Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Top Ad

Breaking News:

latest

Wbuttepa B.ED 3rd Semester Notes Course 1.3.7B History

  B.ED 3rd Semester: Pedagogy of Social Science History ❐ আরো পড়ুনঃ B.ED 3rd Sem Books PDF Mark - 2 ১. ইতিহাস শিক্ষণে দুটি প্রচলিত শিক্ষা স...

B.ED 3rd Semester : Pedagogy of Social Science History
 

B.ED 3rd Semester: Pedagogy of Social Science History


আরো পড়ুনঃ

Mark - 2
১. ইতিহাস শিক্ষণে দুটি প্রচলিত শিক্ষা সহায়ক উপকরণ উল্লেখ করুন।
Mention two common teaching aids in teaching History.
উত্তরঃ (i) দর্শনযোগ্য শিক্ষা উপকরণ : (Visual Teaching Aids) যেসকল উপকরণ চোখ দিয়ে দেখা যায় অর্থাৎ শিখনের বিষয়বস্তুকে দেখে বোধগম্য করা যায় সেগুলোকে দর্শনযোগ্য শিক্ষা উপকরণ বলা হয়। যেমন- পোস্টার,ছবি,চার্ট, ইত্যাদি। (ii). শ্রবণ ও দর্শনযোগ্য শিক্ষা উপকরণ :(Audio-visual Teaching Aids) যেসব উপকরণ শিখনের বিষয়বস্তুকে একইসাথেচোখ ও কানের ব্যবহার করে আমরা বুঝতে পারি। যেমন- টেলিভিশন, সিনেমা, ডিভিডি,ইত্যাদি।

২. ইতিহাসে অনুকৃতি পাঠের গুরুত্ব কী?
What is the importance of simulated teaching in History?
উত্তরঃ 'Simulation' শব্দ থেকে ‘Simulated lesson-এর ধারণা বিবর্তিত হয়েছে। এটি হল এক ধরনের অণুশিক্ষা যা একটি পরিকল্পিত পরিবেশে ও নির্মিত শ্রেণিকক্ষে কৃত্রিমভাবে উপস্থাপন করা হয়।অনুকৃতি পাঠের গুরুত্ব বিভিন্ন রকমের হয় যেমন — (i) অণুশিক্ষণ একটি কাল্পনিক শ্রেণিকক্ষের পরিবেশে আয়োজন করা হয়। (ii) শিক্ষকের পাঠদান কার্যে বিভিন্ন দক্ষতা অর্জনের এই ধরনের অনুকৃতি পাঠেরনা আয়োজন প্রয়োজন।

৩. ইতিহাস শিক্ষকের দুটি অতিপ্রয়োজনীয় গুণাবলী উল্লেখ করুন।
Mention two essential qualities of a History teacher.
উত্তরঃ (i) চরিত্রবান : একজন আদর্শ শিক্ষক হবেন চরিত্রবান। তিনি আদর্শের প্রতীক হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। ড. রাজেন্দ্রপ্রসাদ এই প্রসঙ্গে বলেছেন," তাদের চরিত্রে, কথায় ও কাজে কোনো পার্থক্য থাকবে না।" (ii) ছাত্রপ্রেমী : আদর্শ শিক্ষক হবেন ছাত্রপ্রেমী। তিনি শিক্ষার্থীর বন্ধু, দার্শনিক এবং পথপ্রদর্শক হিসাবে কাজ করবেন।

৪.শিক্ষণ কৌশল কী?
What are Teaching strategies?
উত্তরঃ মানুষের চাহিদাপূরণের ক্ষেত্রে লক্ষ্যবস্তু লাভের উদ্দেশ্যে, পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে সার্থকঅভিযােজনের জন্য এবং পূর্ব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে আচরণধারার পরিবর্তনের জন্য মানুষ যেসব অভিজ্ঞতা অর্জন করে, তাকে শিখন কৌশল বলে।

৫. অণুশিক্ষণ কাকে বলে?
What is Micro-teaching?
উত্তরঃ অণুশিক্ষণের সর্বজনগ্রাহ্য একক কোনো সংজ্ঞা নেই। বিভিন্ন শিক্ষাবিদ একে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। শিক্ষাবিদ বুশ বলেছেন, “অণুশিক্ষণ হল এমন এক ধরনের শিক্ষণ প্রশিক্ষণ কৌশল, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থী শিক্ষক নির্দিষ্ট কয়েকটি দক্ষতা স্বল্প সময়ের জন্য অপেক্ষাকৃত নিয়ন্ত্রিত শ্রেণির মধ্যে চর্চার সুযোগ পান।

৬. পারদর্শিতার অভীক্ষার সংজ্ঞা দিন।
Define Achievement Test.
উত্তরঃ মনোবিদ J C Nunnely বলেছেন যে, নির্দিষ্ট সময়ব্যাপী সুনিয়ন্ত্রিত প্রশিক্ষণের প্রভাবে শিক্ষার্থীরা বিশেষ কোনো কর্মসম্পাদনের যে দক্ষতা অর্জন করে তা পরিমাপ করার কৌশলই হল পারদর্শিতার অভীক্ষা।

