অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (Short SAQ Question Answer)
১. ডুডলস কী?
❏ গুগলসের একটি বিশেষ সাজ ডুডলস নামে পরিচিত। সাধারণত বিশেষ কোনো দিনে বা সময়ে বিশেষ ব্যক্তিকে বা ঘটনাকে সম্মান জানাতে গুগলসের হোমপেজের লোগো বিশেষ সাজে সেজে ওঠে এই সাজকে ডুডলস বলে। গুগলের প্রতিষ্ঠাতা সেরগেই ব্রিন ও ল্যারি পেজ ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম ‘বার্নিং ম্যান ফেস্টিভ্যাল' এর সম্মানে ডুডলসের ডিজাইন করেছিলেন।
২. বেঙ্গল গেজেট কে, কবে প্রকাশ করেন?
❏ বেঙ্গল গেজেট নামে সাপ্তাহিক ইংরেজি সংবাদপত্রটি জেমস অগাস্টাস হিকি ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা থেকে প্রকাশ করেন।
৩. 'বঙ্গদর্শন' পত্রিকা থেকে সমকালীন ভারতের ইতিহাস রচনার কী ধরনের তথ্য পাওয়া যায়?
❏ ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকা থেকে সমকালীন ভারতের ইতিহাস রচনার জন্য বাংলায় ব্রিটিশদের শাসন ও শোষণ, জমিদারদের শোষণ-অত্যাচার, তৎকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি, সাধারণ মানুষের অবস্থা প্রভৃতি বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়।
৪. ‘সোমপ্রকাশ’ 'পত্রিকায় নারীদের সম্পর্কে কী ধরনের সংবাদ প্রকাশিত হত?
❏ ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকায় বাল্যবিবাহ, কৌলিন্য প্রথা প্রভৃতির বিরুদ্ধে এবং নারীশিক্ষা, বিধবাবিবাহ প্রভৃতির পক্ষে সংবাদ পরিবেশন করা হত। এভাবে নারীসমাজের উন্নতির পক্ষে জনমত গঠনে সোমপ্রকাশ পত্রিকা গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
৫. ব্রিটিশ সরকার কেন ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে ‘সোমপ্রকাশ’ সাময়িকপত্রের প্রকাশ বন্ধ করে দেয়?
❏ বড়োলাট লর্ড লিটন ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে ‘দেশীয় সংবাদপত্র আইন’ পাস করে ভারতীয় সংবাদপত্রগুলির ওপর হস্তক্ষেপ করে ব্রিটিশ- বিরোধিতার পথ বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়। তখন এই আইনের দ্বারা ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকাটিও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
৬. ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহে ইনটারনেট ব্যবহারের অসুবিধাগুলি কী?
❏ ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহে ইনটারনেট ব্যবহারের অসুবিধাগুলি হল— [1] ইনটারনেট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনেকসময় অসম্পূর্ণ থাকে। [2] তথ্যগুলি অনেকসময় মনগড়া হয়। গবেষণার কাজে এই তথ্য ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ভরসা পাওয়া যায় না। [4] অনেকক্ষেত্রে ইনটারনেটের অসত্য বা অর্ধসত্য তথ্য গবেষণার গুণগত মান কমিয়ে দেয়।
৭. আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনার জন্য সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র তথ্য সরবরাহ করে তার কয়েকটির নাম লেখো।
❏ ব্রিটিশ শাসনকালে প্রকাশিত বিভিন্ন ভারতীয় সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনার জন্য তথ্য সরবরাহ করে থাকে। এসব পত্রপত্রিকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল হিকির ‘বেঙ্গল গেজেট’, মার্শম্যানের ‘দিগদর্শন’ ও ‘সমাচার দর্পণ’, রামমোহন রায় সম্পাদিত ‘সংবাদ কৌমুদি’, ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘সমাচার চন্দ্রিকা’, অক্ষয়কুমার দত্ত সম্পাদিত ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’, ঈশ্বর গুপ্ত সম্পাদিত ‘সংবাদ প্রভাকর’; বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘বঙ্গদর্শন’, দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ সম্পাদিত ‘সোমপ্রকাশ’, হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ প্রভৃতি।
৮. ইতিহাসের উপাদানরূপে সংবাদপত্রের গুরুত্ব কী?
❏ ইতিহাসের উপাদানরূপে সংবাদপত্রের প্রধান গুরুত্বগুলি হল— [1] সংবাদপত্রগুলিতে উল্লিখিত সমসাময়িক রাজনৈতিক খবরা-খবর থেকে সমকালীন রাজনৈতিক ইতিহাস জানা যায়। [2] সংবাদপত্রগুলিতে মুদ্রিত সমসাময়িক সমাজ ও সংস্কৃতির খবরাখবর থেকে সেই সময়ের সমাজ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা যায়। [3] সংবাদপত্রে মুদ্রিত সমকালীন সরকার ও রাষ্ট্রপরিচালনার বিভিন্ন খবর থেকে সেই সময়ের রাষ্ট্রীয় ইতিহাস জানা সম্ভব। [4] জনগণের অসন্তোষ, ক্ষোভ, বিদ্রোহ প্রভৃতি বিষয়েও সংবাদপত্র থেকে জানা যায়। [5] কোনো ঘটনা সম্পর্কে জনমত কোন দিকে তাও সংবাদপত্র থেকে জানা যায়।
৯. সংবাদপত্র এবং সাময়িকপত্রের মধ্যে পার্থক্য কী?
❏ সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্রের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল— [1] সাধারণত সংবাদপত্র প্রতিদিন প্রকাশিত হয়। কিন্তু সাময়িকপত্র একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রকাশিত হয়। [2] সংবাদপত্রের মুদ্রণে রোজকার খবরাখবর গুরুত্ব পায়। সাময়িকপত্রে রোজকার খবরের পরিবর্তে সমকালীন বাছাই করা বিষয় গুরুত্ব পায়। [3] সংবাদপত্রের পৃষ্ঠা আকারে বড়ো হয় এবং সেগুলো বাঁধানো থাকে না। অন্যদিকে, সাময়িকপত্রের পৃষ্ঠাগুলো অপেক্ষাকৃত ছোটো হয় এবং সাধারণত তা বইয়ের মতো বাঁধাই করা হয়।
১০. ব্রিটিশ শাসনকালে প্রকাশিত ভারতীয় সংবাদপত্রগুলি থেকে আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনার কী ধরনের তথ্যাদি পাওয়া যায়?
❏ ব্রিটিশ শাসনকালে প্রকাশিত ভারতীয় সংবাদপত্রগুলি থেকে তৎকালীন ভারতীয় আর্থসামাজিক অবস্থা, ব্রিটিশ সরকার ও তার সহযোগীদের শোষণ-অত্যাচার, এর বিরুদ্ধে গড়ে-ওঠা বিদ্রোহ ও আন্দোলন প্রভৃতি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্যাদি পাওয়া যায়।
১১. ঐতিহাসিক বিবরণ বা তথ্যসমৃদ্ধ কয়েকটি সরকারি নথিপত্রের উদাহরণ দাও।
❏ ঐতিহাসিক বিবরণ বা তথ্যসমৃদ্ধ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সরকারি নথিপত্র হল—-[1] ফরেস্ট রচিত ‘হিস্ট্রি অব দ্য ইন্ডিয়ান মিউটিনি', [2] স্যার সৈয়দ আহমদ খান রচিত ‘দি কজেস অব ইন্ডিয়ান রিভোল্ট’, [3] কার্জনের স্বরাষ্ট্রসচিব রিজলে রচিত ‘ব্যক্তিগত দিনলিপি’, [4] কে লেপেল গ্রিফিন রচিত বিবরণ প্রভৃতি।
১২. মহাফেজখানা থেকে কীভাবে ইতিহাস জানা যায়?
