Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Top Ad

Breaking News:

latest

Class 5 Amader Paribesh Namuna Question Answer | আমাদের পরিবেশ নমুনা প্রশ্ন উত্তর সমাধান

Class-V Amader Paribesh Solved Text Book Answer ❐ আরো পড়ুনঃ ক্লাস - V   পরিবেশ প্রশ্ন উত্তর সমাধান প্রশ্নের নমুনা (এই ধরনের নমুনা অনুসরণ করে...

Class-V Amader Paribesh Text Book Answer

Class-V Amader Paribesh Solved Text Book Answer

আরো পড়ুনঃ ক্লাস - V

প্রশ্নের নমুনা
(এই ধরনের নমুনা অনুসরণ করে পার্বিক মূল্যায়ন প্রশ্নপত্র তৈরি করা যেতে পারে। প্রয়োজনে অন্যান্য ধরনের প্রশ্নও ব্যবহার করা যেতে পারে। কী কী ধরনের প্রশ্ন করা যেতে পারে তার একটি নকশা দেওয়া হলো।)

১. সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :
(i) হৃদপিণ্ডের শব্দ বোঝা যায় যে যন্ত্রে তা হলো—
(a) থার্মোমিটার 
(b) স্টেথোস্কোপ 
(c) ব্যারোমিটার 
(d) ফোটোমিটার
উত্তরঃ (b) স্টেথোস্কোপ 

(ii) মাছের বাজারে গেলে নীচের কোন মাছটি আর সহজে চোখে পড়ে না—
(a) রুই 
(b) বাটা 
(c) কাতলা 
(d) ন্যাদোস
উত্তরঃ (d) ন্যাদোস

(iii) নীচের কোনটি অপ্রচলিত শক্তি—
(a) সৌরশক্তি 
(b) জৈব গ্যাস 
(c) বায়ুপ্রবাহ 
(d) সবগুলি
উত্তরঃ (d) সবগুলি

(iv) ORS বানাতে নীচের কোনটি লাগে—
(a) নুন ও জল 
(b) নুন ও চিনি 
(c) চিনি ও জল 
(d)-নুন, চিনি ও জল
উত্তরঃ (d)-নুন, চিনি ও জল

(v) উত্তর ২৪ পরগনার নদী হলো— 
(a) বিদ্যাধরী 
(b) কুলিক 
(c) তোর্সা 
(d) দামোদর
উত্তরঃ (a) বিদ্যাধরী 

২. ঠিক বাক্যের পাশে ‘✔’ আর ভুল বাক্যের পাশে ‘✘’ চিহ্ন দাও :
(i) ট্যাংরা মাছের আঁশ নেই।
উত্তরঃ 
(ii) সমভূমি অঞ্চলে সিঁড়ির মতো জমি তৈরি করে ধানচাষ করা হয়।
উত্তরঃ 
(iii) গাঙ্গেয় সমভূমির উত্তর অংশটার বিরাট বন হলো সুন্দরবন।
উত্তরঃ 
(iv) আসানসোল-রানিগঞ্জে লোহার খনি দেখা যায়।
উত্তরঃ 
(v) কয়লার ধোঁয়ায় সালফারের অক্সাইড গ্যাস থাকে না।
উত্তরঃ 
(vi) আত্রেয়ী নদীর পশ্চিমপাশে অবস্থিত শহর হলো বালুরঘাট।
উত্তরঃ 
(vii) পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট জলশোধন করে
উত্তরঃ 
(viii) মরা নদী থেকে জলাভূমি তৈরি হয়।
উত্তরঃ 
(ix) মালভূমির উচ্চতা ২০০ মিটারের বেশি।
উত্তরঃ 

            (প্রশ্নের মান-১)
৩. বাম ও ডানদিকের স্তম্ভ মেলাও : উত্তরঃ 
বামদিকের স্তম্ভ ডানদিকের স্তম্ভ
(i) টাইগার হিল (b) দার্জিলিং জেলা
(ii) কাঁধ থেকে কনুই পর্যন্ত বিস্তৃত হাড় (c) হিউমেরাস
(iii) টিয়াপাখি (d) বন্যপ্রাণী
(iv) কলা ও পেঁপে (a) নরম কাণ্ডের গাছ
(v) শিক্ষক দিবস (e) সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণের জন্মদিন



৪. শূন্যস্থান পূরণ করো :
(প্রতিটি শূন্যস্থান পূরণের মান-১)
(i) ত্বকের উপরের স্তরে মাংসপেশি থাকে না। 
(ii) গাছ সার থেকে নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম উপাদান বেছে নেয়। 
(iii) সাপ, বেজি ও চড়াই বন্য প্রাণী। 
(iv) পৃথিবীর প্রায় সব সভ্যতাই নদীর ধারে গড়ে উঠেছিল। 
(v) পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে উঁচু পর্বতশৃঙ্গ সান্দাকফু। 
(vi) তিস্তা ও করলা নদীর তীরবর্তী শহর হলো জলপাইগুড়ি। 
(vii) সিউড়ি মোরব্বার শহর। 
(viii) অলিখিত জ্ঞানসম্পদ সাধারণত পারিবারিক সম্পদ। 
(ix) খুব অল্প বয়সে দুই বন্ধু লড়তে গেছিলেন দেশের জন্য। এঁরা হলেন ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকি। 
(x) ড. ভীমরাও রামজি আম্বেদকর ভারতের সংবিধান রচনা করেছিলেন।
(xi) ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতের সাধারণতন্ত্র দিবস।
(xii) বীরসা মুন্ডা, সিধু ও কানহু, তিতুমির ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। 
(xiii) চাষের কাজে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে গোবর ব্যবহার করা হয়। 
(xiv) দামোদর নদীকে কেন্দ্র করে ডিভিসি তৈরি করা হয়েছিল। 
(xv) ইলিশ একটি সামুদ্রিক মাছ। 
(xvi) বেঁচে থাকা শিশুর একটি মৌলিক অধিকার।

৫. একটি বাক্যে উত্তর দাও :
(প্রশ্নের মান-১)
১. শরীরের কোন জায়গার চামড়া খুব পাতলা?

উত্তর : শরীরের হাতের চেটো এবং পায়ের তলার চামড়া বাদে সর্বত্রই চামড়া পাতলা হয়।
২. চামড়ায় মেলানিন থাকার সুবিধা কী?
উত্তর : চামড়ায় মেলানিন থাকলে নানা রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
৩. হৃদ্‌পিণ্ড কীভাবে রক্তকে মানবদেহের সর্বত্র পাঠিয়ে দেয়?

উত্তর : হৃদপিণ্ড আমাদের শরীরের রক্তকে পাম্প করে সারা দেহে পাঠিয়ে দেয়।
৪. থুথু থেকে কোন রোগের জীবাণু ছড়ায়?
উত্তর : থুথু থেকে যক্ষ্মা রোগের জীবাণু ছড়ায়।
৫. মাটিতে প্লাস্টিক থাকলে গাছের শিকড়ে কী সমস্যা হয়?

উত্তর : মাটিতে প্লাস্টিক থাকলে গাছের শিকড়গুলিকে মাটিতে ঢোকার সময় বাধা দেয়।
৬. মাটির নীচে পানীয় জল কোন্ কাজে ব্যবহারের ফলে বেশি নষ্ট হয়?
উত্তর : মাটির নীচে পানীয় জল নষ্ট হওয়ার কারণ—টিউবওয়েল থেকে সরাসরি জল পান করলে এবং স্নান করলে।


৭. কলকাতার জলাভূমি কোন নদীর অংশ? 
উত্তর : কলকাতার জলাভূমি বিদ্যাধরী নদীর অংশ।
৮. ইঁদুরকে তুমি কেন বন্যপ্রাণী বলবে?
উত্তর : ইঁদুরকে পোষ মানানো যায়নি, তাই এটি বন্য প্রাণী।
৯. পিঁপড়ে ছাড়া কোন প্রাণী পরিবেশের পরিবর্তন বুঝতে পারে?
উত্তর : পিঁপড়ে ছাড়া পরিবেশের পরিবর্তন বুঝতে পারে কাক।
১০. বাঁকুড়া জেলাকে পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্রের কোনদিকে তুমি চিহ্নিত করবে?
উত্তর : বাঁকুড়া জেলাকে পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্রের পশ্চিমদিকে চিহ্নিত করবো।
১১. কোন জেলায় বেড়াতে গেলে তুমি অজয় নদ দেখতে পাবে?
উত্তর : বর্ধমান জেলার কাটোয়ায় বেড়াতে গেলে অজয় নদ দেখতে পাবো।
১২. নদীতীরের কোন সভ্যতার কথা তুমি জানো বা পড়েছ? 
উত্তরঃ নদীতীরের ‘হরপ্পা সভ্যতা’র কথা আমি জানি বা পড়েছি।
১৩. নবদ্বীপ শহর প্রসিদ্ধ কেন?
উত্তর : নবদ্বীপে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান বলে এই স্থান প্রসিদ্ধ।
১৪. তোমার কাছাকাছি অঞ্চলে কোন উৎসব হয়? 
উত্তর : আমার কাছাকাছি অঞ্চলে প্রধান উৎসব হল দোল উৎসব।
১৫. অরণ্য সপ্তাহে কী করা হয়?
উত্তর : গাছ লাগিয়ে অরণ্য সপ্তাহ পালন করা হয়।
১৬. উত্তরবঙ্গের বনভূমি কোন প্রাণীর জন্য বিখ্যাত? 
উত্তর : উত্তরবঙ্গের বনভূমি ‘একশৃঙ্গ গন্ডার’ জন্য বিখ্যাত।
১৭. ঘুনি কী কাজে লাগে?
উত্তর : ঘুনি মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করা হয়।
১৮. পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ কখন দেখা যায়?
উত্তর : অমাবস্যায় যখন সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে চন্দ্র অবস্থান করে তখন চন্দ্রের ছায়া পৃথিবীর যে স্থানে পড়ে সেই স্থানের মানুষ পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখেন।
১৯. মুখ্য কটাল ও গৌণ কটাল কী?
উত্তর : অমাবস্যা-পূর্ণিমায় পৃথিবীর জলরাশি বেশি স্ফীত হয় বলে তাকে মুখ্য কটাল বলে। সপ্তমী-অষ্টমীতে জলরাশি কম স্ফীত হয় বলে তাকে গৌণ কটাল বলে।
২০. কোন অতিকায় প্রাণী পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে?
উত্তর : বিলুপ্ত হয়ে গেছে ‘ডায়নোসরাস’।
২১. খুব সম্প্রতি শিশুদের কোন মৌলিক অধিকার দেওয়া হয়েছে?
উত্তর : সামাজিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতি নতুন দায়বদ্ধতা নিয়ে শিশুরা শিখনের পরবর্তী ধাপে উত্তীর্ণ হবে—শিশুদের এই মৌলিক অধিকার দেওয়া হয়েছে।


