Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Top Ad

Breaking News:

latest

নবম শ্রেণী ভূগোল অষ্টম অধ্যায়-পশ্চিমবঙ্গ

❑   আরো পড়ুন :   নবম শ্রেণি ভূগোল সূচিপত্র নবম শ্রেণী ভূগোল তৃতীয় অধ্যায় এক কথায় উত্তর Q1. তিস্তার একটি উপনদীর নাম লেখো। ▻ রাংপো। Q2.পশ্চ...


  আরো পড়ুন :

নবম শ্রেণী ভূগোল তৃতীয় অধ্যায় এক কথায় উত্তর

Q1. তিস্তার একটি উপনদীর নাম লেখো।
▻ রাংপো।
Q2.পশ্চিমবঙ্গে কখন পশ্চিমি-ঝঞ্ঝা হয়?
▻ শীতকালে।
Q3.পার্বত্য অঞ্চলের মাটির রং কেমন হয়?
▻ কালো বা ধূসর।
Q4. কোন শহরকে ভারতের রুঢ় বলা হয়?
▻ দুর্গাপুর।
Q5. সুন্দরবন অঞ্চলের দুটি নদীর নাম লেখো।
▻ মাতলা ও বিদ্যাধরী।
Q6. আলিপুরদুয়ার কত সালে গঠিত হয়?
▻ 2014 
Q7. ঝাড়খণ্ডের রাজধানীর নাম কী?
▻ রাঁচি।
Q8. অসমের রাজধানী নাম কী?
▻ দিসপুর।
Q9. কলকাতা জেলাটি পশ্চিমবঙ্গের কোন বিভাগের অন্তর্গত?
▻ প্রেসিডেন্সি বিভাগ।
Q10. দামোদরের দুটি উপনদীর নাম লেখো।
▻ কোনার ও বরাকর।
Q11. ভাগীরথীর দুটি উপনদীর নাম লেখো।
▻ ময়ুরাক্ষী ও অজয়।
Q12. পশ্চিমবঙ্গে দুটি জেলার নাম লেখো যেখানে ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা দেখা যায়।
▻ বীরভূম ও বাঁকুড়া।
Q13. 2011 সালে জনগণনা অনুযায়ী পশ্চিবঙ্গে মোট কতগুলি শহর আছে?
▻ 138 টি।
Q14. পশ্চিমবঙ্গের একটি পাট গবেষণাকেন্দ্রের নাম লেখো।
▻ ব্যারাকপুর শহরের নিকটে নীলগঞ্জ।
Q15. পশ্চিমবঙ্গের দুটি বাগিচা ফসলের নাম লেখো।
▻ চা ও সিঙ্কোনা।
Q16. পশ্চিমবঙ্গের দুটি খাদ্যশস্যের নাম লেখো।
▻ ধান ও গম।
Q17. পশ্চিমবঙ্গের দুটি তন্তুজাতীয় শস্যের নাম লেখো।
▻ পাট ও শন।
Q18. পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গের নাম কী?
▻ সান্দাকফু (3630 মিটার)।
Q19. পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রফল কত?
▻ 88752 বর্গকিমি।
Q20. পশ্চিমবঙ্গের দুটি বরফগলা জলে পুষ্ট নদীর নাম লেখো।
▻ তিস্তা, মহানন্দা
Q21. ডুয়ার্স শব্দের অর্থ কী?
▻ দুয়ার বা দরজা।
Q22. তরাই সমভূমি তিস্তা নদীর কোন দিকে অবস্থিত?
▻ পশ্চিম দিকে।
Q23. উত্তরবঙ্গের দীর্ঘতম নদীর নাম কী?
▻ মহানন্দা।
Q24. পশ্চিমবঙ্গের সর্বাধিক বৃষ্টিবহুল অঞ্চল কোনটি?
▻ আলিপুরদুয়ারের 'বক্সাদুয়ার'।
Q25. পশ্চিমবঙ্গের উন্নতম স্থানটির নাম কী?
▻ আসানসোল।
Q26. পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুতে কোন বায়ুর প্রভাব সবচেয়ে বেশি?
▻ মৌসুমি বায়ু।
Q27. পশ্চিমবঙ্গের নবগঠিত জেলার নাম কী?
▻ আলিপুরদুয়ার।
Q28. ক্ষেত্রফলের দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বড়ো জেলা?
▻ দক্ষিণ 24 পরগনা।
Q29. বালুরঘাট কোন জেলার সদর শহর?
▻ দক্ষিণ দিনাজপুর।
Q30. ধান উৎপাদনে পশ্চিমবঙ্গ ভারতে কোন স্থান অধিকার করে?
▻ প্রথম।
Q31.পশ্চিমবঙ্গের কোন শহরকে ‘সিটি অব জয়’ বলে?
▻ কলকাতা।
Q32. সেবক ব্রিজ কোন নদীর ওপর অবস্থিত?
▻ তিস্তা।
Q33. পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বেশি বনভূমি আছে কোন জেলায়?
▻ দার্জিলিং।
Q34. জলদাপাড়া অভয়ারণ্য কোন প্রাণীর জন্য বিখ্যাত?
▻ একশৃঙ্গ গণ্ডার।
Q35. পশ্চিমবঙ্গের দুটি অর্থকরী ফসলের নাম লেখো।
▻ চা ও পাট।
Q36. পশ্চিমবঙ্গের রাজধানীর নাম কী?
▻ কলকাতা।
Q37. পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান জেলার সংখ্যা কত?
▻ 20 টি।
Q38. পশ্চিমবঙ্গের দুটি দুগ্ধপ্রক্রিয়াকরণ শিল্পকেন্দ্রের নাম লেখো।
▻ ডানকুনি ও আসানসোল।
Q39. পশ্চিমবঙ্গের দুটি মিনারেল ওয়াটার প্রস্তুত কেন্দ্রের নাম লেখো।
▻ কল্যাণী ও বহরমপুর।
Q40. পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত দুটি ‘ফুড পার্ক’-এর নাম লেখো।
▻ শংকরপুর ও কাকদ্বীপ।
Q41.‘ভারতের গ্লাসগো’ কোন শহরকে বলে?
▻ হাওড়াকে।
Q42. উত্তরবঙ্গের ‘বাণিজ্যিক হাব’ কোন শহরকে বলে?
▻ শিলিগুড়িকে।
Q43. দামোদরের একটি শাখানদীর নাম লেখো।
▻ মুণ্ডেশ্বরী।
Q44. কলকাতার সহযোগী বন্দরের নাম লেখো।
▻ হলদিয়া।
Q45.কোন নদী উত্তরের পার্বত্য অঞ্চলকে দ্বিধাবিভক্ত করেছে?
▻ তিস্তা নদী।
Q46. পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলের 2 টি উদ্ভিদের নাম লেখো।
▻ অর্জুন ও শিমুল।
Q47.পশ্চিমবঙ্গের সমভূমি অঞ্চলের 2 টি উদ্ভিদের নাম লেখো।
▻ আম ও জাম।
Q48. কোন জেলাকে ‘পশ্চিমবঙ্গের মুকুট’ বলে?
▻ দার্জিলিং জেলাকে।
Q49. শুশুনিয়া পাহাড় কোন জেলায় অবস্থিত?
▻ বাঁকুড়া।

