Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Top Ad

Breaking News:

latest

পঞ্চম শ্রেণি বাংলা ফণীমনসা ও বনের পরি নাটকের হাতেকলমে প্রশ্ন উত্তর

Class 5 Bangla Patabahar Foni Monosa Prosno Uttor  ফণীমনসা ও বনের পরি প্রশ্ন উত্তর | বাংলা পাতাবাহার পঞ্চম শ্রেণি  

ফণীমনসা ও বনের পরি প্রশ্ন উত্তর

Class 5 Bangla Patabahar Foni Monosa Prosno Uttor 

ফণীমনসা ও বনের পরি প্রশ্ন উত্তর | বাংলা পাতাবাহার পঞ্চম শ্রেণি 


আরো পড়ুনঃ  ক্লাস - V

ফণীমনসা ও বনের পরি লেখক পরিচিতি :
রহস্য-রোমাঞ কাহিনির লেখক হিসেবে জনপ্রিয় নাট্যকার বীরু চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম হয় ১৯১৭ সালে। গত কয়েক দশক ধরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখকের বহু লেখা প্রকাশিত হয়েছে। শিশু-কিশোর পাঠকদের জন্য তিনি একজন জনপ্রিয় লেখক ও নাট্যকার। ১৯৮৪ সালে বাংলার এই স্বনামধন্য লেখকের জীবনাবসান ঘটে।

❏ ফণীমনসা ও বনের পরি বিষয়বস্তু :
গভীর বনে ছোট্ট ফণীমনসা গাছ বড়োই দুঃখী। নিজের বিচ্ছিরি আর ছুঁচোলো পাতার কথা ভেবে সে কেঁদে কেঁদে বেড়ায়। একদিন বনের পরিকে নিজের দুঃখের কাহিনি জানিয়ে সে নিজের বিতিকিচ্ছিরি পাতাগুলি পালটে সোনার পাতা দিতে অনুরোধ করল। বনের পরির দয়ায় ফণীমনসার কাঁটাভরা পাতা অজস্র ঝলমলে সোনার পাতায় পরিণত হল। হঠাৎ একদিন ডাকাতের দল সমস্ত সোনার পাতা তুলে নিয়ে চলে গেল। ফণীমনসা গাছ আবার দুঃখে ভেঙে পড়ল। বনের পরির কাছে এবার সে কাচের পাতা চাইল। ফণীমনসা গাছের সারা অঙ্গ কাচের ছোটো ছোটো পাতায় ভরে গেল। কাচের পাতা রোদের আভায় রামধনু রং ঝিকমিক করে, বাতাসের দোলা লেগে টুং টাং শব্দ হয়। কিন্তু হঠাৎ ঝড় এসে দুষ্টু ছেলের মতো সমস্ত কাচের ছোটো ছোটো পাতা ভেঙে চুরমার করে দিল। ঝড় থামার পর ফণীমনসার গাছে কান্না শোনা গেল। ফণীমনসার দুঃখ দেখে বনের পরি তাকে জিজ্ঞাসা করে জানল যে, এবার সে পালং শাকের মতো সুন্দর সবুজ কচি পাতা চায়। কাচের পাতার বদলে পরি সবুজ কচি পাতায় ফণীমনসা গাছ ভরিয়ে দিল। মৃদুমন্দ বাতাসে গাছের শোভা দেখার মতো। কিন্তু এই কচি পাতায় ভরা ফণীমনসা গাছের আনন্দ কোথা থেকে একটা ছাগল এসে খেয়ে শেষ করে দিল। গাছের সমস্ত কচি পাতা কচকচ করে ছাগলটা খেয়ে নিলে ফণীমনসা এবার বনের পরিকে স্মরণ করে বলল, অনেক শিক্ষা হয়েছে তার। নিজের অবস্থা আর নিজের চেহারা নিয়ে যে সন্তুষ্ট না থাকে তার কপালে দুঃখ থাকে। এরপর বনের পরির করুণায় কাঁটাভরা ছুঁচোলো পাতায় ফণীমনসা গাছটি নিজের প্রকৃত রূপে রূপবতী হয়ে উঠল।

হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর 
☟ :
১. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১.১ ফণীমনসা তুমি দেখেছ? কোথায় দেখেছ?
উত্তর : হ্যাঁ, দেখেছি। গ্রামাঞ্চলে পুরোনো মন্দিরের গায়ে দেখেছি।
১.২ আর কোন কোন গাছ তুমি দেখেছ যাদের কাঁটা আছে?
উত্তর : গোলাপ, বেগুন, লেবু, বেলগাছ দেখেছি, যাদের কাঁটা আছে।
১.৩ গাছের কাঁটা কীভাবে তাকে বাঁচায়?
উত্তর : গাছের কাঁটা কোনো কিছুর আক্রমণ থেকে গাছকে বাঁচায়।
১.৪ পরির গল্প তুমি কোথায় পড়েছ?
উত্তর : পরির গল্প আমি রূপকথার গল্পে পড়েছি।
১.৫ সোনার মতো দামি আর কোন ধাতুর কথা তুমি জানো?
উত্তর : প্লাটিনাম সোনার মতো দামি একটি ধাতু।

২. নীচের এলোমেলো বর্ণগুলি সাজিয়ে শব্দ তৈরি করো :
  • ল ত কা ডা দ—ডাকাতদল, 
  • ন ণী ফ সা ম—ফণীমনসা, 
  • রি বিচ্ছি তি কি—বিতিকিচ্ছিরি, 
  • কং পা শা ল—পালংশাক।
৩. এলোমেলো শব্দগুলিকে সাজিয়ে ঠিক বাক্যটি লেখো :
৩.১ বলো চাও কীরকম তুমি পাতা।
উত্তর : কীরকম পাতা চাও তুমি বলো।
৩.২ হয়েছে তো সুবুদ্ধি তোমার এই।
উত্তর : এই তো সুবুদ্ধি হয়েছে তোমার।
৩.৩ না আর পাতা চাই সোনার।
উত্তর : সোনার পাতা আর চাই না।

৪. নীচের শব্দগুলোর একই অর্থ বোঝায় এমন শব্দ নাটকে ছড়িয়ে আছে। নাটক থেকে খুঁজে নিয়ে যে শব্দটি, নীচের যে শব্দটির সঙ্গে মানায়— লেখো :
উত্তর : বিশ্রী—বিতিকিচ্ছিরি।
অনেক—অজস্র।
অবস্থা—হাল।
বল্লম—বর্শা।
ভাগ্য—বরাত।
গর্ব—দৰ্প।
হঠাৎ—সহসা।
ভীষণ—খুব।
প্রতিজ্ঞা—পণ।
সমস্ত—সব।
আবদার—বায়নাক্কা।
শরীর—অঙ্গ।
তবে তাই হোক—তথাস্তু।
কঙ্কালসার—হাড় জিরজিরে।


৫. নীচের বাক্যগুলির দাগ-দেওয়া প্রতিটি অংশই কোনো না কোনো আওয়াজ বোঝায়। এমন অনেক শব্দ নাটকে ছড়িয়ে আছে। খুঁজে বের করে লেখো (দুটি করে দেওয়া হল) :
  • ছাগল কচকচ করে পাতা খেল। 
  • পত পত পত ওড়াই পাতা।
  • মন রি রি করে। 
  • ঝড়ের শোঁ শোঁ শব্দ।
  • সরাৎ সরাৎ করাত।
  • মট মট মট ভাঙি মাথা।
৬. মুখে বললে, নীচের দাগ-দেওয়া শব্দগুলো কীভাবে বলবে, লেখো :
তোমায় স্মরি—মনে করি। করুণা করি বাঁচাও—করে।