৬. দুই-তিনটি বাক্যে উত্তর দাও :
(প্রশ্নের মান-২)

১. গোড়ালির চামড়া পুরু হয় কেন?
উত্তর : আমাদের শরীরের সম্পূর্ণ ভর গোড়ালির ওপর পড়ে। গোড়ালিতে তাই বেশি ঘষাঘষি হয়, সেই কারণে গোড়ালির চামড়া পুরু হয়।
২. ফোসকা কীভাবে পড়ে?
উত্তর : আমাদের শরীরের চামড়া পাতলা, তাই আগুনের কাছে বা আগুনে স্পর্শ করলেই ফোসকা পড়ে।
৩. চামড়ার রং দেখে মানুষের ভেদাভেদ এক ধরনের অপরাধ—ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : চামড়ার রং দেখে মানুষের ভেদাভেদ করা উচিত নয়। কারণ, মানুষের শরীরের চামড়ায় ‘মেলানিন’ নামক এক প্রকার পদার্থ থাকে। যাদের শরীরে বেশি মেলানিন থাকে তাদের চামড়া কালো হয় আর যাদের চামড়ায় মেলানিন কম থাকে তাদের চামড়ার রং সাদা হয়। কিন্তু এই মেলানিন চামড়ার অনেক রোগ ব্যাধি আটকায়। তাই চামড়ার রং দেখা উচিত নয়।
৪. গায়ে রোদ লাগলে ভালো কেন?
উত্তর : গায়ে রোদ লাগলে ভিটামিন-ডি তৈরি হয়, যা বাচ্চাদের বিভিন্ন রোগ আটকে দেয়। ভিটামিন-ডি না তৈরি হলে বাচ্চাদের হাত-পা সরু হয়ে যায়।
৫. নখের যত্ন না নিলে কী কী সমস্যা হতে পারে?
উত্তর : আমাদের হাত-পায়ের নখ নিয়মিত কাটা উচিত। না হলে ময়লা জমে এবং জীবাণু বাসা বাঁধে। নখের গোড়া পরিষ্কার না করলে পেকে যায় ও পুঁজ জমে।
৬. রক্তাল্পতার দুটি লক্ষণ উল্লেখ করো।
উত্তর : রক্তাল্পতার দুটি লক্ষণ হল—নখ ফেটে যায় ও ফ্যাকাসে হয়ে যায়।
৭. মানুষের শরীরে দুটি জায়গার নাম লেখো যেখানে বড়ো ও ছোটো হাড় দেখা যায়।
উত্তর : মানুষের শরীরে বড়ো হাড় আছে—কনুই থেকে কব্জি পর্যন্ত এবং ছোটো হাড় আছে—আঙুলের ডগার হাড়।
৮. হাড় ভালো রাখা যায় কীভাবে?
উত্তর : হাড় ভালো রাখার জন্য ক্যালশিয়াম দরকার। দুধ, ডিমে ক্যালশিয়াম থাকে।
৯. জিভের পেশি কী কী কাজ করে?
উত্তর : জিভের পেশি স্বাদ নিতে, কথা বলতে সাহায্য করে।
১০. যক্ষ্মা রোগ কী কী ভাবে ছড়ায়?
উত্তর : বাতাস থেকে এবং ঠিকমতো খাওয়া না হলে যক্ষ্মারোগের সৃষ্টি হয়। থুতু থেকে, কথা ও হাঁচি থেকে এই রোগ ছড়ায়।
১১. মাটির অস্বাভাবিক উপাদানের উৎস কী?
উত্তর : মাটির মধ্যে থাকা অস্বাভাবিক উপাদান হল—পলিথিনের কুচি, পেনের রিফিলের টুকরো, অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের অংশ, পেন্সিলের শিস ইত্যাদি।

১২. লেন্স কী?
উত্তর : লেন্স হল একটি কাঁচের বৃত্তাকার বস্তু যা দিয়ে কোনো ছোটো জিনিসকে বড়ো দেখায়। একে বাংলায় বলা হয় আতস কাচ।
১৩. বিভিন্ন মাটির জলধারণের ক্ষমতা ভিন্ন ভিন্ন কেন?
উত্তর : বিভিন্ন মাটিতে ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণের জৈব উপাদান থাকে। তাই বিভিন্ন মাটির জলধারণ ক্ষমতা কমবেশি হয়। যে মাটিতে অস্বাভাবিক উপাদান থাকে সেই মাটিতে জলধারণ ক্ষমতা খুবই কম।
১৪. মাটির পুষ্টিতে কোন কোন খনিজ উপাদান খুব গুরুত্বপূর্ণ ও কেন?
উত্তর : মাটির পুষ্টিতে খনিজ উপাদান হল—ফসফরাস, পটাশিয়াম, এ দুটি উপাদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মাটিতে আরও অনেক উপাদান আছে। তাদের মধ্যে গাছ এই দুটি খনিজ উপাদান নিজের খাদ্যের জন্য বেছে নেয়।
১৫. পাথর ফেটে কীভাবে মাটি তৈরি হয়?
উত্তর : ভূমিকম্পে, সূর্যের তাপে, প্রবল বৃষ্টিতে পাথর ফেটে গুঁড়ো হয়। অনেক বছর ধরে অনেক কিছুর সঙ্গে তা মিশে মাটি হয়।
১৬. ভূমিক্ষয়ের ফলে প্রধান সমস্যাগুলি কী কী?
উত্তর : ভূমিক্ষয়ের ফলে সমস্যাগুলি হল—পাহাড়ি অঞ্চলে ধস নামে, সমতলের পুকুর বা দিঘির পাড় ধসে পড়ে।
১৭. জলে কী কী ভাবে নোংরা এসে পড়ে?
উত্তর : পুকুরে গবাদি পশু স্নান করানো, মলমূত্র পরিত্যাগ করা, বাড়ির আবর্জনা, বৃষ্টির ও নর্দমার নোংরা জল পুকুরে পড়লে জল নোংরা হয়।
১৮. জলশোধনের নানা পদ্ধতিগুলির নাম বলো।
উত্তর : পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট মিশিয়ে জলশোধন করা যায় এবং বাতাস থেকে অক্সিজেন মিশে জলশোধন হয়।
১৯. মাটির নীচে জল আসার পদ্ধতিগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর : মাটির নীচে জল আসার পদ্ধতিগুলি হল—কিছুটা সাগরের জল চুঁইয়ে আসে। এই জল লক্ষ লক্ষ বছর ধরে এসেছে। আবার একটু একটু করে বালির ভিতর দিয়ে, কোথাও ছোটো কণার বালির ভিতর দিয়ে এবং প্রায় কাদার কণার ভিতর দিয়ে এসেছে। এ ছাড়া বৃষ্টির জল চুঁইয়েও আসতে পারে।
১৪. মাটির পুষ্টিতে কোন কোন খনিজ উপাদান খুব গুরুত্বপূর্ণ ও কেন?
উত্তর : মাটির পুষ্টিতে খনিজ উপাদান হল—ফসফরাস, পটাশিয়াম, এ দুটি উপাদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মাটিতে আরও অনেক উপাদান আছে। তাদের মধ্যে গাছ এই দুটি খনিজ উপাদান নিজের খাদ্যের জন্য বেছে নেয়।
১৫. পাথর ফেটে কীভাবে মাটি তৈরি হয়?
উত্তর : ভূমিকম্পে, সূর্যের তাপে, প্রবল বৃষ্টিতে পাথর ফেটে গুঁড়ো হয়। অনেক বছর ধরে অনেক কিছুর সঙ্গে তা মিশে মাটি হয়।
১৬. ভূমিক্ষয়ের ফলে প্রধান সমস্যাগুলি কী কী?
উত্তর : ভূমিক্ষয়ের ফলে সমস্যাগুলি হল—পাহাড়ি অঞ্চলে ধস নামে, সমতলের পুকুর বা দিঘির পাড় ধসে পড়ে।