❏ মহাফেজখানাগুলিতে সমকালীন বিভিন্ন সরকারি প্রতিবেদন, চিঠিপত্র, পুলিশ ও গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। এগুলিতে সমকালীন বিভিন্ন ঘটনার সঠিক তথ্যসমূহ পাওয়া সম্ভব। এইসব তথ্য পড়ে সমকালীন ইতিহাস জানা যায়
১৩. আত্মজীবনী কীভাবে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে?
অথবা, স্মৃতিকথা অথবা আত্মজীবনীকে কীভাবে আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার উপাদানরূপে ব্যবহার করা হয়?
❏ বিভিন্ন ব্যক্তির লেখা আত্মজীবনী ইতিহাসের উপাদান হিসেবে বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হতে পারে—[1] আত্মজীবনী থেকে অনেক সময় সমকালীন সময়ের রাজনৈতিক ঘটনাবলির কথা জানা যায়। [2] আত্মজীবনীতে উল্লিখিত সমকালীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। [3] আত্মজীবনীতে উল্লিখিত সমকালীন আর্থসামাজিক ঘটনাবলিও ইতিহাস রচনায় ব্যবহৃত হতে পারে। [4] আত্মজীবনীতে উল্লিখিত লেখকের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধিগুলি ইতিহাসের মূল্যবান উপাদান হিসেবে কাজে লাগতে পারে।
১৪. আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা কী ?
❏ নিজের জীবন ও সেই সংক্রান্ত ঘটনাগুলো যখন কোনো ব্যক্তি নিজে লিপিবদ্ধ করেন, তখন সেই লিপিবদ্ধ কাহিনিকে আত্মজীবনী বলা হয়। যখন কোনো ব্যক্তি অতীতে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা দীর্ঘদিন পর স্মৃতি থেকে মনে করে লিপিবদ্ধ করেন তখন তা হয়ে ওঠে স্মৃতিকথা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, সব আত্মজীবনীই স্মৃতিকথা; কিন্তু সব স্মৃতিকথাই আত্মজীবনী নয়।
১৫. আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদানসমৃদ্ধ কয়েকটি আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার উদাহরণ দাও।
❏ আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদানসমৃদ্ধ কয়েকটি আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার উদাহরণ হল—[1] বিপিনচন্দ্র পালের ‘সত্তর বৎসর’, [2] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জীবনস্মৃতি', [3] সরলাদেবী চৌধুরানীর ‘জীবনের ঝরাপাতা’, [4] মহাত্মা গান্ধির ‘দ্য স্টোরি অব মাই এক্সপেরিমেন্টস উইথ ট্রুথ', [5] সুভাষচন্দ্র বসুর 'অ্যান ইন্ডিয়ান পিলগ্রিম' (অসমাপ্ত), [6] জওহরলাল নেহরুর ‘অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ প্রভৃতি।
১৬. ইন্দিরাকে লেখা জওহরলাল নেহরুর চিঠিগুলির নাম কী? এই চিঠিগুলির হিন্দি অনুবাদ কে করেন?
❏ ইন্দিরাকে লেখা জওহরলাল নেহরুর লেখা চিঠিগুলির নাম হল— “লেটার্স ফ্রম আ ফাদার টু হিজ ডটার”। বিখ্যাত হিন্দি ঔপন্যাসিক মুন্সি প্রেমচাঁদ ‘পিতা কে পত্ৰ পুত্ৰী কে নাম' শিরোনামে এই চিঠিগুলির হিন্দি অনুবাদ করেন।
১৭. বিপিনচন্দ্র পালের লেখা আত্মজীবনীর নাম কী ? এই গ্রন্থ থেকে ইতিহাস রচনার জন্য কী ধরনের তথ্য পাওয়া যায়?
❏ বিপিনচন্দ্র পালের লেখা আত্মজীবনীর নাম ‘সত্তর বৎসর। ‘সত্তর বৎসর’ গ্রন্থটি থেকে বিপিনচন্দ্র পালের সঙ্গে আনন্দমোহন বসু, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ জাতীয় নেতার ঘনিষ্ঠতা, তাঁর ব্রাষ্মসমাজে যোগদান, স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর ঝাঁপিয়ে পড়া, স্বদেশি, বয়কট, পূর্ণ স্বরাজ প্রভৃতি আন্দোলনে তাঁর অংশগ্রহণ প্রভৃতি তথ্য পাওয়া যায় যেগুলি আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
১৮. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আত্মজীবনীর নাম কী? এই গ্রন্থ থেকে ইতিহাস রচনার জন্য কী ধরনের তথ্য পাওয়া যায়?
❏ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আত্মজীবনীর নাম হল ‘জীবনস্মৃতি’। ‘জীবনস্মৃতি' গ্রন্থটি থেকে ঠাকুরবাড়ির নানা তথ্য, তৎকালীন ইংরেজি ভাষা ও বিদেশি প্রথা সম্পর্কে বাঙালি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি, হিন্দুমেলা সম্পর্কে নানা তথ্য, স্বদেশিয়ানার প্রতি বাঙালিদের আগ্রহ ও উদ্যোগ প্রভৃতি সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া যায়, যেগুলি আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
১৯. সরলাদেবী চৌধুরানীর লেখা আত্মজীবনীর নাম কী? এই গ্রন্থ থেকে ইতিহাস রচনার জন্য কী ধরনের তথ্য পাওয়া যায়?
❏ সরলাদেবী চৌধুরানীর লেখা আত্মজীবনীর নাম হল ‘জীবনের ঝরাপাতা'। গ্রন্থটি থেকে ভারতের কৃষক ও শ্রমিকদের ওপর ব্রিটিশ ও তাদের সহযোগীদের শোষণ-অত্যাচার, ব্রিটিশ-বিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন, স্বদেশি আন্দোলন, ঠাকুরবাড়ির সাংস্কৃতিক চর্চা প্রভৃতি সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া যায়, যেগুলি আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
২০. আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনার প্রধান উপাদানগুলি কী?
❏ আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনার প্রধান উপাদানগুলি হল— [1] সরকারি নথিপত্র, [2] আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা, [3] ব্যক্তিগত চিঠিপত্র, [4] সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র।
২১. ইতিহাসের উপাদান হিসেবে সরকারি নথিপত্রগুলি মূলত কী কী?