৭. দাগ-দেওয়া অংশে সমার্থক শব্দ বসিয়ে নীচের বাক্যগুলি আবার লেখো। শব্দঝুড়ির সাহায্য নিতে পারো :
৭.১ আহা-হা ব্যথায় মরি।
উত্তর : আহা-হা যন্ত্রণায় মরি।
৭.২ শুরু হলো কচি গাছের অঝোর কান্না।
উত্তর : আরম্ভ হলো চারাগাছের অবিরাম কান্না।
৭.৩ ডাকাতেরা আমার কী হাল করে রেখে গেছে।
উত্তর : ডাকাতেরা আমার কী অবস্থা করে রেখে গেছে।
৭.৪ আকাশ দিয়ে ধেয়ে এল দুর্দান্ত ঝড়।
উত্তর : গগন দিয়ে ধেয়ে এলো প্রবল ঝড়।

৮. নীচের বাক্যগুলিতে দাগ-দেওয়া অংশগুলি আর কীভাবে লিখতে পারো? বাক্য যদি বদলে যায়, বদলেই লেখো শব্দঝুড়ি থেকে সাহায্য নিতে পারো :
৮.১ মন তার রি রি করে ওঠে।
উত্তর : মন তার হিংসায় জ্বলে ওঠে।
৮.২ ছোট্ট গাছটির এবার দেমাকে যেন মাটিতে পা পড়ে না
উত্তর : ছোট্ট গাছটির এবার গর্বে বুক ভরে ওঠে।
৮.৩ জিবে জল ঝরছে তোরে পেয়ে গো।
উত্তর : লোভ জাগছে তোরে পেয়ে গো।
৮.৪ ঘাট হয়েছে কানে ধরি।
উত্তর : মাফ করে দাও কানে ধরি।
৯. কাচ- ফাচ আর চাই না।—
এই বাক্যে পর পর দুটো শব্দ বসেছে, যেখানে দ্বিতীয় শব্দটির তেমন কোনো মানে নেই। আরো একটা শব্দ তোমার জন্য দেওয়া হলো, কাপড়-চোপড়। এরকম শব্দ তুমি আর কটা লিখতে পারো, লেখো :

উত্তর : ডগমগ, ঝিকিমিকি, লুটেপুটে, আশেপাশে, ঝলমল।

১০. ছাগল খেয়ে ফেলেছিল কচি কচি পালং পাতা।
দাগ দেওয়া অংশে একটা শব্দ পরপর দুবার ব্যবহৃত হয়েই একটার জায়গায় অনেকগুলো পাতা বোঝাচ্ছে। এইরকম আর কটা শব্দ পরপর দুবার ব্যবহার করে একের জায়গায় অনেক বোঝাতে পারবে? নাটকে এমন কটি শব্দ খুঁজে পাও, তাও দেখো :

উত্তর : সুন্দর সুন্দর পাতা। কেঁদে কেঁদে। ছি ছি। ছিঁড়ে ছিঁড়ে। দ্যাখো দ্যাখো। কচ কচ। ছোটো ছোটো। শোঁ শোঁ। কচি কচি। ঝন ঝন। গুঁড়ো গুঁড়ো। হায় হায়। ব্যা ব্যা।

১১. নীচের শব্দগুলির বিপরীতার্থক শব্দগুলি নাটকেই আছে। শব্দগুলি খুঁজে বার করো। সেই সকল শব্দ দিয়ে বাক্য রচনা করো :
  • দুর্বুদ্ধি—সুবুদ্ধি: মাস্টারমশাইয়ের কথা শুনে ছেলেটির সুবুদ্ধি হয়েছে।
  • অসন্তুষ্ট—সন্তুষ্ট : পুজোর সময় রীমা জামাটা পেয়ে খুবই সন্তুষ্ট।
  • অসুন্দর—সুন্দর : গোলাপ ফুলটা খুবই সুন্দর।
  • দুঃখ—খুশি : বাচ্চাটা তার মাকে দেখে খুব খুশি হল।
  • অল্প—বেশি : অজয়ের দিদি অজয়ের থেকে অজয়ের ভাইকে বেশি ভালোবাসে।
  • বুড়ো—বাচ্চা : বাচ্চাটা পড়ে গিয়ে খুব কাঁদছিল।
১২. ‘মৃদুমন্দ বাতাস' শব্দটির মানে ‘হালকা হাওয়া’ আর ‘মন্দ’ কথাটা সাধারণত আমরা ব্যবহার করি ‘খারাপ/ ‘ভালো নয়’ অর্থে। দুটো অর্থেই দুটো বাক্য লেখো :
  • মন্দ—বেশির ভাগ সময় ছেলেটি মন্দ কথা বলে।
  • মন্দ—মেয়েটি মন্দ গান গায় না।
১৩. নীচের শব্দগুলি দিয়ে বাক্য লেখো : 
ওলটপালট, দুর্দান্ত, ঝিকিমিক, স্বচক্ষে, দুর্দশা।
  • ওলটপালট—কালবৈশাখীর ঝড়ে প্রকৃতি যেন ওলটপালট হয়ে গেল।
  • দুর্দান্ত—এবার মিলন সংঘ দুর্দান্ত খেলেছে।
  • ঝিকিমিকি—রাতের অন্ধকারে জোনাকিরা ঝিকিমিকি করছে।
  • স্বচক্ষে—ডাকাতদলকে আমি স্বচক্ষে দেখেছি।
  • দুর্দশা–দেশের দুর্দশা দেখলে আমাদের মন খারাপ হয়।
১৪. কোনটি কী ধরনের বাক্য লেখো :
১৪.১ আ! কি শান্তি!
উত্তর : হর্ষসূচক বাক্য।
১৪.২ পাতা পালটাতে চাও?
উত্তর : প্রশ্নসূচক বাক্য।
১৪.৩ সোনার পাতা আর চাই না।
উত্তর : না-বাচক বাক্য।
১৪.৪ বেশ তাই হোক! তথাস্তু!
উত্তর : সম্মতিসূচক বাক্য।
১৪.৫ এবার তুমি আমায় কাচের পাতা দাও।

উত্তর : আদেশমূলক বাক্য।

১৫. ছোটো ছোটো বাক্যে ভেঙে লেখো :
১৫.১ কাচের পাতার ওপর সূর্যের কিরণ পড়ে রামধনু রং ঝিকিমিকি খেতে লাগল।
উত্তর : কাচের পাতার ওপর সূর্যের কিরণ পড়ল। সূর্যের কিরণে রামধনু রং ঝিকিমিকি খেতে লাগল।
১৫.২ পরি অদৃশ্য হতেই ফণীমনসার গা ভরে দেখা দিল কচি নরম পাতা।
উত্তর : পরি অদৃশ্য হল। ফণীমনসার গা ভরে কচি নরম পাতা দেখা দিল।
১৫.৩ ডাকাতরা সব সোনার পাতা ছিঁড়ে নিয়ে পোঁটলা বেঁধে ওকে একেবারে ন্যাড়া করে রেখে গেল।
উত্তর : ডাকাতরা সব সোনার পাতা ছিঁড়ে পোঁটলা বেঁধে নিয়ে গেল। ডাকাতরা গাছটা একেবারে ন্যাড়া করে রেখে গেল।
১৫.৪ ভয়ানক ঝড়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই ফণীমনসা গাছের সমস্ত পাতা ছড়িয়ে পড়ে গেল।
উত্তর : ভয়ানক ঝড় হল। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফণীমনসা গাছের সমস্ত পাতা ছড়িয়ে পড়ে গেল।