১৭. জলে কী কী ভাবে নোংরা এসে পড়ে?
উত্তর : পুকুরে গবাদি পশু স্নান করানো, মলমূত্র পরিত্যাগ করা, বাড়ির আবর্জনা, বৃষ্টির ও নর্দমার নোংরা জল পুকুরে পড়লে জল নোংরা হয়।
১৮. জলশোধনের নানা পদ্ধতিগুলির নাম বলো।
উত্তর : পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট মিশিয়ে জলশোধন করা যায় এবং বাতাস থেকে অক্সিজেন মিশে জলশোধন হয়।
১৯. মাটির নীচে জল আসার পদ্ধতিগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর : মাটির নীচে জল আসার পদ্ধতিগুলি হল—কিছুটা সাগরের জল চুঁইয়ে আসে। এই জল লক্ষ লক্ষ বছর ধরে এসেছে। আবার একটু একটু করে বালির ভিতর দিয়ে, কোথাও ছোটো কণার বালির ভিতর দিয়ে এবং প্রায় কাদার কণার ভিতর দিয়ে এসেছে। এ ছাড়া বৃষ্টির জল চুঁইয়েও আসতে পারে।
২০. ব্যবহৃত জলকে কী কী কাজে আবার ব্যবহার করা যায়?
উত্তর : ব্যবহৃত জলকে আবার পানীয় হিসেবে, স্নান করা, বাসন মাজা, কাপড় কাপড় কাচা ও চাষের কাজে ব্যবহার করা হয়।

২১. জলাভূমির দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর : জলাভূমির দুটি বৈশিষ্ট্য হল—এর জল কখনো শুকায় না এবং জলের গভীরতাও বেশি হয় না।
২২. সমাজজীবনে জলাভূমির গুরুত্ব কী?
উত্তর : জলাভূমিতে মাছ চাষ করে মানুষের খাদ্য হিসেবে মাছের জোগান দেয়। জলাভূমির বিশুদ্ধ শীতল বাতাস পারিপার্শ্বিক বসবাসকারী মানুষের অনেক স্বস্তির কারণ হয়।
২৩. কে বন্য আর কে পোষা— তুমি কী করে বুঝবে?
উত্তর : যেসব পশু বা পাখিদের মানুষ নিজের ঘরে থাকার জায়গা দেয়, খেতে দেয়, তাদের পালিত পশু বা পাখি পোষা প্রাণী বলা হয়। আর যেসব পশু বা পাখিদের মানুষ নিজের ঘরে রাখতে পারে না তাদের বন্য প্রাণী বলে। যেমন - বাঘ।
২৪. গাছ চিনলে কী কী সুবিধা তুমি পেতে পারো?
উত্তর : গাছ চিনলে যে সুবিধাগুলি আমরা পেতে পারি—গাছকে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারি, গাছকে আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহার করতে পারি। তা ছাড়া গাছের পাতা, ফুল-এর নির্যাস থেকে ওষুধ তৈরি করতে পারি ইত্যাদি।
২৫. তোমার জানা ঝোপ-জঙ্গলের কয়েকটি বন্যপ্রাণীর নাম লেখো।
উত্তর : ঝোপ-জঙ্গলের কয়েকটি বন্যপ্রাণী হল—গিরগিটি, মাকড়সা, পিঁপড়ে, হুলো বিড়াল, কেন্নো, মশা, উই, ইঁদুর, সাপ ইত্যাদি।
২৬. চিংড়িকে মাছের থেকে কোন্ কোন্ বৈশিষ্ট্য দিয়ে আলাদা করা যায়?
উত্তর : চিংড়ির কাঁটা থাকে না, এটি অমেরুদণ্ডী প্রাণী—এই দুটি বৈশিষ্ট্য দিয়ে মাছের থেকে আলাদা করা যায়।
২৭. পিঁপড়ের আচরণের দুটি গুরুত্ব উল্লেখ করো।
উত্তর : পিঁপড়ের আচরণের দুটি গুরুত্ব হল—বৃষ্টির সম্ভাবনা বুঝতে পারলে একটু উঁচু জায়গায় মুখে করে ডিম সরায় এবং দলবদ্ধভাবে থাকে।
২৮. তোমার দেখা দুটি প্রাণীর আকর্ষণীয় আচরণ উল্লেখ করো।
উত্তর : দুটি প্রাণীর আকর্ষণীয় আচরণ—(i) টিকটিকি : সাধারণত এরা ঘরের দেয়ালে ঘোরাফেরা করে এবং আলোর কাছাকাছি থাকে। দেয়ালে বসা পোকামাকড় খায়। (ii) ইঁদুর : সারা গায়ে লোমে ঢাকা থাকে। খেতের ফসল নষ্ট করে, বাড়ির মধ্যে ঢোকে খাবারের সন্ধানে।
২৯. শকুনের সংখ্যা হঠাৎ খুব কমে যাওয়ার কারণ কী?
উত্তর : শকুন মৃত জন্তুর মাংস খেয়ে পরিবেশকে দূষণ মুক্ত করত। কিন্তু বর্তমানে পশুদেরও বিশেষ করে গোরুকে কীটনাশক দেওয়া ঘাসপাতা, খড় খাওয়ানো হয়। তাই তাদের মাংসেও বিষ থেকে যায়। আর সেই বিষাক্ত মাংস খেয়ে শকুন মারা গিয়ে সংখ্যায় কমে যাচ্ছে।
৩০. তোমার অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর : (i) আমরা পরিবেশে যতরকম উদ্ভিদ ও প্রাণী দেখি তারা পরস্পর পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। (ii) যদি এরকম না হত তাহলে কোনো একটি প্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হত।
৩১. কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের বেশি ব্যবহারে কোন্ কোন্ জীববৈচিত্র্য হ্রাস পেতে পারে বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর : কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের বেশি ব্যবহারের ফলে জীববৈচিত্র্য হ্রাস পাচ্ছে, সেগুলি হল—ফসলের বা অন্যান্য ক্ষতিকর প্রাণীর সঙ্গে উপকারী প্রাণীও মারা যাচ্ছে এবং পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
৩২. রাঢ় অঞ্চলের ভূমিরূপের বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর : রাঢ় অঞ্চলের ভূমিরূপের বৈশিষ্ট্য হল—ঈষৎ ঢেউ খেলানো, সমগ্র অঞ্চলটির ঢাল পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে।
৩৩. বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদ মানুষ কীভাবে করেছিল?
উত্তর : ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলাকে দুটি ভাগে ভাগ করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভারতের তৎকালীন গভর্নর-জেনারেল লর্ড কার্জন। কিন্তু ভারতীয় বিপ্লবীরা একে বাধা দেওয়ার জন্য অনেক সংগ্রাম করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর প্রতিবাদ করে লিখেছিলেন “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি” গানটি। বাধ্য হয়ে লর্ড কার্জন এই আদেশ তুলে নেন।
৩৪. উত্তরবঙ্গের জঙ্গলের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো যেগুলো পশ্চিমদিকে গেলে দেখা যায় না?
উত্তর : উত্তরবঙ্গের জঙ্গল খুব ঘন, সেখানে পিপুল, নিম, তেঁতুল, জাম, বাবলা, বাঁশ—এসব গাছ আছে। ছোটো বন্য পশুও আছে। এ ছাড়া আছে রায়গঞ্জে কুলিক পাখিরালয় ও তুফানগঞ্জে রসিকবিল। কিন্তু পশ্চিমদিকে অনুর্বর এবং শক্ত অঞ্চল। 
৩৫.বিষ্ণুপুর শহরকে কেন্দ্র করে কোন কোন সংস্কৃতির বিস্তার ঘটেছে?
উত্তর : বিন্নুপুরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে—পোড়ামাটির কাজ, বস্ত্রশিল্প, রাসমঞ্চ এবং ডিগ্রি কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ।
৩৬. পশ্চিমবঙ্গের কোন কোন শহর কৃষিবাণিজ্যের জন্য বিখ্যাত?
উত্তর : কৃষিবাণিজ্যের জন্য বিখ্যাত শহর—মাথাভাঙা (কোচবিহার), কাকদ্বীপ (দক্ষিণ ২৪ পরগনা), শেওড়াফুলি (হুগলি), তারকেশ্বর (হুগলি), উলুবেড়িয়া (হাওড়া), আরামবাগ (হুগলি), বারাসাত (উত্তর ২৪ পরগনা), বালুরঘাট (দক্ষিণ ২৪ পরগনা), কাঁথি (পূর্ব মেদিনীপুর), কাটোয়া (বর্ধমান), তমলুক (পূর্ব মেদিনীপুর) ইত্যাদি।
৩৭. প্রাকৃতিক সম্পদকে মানুষ কী কী সম্পদ তৈরিতে ব্যবহার করেছে তা দুটি উদাহরণ দিয়ে বুভিয়ে দাও।
উত্তর : প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে তৈরি সম্পদ–ইট, মাটির বাসন, স্টিলের বাসন, উনুন, নিত্য ব্যবহার্য জিনিস (জামাকাপড়, দরজা-জানলা, আসবাবপত্র ইত্যাদি)।
৩৮. সমাজ সংস্কারে ভগিনী নিবেদিতা ও বেগম রোকেয়ার অবদান কী কী?
উত্তর : ভগিনী নিবেদিতা : ইংরেজদের অন্যায় শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং নারীশিক্ষার ব্যবস্থা। বেগম রোকেয়া : মুসলিম মেয়েদের লেখাপড়ার বিস্তার ঘটিয়েছিলেন।
৩৯. রামমোহন রায় ও বিদ্যাসাগরকে আমরা আজও স্মরণ করি কেন?
উত্তর : রামমোহন রায় : তাঁর প্রচেষ্টায় কুপ্রথা ‘সতীদাহ’ আইনত নিষিদ্ধ হয়। কুসংস্কারের প্রতিবাদ করেছিলেন। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর : শিশু শিক্ষার জন্য ‘বর্ণপরিচয়’ প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগ রচনা করেন এবং ‘বিধবা বিবাহ’ আইনত স্বীকৃত হয় তাঁরই প্রচেষ্টায়।
৪০. ইংরেজদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষদের লড়াইয়ের দুটি ঘটনা উল্লেখ করো।
উত্তর : ইংরেজদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষদের দুটি লড়াই হল—(i) সাঁওতাল বিদ্রোহ, নেতৃত্বে ছিলেন সিধু ও কানহু। (ii) জালিয়ানওয়ালাবাগ-এর হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে লড়াই, চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের মাধ্যমে। এর নেতৃত্বে ছিলেন মাস্টারদা সূর্য সেন।