৭. শিক্ষামূলক ভ্রমণের দুটি গুরুত্ব লিখুন।
Mention two importances of Excursion.
উত্তরঃ (i) ভ্রমণ বর্তমানে শিক্ষার একটি অপরিহার্য অঙ্গরূপে স্বীকৃত পেয়েছে। কারন একমাত্র ভ্রমনেই শিক্ষার্থীরা পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ, ভৌগলিক পরিচিতি এবং সেখানকার অধিবাসীদের জীবনযাত্রার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে পরিচিত হওয়ার সুযোগ লাভ করে থাকে। (ii) আনন্দ দেওয়া এবং একঘেয়েমি দূর করার পাশাপাশি ভ্রমণ আমাদের নানা বিষয়ে শিক্ষাও দিয়ে থাকে। কারন, পৃথিবী কেবল মাত্র ক্যালেন্ডারের বা বইয়ের পাতার কতগুলি রেখা নয়। এর বাহিরেও বিশাল এক পৃথিবী রয়েছে ভ্রমণে শিক্ষার্থীদের পৃথিবী সম্পর্কে অনেক কিছু ভাবতে শেখায়।

৮. ইতিহাসে ‘ফিল্ড ট্রিপ' বলতে কি বোঝেন?
What do you mean by 'field trip' in History?
উত্তরঃ ফিল্ড ট্রিপ হল একদল লোকের দ্বারা তাদের স্বাভাবিক পরিবেশ থেকে দূরে একটি জায়গায় ভ্রমণ, সাধারণত শিক্ষা, ব্যক্তিগত সমৃদ্ধি বা গবেষণার উদ্দেশ্যে কে 
'field trip' বলে। 



Mark - 5

২. ‘অনুশিক্ষণ চক্র’ সংক্ষেপে বর্ণনা করুন।
Briefly discuss 'Micro teaching cycle'.
উত্তরঃ অণুশিক্ষণ হল দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম। শিক্ষার্থী-শিক্ষক এই শিক্ষণ দক্ষতার দ্বারা পাঠদান করার সর্বোচ্চ কৌশল আয়ত্ত করে। অণুশিক্ষণের দক্ষতাগুলি অর্জন করতে হলে বিভিন্ন ধাপের মধ্যে দিয়ে এগোতে হয়। এই ধাপগুলি স্তর অনুযায়ী ভাগ করে আলোচনা করলে দুটি স্তরে ভাগ করে আলোচনা করা যায়। যথা— (i) প্রস্তুতি স্তর (ii) অনুশীলন স্তর।

(i) প্রস্তুতি স্তর 
(Orientation Phase) : প্রস্তুতি স্তরে বিদ্যার্থী শিক্ষক যা শিখবে তা হল—অণুশিক্ষণ কৌশল, শিক্ষণ-দক্ষতা, ফিডব্যাক প্রক্রিয়া, পাঠ পর্যবেক্ষণ, পাঠটীকা প্রস্তুতি এবং অণুশিক্ষার অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভ। এই পর্যায়টি নিষ্ঠার সঙ্গে সম্পন্ন করতে হবে। তা না হলে শিক্ষার্থী-শিক্ষক তার কী করা উচিত বা কীভাবে অণুশিক্ষণ আয়ত্ত করবে তা রপ্ত করতে বা বুঝতে পারবে না।

(ii) অনুশীলন স্তর 
( Practice Phase) : অণুশিক্ষণ এর প্রধান স্তর হলো অনুশীলন। শিক্ষার্থী-শিক্ষক যত অনুশীলন করবে তত সে বিষয়টি আয়ত্ত করতে পারবে। চরটি স্তরের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থী-শিক্ষক 

অনুশীলন স্তরটিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
  • প্রথম স্তর: প্রথম স্তরে শিক্ষার্থী-শিক্ষক অণুপাঠটীকা পরিকল্পনা করবে যে দক্ষতা টি সে উন্নত করতে চায় তার ভিত্তিতে।
  • দ্বিতীয় স্তর: এরপর ওই শিক্ষার্থী-শিক্ষক পাঠটীকা অনুযায়ী পূর্বনির্ধারিত স্বল্প শিক্ষার্থীদের সামনে দক্ষতাটি পরিবেশন করবে। এই পর্যায়টি ভিডিয়ো টেপ বা অডিয়ো টেপ দ্বারা সংরক্ষণ করতে পারলে ভালো হয়।
  • তৃতীয় স্তর: তৃতীয় স্তর হল আলোচনা ও ফিডব্যাক স্তর। এই স্তরে পরিবেশিত দক্ষতাটি শিক্ষার্থী-শিক্ষক সঠিকভাবে করতে পারছে কিনা, কোথায় কোথায় ভুল হয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
  • চতুর্থ স্তর: তৃতীয় স্তরের আলোচনা ও ফিডব্যাকের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থী শিক্ষকতার পরিকল্পনা পুনর্নবীকরণ করবে।
  • পঞ্চম স্তর: এই স্তরে পুনরায় শিক্ষার্থী-শিক্ষক সংশোধিত পাঠটীকাটি স্বল্প সদস্যসহ আর-একটি শিক্ষার্থী দলের উপর শিক্ষণ দেবে।
  • ষষ্ঠ স্তর: ষষ্ঠ স্তরে পুনরায় পাঠদানের আলোচনা ও ফিডব্যাক গ্রহণ করা হবে। এইভাবে, ‘শিক্ষণ পুনঃশিক্ষণ’ চক্রের পুনরাবৃত্তি চলতে থাকবে যতক্ষণ না শিক্ষার্থী, শিক্ষক তার প্রত্যাশিত মান অর্জন করবে।
৩. সংহতি শিক্ষার উপর একটি ক্ষুদ্র অনুচ্ছেদ লিখুন।
Write a short Para on Integrated teaching.
উত্তরঃ বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় সমন্বিত শ্রেণি শিক্ষণ একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। পাঠ্য। বিষয়বস্তুর বিভিন্ন একক, উপএককগুলির মধ্যে সমন্বয় এবং অন্যান্য বিষয়জ্ঞানের সঙ্গে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ক্রিয়া বর্তমানে একটি উন্নত শিক্ষণ দৃষ্টিভঙ্গি Teaching Approach ও শিক্ষণ কৌশল হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। তাই পাঠ্য বিষয়বস্তু উপস্থাপনকালে বিষয়বস্তুর মধ্যেকার সম্পর্ক এবং অন্যান্য বিষয়জ্ঞানের সঙ্গে আলোচ্য বিষয়বস্তুর (content) সম্পর্ক শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরে তাদের সাঙ্গীকৃত এবং অখণ্ড জ্ঞানদানের আয়োজন করা হয়।