▻ নবম শ্রেণীর ভূগোল মোক টেস্ট :



❑ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নও উত্তর
Q1. মহানন্দা করিডর কী?
▻ উত্তরবঙ্গ সমভূমি জলপাইগুড়ি জেলার দক্ষিণভাগ,কোচবিহার জেলার দক্ষিণাংশ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদা জেলা নিয়ে গড়ে উঠেছে। উত্তর দিনাজপুর জেলার মূল অংশটি ‘মহানন্দা করিডর’ নামে পরিচিত। এটি মহানন্দা নদীর পার্বত্য অংশ। এই করিডরটি জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার সমভূমিকে মালদার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।

Q2. ভাগীরথী-হুগলি নদীকে ‘পশ্চিমবঙ্গের জীবনরেখা’ বলে কেন?
▻ ভাগীরথী হুগলি নদী পশ্চিবঙ্গের অতি গুরুত্বপূর্ণ নদী। এই নদীর দুপারে অসংখ্য উপনদী এসে পড়েছে। ফলে দক্ষিণবঙ্গে বিরাট বদ্বীপ এবং পলি সমভূমি তৈরি হয়েছে। যা কৃষি উৎপাদনে সহযোগী। হুগলি নদীর দুপাড়ে হুগলি শিল্পাঞ্চলের জন্য জল সরবরাহ, পরিবহণের মাধ্যম হিসেবে জলপথ, পানীয় জল ও অন্যান্য বিষয়ে হুগলি নদীর ভূমিকা অপরিসীম। তাই একে পশ্চিমবঙ্গের জীবনরেখা বলে ।

Q3. ম্যানগ্রোভ অরণ্যের বৈশিষ্ট্য লেখো।
▻  [i] জোয়ারভাটার কারণে গাছগুলি যাতে না পড়ে যায় তাই এদের ঠেসমূল দেখা যায়। [ii] মাটি লবণাক্ত বলে শ্বাসকার্য চালানোর জন্য শ্বাসমূল থাকে। [ii] এখানকার উদ্ভিদসমূহ জরায়ুজ অঙ্কুরোদ্গম পদ্ধতিতে বংশবিস্তার করে। [iv] এখানকার গাছগুলি চিরসবুজ হয়।

