Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Top Ad

Breaking News:

latest

সিন্ধু সভ্যতা ও হরপ্পা সভ্যতা Free MCQ Mock Test 25 Question





Highlight Notes :
☞ হরপ্পা সভ্যতায় প্রাপ্ত সিলমোহরের অর্ধ-নর, অর্ধ-বৃষ মূর্তিটির সঙ্গে সুমেরের গিলগামেশ নামক বীরের সাহায্যকারী অর্ধ-নর, অর্ধ-বৃষ আকৃতিবিশিষ্ট ‘ইঅবনি’ মূর্তির যথেষ্ট সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।
☞ তামা ও ব্রোঞ্জ দ্বারা নির্মিত বর্শা, গদা, কুঠার, তির-ধনুক, মুষল তারা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করত।
☞ হরপ্পা ও মহেঞ্জোদাড়ো নগরী দুটি অধুনা পাকিস্তান রাষ্ট্রের অন্তর্গত।
☞ সিন্ধু সভ্যতার অস্তিত্বের কথা সর্বপ্রথম সারা বিশ্বে জ্ঞাত হয় ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধিকর্তা স্যার জন মার্শালের সচিত্র বিবরণ ১৯২৪ সালে 'London Illustrated News' পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর।
☞ হরপ্পার মৃৎশিল্পীরা পলিমাটি, বালি ও চুনের গুঁড়ো মিশিয়ে কলসী, জালা, থালা, পেয়ালা, নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্র ও নানাপ্রকার খেলনা তৈরি করত। লাল পোড়ামাটির পাত্রের গায়ে কালো রং লাগানোর বিশেষ চল ছিল। মৃৎপাত্রের গায়ে ও পোড়ামাটির মূর্তিতে পাওয়া যায় খরগোশ, ময়ূর, পায়রা, হাঁস, বাদর ও বুনোমুরগির চিত্র।
☞ হরপ্পা-মেসোপটেমিয়া বাণিজ্য উপলক্ষ্যে তিনটি অঞ্চলের কথা বারংবার উল্লেখ করা হয়ছে। সেগুলি হল, দিলমুন বা তিলমুন, মগন ও মেলুহা। দিলমুন-কে ‘মেসোপটেমিয়ার প্রবেশদ্বার’ বলা হত।
☞ আধুনিক কালের বাহারিন ছিল সেকালের দিলমুন, মগনকে আগে মাকরান উপকূল বলে শনাক্ত করা হত। সম্প্রতি একে ওমান উপকূলের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। মেলুহা হল সিন্ধু অববাহিকা।
☞ মহেঞ্জোদাড়োতেও একটি বৃহৎ শস্যাগার মিলেছে যা হরপ্পার শস্যাগারের তুলনায় কিছুটা ছোটো। সেটির দৈর্ঘ্য ৪৫.৭১ মিটার এবং প্রস্থ ১৫.২৩ মিটার।

সিন্ধু সভ্যতার নামকরণ ‘হরপ্পা সভ্যতা’ হল কেন?
☞ সুপ্রাচীন সভ্যতার সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত স্থলটি সিন্ধুনদের তীরবর্তী অঞ্চলে হওয়ায় এটি সুদীর্ঘকাল যাবৎ ‘সিন্ধু সভ্যতা’ নামেই সমধিক পরিচিত ছিল, কিন্তু বর্তমানে সিন্ধুতট অতিক্রম করে ভারত ও ভারতের বাইরে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় ১৫০০টি কেন্দ্র আবিষ্কৃত হয়েছে। এ ছাড়া মহেঞ্জোদাড়োর তুলনায় হরপ্পায় প্রাপ্ত নিদর্শনগুলি অনেক বেশি প্রাচীন ও মহেঞ্জোদাড়ো অপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বলে বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ববিদগণের নিকট এই সভ্যতা ‘হরপ্পা সভ্যতা’ নামে সুপরিচিত।