প্রাচীনকালে গ্রিক দার্শনিকগণ বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে অনুষঙ্গ (Association) প্রতিষ্ঠা করে অখণ্ড জ্ঞানদানের ব্যবস্থা করতেন, কারণ জ্ঞান কখনোই খণ্ডিত থাকে না। জ্ঞানের চরিত্রই অখণ্ড ও অবিভাজ্য। শুধুমাত্র আলোচনার সুবিধার জন্যই বিভিন্ন বিষয় বা জ্ঞানের শাখার উদ্ভব হয়েছে। তাই শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে সমন্বয়নের ধারণা সুস্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। এই সমন্বিত সম্পর্ককে ব্যাখ্যা করার জন্য তিনটি ধারণার উপর আলোকপাত করা যায়-
1. অনুবন্ধন 
(Cor relation)
2. কেন্দ্রায়ন 
(Concentration)
3. সমন্বয়ন (
Integration)

সংহতির সুবিধা : শিক্ষাবিদ হার্বার্টের শিক্ষাচিন্তার উপর ভিত্তি করে শ্রেণি শিক্ষণে অনুবন্ধন নীতির উদ্ভাবন করা হয়েছে। হার্বার্টের মতে পূর্ব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে নতুন অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়। ফলে নতুন জ্ঞান আহরণ পুরাতন অভিজ্ঞতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হওয়া প্রয়োজন। অভিজ্ঞতা প্রসূত জ্ঞান পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মানবমনে একটি অভিজ্ঞতা জট 
(Apperceptive Mass) তৈরি করে। তাই নতুন অভিজ্ঞতাকে সবসময় অভিজ্ঞতা জটে নিবন্ধ পুরাতন অভিজ্ঞতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করে নতুন অভিজ্ঞতার যথার্থতা যাচাই করতে হয়। প্রথমত, সমন্বিত শিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠ্যবিষয়বস্তু (Meaningful) হয়ে ওঠে। শিক্ষার্থীদের একক ও অখণ্ড জ্ঞান আহরণের সুযোগ সৃষ্টি হয়। দ্বিতীয়ত, সমন্বয়নের ফলে বিভিন্ন ধারণার সংমিশ্রণ ঘটে। তৃতীয়ত, শিক্ষা গ্রহণকালে সমন্বয়নের চেষ্টার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মসারির সৃষ্টি হয়। তারা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিভিন্ন বিষয় জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে সচেষ্ট হয়। চতুর্থত, সমন্বিত শিক্ষণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা ও সমস্যাসমাধানে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।

৪. ইতিহাসপাঠে মেলা ও প্রদর্শনী বিষয়ে টীকা লিখুন।
Write a note on Fair and Exhibition in teaching History.

