Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Top Ad

Breaking News:

latest

76th independence day speech in bengali

Independence Day Speech in Bengali 2022 15 august speech in bengali ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবস বক্তৃতা সবাইকে জানাই শুভ সকাল। আজ ১৫ই আগস্ট অর্থাৎ ...

৭৬ তম স্বাধীনতা দিবস বক্তৃতা 2022


Independence Day Speech in Bengali 2022

15 august speech in bengali

৭৬ তম স্বাধীনতা দিবস বক্তৃতা
সবাইকে জানাই শুভ সকাল। আজ ১৫ই আগস্ট অর্থাৎ আমাদের দেশের স্বাধীনতা দিবস । স্বাধীনতা দিবস মানে প্রতিটি ভারতবাসীর কাছে অত্যন্ত গর্বের ও আবেগের একটি দিন। আজকের দিনে আমাদের দেশের প্রতিটা অলিতে-গলিতে, স্কুল-কলেজে, অফিস আদালতে গৌরবের সাথে ত্রিবর্ণ রঞ্জিত ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয়। দেশপ্রেমের আবেগেই ভারতবাসীর মন আন্দোলিত হয়। ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট ব্রিটিশদের প্রায় ২০০ বছরের পরাধীনতার হাত থেকে আমাদের দেশ ভারতবর্ষ মুক্তি লাভ করেছিলো এবং বিশ্ব মানচিত্রে একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ ভারতবর্ষের উন্মেষ ঘটে। ব্রিটিশদের একটি শিক্ষা দিয়ে ভারত একটি ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করে। স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু এই দিনে নয়া দিল্লির লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। তারপর থেকে প্রতিবছর আমরা স্বাধীনতা দিবসকে জাতীয় উৎসব হিসাবে উদযাপন করি। এই দিনটি সমগ্র ভারতজুড়ে অনেক আনন্দের সাথে উদযাপন করা হয়। স্বাধীনতা দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয় কোটি কোটি বীর শহীদদের আত্মত্যাগের ইতিহাস।

ভারতের স্বাধীনতা অর্জন ব্রিটিশ শাসন থেকে ছিনিয়ে নেওয়া খুবই কঠিন ছিল। মহান বিপ্লবীদের রক্তে রাঙা আমাদের এই স্বাধীনতা। ভারতের মহান মুক্তিযোদ্ধারা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, মহাত্মা গান্ধী, জহরলাল নেহেরু, ভগৎ সিং, ক্ষুদিরাম বসু, চন্দ্রশেখর আজাদ, যারা জীবনের শেষ পর্যন্ত ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য কঠিন লড়াই করেছিলেন। গান্ধীজি ছিলেন এক মহান নেতা যিনি ভারতীয়দের অহিংসার শিক্ষাদান করেছিলেন । তিনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি অহিংসার সাহায্য নিয়ে ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। নেতাজির মতো চরমপন্থী বিপ্লবীরা মনে করতেন স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে হবে তিনি গড়ে তুলেছিলেন আজাদ হিন্দ ফৌজ তার স্লোগান ছিল তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব। ১১ ই আগস্ট ১৯০৮ হাসতে হাসতে ফাঁসির দড়ি গলায় পড়েছিলেন ১৮ বছরের এক যুবক ক্ষুদিরাম বসু। আমরা কখনোই ভুলতে পারবো না ভগৎ সিং এর লড়াই এবং প্রাণ বিসর্জন। ভগৎ সিং এর স্লোগান ইনক্লাব জিন্দাবাদ অর্থাৎ বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক। এছাড়াও মাস্টারদা সূর্যসেন, বালগঙ্গাধর তিলক, সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল, বিনয়-বাদল- দীনেশ, আরো অনেক শহীদদের আত্মত্যাগের ফল আমাদের এই স্বাধীনতা।