৪১. চাষের কাজ কীভাবে শুরু হয়েছিল?
উত্তর : প্রথমে চাষের কাজ শুরু হয়েছিল মেয়েদের বুদ্ধিতে। পুরুষরা শিকার করত। তারা বনের ফল-পাতা আনতে যেত। ঘর সামলাত মেয়েরা। তার মধ্যেই তারা দেখল কীভাবে বীজ থেকে গাছ হয়। ভাবল, তাহলে গাছ লাগিয়ে যত্ন করে বড়ো করি। তা থেকে খাওয়ার শস্য পাওয়া যাবে। তারপর মানুষ দেখল মাটি খুঁড়ে চাষ করলে বেশি শস্য পাওয়া যায়। পরে কাঠের লাঙল ব্যবহার করে চাষ করত।
৪২. আধুনিক চাষে কী কী পরিবর্তন ঘটছে?
উত্তর : আধুনিক চাষের পরিবর্তন—(i) পাওয়ার টিলারে জমিতে চাষ দেওয়া হয়, (ii) ধান রোওয়ার জন্য যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছে, (iii) ধান কাটার জন্য যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছে যন্ত্রটির নাম ‘হারভেস্টার’। ইদানীং ট্রাক্টরও ব্যবহৃত হচ্ছে।
৪৩. ডিভিসি করার ফলে কী সুবিধা ও সমস্যার সৃষ্টি হলো?
উত্তর : ডিভিসি করার ফলে সুবিধা : চাষের জন্য জল সরবরাহ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। সমস্যা : যতগুলি জলাধার করার কথা ছিল ততগুলি জলাধার করা সম্ভব হয়নি। তাই বর্ষার জল আটকে রাখা যায় না। এর ফলে বর্ষাকালেই প্রচুর জল ছাড়তে হয়। ফলে বন্যার সৃষ্টি হয়। পরে চাষের জন্য যথেষ্ট জল পাওয়া যায় না।
৪৪. পঞ্চায়েত কীভাবে লুপ্তপ্রায় মাছ বাঁচাতে পারে?
উত্তর : পঞ্চায়েতের প্রচেষ্টায় লুপ্তপ্রায় মাছ বাঁচতে পারে—পঞ্চায়েতে নিজের প্রচেষ্টায় ওইসব মাছের চাষবৃদ্ধি করে এবং আইন করে লুপ্তপ্রায় মাছের শিকার বন্ধ করে।
৪৫. তোমার এলাকায় জঙ্গল কেটে বসতি স্থাপন করা হলে ভবিষ্যতে কী কী সমস্যা হতে পারে?
উত্তর : জঙ্গল কেটে বসতি স্থাপন করা হলে ভবিষ্যতের সমস্যা—(i) অক্সিজেনের অভাব ঘটবে (ii) অনাবৃষ্টিতে খাদ্যের টান পড়বে, (iii) বন্য পশু-পাখিদের বাসস্থান নষ্ট হবে এবং এর ফলে বন্য পশুদের খাদ্যের সমাধানে লোকালয়ে ঢুকে মানুষ ও গবাদি পশুর ক্ষতি করবে।
৪৬. কয়লা ও পেট্রোলিয়াম কীভাবে তৈরি হয়?
উত্তর : বহু বছর ধরে মাটির নীচে গাছপালা ইত্যাদি মাটির চাপে ও তাপে কয়লা তৈরি হয়। আর সমুদ্রের প্রাণীর দেহাবশেষ চাপে, তাপে ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় পেট্রোলিয়াম বা খনিজ তেল তৈরি হয়।
৪৭. কয়লাখনিতে ধসের ভয় কীভাবে কমানো যেতে পারে?
উত্তর : কয়লাখনিতে ধসের ভয় কমাতে গেলে কয়লা তুলে নিয়ে বালি দিয়ে খনির ওই ফাঁকা জায়গা ভরাট করতে হবে এবং খনি অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগাতে হবে।
৪৮. জলের স্রোত থেকে কীভাবে বিদ্যুৎ তৈরি হয়?
উত্তর: পাহাড়ি নদীর জলে তীব্র স্রোত তৈরি হয়। তার মুখে পাখা টারবাইন লাগিয়ে ঘোরাতে পারলে সেখান থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় এবং সেই বিদ্যুৎ বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো যায়।
৪৯. সূর্যের শক্তিকে আমরা প্রাত্যহিক জীবনে কীভাবে কাজে লাগাই?
উত্তর : সূর্যের তাপের সাহায্যে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে যে কাজগুলি করে থাকি তা হল—এই তাপের সাহায্যে জলের প্রবাহ তৈরি হয় এবং তা থেকে কৃষিকাজ, পানীয় হিসেবে ব্যবহার, জামাকাপড় পরিষ্কার করা হয়। এমনকি সূর্যের তাপে ভিজে জামাকাপড় শুকোয় এবং গৃহে নানা জিনিস শুকনো করা হয়। বর্তমানে এই তাপশক্তির সাহায্যে সোলার পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে।
৫০. অপ্রচলিত শক্তি কোন্গুলো এবং কেন?
উত্তর : অপ্রচলিত শক্তিগুলি হল— সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জৈবশক্তি, ভূ-তাপ শক্তি, জোয়ার-ভাটার শক্তি এবং সামুদ্রিক ঢেউ-এর শক্তি। এই শক্তিগুলি প্রচলিত করার জন্য প্রাথমিক অবস্থায় খরচ বেশি। তবে এই শক্তিগুলি কখনোই ফুরাবে না।