উত্তরঃ মেলা হল এক ধরনের মিলনক্ষেত্র মেলার মাধ্যমে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ । এক জায়গায় সমবেত হওয়ার সুযোগ পান মেলার মাধ্যমে। মেলায় প্রদর্শিত মানুষের সৃষ্টি বিপুল উৎপাদনাত্মক সামাজিক কর্ম চাক্ষুষ প্রত্যক্ষণের মাধ্যমে সৃজনশীলতার প্রতি মানুষের আকর্ষণ জন্মায়। সৃষ্টিশীল মানুষ সৃষ্টির উল্লাসে মেতে ওঠার মধ্যে আয়োজিত নানান ধরনের অনুষ্ঠান-প্রতিষ্ঠান লক্ষ করা মনে শিক্ষা ও সংস্কৃতি চেতনা জাগ্রত হয়। তাই সমাজবিজ্ঞান সুযোগ পান। মেলা নানান ধরনের হয়। সমাজ-শিক্ষামূলক মেলার মধ্যে বইমেলা, কৃষিমেলা, কুটিরশিল্প মেলা, গ্রামীণ শিক্ষা-সংস্কৃতি বিষয়ক মেলার কথা এক্ষেত্রে উল্লেখ করা যায় যেমন -
  • বইমেলা : মানুষ জ্ঞান পিপাসু। তাই তার জ্ঞান পিপাসা দূর করতে বইমেলায় প্রদর্শিত পুস্তকরাজির মধ্যে অবগাহন প্রয়োজন। বইমেলায় বহু দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ধরনের পুস্তকের সমাহার ও প্রদর্শনের মাধ্যমে শিক্ষার অগ্রগতির চিত্র সর্বসমক্ষে তুলে ধরা হয়। জ্ঞান পিপাসু প্রতিটি মানুষের কাছে তাই বইমেলা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সম্ভবত 1820 খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে বইমেলার প্রথম আয়োজন করা হয়। এই বইমেলার প্রথম উদ্যোক্তা ছিলেন ম্যাথু কেরি। এই মেলায় প্রায় 30 হাজার গ্রন্থ প্রদর্শিত হয়। 1949 খ্রিস্টাব্দের ফ্রাংকফুটের বৃহৎ বইমেলা থেকেই প্রকৃতপক্ষে আধুনিক বইমেলার ধারণা এসেছে।
  • পশ্চিমবঙ্গে বইমেলা : 1963 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় প্রথম বইমেলার সূচনা হয়। 1969 খ্রিস্টাব্দে বোম্বাইয়ে। বইমেলার আয়োজন করা হয়। দিল্লিতে আয়োজিত বইমেলা আন্তর্জাতিক রূপ ধারণ করে। 1978 খ্রিস্টাব্দে বঙ্গীয় প্রকাশক সংস্থার উদ্যোগে পার্ক সার্কাস ময়দানে মেলার আয়োজন। হয়। কলকাতা ময়দানে দীর্ঘবছর কলকাতা বইমেলার আয়োজন হয়েছিল। বর্তমানে সল্টলেকে কলকাতা বইমেলার আয়োজন করা হয়।
  • গ্রামীণ বইমেলা : শুধু কলকাতা বইমেলাই নয়। পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত, ব্লকস্তরে ও জেলাস্তরে বইমেলার আয়োজন করা হয়। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে এইসব মেলার আয়োজিত হয়।
  • বইমেলার বৈচিত্র্য : বইমেলায় নানা বিচিত্র স্টল ও স্টলে সারিবদ্ধ বিচিত্র বইয়ের সম্ভার সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বিচিত্র রং-বেরঙের প্রচ্ছদপট যুক্ত বইয়ের সু-সজ্জা সকলকে আকর্ষণ করে। বিদেশি পুস্তকের প্রচ্ছদপট, মুদ্রণ ও প্রকাশ রীতি দেখে বিস্ময় জাগ্রত হয় বইপ্রেমিকদের। বিভিন্ন স্টলে বিভিন্ন ধরনের বইয়ের সম্ভার লক্ষ করা যায়। গল্প, উপন্যাস, নাটক, বিজ্ঞান,প্রযুক্তিমূলক বই, মেডিকেল, আইন, যন্ত্রবিদ্যা, বাণিজ্য, কলাবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান সমস্ত রকমের বই বইমেলার বহুমুখী বৈচিত্র্যের উদাহরণ।
  • প্রদর্শনী : বিদ্যালয় প্রদর্শনী হল শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্ব বিকাশের ও প্রতিভা অন্বেষণের অপরিহার্য শর্ত। শিক্ষার্থী দ্বারা নির্মিত উৎপাদনাত্মক ও সৃজনাত্মক কর্মগুলি প্রদর্শনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রতিভা অন্বেষণ যেমন সম্ভব হয়, তেমনি এই রকম প্রদর্শনী আয়োজনের মাধ্যমে। বিদ্যালয়ের সঙ্গে অভিভাবক ও সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের মধ্যে যোগাযোগ সূত্র। গড়ে ওঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়। শিখন সহায়ক উপকরণগুলি নির্মাণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিখনের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায় এবং শিখন অগ্রগতির (Progress in learning) পথ রচিত হয়।
বিদ্যালয় প্রদর্শনীর শিক্ষার্থী নির্মিত উপকরণগুলির ধরন : (Types of exhibits made by the pupil displayed in School exhibition):
1. শিক্ষার্থী নির্মিত মডেল।
2. শিক্ষার্থী নির্মিত উৎপাদনাত্মক কর্ম। যেমন, চিত্র, ডায়াগ্রাম, বিভিন্ন ধরনের হাতের
3. মুদ্রা, ডাকটিকিট, চিত্র, লতা-পাতা, পতঙ্গ, বিভিন্ন প্রতিকৃতি সমৃদ্ধ অ্যালবাম।
4. চার্ট (ট্রি-চার্ট, টেবল-চাৰ্ট, ফ্লো-চার্ট)।
5. সময়রেখা, মানচিত্র, সময়-সারণি।
6. বিভিন্ন উৎপাদনাত্মক প্রকল্পের প্রদর্শন।