১৬. পাশাপাশি ছোটো ছোটো বাক্যগুলি যোগ করে একটি বাক্য তৈরি করো :
১৬.১ একসময় ঝড় থামল। আর শুরু হল বাচ্চা গাছের অঝোর কান্না।
উত্তর : ঝড় থামলে বাচ্চা গাছের অঝোরে কান্না শুরু হল।
১৬.২ এমন সময়ে সে পথ দিয়ে যাচ্ছিল বনের পরি। ওর কান্না শুনে থমকে দাঁড়াল সে।
উত্তর : এমন সময় বনের পরি পথ দিয়ে যেতে যেতে ওর কান্না শুনে থমকে দাঁড়াল।
১৬.৩ গভীর বন। তার ভেতরে ছোট্ট একটি ফণীমনসা গাছ। গাছটির মনে কিন্তু এক ফোঁটাও শান্তি নেই।
উত্তর : গভীর বনে থাকা ছোট্ট ফণীমনসা গাছটির মনে কিন্তু এক ফোঁটাও শান্তি নেই।
১৬.৪ ছোট্ট গাছটির এবার দেমাকে যেন মাটিতে পা পড়ে না। মৃদুমন্দ বাতাসে হেলতে দুলতে লাগল সে মজা করে।
উত্তর : মৃদুমন্দ বাতাসে হেলেদুলে ছোট্ট গাছটির দেমাকে যেন মাটিতে পা পড়ে না।

১৭. আরও বিশেষণ যোগ করতে পারো? একটা তোমার জন্যে করা রইল :
১৭.১ কচি নরম সবুজ পাতা
১৭.২ কাঁটা ভরতি ছোট্ট গাছ
১৭.৩ লম্বা রোগা ন্যাড়া চেহারা
১৭.৪ দলে দলে জোয়ান ডাকাত
১৭.৫ সুন্দর ফুটফুটে ছোট্ট মেয়ে

১৮. পাশে যেভাবে বলা আছে, সেই অনুযায়ী নীচের বাক্যগুলি বদলে আবার লেখো :
১৮.১ আকাশ দিয়ে ধেয়ে এল দুর্দান্ত ঝড়। (ঝড় আগামীকাল এলে কী লিখবে?)
উত্তর : আকাশ দিয়ে ধেয়ে আসবে দুর্দান্ত ঝড়।
১৮.২ বলতে দেরি আছে কিন্তু নিতে দেরি নেই। (কথাগুলো গতকাল হয়েছে বলতে হলে যেভাবে লিখবে)
উত্তর : বলতে দেরি হয়েছিল কিন্তু নিতে দেরি হয়নি।
১৮.৩ সে-পথ দিয়ে যাচ্ছিল বনের পরি। (কথাগুলো এখনই বলা হচ্ছে, এমন হলে কী লিখবে?)
উত্তর : সেই পথ দিয়ে বনের পরি যাচ্ছে।

১৯. একটি বাক্যে উত্তর দাও :
১৯.১ ছোট্ট ফণীমনসা গাছের মনে শান্তি ছিল না কেন?
উত্তর : নিজের কাঁটাভরা করাতের মতো ছুঁচোলো পাতা ফণীমনসা গাছের একদম পছন্দ হত না সেই কারণে তার মনে এক ফোঁটাও শান্তি ছিল না।
১৯.২ ফণীমনসা গাছের আশেপাশের গাছগুলো পাতা কেমন ছিল?
উত্তর : ফণীমনসা গাছের আশেপাশের গাছগুলোর পাতা অজস্র সবুজ নরম সুন্দর সুন্দর ছিল।
১৯.৩ ফণীমনসা বারে বারে পাতাগুলো পালটে দেওয়ার আবেদন কার কাছে করছিল?
উত্তর : ফণীমনসা বারে বারে পাতাগুলো পালটে দেওয়ার আবেদন পরির কাছে করছিল।
১৯.৪ প্রথমবারের আবেদনে ফণীমনসার গাছ জুড়ে কেমন পাতা হয়েছিল?
উত্তর : প্রথমবারের আবেদনে ফণীমনসার গাছ জুড়ে সোনার পাতা হয়েছিল।
১৯.৫ সেসব পাতা ফণীমনসা হারালো কী করে?
উত্তর : সেসব পাতা ডাকাতদল এসে চুরি করে নিয়ে গেল।
১৯.৬ ডাকাতদলকে দেখতে কেমন?
উত্তর : ডাকাতদলকে দেখতে কানে জবাফুল গোঁজা বাবরিওয়ালা জোয়ান।
১৯.৭ ঝড় এলে ফণীমনসা গাছের কাচের পাতার কী অবস্থা হলো?
উত্তর : ভয়ানক কড়ে ফণীমনসা গাছের সমস্ত কাচের পাতা গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল।
১৯.৮ ছোট্ট ফণীমনসা গাছের দেমাকে মাটিতে পা পড়ছিল না কেন?
উত্তর : পালং-এর মতো কচি নরম সবুজ পাতায় ফণীমনসা গাছটি ভরে উঠেছিল তাই তার দেমাকে মাটিতে পা পড়ছিল না।
১৯.৯ সেই দেমাক তার ভেঙে গেল কীভাবে?
উত্তর : ফণীমনসা গাছের কচি কচি নরম সবুজ পালং শাকের মতো পাতাগুলি ছাগল এসে কচকচ করে চিবিয়ে খেয়ে ফেললে ফণীমনসার দেমাক ভেঙে গেল।
১৯.১০ শেষ পর্যন্ত ফণীমনসা কেমন পাতা চাইল নিজের জন্য?
উত্তর : বনের পরির সহায়তায় সোনার পাতা, কাচের পাতা, পালং-এর পাতার রূপ গ্রহণের উপযুক্ত শিক্ষা পেয়ে ফণীমনসা নিজের প্রকৃত কাঁটাভরা ছুঁচোলো পাতা চাইল।

২০. সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :
২০.১ ‘বাচ্চা গাছটি তো মহা খুশি। আনন্দে ডগমগ'।—এত আনন্দ কখন হল বাচ্চা গাছের?
উত্তর : ফণীমনসা গাছের নিজের পাতাগুলি পছন্দ নয়! সেগুলি খুব বিচ্ছিরি আর ছুঁচোলো বলে সবসময় দুঃখ। বনের পরির কাছে সে নিজের পাতাগুলি বদলে সুন্দর সোনার পাতা করে দিতে বলেছিল। কথামতো বনের পরির দয়ায় নিজের অজস্র ঝলমলে সুন্দর সোনার পাতা দেখে বাচ্চা ফণীমনসা গাছটির খুব আনন্দ হল।

২০.২ ফণীমনসা গাছ কাচের পাতায় ভরে ওঠবার পরে তার চেহারাটি কেমন হয়েছিল?
উত্তর : ছোটো ছোটো কাচের পাতায় ঝলমলিয়ে উঠল ফণীমনসা গাছের সারা অঙ্গ। সেই কাচের পাতার ওপর সূর্যের কিরণ পড়ে রামধনু রং ঝিকিমিকি খেতে লাগল। মৃদুমন্দ বাতাসের দোলা লেগে সুমধুর টুং টাং শব্দ হতে লাগল।