৫১. ট্রেন চালানোর সময় ঢাকা ঘোরানো কীভাবে শুরু হয়েছিল?
উত্তর : ট্রেন চালানো শুরু হয়েছিল স্টিম ইঞ্জিন-এর সাহায্যে। কয়লা দিয়ে জল ফুটিয়ে বাষ্প তৈরি করা হত। সেই বাষ্পের চাপে একটা মোটা পিস্টন বেরিয়ে আসত। তার ধাক্কায় চাকা ঘুরত।
৫২. ট্রেনে চড়ে যাতায়াতের ফলে কী কী সুবিধা পাওয়া গিয়েছিল?
উত্তর : ট্রেনে চড়ে যে সুবিধাগুলি পাওয়া যায়—ট্রেনে একসঙ্গে অনেক লোক যাতায়াত করতে পারে, ঝাঁকুনি থাকে না, পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে না, পণ্যদ্রব্য সহজে নিয়ে যাওয়ার সুবিধা আছে। আবার মেলট্রেনে রাতে শোওয়ার জায়গা থাকে।
৫৩. অল্প বয়সে স্বাস্থ্য ভেঙে গেলে কী কী সমস্যা হতে পারে?
উত্তর : অল্প বয়সে স্বাস্থ্য ভেঙে গেলে শরীরের কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়। বিভিন্ন রোগব্যাধির জীবাণুর আক্রমণে মাঝে মাঝেই অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। কারণ আমরা জানি যে, স্বাস্থ্যই সম্পদ। ভারী কাজ করতে কষ্ট হয়। । সুস্থ, · সামাজিক ও পারিবারিক জীবন গড়ে ওঠে না।
৫৪. তোমার অঞ্চলে বৈষম্যের কোন কোন ঘটনা তুমি দেখেছ তা উল্লেখ করো।
উত্তর : আমার অঞ্চলে যে বৈষম্যগুলি লক্ষ করেছি তা হল— ছেলে এবং মেয়েদের মধ্যে পারিবারিক বৈষম্য, হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বৈষম্য এবং ধনী-গরিবের মধ্যে বৈষম্য ইত্যাদি।
৫৫. ভূমিকম্পের ফলে কী কী সমস্যা হতে পারে?
উত্তর : ভূমিকম্পের ফলে সমস্যাগুলি হল—(i) ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ার ফলে বসবাসের অসুবিধা, (ii) রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে যাতায়াতের অসুবিধা, (iii) ফসল হানি হওয়ার ফলে খাদ্যদ্রব্যের অভাব ঘটে। এর ফলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং সুচিকিৎসার অভাব দেখা যায়।
৫৬. সূর্যগ্রহণের সময় কতরকম ঘটনা ঘটে?
উত্তর : সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদ একই সরলরেখায় থাকলে সূর্যগ্রহণ হয়। আবার, চাঁদ যখন পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝে থাকে তখন চাঁদের ছায়া পৃথিবীর যে অংশে পড়ে সেই অংশকে সূর্যগ্রহণ বলে। মনে হয় যেন সূর্যকে কেউ খেয়ে ফেলেছে। এই সময় পৃথিবীর যে অংশে ছায়া পড়ে সেই অংশটিতে প্রায় অন্ধকার হয়ে থাকে।
৫৭. জোয়ারের কারণ কী কী?
উত্তর : জোয়ারের কারণ হল—পৃথিবীর জলরাশি চাঁদ এবং সূর্যের আকর্ষণে নির্দিষ্ট সময় অন্তর কোনো এক স্থানে ফুলে ফেঁপে ওঠে। তখন সমুদ্রের জল স্ফীত হয়ে নদী-নালার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়।
৫৮. সূর্যের আলো ঠিকমতো না পেলে গাছের কী কী সমস্যা হয়?
উত্তর : সূর্যের আলো ঠিকমতো না পেলে গাছের যে ক্ষতি হয় তা হল—গাছ তার খাদ্য তৈরি করতে পারে না। ফলে মানুষ সহ অন্যান্য প্রাণীদের বেঁচে থাকা খুবই দুরূহ হয়ে পড়ে। কৃষিতে ভীষণ ক্ষতি হয়।
৫৯. ‘ছেলে ও মেয়েরা নানাকাজ সমানভাবে করে ও করতে পারে’—উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : ‘ছেলে ও মেয়েরা নানাকাজ সমানভাবে করে ও করতে পারে’, উদাহরণ হল—পড়াশোনা করা, রান্নাবান্না, কাপড় কাচা, বাজার করা, চাকরি করা, গাড়ি, ট্রেন ও প্লেন চালনা ছেলেমেয়েরা পর্যন্ত করতে পারে। এখনতো মেয়েরা মহাকাশেও যাচ্ছে।
৬০. বাল্যবিবাহের কোনো ঘটনা তুমি জানতে পারলে কী করবে?
উত্তর : বাল্যবিবাহের কোনো ঘটনা জানতে পারলে আমার উচিত হবে সেই বিবাহে বাধা দেওয়া। শুধু তাই নয়, যাতে লেখাপড়া শিখে বড়ো হতে পারে তার সুব্যবস্থা করা। এজন্য আমি প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করব।
৬১. তোমার জানা বা দেখা দুটি ঘটনা উল্লেখ করো যেখানে তোমার বয়সি শিশুদের শ্রম অন্যায়ভাবে ব্যবহার করা হয়।
উত্তর : শিশুদের শ্রম অন্যায়ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে এরূপ ঘটনা অনেক আছে। পিতা-মাতার আর্থিক অনটনের জন্য শিশুদের চায়ের দোকানে, হোটেলে, কলকারখানায় পাঠানো হচ্ছে। আমার সমবয়সি দুই বন্ধু রমেশ এবং সুমন্ত। রমেশ দিনমজুর এবং সুমন্ত একটি চায়ের দোকানে কাজ করে।

৭. নীচের বিষয়গুলো সম্পর্কে পাঁচ-ছয়টি বাক্য লেখো বা বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করো :
(প্রশ্নের মান-৩)
১. মানুষের চামড়ার গঠন।
উত্তর : চামড়া হল আমাদের শরীরের বর্ম যা শরীরকে আঘাত থেকে রক্ষা করে। চামড়া আবার মোটা বা পুরু হয়। যেমন গন্ডারের চামড়া খুব পুরু, এমনকি চামড়ার ব্যাগের থেকেও। আবার, চামড়ার নীচে থাকে মাংসপেশি, নার্ভ, শিরা-ধমনি। চামড়া অতিবেগুনি রশ্মি থেকে আমাদের বাঁচায়।

২. মানবদেহের বিভিন্ন হাড়।
উত্তর : শরীরের ত্বকের নীচে থাকে মাংসপেশি, শিরা। আর মাংসপেশির নীচেই থাকে হাড়। হাড় শরীরের কাঠামো। সব হাড়ের আকার ও দৈর্ঘ্য সমান নয়। কোনোটা সরু, কোনোটা লম্বা। শরীরের বিভিন্ন অংশে হাড়গুলি অস্থিসন্ধিতে লিগামেন্ট দিয়ে জোড়া লাগানো থাকে। তাই শরীরের বিভিন্ন অংশ ভাঁজ করতে পারা যায়। হাড়ের বিভিন্ন রকম গঠনের জন্যই আমরা কাজ করতে পারি। মানব শরীরে হাড়ের সংখ্যা ২০৬টি।

৩. জীবাণু ও ফুসফুসের অসুখ।
উত্তর : শরীরে কোনো জীবাণু থাকলে, তা হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। আবার, অনেক জীবাণু বাতাসের সাহায্যে শরীরে প্রবেশ করে। যেমন—যক্ষ্মা, ফ্লু, ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি। এদের মধ্যে যক্ষ্মার জীবাণু ফুসফুসের ক্ষতি করে। গোরুর শরীর থেকে এই রোগ হয়। এই জীবাণুটি প্রায় ১৩০ বছর আগে আবিষ্কার হয়েছিল।

৪. ভূমিক্ষয়।
উত্তর : গাছ কাটার ফলে ঘাসের চাপড়া নষ্ট হয়ে গেলে এবং প্লাস্টিক বা পলিথিন বা ওষুধের মোড়ক মাটিতে জমে গেলে নীচের মাটির সঙ্গে যোগাযোগ থাকে না, ফলে ভূমিক্ষয় হয়। ভূমিক্ষয় হলে পাহাড়ি অঞ্চলে ধস নামে। সমতলের পুকুর বা দিঘির পাড় ধসে যায়। মাটি ধরে রাখতে পারে এমন গাছ নিয়মিত লাগাতে হবে। প্লাস্টিক, পলিথিন ইত্যাদি যেখানে সেখানে ফেলা যাবে না।

৫. নানা ধরনের জলাশয়।
উত্তর : ভূপৃষ্ঠের মধ্যে যেখানে জল জমে, তাকে জলাশয় বলে। যেমন—খাল, বিল, ঝিল, পুকুর, ডোবা ইত্যাদি নীচু জায়গা। কিছু জলাশয় হল— নয়ানজুলি, বাঁওড় ইত্যাদি। জলাশয়ে থাকে নানা ধরনের মাছ ও জলজ প্রাণী, যেমন : বক, পানকৌড়ি, মাছরাঙা, চিল ইত্যাদি। এই সমস্ত জলাশয় থেকে অনেক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। এই জল চাষের কাজে ব্যবহার করা হয়।

৬. বৃষ্টির জল ধরে রাখার নানা প্রচলিত পদ্ধতি।
উত্তর : বৃষ্টির জল ধরে রাখার প্রচলিত পদ্ধতি হল—টিনের চালের থেকে যে বৃষ্টির জল পড়ে বা ছাদের পাইপের মধ্য দিয়ে যে বৃষ্টির জল পড়ে, তা পাত্রে ধরে রাখা হয়। এই জল দিয়ে অনেক কাজ করা যায়। কাপড় কাচা, বাসন মাজা, স্নান করা এমনকি এই জল ছেঁকে নিয়ে রান্নার কাজ এবং পানীয় হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

৭. জলাভূমির গুরুত্ব ও সংরক্ষণ।
উত্তর : জলাভূমির গুরুত্ব : জলাভূমির থেকে মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। অনেকে মাছ চাষ করে। জলাভূমিতে ঘাস, লতাপাতা জন্মায়। এগুলি হাটে বিক্রি করে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করেন। সেখানে নানারকম পাখি ও জীবজন্তু দেখা যায়। এই জল চাষের কাজে লাগে। সংরক্ষণ : জলাভূমি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নিয়মিত করা উচিত। ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ করে সংরক্ষণ করা যায়।

৮. বিভিন্ন প্রাণীর আকর্ষণীয় আচার-আচরণ।
উত্তর : বিভিন্ন প্রাণীর আকর্ষণীয় আচার-আচরণ—(i) পিঁপড়ে—বৃষ্টির সম্ভাবনা বুঝতে পেরেই একটু উঁচু জায়গায় ডিম রাখে। (ii) কাক খাবার পরে খাবে বলে কোথাও ওই খাবারগুলি লুকিয়ে রাখে। (iii) টিকটিকির লেজ ছিঁড়ে গেলে বা খসে পড়লে কয়েকদিন পরে আবার নতুন লেজ জন্মায়। (iv) কোনো কোনো মাছ জল থেকে তুললেই মরে যায়। যেমন—ইলিশ। আবার, কোনো কোনো মাছ জল থেকে তোলার পরে অনেকক্ষণ বেঁচে থাকে। যেমন—শিঙি, মাগুর, কই, শাল, শোল, ল্যাটা মাছ ইত্যাদি।