উপসংহারঃ Crow মন্তব্য করেন, শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশ ও শিখন অগ্রগতিতে প্রদর্শনীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মধ্যে জ্ঞান-স্পৃহা, চিন্তা-চেতনার দিগন্ত উন্মোচিত হয়। নতুন কিছু আবিষ্কার করার বাসনা জাগ্রত হয়। বিজ্ঞান-চেতনা বৃদ্ধিপায়। প্রদর্শনের আয়োজন ও কার্য পরিচালনার সময় তাদের মধ্যে দলীয় চেতনা, দল-প্রীতি, পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মনোভাব জাগ্রত হয়, সামাজিকতা বৃদ্ধি পায়, নেতৃত্বের গুণাবলি বিকশিত হয়।


৫. সংক্ষেপে ইতিহাসে নিরবচ্ছিন্ন ধারাবাহিক মূল্যায়নের বিষয়ে লিখুন।
Write in brief about continuous and comprehensive evaluation in History.
উত্তরঃ শিক্ষার ইতিহাস মানব ইতিহাসের মতই সুপ্রাচীন। আদি মানব সমাজ থেকে বর্তমান অগ্রগতি পর্যন্ত মানব সভ্যতার যে ক্রমোত্তরণ তাকে ভিত্তি করেই মানুষের শিক্ষাচিন্তা গড়ে উঠেছে। তাই আধুনিক যুগের প্রগতিশীল মানবসমাজের অগ্রগতি শিক্ষা ছাড়া কল্পনা করা যায় না। আর শিক্ষাব্যবস্থার মূল স্তম্ভ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বিদ্যালয়, পাঠক্রম ওমূল্যায়ন ব্যবস্থার ভূমিকার দ্রুত বদল ঘটছে। সর্বজনীন সামর্থ্য বিকাশের নতুন কর্মসূচি গৃহীত হওয়ার পর থেকে শিক্ষার উদ্দেশ্যের ব্যাপক বদল ঘটেছে।

নিরবচ্ছিন্ন ধারাবাহিক মূল্যায়ন : পঠন-পাঠন চলাকালীন শিক্ষাবহণ জুড়ে শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশের ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ ও নথিবদ্ধকরণ। শিক্ষার অধিকার আইন, জরুরী (RTE Act, 2009)-এর পঞ্চম পরিচ্ছেদের ২৯নং ধারায় মূল্যায়ন সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা হল 
"Comprehensive and Continuous Evaluation of child's understanding of Knowledge and his or her ability to apply the same. Continuous'' শব্দটি মূল্যায়নের ‘Continual' ও 'Peridicity' প্রেক্ষিতে আলোচনা করা হয়। এখান 'Continual' বলতে প্রস্তুতিকালীন মূল্যায়ন বা Formative evaluation এবং Periodicity বলতে পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন বলা হয়  Comprehensive শব্দটি শিশুর সার্বিক বিকাশকে বোঝানো হয়েছে।

নিরবচ্ছিন্ন ধারাবাহিক মূল্যায়নের পদ্ধতি :
  • একক মূল্যায়ন : প্রত্যেক শিক্ষার্থীর স্ব-স্ব কাজ ও সম্পাদনের মূল্যায়ন।
  • গোষ্ঠী মূল্যায়ন : কোনো কাজ সম্পাদনকালীন কয়েকজন শিক্ষার্থীর শিখন প্রক্রিয়া ও উৎকর্ষের মূল্যায়ন। সামাজিক দক্ষতাকিংবা সহযোগিতামূলক শিখন প্রক্রিয়া এবং শিক্ষার্থীর আচরণের মূল্যবোধভিত্তিক ক্ষেত্র, মূল্যায়নের সময় এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
  • স্ব-মূল্যায়ন : তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের (জ্ঞান) পদ্ধতি, উৎসাহ ও মনোভাবের ক্ষেত্রে উৎকর্ষ কিংবা শিখনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর নিজস্ব মূল্যায়ন।
  • সঙ্গী মূল্যায়ন : একজন শিক্ষার্থী যখন অপর শিক্ষার্থীর কাজের বা সামর্থ্যের মূল্যায়ন করে।
নিরবচ্ছিন্ন মূল্যায়নের আবশ্যিক উপাদানঃ
(i) নিরবচ্ছিন্ন মূল্যায়ন কে আলাদা কাজ রূপে, বা শিখন পদ্ধতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখা যাবে না। এটিকে পঠন-পাঠনের আবশ্যিক অঙ্গ রূপে শিখন পরিবেশেই গড়ে তুলতে হবে। এখানে পরিমাপন হবে যেমন শিক্ষকের শিক্ষণ-সংক্রান্ত, তেমনি শিক্ষার্থীর শিখন-সংক্রান্ত। (ii) পরিমাপন যখন পঠন-পাঠন প্রক্রিয়ার অঙ্গ হয়ে ওঠে তখন এটি শিশুর শিখন উন্নত করে তোলে। বিভিন্ন ধরনের পরিমাপন শিক্ষক পঠন-পাঠন চলাকালীন করতে থাকবেন, যেমন, প্রশ্ন করা, আলোচনার পরিবেশ তৈরি করা, সহপাঠীদের সাথে মতের আদান-প্রদান, লেখা ইত্যাদির মাধ্যমে। এই পরিমাপন শিক্ষককে সাহায্য করবে শিশুর শিখন-উন্নতির তথ্য জানিয়ে। (iii) নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যায়ন কখনোই শিশুর প্রগতি-সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়। এই পরিমাপনের উদ্দেশ্য শিশুর পূর্বার্জিত জ্ঞানের সাথে বর্তমান উন্নতির তুলনামূলক বিচারের ভিত্তিতে তার সবলতা ও শিখন-দুর্বলতাগুলি চিহ্নিত করা।


