বলা হয়।
❍ O বচন : ‘কোনো কোনো মানুষ নয় ব্যবসায়ী।
উপরোক্ত বচনটিতে উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ’ শ্রেণির কোনো কোনো সদস্য বিধেয় পদ নির্দেশিত ‘ব্যবসায়ী’ শ্রেণির বহির্ভুক্ত। অর্থাৎ O বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের আংশিক শ্রেণি-বহির্ভুক্তির কথা বলা হয়। অন্যদিকে বিধেয় পদের সমগ্র শ্রেণি-বহির্ভুক্তির কথা বলা হয়।
উপরোক্ত বচনটিতে উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ’ শ্রেণির সমস্ত সদস্য বিধেয় পদ নির্দেশিত ‘পশু’ শ্রেণির বহির্ভুক্ত। স্পষ্টভাবেই E বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের সমগ্র শ্রেণি-বহির্ভুক্তির কথা বলা হয়।
❍ I বচন : ‘কোনো কোনো মানুষ হয় ব্যবসায়ী।
উপরোক্ত বচনটিতে উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ’ শ্রেণির কোনো কোনো সদস্য বিধেয় পদ নির্দেশিত ‘ব্যবসায়ী’ শ্রেণির অন্তর্গত। অর্থাৎ I বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের আংশিক শ্রেণি-অন্তর্ভুক্তির কথা বলা হয়।
❍ O বচন : ‘কোনো কোনো মানুষ নয় ব্যবসায়ী।
উপরোক্ত বচনটিতে উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ’ শ্রেণির কোনো কোনো সদস্য বিধেয় পদ নির্দেশিত ‘ব্যবসায়ী’ শ্রেণির বহির্ভুক্ত। অর্থাৎ O বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের আংশিক শ্রেণি-বহির্ভুক্তির কথা বলা হয়। অন্যদিকে বিধেয় পদের সমগ্র শ্রেণি-বহির্ভুক্তির কথা বলা হয়।
No comments
Hi Welcome ....