৯. পরিবেশের নানা পরিবর্তন ও জীবের সংখ্যাহ্রাস।
উত্তর :  পরিবেশের নানা পরিবর্তন এবং জীবের সংখ্যাহ্রাস কীভাবে ঘটে তা নীচে উল্লেখ করা হল—(i) জনসংখ্যা বৃদ্ধি : নতুন বসতি গড়ে ওঠার ফলে চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমেছে। স্থানীয় ছোটো ছোটো প্রাণীদের ও ঔষধি গাছের দেখা পাওয়া মুশকিল। (ii) প্রাণীর সংখ্যা হ্রাস : অন্যান্য প্রাণী বিশেষ করে মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ার ফলে মানুষের খাদ্যের অসুবিধা দেখা দিয়েছে। (ii) উদ্ভিদ, জলাশয়, কৃষিজমি হ্রাস : মানুষ ও অন্যান্য জীবের বাসস্থান ও খাদ্যের সমস্যা বেড়েছে। (iv) কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার বৃদ্ধি : এর ফলে ফসল বৃদ্ধি পেলেও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ফসলের বা অন্যান্য ক্ষতিকর প্রাণীর সঙ্গে উপকারী প্রাণীও মারা যাচ্ছে এবং পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এরূপ পরিস্থিতিতে খাদ্যশৃঙ্খল বাধা পাচ্ছে এবং অনেক প্রাণীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে।

১০. পশ্চিমবঙ্গের ভূমিরূপের বৈচিত্র্য।
উত্তর : পশ্চিমবঙ্গে ভূমিরূপ সব জায়গায় সমান নয়। কোথাও সমতল, কোথাও উঁচু-নীচু। অর্থাৎ, ঢেউ খেলানো। কোথাও মাটি দোআঁশ, কোথাও এঁটেল, কোথাও বালি মাটি। সাধারণত পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চল অর্থাৎ পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম ও বর্ধমান জেলার বিভিন্ন অংশের বেশ কিছু জায়গার মাটি অনুর্বর এবং লাল-মাটি ৷ মাটিতে লোহার অক্সাইড মেশানো। আবার, বীরভূম, বাঁকুড়ার কিছু অংশ, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কিছু অংশ, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কিছু অংশ, মুরশিদাবাদ, হুগলি ও হাওড়া জেলার কিছু অংশ নিয়ে রাঢ় অঞ্চল গঠিত। এখানকার মাটি উর্বর এবং ফসল ভালো হয়। গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চল পলিসমৃদ্ধ এবং সুন্দরবনে লবণাক্ত মাটির আধিক্য।

১১. বঙ্গভঙ্গ।
উত্তর : একসময় পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ববঙ্গ নিয়ে আমাদের রাজ্যের নাম ছিল বঙ্গদেশ। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে এই বঙ্গদেশকে ভাগ করার জন্য তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড কার্জন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বাংলার অনেক বিপ্লবী এই বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে অনেক সংগ্রাম করেছিলেন। রবিঠাকুর এর প্রতিবাদে লিখেছিলেন ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি' গানটি। এর ফলে বাধ্য হয়ে লর্ড কার্জন এই আদেশ তুলে নেন।

১২. নদীমাতৃক সভ্যতা।
উত্তর : গঙ্গার পূর্ব সীমা ও ইছামতীর পশ্চিমে সীমার মধ্যে আছে নদিয়া, উত্তর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বিস্তীর্ণ উর্বর ভূমি। এখানে আগে ছিল বিদ্যাধরী, সুতি, যমুনা, সরস্বতী নদী। বিদ্যাধরী ছাড়া অন্যগুলি এখন নেই। দেগঙ্গার কাছে বেড়াচাপাতে চন্দ্রকেতু গড় আবিষ্কৃত হয়েছে। সেখানে অনেক প্রাচীন কীর্তি পাওয়া গেছে, এমন পাতলা ইট পাওয়া গেছে যেগুলি এখনকার ইটের চেয়ে অনেক ছোটো। এ থেকেই বোঝা যায় নদীর ধারেই সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। তাই একে নদীমাতৃক সভ্যতা বলা হয়।

১৩. সুন্দরবনের মানুষদের জীবিকা।
উত্তর : সুন্দরবনের মানুষদের প্রধান জীবিকা চাষ ও মধু সংগ্রহ। এ ছাড়া নৌকা তৈরি করা ও চালানোতে তারা দক্ষ। মাছ ও মীন ধরা, কাঁকড়া শিকার এখানকার মানুষের অন্যতম জীবিকা। মীন বড়ো করাই হল ভেড়িতে বাগদা চিংড়ির চাষ। মেয়েরাই নদীতে নেমে বেশির ভাগ মীন সংগ্রহ করে।

১৪. দক্ষিণবঙ্গের নদী।
উত্তর : দক্ষিণবঙ্গের নদীগুলি হল—হুগলি, মাতলা, বিদ্যাধরী, কালিন্দী, রায়মঙ্গল, অজয়, দামোদর, রূপনারায়ণ, মুণ্ডেশ্বরী, দ্বারকেশ্বর ইত্যাদি। এই নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে অনেকাংশে ছোটো-বড়ো শহর গড়ে উঠেছে। তা ছাড়া বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল হল এই শহরগুলি। নদীর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ছোটো-বড়ো শহর ছাড়া কৃষিক্ষেত্রের অনেক উন্নতি হয়েছে।

১৫. উত্তরবঙ্গের বনভূমি।
উত্তর : বনভূমিগুলি হল— জলদাপাড়া অভয় অরণ্য আলিপুরদুয়ার জেলার তোর্সা নদীর তীরে এবং ফালাকাটা ও মাদারিহাটের মাঝখানে অবস্থিত : হাতি, একশৃঙ্গ গণ্ডার, চিতাবাঘ, বাইসন এবং নানা ধরনের পাখি দেখা যায়। গোরুমারা জাতীয় উদ্যান ও চাপড়ামারি অভয় অরণ্য : জলপাইগুড়ি জেলার চালসার দক্ষিণে জলঢাকা নদীর পশ্চিমে গোরুমারা জাতীয় উদ্যান এবং চালসার উত্তরে জলঢাকা নদীর পশ্চিমে চাপড়ামারি অভয় অরণ্য অবস্থিত। এখানে হরিণ, চিতাবাঘ, বাইসন, শম্বর, বাঘ, বুনো দাঁতাল হাতি ও একশৃঙ্গ গন্ডার, নানারকম পাখি ও গাছপালা দেখা যায়।

১৬. মুরশিদাবাদ শহরের অতীত কথা।
উত্তর : মুরশিদাবাদ শহর —(i) বহরমপুর : ভাগীরথীর তীরে অবস্থিত। ঐতিহাসিক শহর। রেশম শিল্প, পিতলের বাসন তৈরির জন্য বিখ্যাত। (ii) কান্দি : ছোটো শহর, পুরোনো রাজবাড়ি, সিল্কের কাপড়ের জন্য বিখ্যাত। (iii) লালবাগ : ঐতিহাসিক শহর, এখানে অনেক দ্রষ্টব্য স্থান আছে।

১৭. হাওড়া শহরের শিল্পের কথা।
উত্তর : হাওড়া শহরের শিল্পের কথা—গঙ্গার পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত বড়ো রেলস্টেশন। বার্নস্ট্যান্ডার্ড কোম্পানি, শালিমার পেইন্টস, লোহার কারখানা আছে।

১৮. তমলুক ও অতীতদিনের ব্যাবসা-বাণিজ্য
উত্তর :  তমলুক : রাঢ় অঞ্চল, আদি তাম্রলিপ্ত শহর। রূপনারায়ণ নদের তীরে অবস্থিত। পানের ব্যাবসা, বাসের কাঠামো তৈরি হয়। ধান, কলা, ফুল ও ইলিশ বাণিজ্য কেন্দ্র। এখানেই প্রথম জাতীয় সরকার গঠিত হয়।

১৯. শৈলশহর দার্জিলিং ও টয়ট্রেন।
উত্তর : শৈলশহর দার্জিলিং-এ ম্যাল, চিড়িয়াখানা, টয়ট্রেন, রোপওয়ে, চা-বাগান, ঘুম, টাইগার হিল-এর জন্য বিখ্যাত। বরফে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বত দেখা যায়। টয়ট্রেন নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত চালু আছে। চা ও কমলালেবু বিখ্যাত।

২০. খড়গপুরের রেলস্টেশন।
উত্তর : পশ্চিম মেদিনীপুরের মাঝখানে অবস্থিত। রাঢ় অঞ্চল, আই.আই.টি, দীর্ঘতম রেলওয়ে স্টেশনের জন্য বিখ্যাত।

২১. পশ্চিমবঙ্গের প্রাকৃতিক সম্পদ।
উত্তর : প্রধান প্রাকৃতিক সম্পদ হল—ধান, ফল, ফুল, চা, আম, কয়লা, চুনাপাথর, তামা ও অভ্র, চিনামাটি, ডলোমাইট, আকরিক লোহা, তাপসহন মাটি, কোয়ার্টজ, সীসা, ব্যাসল্ট, গ্রানাইট, ডলোরাইট, গ্রাফাইট, কাঠ, পাথর ইত্যাদি।