স্বাধীন আমাদের ভারত বর্ষ। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন পুরুষদের পাশাপাশি নারী শক্তিরও আত্মত্যাগ ছিল অনস্বীকার্য । ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ, প্রীতিলতা ওয়েদার, মাতঙ্গিনী হাজরা, বীণা দাস প্রমূখ সাহসী নারীরা নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়ে এনেছিলেন এই স্বাধীনতা। অবশেষে দীর্ঘ বছরের সংগ্রামের পর 1947 সালের 15 ই আগস্ট ভারত স্বাধীনতা লাভ করে স্বাধীনতা আমাদের অনেক সুবিধা দিয়েছে। এক - শান্তির দেশ দিয়েছে। যেখানে আমরা নির্ভয়ে সারারাত ঘুমোতে পারি। স্বাধীনভাবে ভাবার অধিকার শিক্ষার অধিকার স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার এবং আরো অনেক কিছু দিয়েছে। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ছাড়া ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা অর্জন করা অসম্ভব ছিল। আমাদের কাছে এটি ছিল আমাদের শহীদদের কাছ থেকে স্বাধীন ভারতের একটি সুন্দর উপহার। তাই স্বাধীন ভারতের একজন সুশিক্ষিত ও দায়িত্ববান নাগরিক হওয়ার জন্য আমাদের দায়িত্ব এই স্বাধীনতা রক্ষার। আজ আমরা সবাই স্বাধীন হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারীরা আজও পরাধীন। তারা তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী কাজের স্বাধীনতা পায়না। পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। আজকের দিনে এত কিছুর পরেও আমরা ধর্মের ভিত্তিতে সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে নিজেদের মধ্যে লড়াই করছি। এটা আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা নয় স্বাধীনতা দিতে হবে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকেই। তবেই ভারতবর্ষ প্রকৃত অর্থে স্বাধীন হয়ে উঠবে। আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার এবং ভারত বর্ষকে বিশ্বের সেরা দেশ হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদেরই। তাই আমাদের প্রতিজ্ঞা করা উচিত যে আমরা সব সময় আমাদের দেশের সেবার জন্য কাজ করবো এবং আমাদের দেশকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলবো। বলো বলো বলো সবে শত বিনা বেনু রবে ভারত আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসনও লবে। জয় হিন্দ বন্দে মাতরম ।


তোমার স্বপ্নের ভারত
ভারতবর্ষ হল আমার জন্মভূমি। আমার স্বদেশ। আমাদের শাস্ত্রে আছে, জননী এবং জন্মভূমি হল স্বর্গের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। এই কথা যে কতখানি সত্য, তা আমি নিয়ত অনুভব করি। স্বর্গ নামক দেশটি কেমন, তা আমি ঠিক জানি না। কিন্তু আমাদের এই দেশের মাটি, দেশের প্রকৃতি এবং ভারতবর্ষের মন ভোলানো পারিপার্শ্বিক সৌন্দর্য আমাদের এমনভাবে আচ্ছন্ন করে রেখেছে যে, এর বাঁধন ছেড়ে বের হতে ইচ্ছে হয় না। স্বর্গ এর চেয়ে আর কত ভালো হবে? আমাদের এই ভারতের সৌন্দর্য-সুষমা যে অসাধারণ, সে বিষয়ে বিদেশি লোকেরাও দ্বিমত করেন না। কিন্তু আমাদের দুঃখ এই, এই সোনার দেশের মানুষদের অবস্থা তেমন ভালো নয়। আমাদের দেশ বড়ো গরিব। বড়ো দুস্থ। দু’বেলা দু'মুঠো অন্নসংস্থান করতেই আমাদের কালঘাম ছুটে যায়। অন্ন যদি-বা জোটে, শিক্ষা-স্বাস্থ্য এবং মাথা গোঁজবার ঠাঁইটুকু জোগাড় করা আরও কঠিন সমস্যা হয়ে দেখা দেয়।