❏ ইতিহাসের উপাদান হিসেবে সরকারি নথিপত্রগুলি হল মূলত পুলিশ ও গোয়েন্দাদের রিপোর্ট, সরকারি আধিকারিক ও দপ্তরগুলির প্রদত্ত বিভিন্ন বিবরণ, প্রতিবেদন, চিঠিপত্র প্রভৃতি।
২২. সরকারি নথিপত্র থেকে ঐতিহাসিক সত্য উদ্ঘাটন করা যায় এমন একটি উদাহরণ দাও।
❏ সরকারি নথিপত্র থেকে ঐতিহাসিক সত্য উদ্ঘাটন করা যায় এমন একটি উদাহরণ হল—স্বামী বিবেকানন্দ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের উদ্যোগকে ব্রিটিশ সরকার যে সুনজরে দেখত না তা সমকালীন সরকারি নথিপত্র থেকে জানা গেছে।
২৩. ব্রিটিশ আমলের পুলিশ, গোয়েন্দা প্রমুখের বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে কী ধরনের ঐতিহাসিক তথ্যাদি জানা যায়?
❏ ব্রিটিশ আমলের পুলিশ, গোয়েন্দা প্রমুখের বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে বিভিন্ন ব্রিটিশ-বিরোধী গণ আন্দোলন, বিদ্রোহ, বিপ্লবী আন্দোলন, গুপ্ত সমিতির কার্যকলাপ প্রভৃতি সম্পর্কে বিভিন্ন ঐতিহাসিক তথ্যাদি জানা যায়।
২৪. সরকারি নথিপত্র বলতে কী বোঝায়?
❏ বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী, সেনাপতি, সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা সমকালীন বিভিন্ন প্রত্যক্ষ ঘটনা সম্পর্কে যে তথ্যাদি লিখে গিয়েছেন সেসব সরকারি নথিপত্রের বিবরণ নামে পরিচিত।
২৫. ইতিহাসের উপাদান হিসেবে সরকারি নথিপত্র কেন গুরুত্বপূর্ণ?
❏ ইতিহাসের উপাদান হিসেবে সরকারি নথিপত্রের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কারণ—[1] সরকারি নথিপত্র পাঠ, পুনর্পাঠ ও বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে সমসাময়িক নানা ঘটনার পিছনে সরকারের ভূমিকা ও মনোভাব স্পষ্টভাবে জানা যায়। [2] আধুনিক ভারতের ইতিহাস পর্যালোচনায় ঔপনিবেশিক শাসকের দৃষ্টিকোণ থেকে ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনার চর্চা সম্ভব হয়।
২৬. সরকারি নথিপত্রের বিবরণ থেকে প্রাপ্ত একটি ঐতিহাসিক তথ্যের উদাহরণ দাও।
❏ সরকারি নথিপত্রের বিবরণ থেকে প্রাপ্ত একটি ঐতিহাসিক তথ্যের উদাহরণ হল সিপাহি বিদ্রোহের (১৮৫৭ খ্রি.) প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ফরেস্ট তাঁর ‘হিস্ট্রি অব দি ইন্ডিয়ান মিউটিনি’ গ্রন্থটি লিখেছেন যা থেকে সিপাহি বিদ্রোহের নানা তথ্য পাওয়া যায়।
২৭.আধুনিককালে নারী ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষকের নাম লেখো।
❏ আধুনিককালে নারী ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষক হলেন জোয়ান কেলি, গের্ডা লার্নার, জোয়ান স্কট, নীরা দেশাই, জেরাল্ডিন ফোর্বস, বি আর নন্দ, এম এন শ্রীনিবাস, কমলা ভাসিন প্রমুখ।
২৮. নারীর ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থের নাম উল্লেখ করো।
❏ নারীর ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল জোয়ান কেলি-র ‘ডিড উইমেন হ্যাভ আ রেনেসাঁ?’, গের্ডা লার্নার-এর ‘দি ক্রিয়েশন অব প্যাট্রিয়ার্কি’, জোয়ান স্কট-এর ‘জেন্ডার অ্যান্ড দ্য পলিটিক্স অব হিস্ট্রি’, নীরা দেশাই-এর ‘উইমেন ইন মডার্ন ইন্ডিয়া’, জেরাল্ডিন ফোর্বস-এর ‘উইমেন ইন মডার্ন ইন্ডিয়া’, বি আর নন্দ-এর ‘দি ইন্ডিয়ান উইমেন : ফ্রম পর্দা টু মডার্নিটি’, এম এন শ্রীনিবাসের ‘দি চেঞ্জিং পজিশন অব ইন্ডিয়ান উইমেন’, কমলা ভাসিনের ‘হোয়াট ইজ প্যাট্রিয়ার্কি’, চিত্রা ঘোষের ‘বাংলা রাজনীতি ও নারী আন্দোলন’, মালবিকা কারলেকর-এর ‘ভয়েসেস ফ্রম উইদিন’ প্রভৃতি।
২৯. চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষকের নাম লেখো।
❏ চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষক হলেন দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, ডেভিড আরনল্ড, পার্থসারথি চক্রবর্তী, তপন চক্ৰবৰ্তী প্রমুখ ৷
৩০. চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থের নাম উল্লেখ করো।
❏ চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থ হল দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের ‘প্রাচীন ভারতে চিকিৎসাবিজ্ঞান’, ডেভিড আরনল্ড-এর ‘সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড মেডিসিন ইন কলোনিয়াল ইন্ডিয়া’, পার্থসারথি চক্রবর্তীর ‘চিকিৎসাবিজ্ঞানের আজব কথা’, তপন চক্রবর্তীর ‘চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাস' প্রভৃতি।
৩১. নারী ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব কী?
❏ নারী ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব হল, এর দ্বারা — [1] ইতিহাসে নারীর ভূমিকা সম্পর্কে জানা যায়। [2] ইতিহাসে নারীর যথার্থ ভূমিকা ও অবদানকে মর্যাদা দেওয়া হয়।
৩২. শহরের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো।
❏ শহরের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল— পূর্ণেন্দু পত্রীর ‘কলকাতা সংক্রান্ত’, নিখিল সরকারের (শ্রীপান্থ) ‘কলকাতা’, রাধারমণ মিত্রের ‘কলিকাতা দর্পণ', সৌমিত্র শ্রীমানীর ‘কলিকাতা কলকাতা’ (সম্পা.), বিজয়কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়-এর ‘শহর বহরমপুর', শামসুদ্দোহা চৌধুরী-র ‘প্রাচীন নগরী সোনারগাঁও’, মুনতাসীর মামুন-এর ‘ঢাকা : স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী’, পার্থ দত্ত-র ‘আরবানাইজেশন, লোকাল পলিটিক্স অ্যান্ড লেবার প্রোটেস্ট’, নারায়ণী গুপ্ত-র ‘দ্য দিল্লি অমনিবাস’, রাধাপ্রসাদ গুপ্তর ‘কলকাতার ফিরিওয়ালার ডাক আর রাস্তার আওয়াজ’ প্রভৃতি।
৩৩. সামরিক ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব কী?