২০.৩ মৃদু বাতাসে মনের আনন্দে দুলছে ফণীমনসা, এমন সময় ছাগল এসে উপস্থিত হওয়ায় কী ঘটল?
উত্তর : মৃদুমন্দ বাতাসে ফণীমনসা গাছটি আনন্দে দুলছে। এমন সময় একটি ছাগল উপস্থিত হয়ে সমস্ত কচি কচি সবুজ নরম পাতাগুলি কচকচ করে খেয়ে ফেলে গাছটাকে একেবারে ফাঁকা করে দিল।

২০.৪ ছোট্ট গাছটি সত্যিই কি খুব শিক্ষা পেল বলে মনে হচ্ছে তোমার? কেমন সে শিক্ষা?
উত্তর : ছোট্ট ফণীমনসা গাছটি বনের পরির দয়ায় বারবার নিজের চেহারা পরিবর্তন করে বুঝতে পারল যে, নিজের অবস্থা আর নিজের চেহারা নিয়ে যে সন্তুষ্ট না থাকে তার দুর্দশার শেষ হয় না। নিজের কাঁটাভরা ছুঁচলো পাতা শতগুণে ভালো। নিজের জিনিস ফেলে কখনোই মিথ্যা আবদার করা উচিত নয়।

২১. বিদ্যালয়ের কোনো অনুষ্ঠানে নাটকটির অভিনয় করো। (শ্রেণিকক্ষে শ্রুতি-অভিনয়ও করতে পারো।)
উত্তর : তোমাদের স্কুলের  শিক্ষক-শিক্ষিকার সাহায্যে নিজেরা দলবদ্ধভাবে করো।


❏ বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর কবিতার বিষয়বস্তু :
বাদল দিনে সারা আকাশ জুড়ে কালো মেঘ দেখা যায়। হাওয়া দিলেই মেঘের দল নিজেদের খেয়ালখুশিমতো আকাশের একপ্রান্ত থেকে তাপর প্রান্তে উড়ে যায় আর মাঝে মাঝে কালো মেঘ জমটি বেঁধে প্রকৃতিতে তার অন্ধকার রূপ ছড়িয়ে দেয়। অনেকসময় সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্বেই সারা আকাশ কালো মেঘে অন্ধকার হয়ে আসে। আকাশের দিকে তাকিয়ে কালো মেঘেদের ভেসে যেতে দেখে কবির ছেলেবেলার দিনগুলির কথা মনে পড়ে। আকাশে কালো মেঘেদের খেলা দেখতে দেখতে ছেলেবেলার লুকোচুরি খেলা, মায়ের হাসিমুখ, মেঘের গুরগুর কবির মনে পড়ে। তাঁর আরও মনে পড়ে বাদল দিনে মায়ের কাছে চুপ করে বসে নানান গল্প শোনার কথা। মেঘের ডাকে ঘরে দুরন্ত ছেলের দাপাদাপির কথা মনে পড়ে। সেই সঙ্গে কবির মনে পড়ে বাদলদিনে ঘরের কোণে মিটিমিটি আলোয় দস্যি ছেলে চুপচাপ মায়ের কাছে গল্প শোনে। এমন বৃষ্টিভরা দিনে কবির বারে বারে মনে পড়ে মায়ের গলায় ঘুমপাড়ানি গানের কথা— 'বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এল বান।

▸ হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর ☟ 
১. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১.১ কোন কোন বাংলা মাসে সাধারণত বৃষ্টি হয়?
উত্তর : আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে সাধারণত বৃষ্টি হয়।
১.২ মেঘলা দিনে আকাশ ও তোমার চারপাশের প্রকৃতি কেমন রূপ ধারণ করে?
উত্তর : মেঘলা দিনে আকাশ গুমোট হয়ে থাকে। পরে এই মেঘ জমাট বেঁধে প্রকৃতি বর্ষার অপরূপ সাজে সেজে ওঠে। বর্ষার জলে চারদিকে সবুজের সমারোহ। এই সময়ে সারাদিন কখনও ঝিরঝির করে, কখনও মুষলধারায় বৃষ্টি হয়। এই সময় নদনদী, খাল, পুকুর জলে ভরে যায়।

১.৩ বৃষ্টির সঙ্গে জড়িয়ে আছে—তোমার জীবনে মনে রাখার মতো এমন কোনো ঘটনার কথা লেখো।
উত্তর : ইংরেজি ২০২১, ১৫ আগস্ট, স্বাধীনতা দিবসের দিন সকাল বেলা আমাদের বিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ উৎসব অনুষ্ঠিত হল। এদিন সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। চারদিক জলে জল। রাস্তায় জল জমেছে, বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে তা আরও বাড়ছে। আমাদের বাড়ি থেকে বিদ্যালয় হাঁটা পথ। সকাল নটার সময় বিদ্যালয়ের পোশাক পরে জুতো জোড়া হাতে নিয়ে আমি আর আমার বন্ধু রাস্তায় নামলাম। মাথায় ছাতা, হাতে জুতো নিয়ে জলের মধ্যে হেঁটে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলাম। বৃষ্টি তখন একটু কমেছে। 

আমাদের মতো আরও অনেকে এসেছে। কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষক মহাশয় এসেছেন। অনুষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক মহাশয় চমৎকার ভাষণ দিলেন। তিনি বললেন, ভূমিখণ্ডের তুলনায় ৩৩ শতাংশ উদ্ভিদ থাকা প্রয়োজন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ২৩ শতাংশেরও কম উদ্ভিদ রয়েছে, ফলে এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুবই কম। অনুষ্ঠান শেষে বিদ্যালয়ের মাঠের চারদিকে এবং কিছু টবে বৃক্ষরোপণ করা হল। বর্ষার দিনে হাঁটু জল পার হয়ে বিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ উৎসবে যোগদান করে আনন্দ লাভ করা আমার জীবনে মনে রাখার মতো একটি ঘটনা।

১.৪ পুকুরে, টিনের চালে, গাছের পাতায়—বৃষ্টি পড়ার শব্দগুলো কেমন হয় লেখো।
উত্তর : পুকুরে—টুপটুপ, টিনের চালে—টপটপ, গাছের পাতায়—টিপটিপ।

২.‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মেলাও :



৩. বেমানান শব্দের তলায় দাগ দাও :
৩.১ সূর্য, মেঘ, বৃষ্টি, আকাশ, বাড়ি
৩.২ ডোবে ডোবে, লোভে লোভে, পলে পলে, দেশে দেশে, টাপুর টুপুর
৩.৩ গাছপালা, মেঘ, হাওয়া, বাদল,মানিক
৩.৪ মা, খোকা, দৌরাত্ম্য, হাসিমুখ, শিবঠাকুর
৩.৫ মেঘের খেলা, লুকোচরি, টাপুর টুপুর, নদী, সুয়োরানি

৪. বিপরীতার্থক শব্দ কবিতা থেকে বেছে নিয়ে লেখো : 
রাত, বার্ধক্য, খরা, পুরোনো, শান্ত।
উত্তর : রাত—দিন, বার্ধক্য—ছেলেবেলা, খরা—বান, পুরোনো—নতুন, শান্ত—দুরন্ত।
৫. বিশেষ্য ও বিশেষণ খুঁজে নিয়ে লেখো :
বিশেষ্য বিশেষণ
মানিক একশো
হাওয়া বাদলা
গাছপালা ঝাপসা
ছেলে দুরন্ত
বুক গুরুগুরু