৬. অণুশিক্ষণের ভালো এবং খারাপ দিকগুলি লিখুন।
Write the merits and demerits of Micro Teaching.
উত্তরঃ অণুশিক্ষণের ভালো দিক : ১. অণুশিক্ষণ দ্বারা সহজেই শিক্ষণের জটিল অংশগুলিকে সরলীকৃত করে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়। ২. অণুশিক্ষণে ফিডব্যাক (Feedback) তাৎক্ষণিক ও সুনির্দিষ্ট প্রণালীবদ্ধ। ৩.নির্দিষ্ট সময়ে একটি মাত্র বিষয়ে দক্ষতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বলে দক্ষতার উপর পাণ্ডিত্য অর্জনও খুব সহজে করা যায়। ৪.অনুশীলন গবেষণাগার অনুশীলন ও অভিজ্ঞতা অর্জনের ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করে। ৫.অণুশিক্ষণে শিক্ষণ দক্ষতাগুলিকে শিক্ষণ আচরণের সঙ্গে যুক্ত আকারে উপস্থাপন করা হয়। এগুলি সহজেই পর্যবেক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবহার করা যায়। ৬. এই প্রক্রিয়ার দ্বারা সহজেই শিক্ষক তাঁর আচরণের পরিমার্জন ও সংস্কার করতে সক্ষম হন। ৭. শিক্ষার্থী-শিক্ষকও এই প্রক্রিয়ায় তাঁর বন্ধুদলের ত্রুটিবিচ্যুতির রেকর্ড রাখেন ও সেই কাজের সম্পর্কে তাঁর মতামত প্রকাশ করতে পারেন। এই পদ্ধতি শিক্ষার্থী- শিক্ষকদের শিক্ষণ দক্ষতা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও স্বচ্ছ করে তোলে।

অণুশিক্ষণের মন্দ বা খারাপ দিক : ১. অণুশিক্ষণে দক্ষতার উপর বিশেষ গুরুত্ব দান করা হয়। তাই অনেক সময় শিক্ষণীয় বিষয়বস্তু অবহেলিত হতে পারে। ২. অণুশিক্ষণ অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ। কারণ সমস্ত শিক্ষার্থীকে ছোটো ছোটো দলে ভাগ করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সাধারণত শ্রেণির সময়সীমার মধ্যে এটি সমাপ্ত করা সম্ভবপর হয় না। ৩. অণুশিক্ষণ প্রক্রিয়াটির পরিচালনার জন্য উপযুক্ত বিশেষ জ্ঞানসম্পন্ন তত্ত্বাবধায়ক বা শিক্ষক প্রয়োজন। যা অনেক সময়ই সরবরাহ করা সম্ভবপর হয় না। ৪. অণুশিক্ষণ প্রক্রিয়াটি ব্যয়বহুল। কারণ এর জন্য দরকার অডিয়ো (Audio), টেপরেকর্ডার, ভিডিয়ো ক্যামেরা ও অন্যান্য ব্যয়সাপেক্ষ উপকরণ সামগ্রী। শিক্ষক-শিক্ষণের সংক্ষিপ্ত সময়তালিকার মধ্যে অণুশিক্ষণ প্রক্রিয়াটি আলোচনা করা প্রায় অসম্ভব। ৫. প্রক্রিয়াটি দীর্ঘসময় ধরে চলে, কারণ এটি প্রয়োগের পূর্বে পর্যাপ্ত অনুশীলন প্রয়োজন হয়। এতে শিক্ষার্থীদের একঘেয়েমি আসতে পারে। ৬. অণুশিক্ষণে একবার দক্ষতা অর্জন করার পর তার সংহতিসাধন অত্যন্ত কঠিনকাজ।



Mark - 10

১. ইতিহাসে দেওয়াল পত্রিকার ও বার্ষিক পত্রিকার গুরুত্বগুলি সম্পর্কে লিখুন।
Write the importances of Wall magazine in History.
ভূমিকাঃ ইতিহাস শিক্ষণে বর্তমানে শুধু পাঠ্যপুস্তকের গুরুত্ব দেওয়া হয় না। সমধর্মী বিভিন্ন পুস্তক ও ম্যাগাজিন ইতিহাস শিখনকে বাস্তবায়িত করে তোলে। ইতিহাস বিষয়ে দেওয়াল পত্রিকা ও বার্ষিক পত্রিকা Johnson-বলেন, সমধর্মী পুস্তক বা ম্যাগাজিন পাঠ অতীতের সঙ্গে বর্তমান সেতুবন্ধনের দায়ভার গ্রহণ করতে পারে। ম্যাগাজিনের মাধ্যমে ঐতিহাসিক তথ্যাবলি পরিবেশিত হয়। এর ফলে শিক্ষার্থীর ঐতিহাসিক মননশীলতা গঠিত হয় এবং ইতিহাসের ঘটনার প্রতি তাদের মধ্যে অনুরাগ সৃষ্টি হয়।