❏ সামরিক ইতিহাসচর্চার প্রধান গুরুত্ব হল, এর দ্বারা—[1] সময়ের সঙ্গে যুদ্ধের বিবর্তন সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা যায়। [2] যুদ্ধে কোনো শক্তির জয় বা পরাজয়ের ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় ইত্যাদি।
৩৪. সামরিক ইতিহাসচর্চা করেছেন এমন কয়েকজন গবেষকের নাম উল্লেখ করো।
❏ সামরিক ইতিহাসচর্চা করেছেন এমন কয়েকজন গবেষক হলেন বার্নেট, কোরেলি, শেলফোর্ড বিডওয়েল, জন টেরাইন, রিচার্ড কোন, রজার স্পিলার, জন হোয়াইট ক্লে, যদুনাথ সরকার, সুরেন্দ্রনাথ সেন, রবার্ট আর্ম, সুবোধ ঘোষ, দীপ্তনীল রায়, নিখিলেশ ভট্টাচার্য, জি এস সাঁধু, উমা প্রসাদ, কৌশিক রায় প্রমুখ।
৩৫. সামরিক ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো।
❏ সামরিক ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল ‘বার্নেট-এর ‘ব্রিটেন অ্যান্ড হার আর্মি’, জন টেরাইন-এর ‘দ্য আর্মি ইন মডার্ন ফ্রান্স’, রজার স্পিলার-এর ‘আমেরিকান মিলিটারি রিডার্স’, জন হোয়াইট ক্লে-এর ‘আমেরিকান মিলিটারি হিস্ট্রি’, যদুনাথ সরকারের ‘মিলিটারি হিস্ট্রি অব ইন্ডিয়া’, সুরেন্দ্রনাথ সেনের ‘মিলিটারি সিস্টেম অব মারাঠাস’, রবার্ট আর্ম-এর ‘হিস্ট্রি অব মিলিটারি ট্রানজ্যাকশনস ইন হিন্দুস্তান', সুবোধ ঘোষের ‘ভারতীয় ফৌজের ইতিহাস', দীপ্তনীল রায় ও নিখিলেশ ভট্টাচার্যের ‘অস্ত্রচর্চা’ (সম্পা), জি এস সাঁধুর ‘মিলিটারি হিস্ট্রি অব মেডিয়াভাল ইন্ডিয়া’, উমা প্রসাদের ‘মিলিটারি কস্টিউম অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট্রিমেন্টস ইন অ্যানসেন্ট ইন্ডিয়া’, কৌশিক রায়ের ‘দ্য আর্মি ইন ব্রিটিশ ইন্ডিয়া’ প্রভৃতি।
৩৬. পরিবেশের ইতিহাসের গুরুত্ব কী?
❏ পরিবেশের ইতিহাসের গুরুত্ব হল – [1] মানবসভ্যতার অগ্রগতির ক্ষেত্রে পরিবেশের ভূমিকা চিহ্নিত করে পরিবেশ সচেতনতা ও পরিবেশ সুরক্ষার ব্যবস্থা করা। [2] পরিবেশের সংকটজনক পরিস্থিতি, পরিবেশ বিপর্যয় এবং তার ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষকে অবগত করা। সর্বোপরি, বাসস্থানের ওপর পরিবেশগত গুরুত্ব আরোপ করা।
৩৭. পরিবেশ রক্ষার দাবিতে ভারতে শুরু হওয়া দুটি আন্দোলনের উল্লেখ করো।
❏ পরিবেশ রক্ষার দাবিতে ভারতে শুরু হওয়া দুটি আন্দোলন হল— [1] চিপকো আন্দোলন (১৯৭৪ খ্রি.) এবং [2] নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন (১৯৮৫ খ্রি.)।
৩৮. পরিবেশের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষকের নাম উল্লেখ করো।
❏ পরিবেশের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন উল্লেখযোগ্য গবেষক হলেন র্যাচেল কারসন, আলফ্রেড ক্রসবি, রিচার্ড গ্রোভ, ইরফান হাবিব, মাধব গ্যাডগিল, রামচন্দ্র গুহ, মহেশ রঙ্গরাজন, বসন্ত সবেরওয়াল প্রভৃতি।
৩৯. পরিবেশের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থের নাম উল্লেখ করো।
❏ পরিবেশের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল র্যাচেল কারসন-এর ‘সাইলেন্ট স্প্রিং’, আলফ্রেড ক্রসবি-এর ইকোলজিকাল ইম্পিরিয়ালিজম’, রিচার্ড গ্রোভ-এর ‘গ্রিন ইম্পিরিয়ালিজম’, ইরফান হাবিবের ‘মানুষ ও পরিবেশ’, মাধব গ্যাডগিল ও রামচন্দ্র গুহর ‘ইকোলজি অ্যান্ড ইকুইটি’, মহেশ রঙ্গরাজনের ‘এনভায়রনমেন্টাল হিস্ট্রি’, বসন্ত সবেরওয়াল-এর ‘প্যাস্টোরাল পলিটিক্স’ প্রভৃতি।
৪০. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব কী?
❏ বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাসচর্চার প্রধান গুরুত্বগুলি হল, এর দ্বারা – [1] বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার বিবর্তনের ধারাটি অনুধাবন করা যায়। [2] সমকালীন আর্থসামাজিক ও অন্যান্য দিক প্রভাবিত হওয়ার মাত্রা বিচার করা যায়।
৪১. বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষকের নাম লেখো।
❏ বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষক হলেন টমাস কুহন, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, জে ডি বার্নাল প্রমুখ।
৪২. বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থের নাম উল্লেখ করো।
❏ বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থ হল টমাস কুহন এর ‘দ্য স্ট্রাকচার অব সায়েন্টিফিক রেভোলিউশনস’, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের ‘আ হিস্ট্রি অব হিন্দু কেমিস্ট্রি’, জে ডি বার্নাল-এর ‘হিস্ট্রি অব সায়েন্স’, দীপক কুমারের ‘সায়েন্স অ্যান্ড দি রাজ’ প্রভৃতি।
৪৩. আধুনিক ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে ফোটোগ্রাফি বা আলোকচিত্রের গুরুত্ব কী?
❏ আধুনিক ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে ফোটোগ্রাফি বা আলোকচিত্রের প্রধান গুরুত্বগুলি হল—[1] ফোটোগ্রাফি ইতিহাসচর্চার নতুন উপাদান সরবরাহ করতে পারে। [2] প্রচলিত তথ্য বা ঘটনার সত্যাসত্য ফোটোগ্রাফির দ্বারা যাচাই করা যেতে পারে।
৪৪. ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফের ব্যবহারের সময় কেন সচেতন থাকা দরকার?
❏ ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফের ব্যবহারের সময় সচেতন থাকা দরকার। কারণ—[1] অনেক সময় ফোটোগ্রাফির বিষয়বস্তু নির্বাচনের ক্ষেত্রে ফোটোগ্রাফারের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও ব্যক্তিগত ভালোলাগা বড়ো হয়ে ওঠে। [2] ফোটোগ্রাফার নিজের কোনো ভাবনা প্রমাণ করার জন্য অনেক সময় প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করে নিজের মনের মতো ছবি তুলতে পারেন। এই ধরনের ফোটোগ্রাফ গবেষকদের বিভ্রান্ত করে।
৪৫. যানবাহন ও ও যোগাযোগের ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব কী?