Q4. আউট সোর্সিং কী?
▻ মান ও দক্ষতা বৃদ্ধি, কম খরচ ইত্যাদি কারণে বাইরের সংস্থার মাধ্যমে কাজ করিয়ে নেওয়ার পদ্ধতিকে আউট সোর্সিং বলে । বিদেশের তুলনায় এদেশে পরিষেবা মূল্য কম ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পকেন্দ্র থাকার জন্য প্রচুর কাজ তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে আসে। 

Q5. দুর্গাপুরকে ইস্পাত নগরী বলা হয় কেন?
▻ বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর পশ্চিমবঙ্গের একটি আধুনিক শিল্প শহর। এটি পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম শিল্প শহর। এখানে লৌহ-ইস্পাত কারখানায় উন্নতির সাথে সাথে ইস্পাতজাত দ্রব্যের উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পেরও ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। এখানে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট, অ্যালয় স্টিল, সেন্ট্রাল মেকানিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট রয়েছে। এখানকার বৈদ্যুতিক চুল্লিতে সাধারণ ইস্পাতের সঙ্গে ক্রোমিয়াম ও নিকেল মিশিয়ে ‘স্টেনলেস স্টিল’ তৈরি করা হয়। অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টে সংকর ইস্পাত তৈরি হয় জাপান ও কানাডার সহযোগীতায়। দুর্গাপুরে ইস্পাতের একাধিক প্রকল্প থাকার জন্য একে ইস্পাত নগরী বলে।

Q6. শিলিগুড়িকে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার বলে কেন?
▻  শিলিগুড়ি শহরটি দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি মহকুমার সদর শহর। মহানন্দার তীরে পর্বত ও সমভূমির সংযোগস্থলে এই শহরটি উত্তরবঙ্গের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শহর। এই শহরের ওপর দিয়েই পশ্চিমবঙ্গের 31 নং এবং পশ্চিমবঙ্গের দীর্ঘতম 34 নং জাতীয় সড়ক প্রসারিত। 31 নং জাতীয় সড়ক বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব রেলপথ এবং শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে বাগডোগরা বিমানবন্দরের মাধ্যমে কলকাতা, পাটনা ও গুয়াহাটির মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করা যায়। এই শহরের ওপর দিয়েই প্রসারিত রেল, সড়কপথের মাধ্যমে অরুণাচলপ্রদেশ,নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মনিপুর, ত্রিপুরা প্রভৃতি রাজ্যগুলির সাথে সুযোগাযোক গড়ে উঠেছে। তাই শিলিগুড়িকে ভারতের প্রবেশদ্বার বলে।

Q7. হাওড়াকে 'ভারতের গ্লাসগো' বলা হয় কেন?
▻ হাওড়া জেলার সদর হল শহর হাওড়া। কলকাতা শহরের বিপরীতে হুগলি নদীর পশ্চিম তীরে এ রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হাওড়া। এই শহরটি হুগলি শিল্পাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পশহর। এখানে অনেকগুলি পাট শিল্পকেন্দ্র, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প, বস্ত্রবয়ন ও অন্যান্য শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলি রয়েছে। ইংল্যাণ্ডের গ্লাসগো শহরের মতো অসংখ্য ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প কেন্দ্র থাকার জন্য শহরকে ‘ভারতের গ্লাসগো' বলা হয়।

Q8. তিস্তাকে ত্রাসের নদী বলে কেন?
▻তিস্তা উত্তরবঙ্গের প্রধান নদী। পার্বত্য অঞ্চলে তিস্তা নদী প্রত্যন্ত খরস্রোতা। কিন্তু যখনই সমভূমিতে পড়ে তখনই নদীর গতিবেগ কমে যায়। বর্ষাকালে দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টির কারণে তিস্তার জলপ্রবাহ বেড়ে গেলে সমভূমি অঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি হয়। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। সেকারণে তিস্তাকে ত্রাসের নদী বলে ।

Q9. ভাবর কী?
▻হিমালয় থেকে নেমে আসা ছোটো ছোটো নদীর দ্বারা বয়ে আনা পলি, বালি, নুড়ি ও পাথর জমে হিমালয়ের পাদদেশীয় অঞ্চলে মরুঢাল যুক্ত ভূমিভাগ তৈরি করেছে। উত্তরবঙ্গের এই সমভূমিকে তরাই বলে। তরাই অঞ্চলের বনভূমি পরিপূর্ণ পাথুরে বলয়টি ভাবর নামে পরিচিত।

Q10. মহানগর কী?
▻ ইংরেজি ‘মেগা’ (mega) শব্দটির উৎপত্তি গ্রিক শব্দ মেগাস (megas) থেকে, যার অর্থ বৃহৎ। সুতরাং, আক্ষরিক অর্থে মহানগর বলতে বড়ো শহরকে বোঝায়। জনসংখ্যার বিচারে বলা যায়, মহানগরের মোট জনসংখ্যা 10 লক্ষের বেশি। যেমন—কলকাতা।