☞ সিন্ধুসভ্যতায় প্রথম ধানের চাষ লোথালে হয়েছিল বলে মনে করা হয়। লোথাল ছিল বন্দরনগরী, এখানে পোতাশ্রয়ের অস্তিত্ব ছিল। এ ছাড়াও হরপ্পা, কালিবঙ্গান, রংপুরে ধানের চাষ হত বলে মনে করা হয়।
☞ চানহুদারো ছিল একমাত্র স্থান যেটি ছিল কোনোপ্রকার দুর্গবিহীন। অর্থাৎ এখানে কোনো দুর্গ ছিল না।
☞ জলনিকাশি ব্যবস্থা সর্বাপেক্ষা সুন্দর ছিল চানহুদারোতে। কালিবঙ্গানে জলনিকাশি ব্যবস্থা অনুপস্থিত ছিল।
☞ হরপ্পা সভ্যতায় রাখিগড়াই অঞ্চলে মেয়েদের জন্য পৃথক সমাধিক্ষেত্রের কথা জানা যায়।
☞ কালিবঙ্গানে আবিষ্কৃত একটি বিশিষ্ট নিদর্শন হল একটি চ্যাক্ষেত্রের অস্তিত্ব। পূর্ব-পশ্চিমে লাঙলের দাগ ছিল ৩০ সেমি করে তফাতে,আর উত্তর দক্ষিণে দাগগুলি ১.৯ মি. করে তফাতে।
☞ হরপ্পা সভ্যতায় হরপ্পাকে ‘প্রবেশদ্বার’ আখ্যা দেওয়া হয়। এখানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সিলমোহর মিলেছে।
☞ ভারতের সীমান্তভুক্ত বৃহত্তম হরপ্পা সভ্যতার কেন্দ্রস্থল দুটি হল - ঢোলাভিরা (গুজরাট) এবং রাখিগড়ি (হরিয়ানা) হরপ্পার সিলে প্রদত্ত পুরুষ দেবতাকে স্যার জন মার্শাল পশুপতি শিব এবং ব্যাসাম ‘আদি শিব’ বলে মনে করেন।
☞  কালিবঙ্গানে সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি ছিল কাঁচা ইটের তৈরি।
☞ হরপ্পা সভ্যতায় উৎখননের দ্বারা প্রায় ৫৭টি সমাধিক্ষেত্রের সন্ধান মিলেছে।
☞ হরপ্পায় মৃতদেহ সৎকারের তিনটি পদ্ধতি প্রচলিত ছিল—(১) দ্রব্যসামগ্রী-সহ কবর বা পূর্ণ সমাধি, (২) দ্রব্যসামগ্রী বিহীন কবর বা আংশিক সমাধি ও (৩) ভস্মকবর বা দাহোত্তর সমাধি।
☞ হরপ্পাবাসী ভক্তিবাদ, জন্মান্তরবাদে এবং পরলোকে বিশ্বাসী ছিল।
☞ মৃতদেহকে সাধারণত কবরস্থানের উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে শায়িত করার নিয়ম ছিল। শবের মাথা উত্তর দিকে রাখা হত।
☞ মহেঞ্জোদাড়ো শহরের পশ্চিম এলাকায় আর্নেস্ট ম্যাকে একটি বৃহৎ আকৃতির বাড়িকে ‘কলেজ বাড়ি’ আখ্যা দেন এবং স্যার জন মার্শাল এখানেই আরেকটি বাড়িকে “সভাগৃহ” বলে বর্ণনা করেছেন। এটিই ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম হলঘরের ধ্বংসাবশেষ বিরাট এই হলঘরটিতে ২০টি স্তম্ভ রয়েছে। 