৬. ক্রিয়ার তলায় দাগ দাও :
৬.১ কাঁসর ঘণ্টা বাজল ঠঙ ঠঙ।
৬.২ কত খেলা পড়ে মনে।
৬.৩ শুনেছিলেম গান।
৬.৪ বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর।
৬.৫ বাইরেতে মেঘ ডেকে ওঠে।

৭. ‘সৃষ্টি’—এমন ‘ষ্ট্’ রয়েছে—এরকম পাঁচটি শব্দ লেখো :
উত্তর : বৃষ্টি, মিষ্টি, চেষ্টা, তেষ্টা, কষ্ট।
৮. নীচের শব্দগুলোয় দুটো করে শব্দ লুকিয়ে আছে, আলাদা করে লেখো :
গাছপালা, ছেলেবেলা, হাসিমুখ, লেখাজোকা
গাছপালা ➺ গাছ   পালা
ছেলেবেলা ➺ ছেলে   বেলা
হাসিমুখ ➺ হাসি   মুখ
লেখাজোকা ➺ লেখা    জোকা

৯. সাজিয়ে লেখো : লেছেবেলা, রিকোচুলু
উত্তর : লেছেবেলা → ছেলেবেলা | রিকোচুলু → লুকোচুরি
১০. শূন্যস্থান পূরণ করো :
১০.১ আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে।
১০.২ বাদলা হাওয়ায় মনে পড়ে।
১০.৩ মনে পড়ে ঘরটি আলো।
১০.৪ ঘরেতে দুরন্ত ছেলে।
১০.৫ বাইরে কেবল জলের শব্দ।

১১.১ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে নোবেল পুরস্কার পান?
উত্তর : ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পান।
১১.২ কোন বইয়ের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান?
উত্তর : 'Songs Offering -বই এর জন্য।
১১.৩ ‘বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' কবিতাটি তাঁর কোন বই থেকে নেওয়া হয়েছে?

উত্তর : ‘বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' কবিতাটি তাঁর ‘শিশু’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
১২. মাঠে বা নদীতে বৃষ্টি পড়ছে এমন একটি ছবি আঁকো ও রং করো :



১৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১৩.১ বৃষ্টির দিনে কবির মনে কোন গান ভেসে আসে?
উত্তর : বৃষ্টির দিনে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনে ছেলেবেলার মায়ের গাওয়া ‘বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এল বান গানটি ভেসে আসে।

১৩.২ বৃষ্টিতে নদীর এপার এবং ওপারের যে বর্ণনা কবি দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর : আলোচ্য কবিতায় বাদল দিনে কবি নদীর এপার এবং ওপারের সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। নদীর এপারে মেঘলা আকাশ কিন্তু বৃষ্টি এখনও শুরু হয়নি। আর নদীর ওপারে বৃষ্টি পড়ছে তাতে দূরের গাছপালা ঝাপসা দেখা যাচ্ছে।

১৩.৩ ‘সেদিনও কি এমনিতরো/মেঘের ঘটাখানা’—কোন দিনের কথা বলা হয়েছে? সেদিনের প্রকৃতির বর্ণনা দাও।
উত্তর : কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলেবেলার দিনগুলির কথা বলা হয়েছে। কবি লছেন, বাদলদিনে সীমাহীন আকাশ কালো মেঘে পরিপূর্ণ। প্রকৃতি শস্যশ্যামলা, চারদিক সবুজের সমারোহে সজীব। বাদল দিনে আকাশে কালো মেঘের লুকোচুরির খেলা চলে। দুরন্ত ছেলে মেঘের শব্দ শুনে ভয় পেয়ে ঘরের কোণে চুপ করে বসে মায়ের কাছে রূপকথার নানান গল্প শোনে।

১৩.৪ মেঘের খেলা কবির মনে কোন কোন স্মৃতি বয়ে আনে?
উত্তর : বাদলদিনে সারা আকাশ জুড়ে ঘন মেঘের খেলা কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনে ছেলেবেলার অনেক স্মৃতি বয়ে নিয়ে আসে। সীমাহীন আকাশে মেঘের ওপর মেঘ জমে অবিরাম কালো মেঘের খেলা কবিকে ছেলেবেলার লুকোচুরি খেলার স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। মনে পড়ে মায়ের কাছে শোনা ‘বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এল বান’ গানটি। এইরকম অবিরাম বৃষ্টিঝরা দিনে দুরন্ত ছেলের সমস্ত দুরন্তপনা দাপাদাপি বন্ধ হয়ে যায়। শান্ত ছেলের মতো চুপ করে ঘরের এক কোণে সে বসে মায়ের কাছে সুয়োরানি, দুয়োরানি, কঙ্কাবতীর ব্যথা ইত্যাদি রূপকথার গল্প শোনে। এসব স্মৃতি কবির মনকে উদাস করে। কবির বারে বারে এমন বৃষ্টিঝরা বাদল দিনে মায়ের সেই ঘুমপাড়ানি গানের কথা মনে পড়ে।

❏ বোকা কুমিরের কথা লেখক পরিচিতি :
বিখ্যাত শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ময়মনসিংহের মসুয়া গ্রামে ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দের ১২ মে জন্মগ্রহ করেন। তাঁর পূর্ব নাম ছিল কামদারঞ্জন। তাঁর পিতার নাম কালীনাথ রায়চৌধুরী। পাঁচ বছর বয়সে পিতৃব্য অর্থাৎ জ্যেঠা বা কাকা হরিকিশোরের দত্তক পুত্র হিসেবে নতুন নামকরণ হয় উপেন্দ্রকিশোর। ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা পাশ করে প্রথমে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ ও পরে ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে মেট্রোপলিটান ইন্সটিটিউট থেকে বি.এ পাশ করেন। ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে ‘সখা' পত্রিকায় তাঁর প্রথম রচনা প্রকাশিত হয়। সংগীতেও তিনি পারদর্শী ছিলেন। তাঁর রচিত ‘ছেলেদের রামায়ণ’, ‘ছেলেদের মহাভারত’, ‘সেকালের কথা’, ‘টুনটুনির বই’, ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন' প্রভৃতি গ্রন্থে নানা বিচিত্র চরিত্রের সমাবেশ লক্ষ করা যায়। ছোটোদের জন্য পুরাণ ও রূপকথার অনেক গল্প কাহিনি তিনি রচনা করেন। ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে ‘সন্দেশ’ পত্রিকা প্রকাশ করে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও কৌতুকরসে তরুণচিত্তে এক নতুন জগৎ সৃষ্টি করেছিলেন। ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দের ২০ ডিসেম্বর এই প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিকের জীবনাবসান ঘটে।