Q11. পশ্চিমবঙ্গে উৎপাদিত ধানকে ঋতুর ভিত্তিতে কী কী ভাগে ভাগ করা যায়?
▻ ঋতুবৈচিত্র্য অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের ধানকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা—[i] আমন ধান (জুলাই-নভেম্বর), [ii] আউস ধান (এপ্রিল – আগস্ট) এবং [iii] বোরো ধান (নভেম্বর -মার্চ)।
Q12. পশ্চিমবঙ্গের কৃষিকার্যের প্রধান দুটি বৈশিষ্ট্য কী কী?
▻ পশ্চিমবঙ্গের কৃষিকার্যের প্রধান দুটি বৈশিষ্ট্য হল— [i] কৃষিকাজ মৌসুমি বৃষ্টিপাত নির্ভর এবং [ii] প্রধানত শ্রম-নিবিড় কৃষিকার্য দেখা যায়।
Q13. পশ্চিমবঙ্গে কী কী পদ্ধতিতে জলসেচ করা হয়?
▻ পশ্চিমবঙ্গে কূপ, নলকূপ ও খালের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়।
Q14. তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প কী?
▻ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প হল কম্পিউটার এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় ভৌগোলিক তথ্যের সঞ্চয় (storage), প্রেরণ ও রাশিতথ্যের পরিবর্তন; হার্ডওয়্যার, সফ্টওয়্যার, ইলেকট্রনিক্স, ইন্টারনেট প্রভৃতি পরিষেবা সংক্রান্ত কার্যাবলির একত্রীকরণ।
Q15. আশ্বিনের ঝড় কী?
▻ পশ্চিমবঙ্গে শরৎকালে সাধারণত বৃষ্টি হয় না। তবে কখনো কখনো বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এখানে ঝড়বৃষ্টির সৃষ্টি হয়। একে আশ্বিনের ঝড় বলে।

Q16.কালবৈশাখী কী?
▻ গ্রীষ্মকালের শুরুতে পশ্চিমবঙ্গ ও তার সংলগ্ন এলাকায় মূলত বিকেলের দিকে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আগত ঝড় ও বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টিপাত ও শিলাবৃষ্টি হয়, একে কালবৈশাখী বলে।
Q17. বাগরি অঞ্চল কী?
▻ মুরশিদাবাদ ও নদিয়া জেলার অন্তর্গত যে সমভূমি অঞ্চলে গঙ্গা ও ভাগীরথী নদীর ক্রমাগত পলি সঞ্চয়ের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে, তাকে বাগরি অঞ্চল বলে। এর অপর নাম ‘মৃতপ্রায় বদ্বীপ’ অঞ্চল ৷
Q18. ভৌমজল কী?
▻ ভৌমজল শব্দের অর্থ ‘ভূগর্ভস্থ জল’। বৃষ্টিপাতের পর সেই জল যখন মৃত্তিকার স্তর ভেদ করে ভুগর্ভে সঞ্চিত হয় তখন তাকে ভৌমজল বলে।
Q19. পশ্চিমবঙ্গের সমভূমি অঞ্চলে কী ধরনের মাটি দেখা যায়?
▻ পশ্চিমবঙ্গের সমভূমি অঞ্চলে নদীবাহিত উর্বর পলি এবং পলিযুক্ত দোআঁশ মাটি দেখা যায় ।
Q20. তাল কী?
▻ কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি জেলার দক্ষিণাংশে, মালদহ জেলার পশ্চিমাংশে বিক্ষিপ্তভাবে থাকা জলাভূমি বা নিম্নভূমিকে স্থানীয় ভাষায় তাল বলে। এগুলি কালিন্দী নদীর উত্তরের অংশে অবস্থিত।
Q21. বরেন্দ্রভূমি কী?
▻ মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পূর্বাংশে, মৃদু ঢেউখেলানো ল্যাটেরাইট ও প্রাচীন পলিমাটি সমৃদ্ধ উঁচু ভূমিভাগ বরেন্দ্রভূমি নামে পরিচিত।