ইতিহাসে দেওয়াল পত্রিকার গুরুত্ব : বিদ্যালয়ে উপযুক্ত শিখন পরিমণ্ডল গড়ে তুলতে দেওয়াল পত্রিকার অবদান অপরিসীম। বিদ্যালয়ে সাপ্তাহিক, পাক্ষিক কিংবা মাসিক দেওয়াল পত্রিকা প্রকাশনের আয়োজন করা হয়ে থাকে। শুধু ইতিহাসের বিষয়বস্তু নয়, সমস্ত বিষয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়াল পত্রিকার মাধ্যমে প্রকাশনের ব্যবস্থা করা যায়। বিভিন্ন নিউজ বুলেটিন, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, নতুন আবিষ্কৃত বিভিন্ন ঘটনা ও তা দেওয়াল পত্রিকার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনা ও ঐতিহাসিক তথ্য এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়, যেন মনে হয় ইতিহাসের চরিত্রগুলি চোখের সামনে ভাসমান। দেওয়াল পত্রিকা লিখন ও পঠনের মাধ্যমে মানসিক বৃত্তির অনুশীলন হয়। শিক্ষার্থীর মধ্যে বৌদ্ধিক, প্রাক্ষোভিক ও আনুভূতিক বিকাশ সফল হয়। ইতিহাসে বিষয়বস্তুতে সাহিত্যিক আবেদন, মানবীয় সহানুভূতি ও সমানুভূতি অর্জনের পথ প্রশস্ত করে।

ইতিহাসে বার্ষিক পত্রিকার গুরুত্ব : অধিকাংশ বিদ্যালয়ে বিশেষ কোনো অনুশীলনের সময় বার্ষিক পত্রিকা প্রকাশ করা হয়। শিক্ষক/শিক্ষিকা এবং শিক্ষার্থী, বিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশিষ্ট মানুষজনের বিভিন্ন এই বার্ষিক পত্রিকায় শুধু বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়কেন্দ্রিক লেখা প্রকাশিত হয় এমন নয়, সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য বার্ষিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা ঘটনা, ধরনের লেখা ম্যাগাজিনে স্থান পায়। সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, পরিবেশ প্রযুক্তিমূলক তথ্য ও বিভিন্ন আবিষ্কারের গতি-প্রকৃতি বার্ষিক পত্রিকার মাধ্যমে তুলে ধরা বার্ষিক পত্রিকা ছাড়াও মাসিক, ত্রৈমাসিক ও ষান্মাসিক পত্রিকাও প্রকাশ করা হয়। শিক্ষার্থীরা এই সমস্ত পত্রিকা পাঠ করে তাদের জ্ঞানের দিগন্তকে উন্মোচিত করে। সাময়িক পত্রিকার উদাহরণ হিসেবে কয়েকটি পত্রিকার উদাহরণ তুলে ধরা যায়। অবশ্য বিদ্যালয়ের বার্ষিক পত্রিকা অপেক্ষা এই সাময়িক পত্রিকা ভিন্নধর্মী। যেমন, ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সমাচার চন্দ্রিকা’ (1822), বঙ্কিমচন্দ্রের ‘বঙ্গদর্শন' (1871) দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ভারতী’ (1877), রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বঙ্গদর্শন’, ‘নবপক্ষ (1901) ইত্যাদি।

উপসংহারঃ দেওয়াল পত্রিকা ও বার্ষিক পত্রিকার মাধ্যমে ইতিহাস চর্চা, শিক্ষার্থীর মন, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করা ও নৈর্ব্যক্তিক কল্পনার সম্প্রসারণ সম্ভব। তাই ম্যাগাজিন শিক্ষামূল্য সংগীত, বৌদ্ধিকমূল্য অপরিসীম। ম্যাগাজিনের সাহায্যে ইতিহাসের সাহায্যে মেলবন্ধন ঘটানো যায়। তাই ম্যাগাজিন ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য ও আদর্শ বইয়ের এক সাহিত্য, ভূগোল, শিল্প ও বিজ্ঞান, সমাজশিক্ষা, দর্শন, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটে।

২. ইতিহাস শিক্ষকের পেশাগত দক্ষতার উপর একটি নাতিদীর্ঘ রচনা লিখুন।
Write a short essay on Professional growth of a History Teacher.
উত্তরঃ ইতিহাস শিক্ষকের পেশাগত দক্ষতা :একজন শিক্ষক যে দীর্ঘকাল শিক্ষকতায় নিয়োজিত থাকেন সে অনুপাতে তার প্রশিক্ষণ খুব কম হয়।আমরা মনে করি একজন শিক্ষক প্রশিক্ষণ পেলেই তার পেশাগত উন্নয়ন ঘটে তাকে তারপর তেমন আর কিছু করতে হবে না। আসলে শিক্ষক প্রশিক্ষণ পেশাগত উন্নয়নের শুরু- শেষ নয়। শিক্ষকতা জীবন চলাকালীন পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কী কী করা দরকার তা তার জানতে হবে। তার পাঠদান ফলপ্রসু হচেছ কিনা, শিক্ষার্থীগণ সন্তষ্ট কিনা এ বিষয়গুলো একদিন কিংবা একটি বা দুটি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নির্ণয় করা যায় না। এটি দীর্ঘমেয়াদী কিংবা পুরো পেশাগত জীবনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কোন কাজের অর্পিত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে মেধা, শ্রম ও সময়কে সদ্ব্যবহার করে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনের মৌলিক ক্ষমতাকে দক্ষতা বা Skill বলে। যে কোন মানুষের জীবনে সাফল্য আনতে হলে পেশাগত জ্ঞানদক্ষতার উন্নয়ন প্রয়োজন। পেশাগত দক্ষতা অর্জন ব্যতীত প্রকৃত সাফল্য অর্জন সম্ভব নয়। একথাটি অন্যান্য পেশার ন্যায় শিক্ষা পেশায়ও সমভাবে প্রযোজ্য।