❏ যানবাহন ও যোগাযোগের ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব হল, এর দ্বারা- [1] যানবাহন ও যোগাযোগের বিবর্তন সম্পর্কে জানা যায়। [2] এই বিবর্তন বিভিন্ন সমাজ ও সভ্যতাকে কতটা প্রভাবিত করেছে সে বিষয়ে জ্ঞানলাভ করা যায়।
৪৬. যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ইতিহাসকে প্রভাবিত করেছে এমন কয়েকটি উদাহরণ দাও।
❏ যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ইতিহাসকে প্রভাবিত করেছে। যেমন—[1] পঞ্চদশ শতকে জাহাজ নির্মাণ ও সামুদ্রিক অভিযানের অগ্রগতি এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উপনিবেশের প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছে।[2] ভারতে রেলপথের প্রতিষ্ঠা ভারতীয়দের ঐক্য ও জাতীয়তাবোধের বিকাশে সহায়তা করেছে। [3] অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় জাতিগঠনে দেশের রেলপথের ভূমিকা রয়েছে।
৪৭. রেলপথের প্রসার এক-এক দেশে এক-এক রকম প্রভাব ফেলেছে—এমন উদাহরণ দাও।
❏ রেলপথের প্রসার এক-এক দেশে এক-এক রকম প্রভাব ফেলেছে।যেমন, রেলপথের প্রতিষ্ঠা—[1] অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় জাতিগঠনে সহায়তা করেছে। [2] ফ্রান্স ও জার্মানিতে শিল্পবিপ্লবের প্রসারে সহায়তা করেছে। [3] ভারতীয় অর্থসম্পদ শোষণের সুযোগ করে দিয়েছে।
৪৮. ভারতে রেলপথের প্রতিষ্ঠার কয়েকটি প্রভাব উল্লেখ করো।
❏ ভারতে রেলপথের প্রতিষ্ঠা ও প্রসার বিভিন্ন বিষয়কে প্রভাবিত করে। রেলপথের প্রসারের ফলে – [1] ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রসারের সুবিধা হয়। [2] ভারতের অর্থসম্পদ ইংল্যান্ডে পাচার করা শুরু হয়। [3] ভারতীয়দের ঐক্য ও জাতীয়তাবোধ প্রতিষ্ঠার সুযোগ আসে। [4] ভারতের বিপ্লবীরা রেলপথ ব্যবহার করে তাঁদের বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ড আরও ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়। [5] ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাবসা বাণিজ্যের সুবিধা হয়।
৪৯. ব্রিটিশরা ভারতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির উদ্দেশ্যে কী কী ব্যবস্থা চালু করে?
❏ ব্রিটিশরা ভারতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির উদ্দেশ্যে যেসব ব্যবস্থা চালু করে সেগুলি হল— [1] রেলপথের প্রতিষ্ঠা, [2] ডাক ব্যবস্থার উন্নতি, [3] টেলিগ্রাফ ব্যবস্থার প্রবর্তন প্রভৃতি।
৫০. যানবাহন-যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাসচর্চায় খ্যাতি অর্জন করেছেন এমন কয়েকজন গবেষকের নাম লেখো।
❏ যানবাহন-যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাসচর্চার খ্যাতি অর্জন করেছেন এমন কয়েকজন গবেষক হলেন জন আর্মস্ট্রং, ইয়ান কের, সুনীল কুমার মুন্সি, নীতিন সিনহা, গৌতম চট্টোপাধ্যায়, আর আর ভাণ্ডারী প্রমুখ।
৫১. যানবাহন-যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো।
❏ যানবাহন-যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাসচর্চা বিষয়ক উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ হল—জন আর্মস্ট্রং-এর ট্রান্সপোর্ট হিস্ট্রি’, ইয়ান কের এর ‘ইঞ্জিস অব চেঞ্জ—দ্য রেলরোডস দ্যাট মেড ইন্ডিয়া’, সুনীল কুমার মুন্সির ‘জিওগ্রাফি অব ট্রান্সপোর্টেশন ইন ইস্টার্ন ইন্ডিয়া আন্ডার ব্রিটিশরাজ', নীতিন সিন্হার ‘কমিউনিকেশন অ্যান্ড কলোনিয়ালিজম ইন ইস্টার্ন ইন্ডিয়া', গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের ইউরোপ অ্যান্ড দ্য হুগলি’, আর আর ভাণ্ডারীর ‘ইন্ডিয়ান রেলওয়েজ : গ্লোরিয়াস ১৫০ ইয়ার্স’ প্রভৃতি।
৫২. শহরের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষকের নাম লেখো।
❏ শহরের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষক হলেন রাধাপ্রসাদ গুপ্ত, পূর্ণেন্দু পত্রী, নিখিল সরকার, রাধারমণ মিত্র, সৌমিত্র শ্রীমানী, বিজয়কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, শামসুদ্দোহা চৌধুরী, মুনতাসীর মামুন, পার্থ দত্ত, নারায়ণী গুপ্ত প্রমুখ।
৫৩. পোশাক-পরিচ্ছদের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো।
❏ পোশাক-পরিচ্ছদের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থ হল মলয় রায়-এর ‘বাঙালির বেশবাস : বিবর্তনের রূপরেখা’, কার্ল কোহলার-এর ‘পোশাকের ইতিহাস’, জে ফর্নস ওয়াটসন-এর ‘দ্য টেক্সটাইল ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যান্ড দ্য কস্টিউম অব দ্য পিপল অব ইন্ডিয়া', 'মাইকেল ডেভিস-এর ‘আর্ট অব ড্রেস ডিজাইনিং, এম্মা টারলো-র ‘ক্লোদিং ম্যাটারস : ড্রেস অ্যান্ড আইডেনটিটি ইন ইন্ডিয়া’প্রভৃতি।
৫৪. সংগীতের ইতিহাস নিয়ে চর্চা করছেন এমন কয়েকজন গবেষকের নাম লেখো।
❏ সংগীতের ইতিহাস নিয়ে চর্চা করছেন এমন কয়েকজন গবেষক হলেন উমেশ জোশী, রাজকুমার, প্যাট্রিক মৌতাল, চার্লস রাসেল ডে, সুকুমার রায়, সুধীর চক্রবর্তী, মৃদুলকান্তি চক্রবর্তী প্রমুখ।
৫৫. সংগীতের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো।
❏ সংগীতের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থ হল উমেশ জোশীর ‘ভারতীয় সংগীত কা ইতিহাস, রাজকুমার-এর ‘এসেজ অন ইন্ডিয়ান মিউজিক', প্যাট্রিক মৌতাল-এর ‘কমপ্যারেটিভ স্টাডি অব হিন্দুস্তানি রাগাস', সুকুমার রায়-এর ‘বাংলা সংগীতের রূপ, করুণাময় গোস্বামীর‘বাংলা গানের বিবর্তন', সুধীর চক্রবর্তীর ‘বাংলা গানের সন্ধানে', মৃদুলকান্তি চক্রবর্তীর ‘বাংলা গানের ধারা প্রভৃতি।
৫৬. আধুনিক ভারতের কয়েকজন প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পীর নাম লেখো।
❏ আধুনিক ভারতের কয়েকজন প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী হলেন উদয়শঙ্কর, অমলাশঙ্কর, রুক্মিনী দেবী, মল্লিকা সারাভাই, পণ্ডিত বিরজু মহারাজ, অনিতা রত্নম প্রমুখ।
৫৭. নৃত্যকলার ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষকের নাম লেখো।
❏ নৃত্যকলার ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষক হলেন ক্যারল ওয়েলস, জে অ্যাডশিড ল্যান্সডেল, ওয়াং কেফেন, রাগিনী দেবী, আকৃতি সিন্হা, শোভনা গুপ্তা, গায়ত্রী চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
৫৮. নৃত্যের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো।
❏ নৃত্যের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ হল— ক্যারল ওয়েলস-এর ‘ডান্স—এ ভেরি সোশ্যাল হিস্ট্রি', জে অ্যাডশিড ল্যান্সডেল সম্পাদিত ‘ড্যান্স হিস্ট্রি : অ্যান ইনট্রোডাকশন', ওয়াংকেফেন-এর ‘দ্য হিস্ট্রি অব চাইনিজ ড্যান্স, রাগিনী দেবী-র ‘ড্যান্স ডায়ালেক্ট অব ইন্ডিয়া, আকৃতি সিন্হা-র ‘লেট’স নো ড্যান্সেস অব ইন্ডিয়া', শোভনা গুপ্তার ‘ড্যান্স অব ইন্ডিয়া, গায়ত্রী চট্টোপাধ্যায়ের
‘ভারতের নৃত্যকলা' প্রভৃতি।
৫৯. ইতিহাসচর্চায় নাটকের ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ কেন?