Q22. দিয়ারা কী?
▻ মালদহ জেলার দক্ষিণাংশে গঙ্গা নদীর তীরবর্তী নবীন পলিগঠিত উর্বর ভূমিভাগ দিয়ারা নামে পরিচিত।
Q23. রাঢ় সমভূমি কোথায় অবস্থিত?
▻ ভাগীরথী-হুগলি নদীর পশ্চিমাংশের নবীন পলি অঞ্চল ছাড়া বীরভূম ও বাঁকুড়ার প্রায় সমগ্র অংশ, মুরশিদাবাদ, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পশ্চিমাংশ এবং বর্ধমান জেলার পূর্বাংশে তরঙ্গায়িত লাল মাটিযুক্ত রাঢ় সমভূমি অবস্থিত।
Q24. সক্রিয় বদ্বীপ পশ্চিমবঙ্গের কোথায় দেখা যায়?
▻ পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার দক্ষিণে ও পূর্বাংশে এবং উত্তর 24 পরগনা জেলার দক্ষিণ দিকে সক্রিয় বদ্বীপ দেখা যায়। এই অংশে নদীগুলি দ্বারা বদ্বীপ গঠনের কাজ এখনও চলছে।
Q25. পশ্চিমবঙ্গে কী কী ঋতু লক্ষণীয়?
▻ পশ্চিমবঙ্গে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ ও শীত এই চারটি ঋতু লক্ষণীয়।
Q26. পশ্চিমি ঝঞ্ঝা কী?
▻ শীতকালে উত্তর-পশ্চিম ভারতের নিম্নচাপযুক্ত ঝোড়ো আবহাওয়ার ফলে পশ্চিমবঙ্গে শীতের শান্ত পরিবেশ বিঘ্নিত হয়ে সামান্য বৃষ্টিপাত হয় এবং অনেকসময় ঝোড়ো বাতাসও প্রবাহিত হয় যা পশ্চিমি ঝঞ্ঝা নামে পরিচিত।

Q27. পার্বত্য ও মালভূমি অঞ্চলের জলবায়ু জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য লেখো?
 পার্বত্য ও মালভূমি অঞ্চলের জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য গুলি হল—
বিষয় পার্বত্য জলবায়ু মালভূমির জলবায়ু
(i) উষ্ণতা গ্রীষ্মকালের গড় উষ্ণতা 16°সে এবং শীতকালে অনেক ক্ষেত্রে 2 °সে-এ পৌঁছোয়। গ্রীষ্মকালের গড় উষ্ণতা 40 °সে-এরও বেশি এবং শীতকালে 10-12 °সে।
(ii) বৃষ্টিপাত বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত 400 সেমির বেশি। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত 100-150 সেমি।
(iii) প্রকৃতি এখানকার জলবায়ু আর্দ্র ও শীতল নাতিশীতোষ্ণ প্রকৃতির। এখানকার জলবায়ু শীতল শুষ্ক ও চরমভাবাপন্ন প্রকৃতির।

বিষয় উত্তরবঙ্গের নদনদী দক্ষিণবঙ্গের নদনদী
(i) জলের উৎস উত্তরবঙ্গের নদনদীগুলি বরফগলা ও বৃষ্টির জলে পুষ্ট। যেমন—তিস্তা,তোর্সা ইত্যাদি। দক্ষিণবঙ্গের নদনদীগুলি বৃষ্টির জলে পুষ্ট। যেমন—দামোদর,অজয় ইত্যাদি।
(ii) প্রবাহপথ নদীগুলি পার্বত্য ও সমভূমি অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীগুলি মালভূমি ও অঞ্চলের সমভূমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
(iii) জলের প্রাপ্যতা এই নদীগুলিতে সারাবছর জল থাকে। এই নদীগুলিতে সারাবছর জল থাকে না শুষ্ক ঋতুতে অনেকক্ষেত্রে শুকিয়ে যায়।