আমাদের দেশের বেশিরভাগ লোকই অল্পশিক্ষিত, কিংবা অশিক্ষিত। বেশিরভাগ লোকেরই নেই পাঠশালার বিদ্যাটুকুও। স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার বিষয়টি আরও খারাপ। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আমরা দিনের পর দিন বাস করতে অভ্যস্ত। এর ফলে হামেশাই আমাদের অসুখ লেগে রয়েছে। অপুষ্টি ও অসুস্থতার ফলে আমাদের দেশে শিশুমৃত্যুর হার অনেক বেশি। সাধারণ মানুষদের অবাধ চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা আজও তৈরি হয়নি। দেশে হাসপাতালের বড়ো অভাব। অভাব শুধু শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য নিয়ে নয়, অভাব রয়েছে আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নিয়েও। গ্রামের লোকেরা কত অসহায়ভাবেই না তাঁদের জীর্ণ কুটিরে থাকেন।

বর্ষার দিনে জলে ভেসে যায় তাঁদের ঘর। ভেসে যায় প্রাঙ্গণ। শীতের দিনে হু হু করে হাওয়া ছুটে আসে ঘরের ভিতর পর্যন্ত। ওই অবস্থায় ভারতের আশি শতাংশ মানুষ বসবাস করেন। বড়ো বড়ো শহরে ফুটপাতে শুয়ে কাটিয়ে দেয় লক্ষ লক্ষ লোক। এই মানুষদের মাথার উপর ছাদ কবে মিলবে? জানা নেই। জানি না, ভারতবাসীদের দুঃখ দুর্গতির কবে অবসান হবে? তবে আমাদের চোখের সামনে যে স্বপ্নের ভারত রয়েছে, সেখানে এসব দুঃখের অণুমাত্র ছবিও নেই। আমরা এক সমৃদ্ধ ভারতের স্বপ্ন দেখি। সে ভারত হল সুজলা, সুফলা, ও শস্যশ্যামলা। সে ভারতে দুঃখ নেই, দৈন্য নেই। নেই অন্নাভাব, অনাহার, অনটন। দেবী অন্নপূর্ণার মতো ভারতমাতা তাঁর সন্তানদের দু’হাতে অন্ন বিতরণ করছেন, সেই ছবি দেখি। পেট ভরে খাবার দাবার পেয়ে ভারতবাসীদের চেহারাও বেশ মজবুত দেখায়। দেশে তেমন আর রোগভোগ নেই। সকলেই বেশ কর্মঠ। ওই কর্মঠ মানুষদের শ্রমে প্রচুর খাদ্যসামগ্রী যেমন উৎপন্ন হচ্ছে, তেমনি উৎপন্ন হচ্ছে বিদেশে রপ্তানিযোগ্য বহু মহার্ঘ পণ্য ফলে, ভারতের ঐশ্বর্য এমনভাবে বেড়ে গেছে যে তাতে বহু দেশই ঈর্ষান্বিত।

দেশে সোনাদানার অভাব নেই। অভাব নেই মহার্ঘ বস্ত্রের। মুর্শিদাবাদের রেশমি কাপড় এবং কাশ্মীরের গালিচার এখন পৃথিবীজোড়া নাম। চিকিৎসাশাস্ত্রের অভূতপূর্ব উন্নতিতে ভারতে মৃত্যুর হার কমে গেছে। ভারতের লোকেরা দীর্ঘজীবী। এ হল আমার স্বপ্নে দেখা ভারতের ছবি। গ্রামে ও নগরে ভারতবাসীদের আর বাসস্থানের অভাব নেই। প্রতিটি বাড়ি এবং প্রতিটি কুটির পটে আঁকা ছবির মতন দেখতে। প্রতিটি বাড়ির সামনে ফুলের বাগান ও বাহারি গাছ। দেশের রাস্তাঘাটও সুন্দর। পিচঢালা সুন্দর রাস্তা দিয়ে ছুটে চলেছে সুন্দর সুন্দর মোটরগাড়ি। ওই মোটরগাড়ি চেপে দেশের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে অতি সহজেই চলে যাওয়া যায়। আমার দেখা স্বপ্নের ভারতে কোনো চোর- ডাকাত নেই। দেশের বিদ্যালয় গুলোও ভারী সুন্দর। সবচেয়ে সুন্দর আমাদের মাস্টারমশাইদের স্নেহপূর্ণ ব্যবহার।

No comments

Hi Welcome ....