❏ ইতিহাসচর্চায় নাটকের ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, নাটকের ইতিহাসচর্চা থেকে– [1] কোনো সমাজের সমকালীন বিনোদন সম্পর্কে আভাস পাওয়া যায়। [2] বহু নাটক সমকালীন সমাজজীবনের প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে। তাই সেগুলি থেকে সমকালীন সমাজের বহু ঐতিহাসিক উপাদান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। [3] কোনো নাটক কীভাবে শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে মানুষকে প্রতিবাদী করে তুলেছে তা জানা যায়। [4] নাটক কীভাবে লোকশিক্ষা দেয় তা জানা যায়।
৬০. আধুনিক বাংলা নাটকে অসামান্য অবদান রেখেছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তির নাম লেখো।
❏ আধুনিক বাংলা নাটকে অসামান্য অবদান রেখেছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তি হলেন মধুসূদন দত্ত, দীনবন্ধু মিত্র, গিরিশচন্দ্র ঘোষ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, শিশির ভাদুড়ী, শম্ভু মিত্র, উৎপল দত্ত প্রমুখ।
৬১. নাটকের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষকের নাম লেখো।
❏ নাটকের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষক হলেন ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্যজীবন মুখোপাধ্যায়, আশুতোষ ভট্টাচার্য, বাবুল ভট্টাচার্য, সেলিম আল দীন, সাইমন জাকারিয়া, বালদুন ধিংরা প্রমুখ।
৬২. নাটকের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের নাম লেখো।
❏ নাটকের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল-ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বঙ্গীয় নাট্যশালার ইতিহাস’, সত্যজীবন মুখোপাধ্যায়ের ‘দৃশ্যকাব্য পরিচয়’, আশুতোষ ভট্টাচার্যের ‘বাংলা নাট্যসাহিত্যের ইতিহাস', সেলিম আল দীনের ‘মধ্যযুগের বাংলা নাটক’, সাইমন জাকারিয়ার ‘বাংলাদেশের লোকনাটক : বিষয় ও আঙ্গিক বৈচিত্র্য’, বালদুন ধিংরার ‘এ ন্যাশনাল থিয়েটার ফর ইন্ডিয়া’, প্রভৃতি।
৬৩. স্থাপত্যশিল্প নিয়ে ইতিহাসচর্চা করেছেন এমন কয়েকজন গবেষকের নাম লেখো।
❏ স্থাপত্যশিল্প নিয়ে ইতিহাসচর্চা করেছেন এমন কয়েকজন গবেষক হলেন জে ফার্গুসন, জর্জ মিশেল, পার্সি ব্রাউন, প্যাট্রিক নাটগেন্স, অমিয়কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, তারাপদ সাঁতরা, প্রণব রায়, হিতেশরঞ্জন সান্যাল, রবিউল হুসাইন, জাকারিয়া প্রমুখ।
৬৪. স্থাপত্যশিল্পের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো।
❏ স্থাপত্যশিল্পের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ হল জে ফার্গুসন-এর ‘হিস্ট্রি অব ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইস্টার্ন আর্কিটেকচার, জর্জ মিশেল-এর ‘ব্রিক টেম্পল অব বেঙ্গল’, পার্সি ব্রাউন-এর 'ইন্ডিয়ান আর্কিটেকচার’, প্যাট্রিক নাটগেন্সের ‘দ্য স্টোরি অব আর্কিটেকচার’, অমিয়কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পশ্চিমবঙ্গের পুরাসম্পদ’ (সম্পা), তারাপদ সাঁতরার ‘কলকাতার মন্দির মসজিদ স্থাপত্য', হিতেশরঞ্জন সান্যালের ‘বাংলার মন্দির’, রবিউল হুসাইনের ‘বাংলাদেশের স্থাপত্য সংস্কৃতি’, জাকারিয়ার ‘বাংলাদেশের প্রাচীন কীর্তি’ প্রভৃতি।
৬৫. আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা গুরুত্বপূর্ণ কেন?
❏ স্থানীয় ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব হল, স্থানীয় ইতিহাসচর্চার দ্বারা— [1] স্থানীয় অঞ্চলের সমাজ, অর্থনীতি, শিল্পকলা প্রভৃতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। [2] জাতীয় ইতিহাসচর্চার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপাদান পাওয়া যায়। আঞ্চলিক ইতিহাসের মাধ্যমেই জাতীয় ইতিহাস পূর্ণাঙ্গ রূপ নিতে পারে।
৬৬. স্থানীয় ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষকের নাম লেখো।
❏ স্থানীয় ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষক হলেন— কালীকমল সার্বভৌম, কুমুদনাথ মল্লিক, নিখিলনাথ রায়, সতীশচন্দ্র মিত্র, রাধারমণ সাহা, কালীনাথ চৌধুরী, মনোরঞ্জন চন্দ্র, শ্রীকেদারনাথ মজুমদার, ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুধীরকুমার মিত্র, ড. রতনলাল চক্রবর্তী প্রমুখ।
৬৭. স্থানীয় ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো।
❏ স্থানীয় ইতিহাসচর্চা বিষয়ক উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ হল— কালীকমল সার্বভৌম রচিত ‘সেতিহাস বগুড়ার বৃত্তান্ত, কুমুদনাথ মল্লিক রচিত ‘নদীয়া কাহিনি, নিখিলনাথ রায় রচিত ‘মুর্শিদাবাদ কাহিনি, সতীশচন্দ্র মিত্র রচিত ‘যশোহর খুলনার ইতিহাস’, রাধারমণ সাহা রচিত ‘পাবনা জেলার ইতিহাস’, কালীনাথ চৌধুরী রচিত ‘রাজশাহীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস', মনোরঞ্জন চন্দ্র রচিত ‘মল্লভূম বিষ্ণুপুরের ইতিহাস, ভগবতীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘কোচবিহারের ইতিহাস, সুধীরকুমার মিত্র রচিত ‘হুগলি জেলার ইতিহাস প্রভৃতি।
৬৮. প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্র কোনটি? এটি কার পরিচালনায় কবে মুক্তি পায়?