❑   ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর  
Q1. পশ্চিমবঙ্গের প্রধান শিল্পগুলির পরিচয় দাও।
▻ পশ্চিমবঙ্গের প্রধান শিল্পসমূহ: পশ্চিমবঙ্গ একটি কৃষিপ্রধান রাজ্য হলেও কৃষির পাশাপাশি এখানে শিল্পেরও বিকাশ
ঘটেছে। এখানকার উল্লেখযোগ্য শিল্পগুলি হল—লৌহ-ইস্পাত শিল্প, পাট শিল্প, চা শিল্প, খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ শিল্প, কার্পাস বয়ন শিল্প, পর্যটন ও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ইত্যাদি।
[1] লৌহ-ইস্পাত শিল্প : পশ্চিমবঙ্গে প্রথম লৌহ-ইস্পাত শিল্পটি স্থাপিত হয় 1870 সালে বর্ধমান জেলার কুলটিতে। পরবর্তীকালে বার্ণপুরে 1918 সালে আরেকটি লৌহ-ইস্পাত কারখানা গড়ে উঠেছে। এছাড়া, লৌহ আকরিক, কয়লা, জল, বিদ্যুৎ, শ্রমিক ইত্যাদির পর্যাপ্ততার কারণে দুর্গাপুরে লৌহ-ইস্পাত কারখানা বিশেষ উন্নতি লাভ করেছে।
[2] পাট শিল্প : পাট শিল্পে ভারতের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ শ্রেষ্ঠ। 1855 সালে হুগলি জেলার রিষড়ায় প্রথম পাটকল গড়ে
ওঠে। পশ্চিমবঙ্গে পাটকলগুলি হুগলি নদীর দুই তীরে অবস্থান করেছে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় 59টি পাটকল আছে।
[3] কার্পাস-বয়ন শিল্প: পশ্চিমবঙ্গে কার্পাস তুলোর চাষ প্রায় হয় না বললেই চলে, তবুও রপ্তানির ওপর নির্ভর করে এখানে কার্পাস-বয়ন শিল্প উন্নতি লাভ করেছে। পশ্চিমবঙ্গে প্রথম কার্পাস শিল্প গড়ে উঠেছিল হাওড়ার ঘুসুরিতে। পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া সদর, শ্রীরামপুর,শ্যামনগর, সোদপুর ইত্যাদি স্থানে কার্পাস-বয়ন শিল্প গড়ে উঠেছে।
[4] চা শিল্প : চা পশ্চিমবঙ্গের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প, 1834 সালে প্রথম পশ্চিমবঙ্গে একটি চা শিল্প গড়ে ওঠে।
[5] খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প : খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ বলতে বোঝানো হয় মাছ, মাংস, সবজি ইত্যাদি খাদ্যগুলিকে সরাসরি না খেয়ে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে সেগুলি খাদ্য উপযোগী করে তোলার পদ্ধতি। বর্তমানে এই শিল্প অনেক উন্নতি লাভ করেছে। পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ইত্যাদি জেলায় চা বাগানগুলিকে কেন্দ্র করে এখানে চা শিল্পগুলি গড়ে উঠেছে।
[6] পর্যটনশিল্প : পর্যটনশিল্প বলতে বোঝানো হয় অবসর সময়ে বা একঘেয়েমি কাটানোর জন্য একটি বিনোদনমূলক কেন্দ্র। এই পর্যটনশিল্প বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে, যেমন—ধর্মস্থান, শহর, পাহাড়, সমুদ্র, ঐতিহাসিক স্থান, শিক্ষাগত স্থান ইত্যাদি। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রগুলি হল—কলকাতা (ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, চিড়িয়াখানা), সুন্দরবন, দিঘার সমুদ্রসৈকত, দার্জিলিং এর পাহাড়-পর্বত ইত্যাদি।
[7] তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প : বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করেছে। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার সল্টলেকে ইলেকট্রনিকস কমপ্লেক্স-এর সফটওয়্যার পার্ক তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্রের বিপুল
পরিবর্তন ঘটিয়েছে এবং বর্তমানে বিভিন্ন উন্নত প্রযুক্তিবিদ্যার মাধ্যমে এই শিল্পের উন্নতি ঘটে চলেছে।

Q2. পশ্চিমবঙ্গের মৃত্তিকার শ্রেণিবিভাগ করো ও সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
▻  পশ্চিমবঙ্গের মৃত্তিকার শ্রেণিবিভাগ: বিখ্যাত মৃত্তিকা বিজ্ঞানী জেনির মতে, জলবায়ু, জীবমণ্ডল, ভূপ্রকৃতি,
মৃত্তিকার উৎস শিলা ও সময়—এই পাঁচটি কারণে মৃত্তিকার উদ্ভব ঘটে। নীচে মৃত্তিকার শ্রেণিবিভাগটি দেখানো হল—
  1. পার্বত্য অঞ্চলের মাটি
  2. তরাই অঞ্চলের মাটি
  3. মালভূমি অঞ্চলের মাটি
  4. মালভূমি অঞ্চলের মাটি
  5. উপকূলের মাটি
[1] পার্বত্য অঞ্চলের মাটি : [a] অবস্থান : পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল অর্থাৎ, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার প্রভৃতি জেলায় এই মাটি দেখতে পাওয়া যায়। [b] বৈশিষ্ট্য : [i] এটি পডসল প্রকৃতির মাটি, [ii] এর রং
কালো বা ধূসর বাদামি বর্ণের হয়, [iii] এই মাটি মাঝারি ধরনের উর্বর প্রকৃতির। [c] উৎপন্ন ফসল: চা, কমলালেবু, সিঙ্কোনা প্রভৃতি উৎপাদিত হয়।

[2] তরাই অঞ্চলের মাটি : [a] অবস্থান : পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশে তরাই অঞ্চলে এই মাটি দেখা যায়।
[b] বৈশিষ্ট্য : [i] এই মাটিতে নুড়ি, কাঁকর, বালি প্রভৃতি [ii] মাটি ধূসর বর্ণের হয়; [iii] উর্বরতা মাঝারি ধরনের।
[c] উৎপন্ন ফসল: ধান, গম, চা আলু প্রভৃতি চাষ করা হয়।