❏ বোকা কুমিরের কথা বিষয়বস্তু :
বোকা কুমির আর ধূর্ত শিয়াল দুজনে ঠিক করল কৃষিকাজ করবে। প্রথমে তারা আলু চাষের সিদ্ধান্ত নিল। গাছের ওপরের অংশ থেকে ফসল পাওয়া যাবে ভেবে বোকা কুমির আলু গাছের ওপরের অংশ নেওয়ার কথা বলল। যথারীতি গাছের নীচের অংশ শিয়ালের ভাগে পড়ল। গাছ বড়ো হলে গাছের ওপরের অংশ কেটে কুমির বাড়ি গিয়ে দেখল তাতে একটিও আলু নেই। অপর দিকে গাছের নীচের অংশ শিয়ালের ভাগে থাকায় সে মাটি খুঁড়ে সমস্ত আলু ঘরে নিয়ে গেল। এবার ধান চাষের সময় এলো। গতবারের লোকসানের কথা মনে রেখে বোকা কুমির গাছের নীচের অংশ নেবে জানিয়ে দিলে। ধূর্ত শিয়াল রাজি হল। যথাসময়ে ধান পাকলে শিয়াল ধান ভরতি গাছের আগা ঘরে তুলল। অপরদিকে মাটি খুঁড়ে সব ধান সব নিয়ে যাবে ভেবে মাটি খুঁড়তেই কুমির চরম ঠকে গেল। এবার দুই বন্ধুতে আখের চাষ করবে মনস্থির করে গাছের ওপরের অংশ অর্থাৎ আগা অংশ নেবে কুমির অনেক আগে থেকে স্থির করল। এবারেও আখ গাছের নোনতা আগা অংশ নিয়ে কুমির অসম্ভব ঠকে গেল।

▸ হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর ☟ 
১. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১.১ তোমার জানা কয়েকটি উভচর প্রাণীর নাম লেখো।
উত্তর : আমার জানা কয়েকটি উভচর প্রাণীর নাম ব্যাং, কচ্ছপ।
১.২ তোমার জানা কয়েকটি সরীসৃপের নাম লেখো।
উত্তর : কুমির, সাপ ও টিকটিকি।
১.৩ ছোটোদের জন্য লেখা পশুপাখির গল্পে সবচেয়ে চালাক প্রাণী বলতে আমরা কাকে বুঝি?
উত্তর : সবচেয়ে চালাক প্রাণী বলতে আমরা শিয়ালকে বুঝি।
১.৪ মাটির নীচে হয় এমন কয়েকটি ফসলের নাম লেখো।
উত্তর : মাটির নীচে হয় এমন কয়েকটি ফসল হল আলু, গাজর, মুলো, ওল, আদা ইত্যাদি।
১.৫ ধানগাছ থেকে আমরা কী কী পাই?
উত্তর : আমরা ধান, খড়, তুষ পাই।

১.৬ কুমির ও শিয়ালকে নিয়ে লেখা অন্য কোনো গল্প পাঁচটি বাক্যে লেখো।
উত্তর : কুমির তার সাতটি ছানাকে সঙ্গে নিয়ে শিয়াল পণ্ডিতের বাড়ি এসে তাকে বললে, ‘আমি এই ছানাদের নিয়ে  তোমার কছে এসেছি লেখাপড়া শেখানোর জন্য’। শিয়াল খুব খুশি হয়ে বলল, 'আমার কাছে রেখে যাও, আমি অল্পদিনের মধ্যেই ওদের পণ্ডিত করে দেব’। শিয়াল ছানাগুলিকে নিজের কাছে রেখে প্রতিদিন একটি করে খেয়ে ফেলে আর কুমির এলে তাকে ছানাদের ছয়টিকে ছয়বার দেখিয়ে শেষের দিকে একটিকেই দুবার দেখায়। বোকা কুমির কিছুই বুঝতে পারে না। শেষে যখন একটি ছানা রইল তখন সেটিকেই সাতবার দেখিয়ে পরের দিন সেই ছানাটিকেও খেয়ে ফেলল এবং শিয়ালনিকে সঙ্গে নিয়ে বহুদূরে নদীর ওপারে চলে গেল।

২. ‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো :


৩. গল্পের ঘটনাক্রমে সাজিয়ে লেখো :
উত্তর : ৩.২ কুমির আর শিয়াল মিলে চাষ করতে গেল...আলুর চাষ।
উত্তর : ৩.১ কুমির শিয়ালকে ঠকাবার জন্য বললে গোছের আগার দিক কিন্তু আমার, আর গোড়ার দিক তোমার।
উত্তর : ৩.২ কুমির আর শিয়াল মিলে চাষ করতে গেল...আলুর চাষ।
উত্তর : ৩.৪ তারপরের বার হল ধানের চাষ। কুমির গোড়াগুলো নিয়ে বুঝল সে খুব ঠকেছে।
উত্তর : ৩.৩ সেবার হলো আখের চাষ। কুমির আগাগুলো নিয়ে চিবিয়ে দেখল ভীষণ নোনতা।
উত্তর : ৩.৫ কুমির শিয়ালকে বলল, না ভাই, তোমার সঙ্গে আর আমি চাষ করতে যাব না, তুমি বড্ড ঠকাও৷

৪. শূন্যস্থান পূরণ করো :
৪.১ কুমির আর শিয়াল মিলে চাষ করতে গেল।
৪.২ সে ভাবলে বুঝি আলু তার গাছের ফল
৪.৩ শিয়াল সে ধানসুদ্ধ গাছের আগা কেটে নিয়ে গেল।
৪.৪ সেবার হল আখের চাষ।
৪.৫ শিয়াল মাটি খুঁড়ে সব আলু তুলে নিয়ে গেছে।

৫. পাশের শব্দঝুড়ি থেকে খুঁজে নিয়ে একই অর্থের শব্দ পাশাপাশি লেখো :
চাষ, আখ, আগা, মাটি
উত্তর : চাষ—কৃষি, আখ—ইক্ষু, আগা—অগ্রভাগ, মাটি—মৃত্তিকা।

৬. বাক্য শেষ করো :
৬.১ উত্তর : ‘বোকা কুমিরের কথা’ গল্পটি পড়ে কুমিরটিকে আমার মনে হয়েছে সে বোকা
৬.২ উত্তর : গল্পের শিয়ালটি আসলে খুব চালাক
৬.৩ উত্তর : কুমির গল্পে মোট তিন বার ঠকেছে। প্রথমবার সে ঠকে গেছে, কেননা আলু থাকে মাটির নীচে। দ্বিতীয়বার তার ঠকে যাওয়ার কারণ হল ধান গাছের গোড়ায় জন্মায় না। তারপরের বার আখ গাছের কোন অংশ আমরা ফসল হিসাবে গ্রহণ করি তা না জানার জন্য সে ঠকে গেছে।
৬.৪  উত্তর : শিয়াল বারবার লাভবান হয়েছে, কারণ কুমির ছিল বড্ড বোকা

৭. নীচে দাগ দেওয়া শব্দগুলি কোনটি কী জাতীয় শব্দ লেখো :
৭.১ কুমির আর শিয়াল মিলে চাষ করতে গেল।
উত্তর : চাষ—বিশেষ্য।
৭.২ সে ভাবলে বুঝি আলু তার গাছের ফল।
উত্তর : সে—সর্বনাম।
৭.৩ আচ্ছা আসছে বার দেখব
উত্তর : দেখব—ক্রিয়াপদ।
৭.৪ ভেবেছে, মাটি খুঁড়ে সব ধান বার করে নেবে
উত্তর : ধান—বিশেষ্য, নেবে—ক্রিয়াপদ।
৭.৫ এবার আমাকে গোড়ার দিক দিতে হবে।
উত্তর : আমাকে—সর্বনাম, গোড়ার—বিশেষণ