২২. তোমার জানা অলিখিত জ্ঞানের কথা।
উত্তর : গাছপালায় আছে ওষুধ। তা আমরা অনেকেই জানি না। কেটে গেলে বা ব্যথা পেলে পাতার রস লাগালে কাটা শুকিয়ে যায়। ব্যথা কমে যায়। বংশ পরম্পরায় অনেকে সেইসব গাছের গুণের কথা জানেন। এসব অলিখিত জ্ঞান সাধারণত পারিবারিক সম্পদ। বাবা-মায়ের কাছ থেকে ছেলেমেয়েরা শেখে। উদাহরণ—খুব সুন্দর ও সুস্বাদ যুক্ত বড়ি দেওয়া, বেতের ঝুড়ি বোনা ইত্যাদি।

২৩. স্মরণীয় সমাজ সংস্কারক।
উত্তর : স্মরণীয় সমাজ সংস্কারক হিসেবে যাঁদের নাম সহজে মনে পড়ে, তাঁরা হলেন—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, রাখি পূর্ণিমার প্রচলন ইত্যাদি), রাজা রামমোহন রায় (সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ), ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (বিধবাবিবাহ প্রচলন), স্বামী বিবেকানন্দ (হিন্দুধর্মের মাহাত্ম্য কীর্তন প্রচার), ভগিনি নিবেদিতা (নারী শিক্ষায় অনুপ্রাণিত করে বিখ্যাত হয়েছিলেন), বেগম রোকেয়া (মুসলিম মেয়েদের শিক্ষায় অনুপ্রাণিত করেছিলেন), কাজী নজরুল ইসলাম, ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রভৃতি আরও অনেকে বিভিন্ন দিক থেকে সমাজ সংস্কারক হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন।

২৪. সাধারণতন্ত্র দিবস।
উত্তর : সাধারণতন্ত্র দিবস মানে হল সাধারণ মানুষই দেশ চালাবে। ‘রাজার ছেলে রাজা হবে’ এমনটি চলবে না। আজ যে সাধারণ মানুষ, সেই পরে ভোটে জিতে সরকারের প্রধান হতে পারে। স্বাধীন দেশটা কেমন করে আমরা চালাব তার এমন নিয়ম চালু হয়েছিল ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি। এই তারিখটিই ভারতবর্ষের সাধারণতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

২৫. স্বাধীনতা দিবস।
উত্তর : ইংরেজের অপশাসন থেকে ভারতবর্ষের মানুষ মুক্তি চেয়েছিল দীর্ঘ সংগ্রাম করে। মানুষ স্বাধীনতা চায়। তাই বিভিন্ন বিপ্লবী, যথা—মাস্টারদা সূর্য সেন, বিনয়-বাদল-দীনেশ, ক্ষুদিরাম, সিদু-কানু, বিরসা মুণ্ডা, ভগৎ সিং, যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, মহাত্মা গান্ধি প্রভৃতি আরও অনেকে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। শেষে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীনতা লাভ করে এবং প্রতিবছর ওই তারিখে স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়।

২৬. পরিবেশ দিবস।
উত্তর : পরিবেশ ভালো না থাকলে আমরা সুস্থ থাকতে পারব না। ফলে অরণ্য ধ্বংস বন্ধ করে সংরক্ষণ-এর ব্যবস্থা করা দরকার। পরিবেশে বসবাসকারী মানুষকে বিশেষ করে প্রতিটি বিদ্যালয় শিক্ষক/শিক্ষিকা দের  এবং ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতার শিক্ষা নেওয়া উচিত এবং ৫ জুন দিবসটি প্রতিবছর সকলের পালন করা উচিত।

২৭. চাষের নানা যন্ত্রপাতি।
উত্তর : চাষের যন্ত্রপাতি নিম্নরূপ—(i) মাটি আলগা করা—পাওয়ার টিলার, (ii) মাটি সমান করা—ট্রাক্টরের সঙ্গে মই জুড়ে দিয়ে, (iii) বীজ বা চারা বোনা—যন্ত্রচালিত মেশিন দিয়ে, (iv) ঘাস ও আগাছা তোলা—নিরাণ যন্ত্র বা আগাছা পরিষ্কার করার যন্ত্র দিয়ে। (v) ফসল তোলা—হারভেস্টার বা ফসল কাটা যন্ত্র দিয়ে। (vi) ফসল খাবার মতো করা—হারভেস্টার দিয়ে পেষাই করে।

২৮. পশ্চিমবঙ্গের আঞ্চলিক ফসল।
উত্তর : (i) তরাই আর মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের কৃষি ফসল হল চা, আনারস, তুঁত, আখ ইত্যাদি। (ii) গাঙ্গেয় বদ্বীপ আর রাঢ় অঞ্চলের কৃষি ফসল হল ধান, পাট, ঝিঙে, বেগুন, পেঁপে, পটল, ঢেড়স, লাউ, কুমড়ো, চিচিঙ্গা, কলমি শাক, নটে শাক ইত্যাদি। (ii) গাঙ্গেয় সমভূমির কৃষিফসল হল ধান, আলু, গম, সরযে, গাঁদা ফুল, পাট, শশা, তরমুজ, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধা কপি, কুমড়ো ইত্যাদি। (iv) পশ্চিমের মালভূমির লালমাটির কৃষি ফসল হল ধান, মটর, অড়হর, বরবটি, ডিম ইত্যাদি। (v) দক্ষিণের নোনা জমির কৃষি ফসল হল ধান, পান, ডাল, সূর্যমুখী, বিভিন্ন শাকসবজি ইত্যাদি। এখানে মাছ চাষ বেশি হয়।

২৯. লুপ্তপ্রায় মাছ।
উত্তর : কোনো কোনো মাছের কিছু প্রজাতি সংখ্যায় খুব কমে গেছে। সেসব মাছ হয়তো ভবিষ্যতে আর দেখাই যাবে না। স্বাদও জানা যাবে না। এগুলি লুপ্তপ্রায় মাছ। এগুলি হল—উকো, শাল, দেশি মাগুর, কই, পাঁকাল, ন্যাদোশ, ফলুই, খয়রা, খলসে, বেলে, সরপুঁটি ইত্যাদি।

৩০. বনের ব্যবহার।
উত্তর : বাগানে যেসব গাছ থাকে সেগুলি বনেও থাকে। আছে জলাভূমি। বনে গেলে শোনা যায় নানারকম পোকা, পশুপাখিদের ডাক। এসব নিয়েও বন। বনের এসব উদ্ভিদ ও প্রাণীদের ওপর চলছে মানুষের নির্মম অত্যাচার। ফলে বন থেকে অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণী বিলুপ্তের পথে। তাই বনকে রক্ষা করতে না পারলে অদুর ভবিষ্যতে মানুষের চরম ক্ষতির শিকার হতে হবে।

৩১. বন সমীক্ষা।
উত্তর : রাজ্যে বনের সংখ্যা কমে গেছে। বড়ো বনে গাছের সংখ্যা কমে গেছে। বন থেকে কাঠ, মধু, মোম পাওয়া যায়। আর গাছের ছাল থেকে নানারকম মশলা, ওষুধ পাওয়া যায়। আঁশ থেকে দড়ি হয় এবং কাগজ তৈরি হয়। বনে বিভিন্নরকম গাছ দেখা যায়। যেমন—বট, নারকেল, তাল, শাল ইত্যাদি। গভীর বনে নানারকমের পশু, পাখি দেখা যায়। যেমন—বাঘ, হরিণ ইত্যাদি।

৩২. তোমার জানা লুপ্তপ্রায় প্রাণী।
উত্তর : মানুষ গাছ কাটা শিখেছে চাষ করার জন্য। ফলে বন কমতে লাগল। তৈরি হল শহর, নগর, আর দূষণও বাড়তে লাগল। শুরু হল খাদ্যের অভাব। খাদ্যের অভাবে বন্যপ্রাণী লোকালয়ে আসতে শুরু করল, ফসল নষ্ট করল। ফলে মানুষের খাদ্যের টান পড়ল এবং মানুষ ওই সমস্ত প্রাণীদের মারতে শুরু করল। ক্রমাগত দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা এরূপ ঘটনার ফলে অনেক প্রাণী বিলুপ্ত প্রায় হয়ে গেছে। যেমন— বাঘ, সিংহ, হরিণ ইত্যাদি। কৃষিকাজে ব্যবহার্য রাসায়নিক সার এবং কীটনাশকের ব্যবহারের ফলে অপকারী প্রাণীদের মারতে গিয়ে অনেক উপকারী প্রাণীও (শকুন) মারা যাচ্ছে, ফলে খাদ্যশৃঙ্খল ব্যাহত হচ্ছে।

৩৩. বাঘের সংখ্যাহ্রাস ও সংরক্ষণ।
উত্তর : সব বনে বাঘ আছে কিনা তা জানতে হবে। হয়তো আগে ছিল, এখন নেই। বাঘ তো অনেক রকম—ডোরাকাটা বাঘ, নেকড়ে বাঘ, চিতাবাঘ ইত্যাদি। শিকারিরা বাঘ মেরে বীরপুরুষ ভাবত নিজেকে। বর্তমানে বাঘ সংরক্ষণের জন্য বাঘ মারা আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং কয়েকটি জায়গায় ব্যাঘ্রপ্রকল্প তৈরি হয়েছে। যেমন : সুন্দরবন ও বক্সাদুয়ার।