[3] মালভূমি অঞ্চলের মাটি : [a] অবস্থান : পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে এবং মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুরের বরেন্দ্রভূমি অঞ্চলে এই মাটি দেখা যায়। [b] বৈশিষ্ট্য : [i] মাটি ইটের মতো শক্ত ও লাল বর্ণের প্রধানত ল্যাটেরাইট প্রকৃতির হয়, [ii] এই মাটি অনুর্বর প্রকৃতির, [iii] এর জলধারণক্ষমতা কম, [iv] এই
অঞ্চলের মাটি দুই ধরনের হয়ে থাকে, যথা—ল্যাটেরাইট মাটি (লাল) এবং লোহিত মাটি (লালচে বাদামি)। [c] উৎপন্ন ফসল: এই মাটিতে চা,ভুট্টা,প্রভৃতি ফসল উৎপন্ন হয়।

[4] সমভূমি অঞ্চলের মাটি : [a] অবস্থান : নদীর তীরবর্তী অঞ্চল তথা উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মুরশিদাবাদ নদীয়া, উত্তর ও দক্ষিণ 24 পরগনা, হাওড়া, হুগলি প্রভৃতি জেলায় এই মাটি দেখা যায়। [b] বৈশিষ্ট্য : [i] এই মাটি খুবই উর্বর প্রকৃতির হয়, [ii] এই ধরনের মাটি সাধারণত পলিমাটি হয়, [iii] বয়সে প্রবীণ মাটি প্রাচীন পলিমাটি (লালচে বর্ণের) এবং বয়সে নবীন মাটি নবীন পলিমাটি (বাদামি বর্ণের) নামে পরিচিত। [c] উৎপন্ন ফসল: ধান, গম, পাট, আখ প্রভৃতি সমভূমি
অঞ্চলের মাটির উল্লেখযোগ্য ফসল।
[5] উপকূলের মাটি : [a] অবস্থান : সুন্দরবন ও কাঁথি উপকূলে প্রধানত এই মাটি লক্ষ্য করা যায়। [b] বৈশিষ্ট্য : [i]এই মাটি লবণাক্ত হয়, [ii] এই মাটি কালো বর্ণের হয়, [iii] এই মাটির জলধারণক্ষমতা কম, [iv] এই মাটি মূলত অনুর্বর প্রকৃতির হয়। [c] উৎপন্ন ফসল : নারকেল, সুপারি, তরমুজ প্রভৃতি উদ্ভিদ এই মাটিতে জন্মায়।

Q3. পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব বিশ্লেষণ করো।
▻ পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব: পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে দুটি ভিন্নধর্মী মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়—
[i] গ্রীষ্মকালীন আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু এবং [ii] শীতকালীন শুষ্ক উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু। পশ্চিমবঙ্গের
জলবায়ু অনেকাংশে এই দুই মৌসুমি বায়ু দ্বারা প্রভাবিত। যেমন— [1] দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু এবং উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর আগমন প্রত্যাগমন অনুসারেই পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুকে 4টি ঋতুতে ভাগ করা হয়—
  • [a] দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রাক্-আগমনকালীন সময়কাল বা গ্রীষ্মকাল 
  • [b] দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমনকাল বা বর্ষাকাল 
  • [c] দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রত্যাবর্তনকাল বা শরৎকাল এবং 
  • [d] উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর আগমনকাল বা শীতকাল।
[2] কেবলমাত্র ঋতু বিভাজনই নয়, পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুর ঋতুকালীন বৈশিষ্ট্যও মৌসুমি বায়ুর প্রকৃতির ওপর
নির্ভরশীল। [3] ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু উত্তর থেকে দক্ষিণে
প্রবাহিত হয়। এই বায়ু শীতল বলে পশ্চিমবঙ্গের তাপমাত্রা অনেক কমে যায়। এজন্য এই সময়টিকে বলে শীতকাল। এ ছাড়া, উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু শুষ্ক বলে শীতকালে পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টিপাত তেমন হয় না। [4] ফেব্রুয়ারি মাসের শেষদিক থেকে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিদায় নেয় এবং জুন মাসে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমন ঘটে। এই দুই বায়ুর মধ্যবর্তী সময়কালে অর্থাৎ, মার্চ মাস থেকে মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের উয়তা যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়। এজন্য এই সময়টিকে বলে গ্রীষ্মকাল। [5] জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু আর্দ্র বলে এইসময় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে এবং বৃষ্টিপাত হয়। এজন্য বছরের এই চার মাসকে
বলে বর্ষাকাল। [6] অক্টোবর-নভেম্বর মাসে প্রত্যাবর্তনকারী দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আকাশ মেঘমুক্ত থাকে
এবং উন্নতাও ক্রমশ কমতে থাকে। এই সময়টিকে বলে শরৎকাল।