৮. ঠিক বাক্যটির পাশে () চিহ্ন দাও আর ভুল বাক্যটির পাশে () চিহ্ন দাও :
৮.১ গল্পের কুমিরটি অত্যন্ত চালাক-চতুর ছিল।
উত্তর : 
৮.২ কুমিরটি চেয়েছিল শিয়ালকে সে ঠকাবে।
উত্তর : 
৮.৩ আলুচাষে গোড়ার দিক পাওয়ায় শিয়াল ঠকে গেল।
উত্তর : 
৮.৪ ধানচাষের বেলায় কুমির পেল আগার দিক।
উত্তর : 
৮.৫ কুমির আখের গাছগুলো পেয়ে ঘরে বয়ে নিয়ে গিয়ে মজা করে খেতে লাগল।
উত্তর : 

৯. বাক্যরচনা করো :
 আগা, গোড়া, চাষ, আখ, নোনতা।
উত্তর : আগা—আখ গাছের আগা কোনো কাজে লাগে না।
গোড়া—প্রতিদিন গাছের গোড়ায় জল দিতে হয়।
চাষ—বর্ষাকালে ধান চাষ করা হয়।
আখ—আখের রস থেকে চিনি, গুড় তৈরি হয়।
নোনতা—নোনতা বিস্কুট খেতে শিশুরা ভালোবাসে।

১০. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো : 
লাভ, মিষ্টি, নীচে, কাজ, মজা।
উত্তর : লাভ-লোকসান। মিষ্টি—টক। নীচে—ওপরে। কাজ—অকাজ। মজা—দুঃখ।
১১.১ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা দুটি বিখ্যাত বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর : উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা দুটি বিখ্যাত বইয়ের নাম ‘ছেলেদের মহাভারত’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন'।
১১.২ তিনি ছোটোদের জন্য কোন পত্রিকা বের করতেন? 
উত্তর : তিনি ছোটোদের জন্য ‘সন্দেশ’ পত্রিকা বের করতেন।
১১.৩ তাঁর সন্তানদের মধ্যে শিশুসাহিত্যিক হিসেবে কারা অত্যন্ত পরিচিত? 
উত্তর : পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও সুকুমার রায়।

১২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর লেখো :
১২.১ গল্পে কারা চাষ করতে গেল? 
উত্তর : ‘বোকা কুমিরের কথা’ গল্পে কুমির ও শিয়াল দুজনে চাষ করতে গেল।
১২.২ কীসের কীসের চাষ তারা করেছিল?
উত্তর : কুমির ও শিয়াল আলু, ধান এবং আখের চাষ করেছিল।
১২.৩ চাষে কার লাভ এবং কার ক্ষতি হয়েছিল?
উত্তর : আলু, ধান এবং আখের চাষ করে শিয়ালের লাভ এবং কুমিরের ক্ষতি হয়েছিল।
১২.৪ শিয়ালকে ঠকাতে আখচাষের সময় কুমির কী ফন্দি এঁটেছিল?
উত্তর : শিয়ালকে ঠকাতে আখচাষের সময় কুমির আখের আগা অংশ নেবে বলে ফন্দি এঁটেছিল।
১২.৫ ‘বোকা কুমিরের কথা’ গল্পে কুমিরটা শিয়ালকে ‘তুমি বড্ড ঠকাও’ বলে দোষ দিলেও, আসলে সে নিজের নির্বুদ্ধিতার জন্যই বারবার ঠকে গেছে।'—গল্পটি পড়ে তোমার যদি এমন মনে হয়, তবে কেন এমন মনে হল, তা বোঝাতে গল্প থেকে তিনটি বাক্য খুঁজে নিয়ে লেখো।
উত্তর  (১) কুমির ভাবলে বুঝি আলু তার গাছের ফল।
(২) ভেবেছে, মাটি খুঁড়ে সব ধান বার করে নেবে।
(৩) এবার আর সে আগা না নিয়ে ছাড়বে না।



❏ চল্‌ চল্‌ চল্‌ লেখক পরিচিতি :
বর্ধমানে আসানসোলের কাছে চুরুলিয়া গ্রামে ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে ২৫ মে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ। ১০ বছর বয়সে মক্তবের নিম্ন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষা শেষ করে শিয়ারসোলের রাজস্কুলে ভরতি হন। সেই স্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন। ‘ধূমকেতু’, ‘নবযুগ’, ‘লাঙল’ ইত্যাদি পত্রিকার তিনি ছিলেন সম্পাদক। তাঁর লেখা কাব্যগ্রন্থগুলির নাম হল—‘অগ্নিবীণা’, ‘সঞ্ঝিতা’, ‘দোলনচাঁপা’, ‘বিষের বাঁশি’, ‘সর্বহারা' প্রভৃতি। ‘রিক্তের বেদন’, ‘ব্যথার দান’ প্রভৃতি গল্প, ‘মৃত্যুক্ষুধা’, ‘বাঁধনহারা’ প্রভৃতি উপন্যাস, ‘আলেয়া’, ‘ছিনিমিনি’ প্রভৃতি নাটক কবি রচনা করেন। এ ছাড়াও তিনি তিন হাজারের বেশি গান রচনা করেছেন ও সুর দিয়েছেন। ১৯৪৫ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এই মহান স্রষ্টাকে ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ এবং ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার ‘পদ্মভূষণ’ উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। পক্ষাঘাতে তিনি শেষ জীবনে মূক হয়ে যান। বাংলাদেশ সরকার তাঁকে সেখানে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করান। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৯ আগস্ট বাংলাদেশের ঢাকা শহরে এই বিদ্রোহী কবি মৃত্যুবরণ করেন।

❏ চল্‌ চল্‌ চল্‌ বিষয়বস্তু :
কবি দেশের তরুণ সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বলেছেন, এগিয়ে চলো। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখো, বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, আর পৃথিবীর তলদেশ উত্তাল হয়ে গিয়েছে। হে নবজীবনে উজ্জীবিত দেশের তরুণ দল! সমস্ত বাধাবিঘ্ন অতিক্রম করে এগিয়ে চলো। কবির এই উদার আহ্বান দেশমাতৃকার পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচনের জন্য। তিনি বলছেন, যত আঘাত ও বাধাই আসুক, আমাদের পরাধীনতার হাত থেকে মুক্তি পেতেই হবে। স্বাধীনভাবে বাঁচব—এই গান
গাইতে গাইতে এগিয়ে চলো। আমরা অসাধ্য সাধন করতে অবশ্যই পারব, কেননা দেশের তরুণদল আমাদের সঙ্গে রয়েছে। হে নওজোয়ান নবজীবনের গান গাইতে গাইতে বাহুতে শক্তি ধরে চলো। আমরা দেশমাতৃকার শৃঙ্খল মোচনে অগ্রসর হই। আমরা কৃতকার্য হবই। তাই আর দেরি নয়, কারণ আজ দুয়ারে দুয়ারে জীবনের আহ্বান শোনা যাচ্ছে। এই আহ্বান শুনে চলো, আমরা এগিয়ে চলি।

প্র্যাকটিস প্রশ্নোত্তর
দু-এক কথা উত্তর দাও :
১। ‘চল্‌ চল্‌ চল্‌’ শিরোনামের গানটি কে লিখেছেন?
উত্তর : ‘চল্ চল্ চল্‌’ শিরোনামের গানটি লিখেছেন বিদ্রোহী কবি হিসাবে বিখ্যাত মানুষ কাজী নজরুল ইসলাম।
২। ‘ঊর্ধ্বগগন’ কথার মানে কী?
উত্তর : ঊর্ধ্বগগন কথার মানে ওপরের আকাশ।
৩। ‘ধরণী-তল’ শব্দটির অর্থ কী?
উত্তর : ‘ধরণী-তল’ শব্দের অর্থ মাটির ওপরে অর্থাৎ এই পৃথিবীতে।
৪। ‘অরুণ’ ‘প্রাতের’ ‘তরুণ’ কথা তিনটির অর্থ লেখো।