❏ প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্র হল ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’ (নির্বাক)। ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’ দাদাসাহেব ফালকের পরিচালনায় ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পায়।
৬৯. প্রথম বাংলা চলচ্চিত্র কোনটি? এটি কার পরিচালনায় কবে মুক্তি পায়?
❏ প্রথম বাংলা চলচ্চিত্র হল ‘বিল্বমঙ্গল’ (নির্বাক)। ‘বিল্বমঙ্গল’ জ্যোতিষ ব্যানার্জির মতান্তরে রোস্তমজি দুতিওয়ালা পরিচালনায় ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পায়।
৭০. চলচ্চিত্রের ইতিহাসচর্চা করেছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তির নাম লেখো।
❏ চলচ্চিত্রের ইতিহাসচর্চা করেছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তি হলেন ঋত্বিক কুমার ঘটক, সত্যজিৎ রায়, তপন সিংহ, ফারহানা মিলি, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, অপূর্ব কুণ্ডু, অনুপম হায়াৎ, ফ্রান্সেসকো ক্যাসেটি, পামকুক, জিওফ্রে নাওয়েল স্মিথ প্রমুখ।
৭১. চলচ্চিত্রের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো।
❏ চলচ্চিত্রের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল— ঋত্বিক কুমার ঘটকের ‘চলচ্চিত্র, মানুষ ও আরও কিছু’, সত্যজিৎ রায়ের ‘একেই বলে শুটিং ও ‘বিষয় চলচ্চিত্র’, তপন সিংহের ‘চলচ্চিত্র আজীবন, ফারহানা মিলির ‘সিনেমা এলো কেমন করে, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের ‘দেখার রকমফের : ঋত্বিক ও সত্যজিৎ, অপূর্ব কুণ্ডুর ‘ইউরোপের চলচ্চিত্র’, অনুপম হায়াৎ-এর ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের রূপরেখাঁ, ফ্রান্সেসকো ক্যাসেটির ‘থিওরিজ অব সিনেমা, পাম কুকের ‘দ্য সিনেমা বুক’ প্রভৃতি।
৭২. ছবির দৃশ্যশিল্প বলতে কী বোঝায়?
❏ ছবির দৃশ্যশিল্প বলতে মূলত দুই ধরনের ছবিকে বোঝানো হয়। একধরনের ছবি হল শিল্পীর হাতে আঁকা ছবি এবং অন্য ধরনের হল ক্যামেরায় তোলা আলোকচিত্র বা ফোটোগ্রাফি।
৭৩. দৃশ্যশিল্প অর্থাৎ ছবি আঁকা ও ফোটোগ্রাফি নিয়ে ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন উল্লেখযোগ্য গবেষকের নাম লেখো।
❏ দৃশ্যশিল্প অর্থাৎ ছবি আঁকা ও ফোটোগ্রাফি নিয়ে ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক হলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়, অশোক মিত্র, বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়, বিদ্যা দেহেজিয়া, কবিতা সিং, গীতা কাপুর, ড. নীলিমা আফরিন প্রমুখ।
৭৪. দৃশ্যশিল্পের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো।
❏ দৃশ্যশিল্পের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল— অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বাগেশ্বরী প্রবন্ধমালা’, অশোক মিত্রের ‘ভারতের চিত্রকলা, বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়ের ‘চিত্রকথা', বিদ্যা দেহেজিয়ার ‘ইন্ডিয়ান আর্ট’, কবিতা সিং রচিত ‘নিউ ইনসাইট্স ইনটু শিখ আর্ট, গীতা কাপুর রচিত ‘কনটেমপোরারি ইন্ডিয়ান আর্টিস্টস’, ড. নীলিমা আফরিন রচিত ‘বাংলাদেশের শিল্পকলার উৎস সন্ধান’, জন ওয়েড রচিত ‘এ শর্ট হিস্ট্রি অব দি ক্যামেরা' প্রভৃতি।
৭৫. খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষকের নাম লেখো।
❏ খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন খ্যাতনামা গবেষক হলেন কে টি আচয়, প্যাট চ্যাপম্যান, শরীফউদ্দিন আহমেদ, হারভে লেভেনস্টেইন, জোনাথানরাইট, বিজয়া চৌধুরী, হরিপদ ভৌমিক প্রমুখ।
৭৬. হরিপদ ভৌমিক ইতিহাসে বিখ্যাত কেন?
❏ গবেষক হরিপদ ভৌমিক তাঁর ‘রসগোল্লা : বাংলার জগত্মাতানো আবিষ্কার গ্রন্থে দাবি করেছেন, বাংলার নদিয়া জেলার ফুলিয়ায় হারাধন ময়রা আদি রসগোল্লার সৃষ্টিকর্তা। এই কারণে তিনি ইতিহাসে বিখ্যাত।
৭৭. নবীনচন্দ্র দাস কে ছিলেন?
❏ নবীনচন্দ্র দাস ছিলেন কলকাতার বাগবাজারের একজন ময়রা। নদিয়ার ফুলিয়ার হারাধন ময়রার তৈরি করা রসগোল্লা কিছুটা পরিবর্তন করে নবীনচন্দ্র ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে স্পঞ্জ রসগোল্লা তৈরি করেন।
৭৮. মানুষের পোশাক-পরিচ্ছদ থেকে ইতিহাসচর্চার কী ধরনের উপাদান পাওয়া যেতে পারে?
❏ মানুষের পোশাক-পরিচ্ছদ থেকে ইতিহাসচর্চার যে ধরনের উপাদান বা তথ্য পাওয়া যেতে পারে সেগুলি হল – [1] মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা, [2]. সামাজিক রুচিবোধ, [3] সামাজিক উদারতার মাত্রা, [4] লিঙ্গবৈষম্য প্রভৃতি।
৭৯. কবে কোথায় 'দ্য অ্যাসোসিয়েশন অব ড্রেস হিস্টোরিয়ানস' প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? এর উদ্দেশ্য কী ছিল?
❏ ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডে ‘দ্য অ্যাসোসিয়েশন অব ড্রেস হিস্টোরিয়ানস’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ‘দ্য অ্যাসোসিয়েশন অব ড্রেস হিস্টোরিয়ানস’ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য হল পোশাক-পরিচ্ছদের ইতিহাস চর্চা করা।
৮০. পোশাক-পরিচ্ছদের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষকের নাম লেখো।
❏ পোশাক-পরিচ্ছদের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন গবেষক হলেন কার্ল কোহলার, এম্মা টারলো, মলয় রায়, নিরুপমা পুণ্ডির, ত্রৈলোক্যনাথ বসু প্রমুখ।
৮১. রণজিৎ গুহ রচিত নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো।
❏ রণজিৎ গুহ রচিত নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থ হল—[1] সিলেক্টেড সাবলটার্ন স্টাডিজ, [2] এলিমেন্টারি অ্যাসপেক্ট অব পিজেন্ট ইনসারজেন্সি ইন কলোনিয়াল ইন্ডিয়া, [3] সাবলটার্ন স্টাডিজ রিডার : ১৯৮৬-১৯৯৫
৮২. বর্তমানকালে কোনো দেশ বা জাতির জীবনে খেলাধুলার গুরুত্ব কী?