Q4. পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন ঋতুতে জলবায়ুর বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করো
▻ পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ু: ভারত 
সরকারের আবহাওয়া বিভাগ পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুতে প্রধানত 4টি ঋতু যথা—গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, শীত চিহ্নিত করলেও শীতের প্রারম্ভে হেমন্ত ও গ্রীষ্মের প্রারম্ভে বসন্তকাল পশ্চিমবঙ্গে লক্ষ্য করা যায়।
বিভিন্ন ঋতুসমূহ
[1] গ্রীষ্মকাল :  [a] সময়কাল: মার্চ থেকে মে মাস। মার্চের শেষ থেকে সূর্য যতই নিরক্ষরেখা থেকে কর্কটক্রান্তিরেখার দিকে যায়, পশ্চিমবঙ্গের তাপমাত্রাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। [b] বৈশিষ্ট্য : (i) রাজ্যের স্বাভাবিক উন্নতা 30 °সে হলেও পশ্চিম বঙ্গের মালভূমি অঞ্চলের উন্নতা প্রায় 45°সে হয়, পুরুলিয়া জেলায় সর্বাধিক উন্নতা থাকে এবং এখানে ‘লু’-এর প্রভাব লক্ষ করা যায়; (ii) উপকূল ও পার্বত্য অঞ্চলের ভূমির উচ্চতা বেশি হওয়ায় তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকে। দার্জিলিং-এর পার্বত্য অঞ্চলের উষ্ণতা থাকে 12-18 °সে; 
(iii) গ্রীষ্মকালের অপরাহ্ণের সময় ঝড় বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টিপাত বা শিলাবৃষ্টি হয়, যা কালবৈশাখী নামে পরিচিত।

[2] বর্ষাকাল : [a] সময়কাল : জুন থেকে সেপ্টেম্বর। জুন মাসের প্রথমভাগ থেকেই শুরু হয় বর্ষাকাল। দ্বিতীয় সপ্তাহের
মধ্যে জলীয়বাষ্পপূর্ণ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু রাজ্যে প্রবেশের ফলে বর্ষাকালের সূচনা হয়। [b] বৈশিষ্ট্য : (i)  আৰ্দ্ৰ মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তরের পার্বত্য অঞ্চলে সবচেয়ে থেকে বেশি বৃষ্টি হয় (গড়ে প্রায় 400 সেমি)। (ii) দক্ষিণের দিকে বৃষ্টি ক্রমশ কমে। উত্তরবঙ্গের সমভূমিতে 200-250 সেমি, দক্ষিণবঙ্গের বদ্বীপে 150-200 সেমি বৃষ্টি হলেও উপকূলে তুলনামূলক বেশি বৃষ্টি হয়। (iii) বর্ষাকালে পশ্চিমবঙ্গের গড় বৃষ্টিপাত 175 সেমি। (iv) সর্বাধিক বৃষ্টি হয় জলপাইগুড়ি জেলার বক্সা-দুয়ার-এ (535 সেমি) ও সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয় পুরুলিয়া জেলায় (75 সেমি)। এই সময় গ্রীষ্মকালের
তুলনায় উন্নতা কিছুটা কম হয়।

[3] শরৎকাল : [a] সময়কাল : অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস। সেপ্টেম্বর মাসের শেষভাগ ও অক্টোবর মাসের প্রথমভাগ থেকে সূর্য নিরক্ষরেখা পেরিয়ে মকরক্রান্তিরেখার দিকে সরে যেতে থাকে। [b] বৈশিষ্ট্য : (i)  দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু পশ্চিমবঙ্গ থেকে ফেরত যেতে থাকে। ফলে বৃষ্টিপাত ক্রমশ কমতে থাকে; (ii) গড় উয়তার পরিমাণ প্রায় 30 °সে। (iii) এবং বর্ষার প্রত্যাগমনকালে বঙ্গোপসাগর থেকে আসা ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রবল ঝড় ও বৃষ্টিপাত হয় যা আশ্বিনের ঝড় নামে পরিচিত।

[4] শীতকাল : [a] সময়কাল : ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস। এইসময় সূর্য মকরক্রান্তিরেখার ওপর থাকে। [b] বৈশিষ্ট্য :  (i)এই সময় শীতল ও শুষ্ক উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়। (ii) এই সময়ে পশ্চিমবঙ্গের তাপমাত্রা অনেক কমে যায় (যেমন পার্বত্য এলাকায় 4 °সে—7 °সে, দক্ষিণাংশে ও পশ্চিমাংশে তাপমাত্রা যথাক্রমে 16 °সে ও 10°সে হয়)। (iii) শীতকালে বৃষ্টিপাত হয় না, শান্ত অবস্থা থাকে। (iv) উত্তর-পশ্চিম ভারতে নিম্নচাপযুক্ত আবহাওয়ার প্রভাবে মাঝেমাঝে পশ্চিমবঙ্গে অল্প বৃষ্টিপাত হয়। একে পশ্চিমি ঝঞ্ঝা বলা হয়।

No comments

Hi Welcome ....