উত্তর : ‘অরুণ’ কথার অর্থ ভোরের সূর্য, ‘প্রাতের’ কথার অর্থ সকালের, ‘তরুণ’ কথার অর্থ হল যুবক।
৫। মাদল কোথায় বাজছে?
উত্তর : ঊর্ধ্ব গগনে অর্থাৎ ওপরের আকাশে মাদল বাজছে।
৬। কী কারণে নিম্নে উতলা ধরণী-তল?
উত্তর : মাদল একপ্রকার বাদ্যযন্ত্র—যার শব্দ এমনই গম্ভীর যে তা বাজতে শুরু করলে প্রত্যেক মানুষের মনে জাগে অফুরন্ত  উদ্দীপনা।
৭। অরুণ প্রাতের তরুণ দলকে কী করতে বলা হয়েছে?
উত্তর : অরুণ প্রাতের তরুণ দলকে নির্ভয় চিত্তে এগিয়ে চলার জন্য উদ্দীপনার গান শুনিয়ে বলা হয়েছে—চল্‌ রে চল্রে চল্‌। চল্‌-চল্‌-চচল।
৮। গানে গানে কবি কোথায় আঘাত হেনে কী আনবেন বলেছেন?
উত্তর : গানে গানে কবি বলেছেন, সকল যুবক সম্মিলিত হয়ে ঊষার দুয়ারে আঘাত হেনে রাঙা প্রভাত ডেকে আনবেন।
৯। ‘টুটাব’ আর ‘তিমির’ শব্দ দুটির মানে কী?
উত্তর : ‘টুটাব’ শব্দটির মানে ভেঙে ফেলব, আর ‘তিমির’ শব্দটির মানে অন্ধকার।
১০। ‘বাধার বিন্ধ্যাচল’ বলতে কবি সম্পূর্ণ পঙ্ক্তিটিতে কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর : কবি বুঝিয়েছেন যারা তরুণ দল তাদের শরীর ও মনে যে প্রাণবন্যা আছে তাতে বিন্ধ্যাচল পাহাড়ের চেয়েও শক্তিশালী বাধাকে সম্মিলিতভাবে সরিয়ে দিতে পারে।
১১। 'নব নবীনের গাহিয়া গান, সজীব করিব মহাশ্মশান,'—এই পঙ্ক্তিটির অর্থ কী?
উত্তর : ‘নবীন’ শব্দে কবি বুঝিয়েছেন কচিপাতার মতো সতেজ ভাব। তাই নতুন নতুন কচিপাতা মহাশ্মশানের মতো হাহাকারময় মাটিতে সৃষ্টি করতে পারে তরুণ দলের মিলিত শক্তি।
১২। 'আমরা দানিব নতুন প্রাণ' বলা হয়েছে কী অর্থে?
উত্তর : ‘দানিব’ কথার অর্থ দান করব। আমরা দানিব নতুন প্রাণ অর্থে, যারা নিস্তেজ, যারা নিস্পৃহ, যারা নিরুদ্দম তাদেরকে আমরা প্রেরণা জুগিয়ে কর্মমুখর করে তুলব।
১৩। ‘বাহুতে নবীন বল' বলতে তুমি কী বোঝো?
উত্তর : সাধারণত মানুষের হাতের পেশিতে যে শক্তি থাকে তার থেকে এমন বেশি শক্তিসম্পন্ন হাত তৈরি করে দেওয়া হবে যা পাথর বা লোহার মতো কঠিন।
১৪। কবির লেখা গানটি তাঁর কোন্ কাব্য গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর : ‘চল্‌ চল্‌ চল্‌’ কবিতাটি কবির ‘সন্ধ্যা’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
১৫। ‘চল্‌ চল্‌ চল্‌’ গানটি কবি কী উপলক্ষ্যে কবে রচনা করেছিলেন ?
উত্তর : ১৯২৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় ‘মুসলিম লিটারারি সোসাইটি’র দ্বিতীয় বার্ষিক অধিবেশন উপলক্ষে কবি কাজী নজরুল ইসলাম গানটি রচনা করেন।
১৬। কবে কে গানটিকে ‘জাতীয় সেনা সংগীত’-এর মর্যাদা দান করে?
উত্তর : গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি গানটিকে ‘জাতীয় সেনা সংগীত'-এর মর্যাদা দেয়।
১৭। 'নওজোয়ান' শব্দের মানে কী?
উত্তর : ‘নওজোয়ান’ শব্দের মানে তরুণ সৈনিক, বীর যুবক, শক্তিশালী যুবক। নওজোয়ান শব্দটি বাংলাভাষায় মিশেছে ফারসি ভাষা থেকে।
(কিন্তু টেক্সট বইয়ে ভুলবশত ‘নওজোয়ান’ শব্দটি ছাপা হয়েছে ‘নৌ-জোয়ান’। ‘নৌ’ শব্দের অর্থ নৌকা বা জলযান।)
১৮। কবি নওজোয়ানদের কী করতে বলেছেন? 
উত্তরঃ নওজোয়ানদের কবি কান পেতে শোনার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
১৯। ‘মৃত্যু-তোরণ-দুয়ারে-দুয়ারে জীবনের আহ্বান' বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর : ‘মৃত্যু-তোরণ-দুয়ার’ বলতে দেশের যেসব অসংখ্য মানুষের শরীরে মনে প্রাণচাঞ্চল্য নেই কবি সেইসব মানুষের কথা বুঝিয়েছেন। তারা অনুপ্রেরণা লাভ করে প্রাণবন্যায় ভাসতে চায় বলে কবি নওজোয়ানদের আকুল আহ্বান করছেন।
২০। 'ভাঙরে ভাঙ্ আগল, চল্‌ রে চল্‌ রে চল্‌?' বলে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর  কবি এই গানটি যখন লেখেন তখন ভারতবর্ষ ব্রিটিশদের অধীন, তাই কবি দেশের সমগ্র যুবশক্তির কাছে আকুল আহ্বান জানিয়েছেন দেশের সমস্ত জেল খানা ভেঙে স্বদেশি যুবকদের মুক্ত করতে।

Tags : ফণীমনসা ও বনের পরি,ফণীমনসা ও বনের পরি বীরু চট্টোপাধ্যায়,ফণীমনসা ও বনের পরি বীরু চট্টোপাধ্যায়,ফণীমনসা ও বনের পরী নাটক,ফনিমনসা ও বনের পরী প্রশ্ন উত্তর,ফণীমনসা ও বনের পরী,ফণীমনসা ও বনের,ফনীমনসা ও বনের পরী প্রশ্ন উত্তর,ফনীমনসা ও বনের পরি,ফনীমনসা ও বনের পরি নাটক,ফণীমনসা ও বনের পরি নাটকের সারাংশ,ফণীমনসা ও বনের পরি নাটকের বিষয়বস্তু,ফণীমনসা ও বনের পরি নাটকের বিষয়সংক্ষেপ

No comments

Hi Welcome ....