কেননা শিক্ষাদান করাও একটি মহান পেশা। যে পেশার উন্নয়নে জ্ঞানদক্ষতার প্রয়োজন। একজন শিক্ষককে তার পেশার উন্নয়নের স্বার্থে প্রতিনিয়ত নব নব জ্ঞান ও কৌশলের সন্ধান করতে হয়। পাঠদানকে শতভাগ সফল করতে নতুন নতুন প্রযুক্তি ও আধুনিক জ্ঞান গবেষণার সন্ধানে নিরলস প্রচেষ্টায় নিজেকে নিরত রাখতে হয়। আত্ম-মনিটরিং শিক্ষককে তার পাঠদান মূল্যায়নে সমালোচনামূলক ও বিশ্লেষণধর্মী সুযোগ প্রদান করে। শিক্ষক উন্নয়নের ক্ষেত্রে রিফ্লেকশন এবং মূল্যায়ন একটি প্রধান চাবিকাঠি। অবিরত শিক্ষক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে আত্ম-জিজ্ঞাসা এবং বিশ্লেষণধর্মী ও সমালোচনামূলক চিন্তাধারা। এই মনিটরিং তাদেরকে রুটিনমাফিক ও প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে নিয়ে যায় যেখানে সমালোচনামূলক চিন্তা-ভাবনার দ্বারা পরিচলিত হয় তার শিক্ষা।একজন শিক্ষকের আচরণ তিনি নিজে জানেন এবং অন্যেরাও জানে সেটি হচেছ উন্মুক্ত দিক বা ওপেন সেলফ। এই দিকটি একজন শিক্ষক অন্যের সাথে আলোচনা করতে পারেন। গোপন দিক হচ্ছে সেটি যা শিক্ষক নিজে জানেন কিন্তু অন্যেরা জানে না। যেমন কোন বিষয়ে তাকে পাঠদান করতে হবে সবার সামনে, অনেক অজানা বিষয় এখানে রয়েছে অথচ তিনি তা জনসমক্ষে প্রকাশ করতে পারছেন না। ব্যাপারটি তিনি অন্যদের জানাতে চান না পাছে তারা তাকে অযোগ্য কিংবা নিম্নমানের শিক্ষক মনে করেন।

ইতিহাস শিক্ষকের পেশাগত গুণাবলি
(Professional Quality) : একজন আদর্শ শিক্ষকের যেসকল পেশাগত গুণাবলি থাকা দরকার, তা হল- (i) বিষয়বস্তুর জ্ঞান : একজন আদর্শ শিক্ষকের শিক্ষণীয় বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান থাকা প্রয়ােজন। শিক্ষকতা বৃত্তিতে সফল হতে হলে শিক্ষককে রীতিমতাে জ্ঞানচর্চা করতে হবে। (ii) মনােবিদ্যার জ্ঞান : শিক্ষকের মধ্যে শিশু-মনােবিদ্যার জ্ঞান থাকতে হবে। শিশুর বিকাশ এবং তৎ-সংক্রান্ত সমস্যাবলির সম্পর্কে জানতে শিশু-মনােবিদ্যা বিশেষভাবে সাহায্য করে। (iii) শিক্ষণ পদ্ধতির জ্ঞান : শিক্ষকের শুধু বিষয়বস্তুর জ্ঞান থাকলেই চলবে না, সেই জ্ঞান শিক্ষার্থীদের মধ্যে কীভাবে সঞ্চালিত করা যাবে সেই সম্পর্কে শিক্ষকের জ্ঞান থাকা দরকার। (iv) শিক্ষাপােকরণ ব্যবহার সম্পর্কে জ্ঞান : শিক্ষকরা বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপােকরণ ব্যবহার করে শিক্ষণ শিখন পদ্ধতিকে সজীবন ও সার্থক করে তােলে। তাই শিক্ষকের বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপােকরণ যেমন – চার্ট, চিত্র, ম্যাপ, প্রাফ, দৃষ্টি ও শ্রুতিনির্ভর প্রভৃতির ব্যবহারকৌশল-এর জ্ঞান থাকা দরকার। (v) মূল্যায়ন সম্পর্কিত জ্ঞান : শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতার অগ্রগতি পরিমাপের জন্য বর্তমানে বিদ্যালয়ে পরীক্ষা গ্রহণের রীতির অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। প্রচলিত বা গতানুগতিক রচনাধর্মী পরীক্ষার পরিবর্তে নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। কীভাবে নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি এবং শিক্ষার্থীদের জন্য সার্বিক পরিচয়লিপি তৈরি করতে হয় সে সম্পর্কে শিক্ষকের জ্ঞান থাকা দরকার।
------------

No comments

Hi Welcome ....