❏ বর্তমানকালে কোনো দেশ বা জাতির জীবনে খেলাধুলার গুরুত্ব হল—[1] কোনো দেশ বা জাতির জাতীয়তাবাদ, সাম্প্রদায়িক অবস্থান, নানান সামাজিক দিক খেলাধুলোর মাধ্যমে প্রকাশ পায়।[2] বিভিন্ন দেশ ও জাতির মধ্যে যোগাযোগ ও সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে খেলাধুলোর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
৮৩. সাম্প্রতিককালে কারা খেলাধুলার ইতিহাসচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন?
❏ সাম্প্রতিককালে জে এ ম্যাসান, রিচার্ড হোল্ট, গৌতম ভট্টাচার্য, রূপক সাহা, বোরিয়া মজুমদার, কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ খেলাধুলার ইতিহাসচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন।
৮৪. খেলাধুলার ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের নাম লেখো।
❏ খেলাধুলার ইতিহাসচর্চা বিষয়ক কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল বোরিয়া মজুমদারের ‘ক্রিকেট ইন কলোনিয়াল ইন্ডিয়া, বোরিয়া মজুমদার ও কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘এ সোশ্যাল হিস্ট্রি অব ইন্ডিয়ান ফুটবল : স্ট্রাইভিং টু স্কোর’, কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘খেলা যখন ইতিহাস', গৌতম ভট্টাচার্যর ‘কাপমহলা’ রূপক সাহার ‘বিদ্রোহী মারাদোনা', উৎপল শুভ্রর ‘বিশ্ব যখন ফুটবলময় প্রভৃতি।
৮৫. মানুষের খাদ্যাভ্যাস থেকে ইতিহাসচর্চার কী ধরনের উপাদান পাওয়া যেতে পারে?
❏ মানুষের খাদ্যাভ্যাস থেকে ইতিহাসচর্চার যে ধরনের উপাদান পাওয়া যেতে পারে সেগুলি হল—–[1] কোনো সমাজের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা, [2] সেই সমাজের খাদ্যাভ্যাস কতখানি অন্য সমাজের দ্বারা প্রভাবিত, [3] স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা প্রভৃতি।
৮৬. 'ঢাকাই খাবার’ কী?
❏ ঢাকা যখন প্রাদেশিক রাজধানী ছিল তখন এখানকার রন্ধনপ্রণালীর সঙ্গে পারসিক খাদ্যরীতির সংমিশ্রণ ঘটে। এর ফলে যে খাবার প্রস্তুত হয় তা ‘ঢাকাই খাবার’ নামে পরিচিত। এর অন্তর্ভুক্ত ছিল খিচুড়ি, হালিম, চালের গুঁড়োর পিঠে প্রভৃতি।
৮৭. ইতিহাস কী?
❏ সাধারণভাবে 'ইতিহাস' হল অতীতের কথা। মানব প্রজাতির আবির্ভাবের সময় থেকে শুরু করে বর্তমানে মানবসভ্যতার চরম উৎকর্ষ লাভের সময় পর্যন্ত যাবতীয় ঘটনাবলি আলোচিত হয় যে শাস্ত্রে, তা-ই ইতিহাস। অন্যভাবে বলতে গেলে, ইতিহাস হল মানবসভ্যতার ধারাবাহিক বিবর্তনের কাহিনি।
৮৮. বর্তমানকালে ইতিহাসের আলোচনায় সমাজের কোন স্তরের মানুষ স্থান পায় ?
❏ বর্তমানকালে ইতিহাসের আলোচনায় সমাজের উচ্চস্তর থেকে নিম্নস্তর পর্যন্ত সমস্ত মানুষ অর্থাৎ রাজা, শাসক, অভিজাত, মধ্যবিত্ত, সাধারণ মানুষ, কৃষক, শ্রমিক, সৈনিক, নারী প্রমুখ সকলেই স্থান পায়।
৮৯. আধুনিক ইতিহাসচর্চার নানা বৈচিত্র্যগুলি উল্লেখ করো।
❏ আধুনিক ইতিহাসচর্চায় বহু নতুন বিষয়ের আলোচনা যুক্ত হওয়ার ফলে তা যথেষ্ট বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ইতিহাসের এসব নতুন বিষয়ের মধ্যে অন্যতম হল নতুন সমাজবিন্যাস, খেলাধুলা, খাদ্যাভ্যাস, শিল্পচর্চা, পোশাক-পরিচ্ছদ, যানবাহন-যোগাযোগ ব্যবস্থা, দৃশ্যশিল্প, স্থাপত্য, স্থানীয় অঞ্চল, শহর, যুদ্ধবিগ্রহ, পরিবেশ, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যা, নারী প্রভৃতির ইতিহাসচর্চা।
৯০. নতুন সামাজিক ইতিহাস' কী? অথবা, সামাজিক ইতিহাস কী?
❏ রাজা-মহারাজা বা অভিজাত সমাজের মানুষের আলোচনা ছাড়াও বর্তমানকালে ইতিহাসে সমাজের নিম্নবর্গের সাধারণ মানুষ, যেমন— কৃষক, শ্রমিক, মজুর, নারী প্রমুখ সকলের আলোচনা করা হয়। বিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে শুরু হওয়া এই ধরনের ইতিহাসচর্চা ‘নতুন সামাজিক ইতিহাস’ নামে পরিচিত। হিস্ট্রি’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশের মধ্য দিয়ে এই গোষ্ঠী গড়ে ওঠে। এই গোষ্ঠীর ইতিহাসচর্চায় সমাজ, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সাধারণ মানুষ, পরিবার, মনস্তত্ত্ব প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয় স্থান পেয়েছে।
৯১. নতুন সামাজিক ইতিহাসের প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলি কী ?
❏ নতুন সামাজিক ইতিহাসের প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলি হল জাতীয় স্তরের রাজনৈতিক ঘটনাবলির বিবরণের বাইরে থাকা সাধারণ মানুষের জাতিগত স্থানীয় পৌর ও সামাজিক জীবন, সংস্কৃতি, জনস্বাস্থ্য, পরিচয়, দারিদ্র্য, গণমাধ্যম প্রভৃতি।
৯২. নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চা বলতে কী বোঝ?
❏ ১৯৮০-র দশক থেকে ভারত-সহ দক্ষিণ এশিয়ায় বিভিন্ন দেশের গবেষকের উদ্যোগে জাতি, শ্রেণি, লিঙ্গ, ধর্ম প্রভৃতি নির্বিশেষে নিম্নবর্গের মানুষদের নিয়ে ইতিহাসচর্চা যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ধারা নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চা বা সাবলটার্ন স্টাডিজ নামে পরিচিত।
৯৩. নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন ঐতিহাসিকের নাম লেখো।
❏ নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন ঐতিহাসিক হলেন—রণজিৎ গুহ, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্ঞানেন্দ্র পাণ্ডে, শাহিদ আমিন, সুমিত সরকার, দীপেশ চক্রবর্তী, গৌতম ভদ্র প্রমুখ।
No comments
Hi Welcome ....