৩৪. কয়লা সৃষ্টির আদি কথা।
উত্তর : কোটি কোটি বছর আগে দামোদর, মহানদী, গোদাবরী ওয়ার্ধা নদীর উপত্যকা গভীর অরণ্যে ঢাকা ছিল। ধীরে ধীরে জলাভূমির সেই বড়ো বড়ো গাছগুলি বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির ক্ষয়ে মাটির নীচে চাপা পড়েছে। সেগুলি মাটির নীচে তাপ ও চাপের ফলে ক্রমশ কয়লায় পরিণত হয়।

৩৫. পশ্চিমবঙ্গের কয়লাখনি ও কয়লার উত্তোলন।
উত্তর : আসানসোল ও রানিগঞ্জের কয়লাখনি উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিমে ছড়িয়ে আছে। বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া পর্যন্ত চলে গেছে। প্রায় ১৫০০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে কয়লাখনি রয়েছে। কয়লা তোলা যন্ত্র দ্বারা সুড়ঙ্গ থেকে ওপরে কয়লা তোলা হয়। কয়লা উত্তোলনের সময় ধস নামার ভয় থাকে। তাই কয়লা উত্তোলনের সময় সুড়ঙ্গের ভিতরে ফাঁকা জায়গা বালি দিয়ে পূর্ণ করতে হয় এবং ওপরে প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগাতে হয়।

৩৬. প্রচলিত জ্বালানি ও তার ভবিষ্যৎ।
উত্তর : প্রচলিত শক্তিগুলি হল—জলবিদ্যুৎ, তাপবিদ্যুৎ, কয়লা, পেট্রোল, ডিজেল ইত্যাদি। জল থেকে জলবিদ্যুৎ পাওয়া যায়। জল অফুরান্ত  কিন্তু কয়লা, পেট্রোল, ডিজেল একদিন ফুরিয়ে যাবে। ভবিষ্যতে এগুলি আর পাওয়া যাবে না, ফলে জ্বালানির অভাব ঘটবে। তাই প্রচলিত জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে।

৩৭. বিকল্প শক্তি ও তার ব্যবহার।
উত্তর : সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জৈব গ্যাস এবং ভূ-তাপ শক্তিকে বিকল্প শক্তি হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রচেষ্টা চলছে। কিছু কিছু জায়গায় এই শক্তিকে কাজে লাগানো হচ্ছে। কিন্তু এতে খরচ বেশি। অপ্রচলিত শক্তিগুলির মধ্যে সৌরশক্তি সূর্যের আলো থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ থেকে সোলার কুলার, সৌরকোশ, সোলার হিটার এবং সোলার রেডিয়ো তৈরি করা হয়েছে।

৩৮. নানাধরনের জলযান।
উত্তর : নানাধরনের জলযান—জলপথে যানবাহনের জন্য আগে ভেলায় চেপে মানুষ চলাফেরা করত। এখন নৌকা, লঞ, ভুটভুটি ইত্যাদি চালু হয়েছে। লঞ ও স্টিমার, ভুটভুটিতে লাগানো থাকে ইঞ্জিন (জেনারেটার)।

৩৯. ট্রেন চলাচলের আদি কথা।
উত্তর : ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দের ১৬ এপ্রিল এ দেশে যাত্রী নিয়ে প্রথম ট্রেন চলে। ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে হাওড়া থেকে হুগলি পর্যন্ত ট্রেন চালু হয়। প্রথমে সবাই ট্রেনে চড়ত না। অনেকেই ভয় পেত। যদি ধাক্কা লাগে। তাছাড়া সব জায়গায় রেললাইন ছিল না। ট্রেনে চড়ার সময় কোনো বাছ-বিচার করা যেত না। একটা বগিতে সবাই একসঙ্গে চড়ত। আবার একটা ট্রেন বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে যেত। এভাবে নানান অঞ্চলের মানুষের মধ্যে মেলামেশা সহজ হয়ে এলো ট্রেনে চড়ার মধ্য দিয়ে।

৪০. নানাধরনের বৈষম্য।
উত্তর : মানুষকে নিয়েই সমাজ। সবাই সমান সুযোগ নিয়ে জন্মায় না, তাই বলে মানুষের মধ্যে কোনো বৈষম্য মনোভাব থাকা উচিত নয়। সবাই পাশাপাশি থাকবে। প্রত্যেকে নিজের মতো করে বাঁচবে। কালো-সাদা, ধনী-গরিব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত বাছবিচার করা উচিত হয়। কেউ কাউকে ছোটো ভাববে না। ঘৃণা করবে না। তবেই বৈষম্য দূর হবে।

৪১. আয়লা ও সুন্দরবনের সমস্যা।
উত্তর : আয়লার ফলে সুন্দরবন অঞ্চলে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড়ের চেহারায় আয়লার আবির্ভাব হয়েছিল। ২০ ফুট উঁচু ঢেউয়ের ফলে নদী-বাঁধ, ঘরবাড়ি ভেঙে যায়। কৃষিজমি ও বাস্তুজমি জলের স্রোতে ভেসে যায়। ৮ ফুট জলের তলায় চলে যায় সুন্দরবন। পানীয় ও গৃহস্থালির জল অমিল হয়েছিল। বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছিল এখানকার মানুষেরা।

৪২. ভূমিকম্প ও সাবধানতা।
উত্তর : ভূমিকম্প যে-কোনো জায়গায় হতে পারে। ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তবে পশ্চিমবঙ্গে তেমন ভূমিকম্প হয়নি। সাবধানতা : কাঠের বাড়ি করা উচিত, কম্পনের সময় যত শীঘ্র সম্ভব ফাঁকা জায়গায় চলে যেতে হবে অথবা টেবিলের নীচে চলে যেতে হবে, উঁচু বাড়িতে থাকলে চট করে নীচে রাস্তায় চলে আসতে হবে।

৪৩. শিশুশ্রমের নানা ক্ষতিকারক প্রভাব সমূহ।
উত্তর : শিশুদের শিক্ষার মাধ্যমে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির বিশেষ প্রয়োজন। কিন্তু পারিবারিক আর্থিক সমস্যা থাকার কারণে অনেক শিশুকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। প্রতিটি পরিবারের পিতা-মাতার কর্তব্য শিশু বয়সে তাদের সন্তানদের কঠোর পরিশ্রমের কাজে নিযুক্ত না করা। এর ফলে শিশুটির শারীরিক বৃদ্ধি যেমন ঘটে না, তেমনি পরবর্তীকালে শিশুটি রোগব্যাধির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

৪৩. শিশুশ্রমের নানা ক্ষতিকারক প্রভাব সমূহ।
উত্তর : শিশুদের শিক্ষার মাধ্যমে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির বিশেষ প্রয়োজন। কিন্তু পারিবারিক আর্থিক সমস্যা থাকার কারণে অনেক শিশুকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। প্রতিটি পরিবারের পিতা-মাতার কর্তব্য শিশু বয়সে তাদের সন্তানদের কঠোর পরিশ্রমের কাজে নিযুক্ত না করা। এর ফলে শিশুটির শারীরিক বৃদ্ধি যেমন ঘটে না, তেমনি পরবর্তীকালে শিশুটি রোগব্যাধির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

৪৪. সমাজের নানা ধরনের লিঙ্গবৈষম্য।
উত্তর : অনেক পরিবার আছে যারা ছেলেদের থেকে মেয়েদের বেশি পরিশ্রম করায় এবং প্রাপ্তবয়স্কের পূর্বেই তাদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে। অনেক পরিবারের মেয়েদের ভোরে উঠে গৃহের কাজ করতে হয় অথচ ছেলেদের তা করতে দেয় না। ছেলেদেরকে আদুরে করে রাখে। কিন্তু তারা জানে না যে ছেলেরা সমাজের যে যে কাজ করতে পারে মেয়েরা তা সহজেই করতে পারে। সমাজের এরূপ লিঙ্গবৈষম্য বর্তমানে কমলেও এখনো অনেক ক্ষেত্রে তা রয়ে গেছে।

৪৫. বার্ধক্যের সমস্যা ও তোমার ভূমিকা।
উত্তর : বার্ধক্য বয়সে মানুষের অনেক সমস্যা দেখা দেয়। যেমন—শারীরিক দুর্বলতার কারণে কাজ না করতে পারা, এমনকি হাঁটা চলায়ও কষ্ট হয়। স্বাধীনভাবে চলা-ফেরা খুব বিপজ্জনক, খাওয়া-দাওয়ারও অনেক সমস্যা থাকে। তাই বয়স্কদের সম্মান দেওয়া সমাজের প্রতিটি মানুষের কর্তব্য, কারণ আজকে যে ব্যক্তি যুবক সেই একদিন বৃদ্ধ হবে এবং তারও ক্ষেত্রে এরূপ সমস্যা দেখা দেবে।

৪৬. লিঙ্গবৈষম্য ও বাল্যবিবাহ রোধে তোমার ভূমিকা।
উত্তর : বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক অপরাধ। কারণ বাল্যকালে ছেলে কিম্বা মেয়েদের শারীরিক বিকাশ ঠিকমতো হয় না। ভবিষ্যতে অনেক অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। তাই আমাদের প্রধান কর্তব্য হল বাল্যবিবাহ রোধ করা। চেতনার মাধ্যমে বাবা-মায়েদের সজাগ করতে হবে। এসব খবর পেলে বড়োদের সঙ্গে নিয়ে গিয়ে আমরাও প্রতিরোধ করতে পারি। মেয়েদের সাহস জোগাতে হবে।


No comments

Hi Welcome ....