☞ হরপ্পা সংস্কৃতির মানুষদের গড় আয়ু ছিল ৩০ বছর।
☞ হরপ্পা সভ্যতায় সমাধিক্ষেত্রের সন্ধান মিলেছে – মহেঞ্জোদাড়ো, হরপ্পা, লোথাল ও কালিবঙ্গানে।
☞ ধর্মবিশ্বাসে মন্দির বা দেবালয়ের কোনো স্থান ছিল না বলেই মনে করা হয়।
☞ হরপ্পায় প্রাপ্ত এক সিলমোহরে পা তোলা ভঙ্গিতে দণ্ডায়মান নারীর উদর থেকে এক চারগাছ বের হওয়ার দৃশ্য দেখা যায়। কিছু ঐতিহাসিকদের অনুমান এটি ভূমাতার মূর্তি, আবার অনেকের মতে এই দেবী হলেন পুরানকথিত শাকান্তরী দেবী। আসলে সিন্ধুবাসীরা মনে করত মেয়েদের মা হওয়া ও মাটিতে ফসল ফল ছিল একই ব্যাপার।
☞ হরপ্পাবাসীদের হরপ্পায় বাড়িগুলি পোড়া ইটের তৈরি হত। ইটের মাপ ছিল ১১ ইঞ্চি লম্বা, ৫.৫ ইঞ্চি চওড়া ও ২.৭৫ ইঞি পুরু।
☞ লোথাল শব্দের অর্থ মৃতের স্থান। হরপ্পা সভ্যতায় লোথাল ছিল বিশ্বের প্রাচীনতম বন্দর বা পোতাশ্রয়।
☞ মহেঞ্জোদাড়োর রাস্তা তৈরিতে চুন, সুড়কি জাতীয় জিনিস ও পাথর ব্যবহৃত হত।
☞ হরপ্পাবাসীরা তামা, ব্রোঞ্জ ও পাথরের তৈরি কুঠার, বর্শা, তির, ধনুক, মুষল, কাস্তে প্রভৃতি অস্ত্র ব্যবহার করত। সিন্ধু সভ্যতায় ঢাল, বৰ্ম, শিরস্ত্রাণ প্রভৃতি আত্মরক্ষামূলক অস্ত্রের সন্ধান মেলেনি।
☞ প্রধান রাজপথটি ছিল ৩৪ ফুট চওড়া এবং গাড়ি চলাচলের উপযোগী।
☞ বজ্রবয়ন শিল্প ছিল হরপ্পার প্রধান শিল্প।
☞ দীর্ঘদিনের উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত অস্তিত্বের পর ১৭৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ হরপ্পা সভ্যতার দুটি প্রধান কেন্দ্র হরপ্পা ও মহেঞ্জোদাড়োর বিলুপ্তি ঘটে এবং পরবর্তী একশো বা দেড়শো বছরের মধ্যে সমগ্র হরপ্পা সভ্যতা বিলুপ্ত হয়। একই সঙ্গে এই দুটি সভ্যতার বিলুপ্তি ঘটেনি।
☞ সিন্ধুলিপি পাঠোদ্ধার না হওয়ায় সিন্ধু সভ্যতার মতো সুবিশাল সভ্যতার পতনের কারণ সুনিশ্চিতভাবে বলা অসম্ভব। তথাপি সিন্ধু সভ্যতার নিদর্শনগুলি পরীক্ষা করে পণ্ডিতরা এই সভ্যতার ধ্বংসের কারণ অনুমান করেন।
☞ গবেষণার মাধ্যমে জানা যায় যে, সিন্ধু উপত্যকার নিকটবর্তী অঞ্চলে ভূমিকম্পের উৎসস্থল থাকায় ভূমিকম্প এই সভ্যতায় পতনের জন্য দায়ী।
☞ খননকার্যের ফলে প্রাপ্ত নরকঙ্কালগুলির গায়ে ক্ষত চিহ্ন এবং সৎকারের নমুনা না থাকায় হরপ্পা সভ্যতার পতনে ভূমিকম্পের ধারণা স্পষ্ট হয়।
☞ দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারণে একসময় মার্টি লবণাক্ত ও ঊষর হয়ে পড়ে। ফলে সিন্ধু অঞলে মরুভূমির সূচনা ঘটে, যা এই সভ্যতার পতনকে ত্বরান্বিত করে।
☞ হরপ্পাবাসীর রক্ষণশীল মানসিকতা এই সভ্যতার ধ্বংসের জন্য দায়ী। আবহাওয়া পরিবর্তন বা নদীর গতিপথ পরিবর্তনেও তারা সুমেরীয়দের মতো খাল কেটে জলসেচ করার চেষ্টা করেনি, হরপ্পাবাসী উর্বর গাঙ্গেয় উপত্যকায় কৃষির সম্প্রসারণ, ভারী লাঙল ও লোহার যন্ত্রপাতি নির্মাণ করার কোনো প্রচেষ্টা চালায়নি, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুদৃঢ়করণের জন্য ভারী অস্ত্র নির্মাণের কথাও তাদের চিন্তা ও চেতনার বাইরে ছিল, ফলত তাদের বিনাশ ছিল অবশ্যম্ভাবী।
☞ অনেকে মনে করেন যে পোড়া ইটের অতিমাত্রায় ব্যবহার ও অন্যান্য কারণে এখানে ব্যাপকভাবে বৃক্ষচ্ছেদন শুরু হয় এবং অঞ্চলটি ক্রমশ বনশূন্য হয়ে পড়ে, ফলে বৃষ্টিপাতের অভাব দরুন কৃষি উৎপাদন কমে এলে খাদ্যাভাব তীব্রতর হয় এবং জনসাধারণ স্থান ত্যাগে বাধ্য হয়। অনেকের মতে সিন্ধু ও তার শাখানদী এবং অন্যান্য নদনদীর গতিপথ ভিন্নমুখে প্রবাহিত হওয়ায় এই সভ্যতার পতন ঘটে।
☞ মহেঞ্জোদাড়ো নগরটি তিনবার বন্যায় প্লাবিত হয়েছিল। এস. আর. রাও মনে করেন লোথাল ঢোলাভিরা, রংপুর ও দিসালপুরেও বন্যার নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে।

☞ মহেঞ্জোদাড়োতে পরপর যে সাতটি স্তরে এই সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায় তার উপরের স্তরগুলিতে পৌর প্রশাসনের অভাব পরিলক্ষিত হয়। হুইলার মন্তব্য করেছেন যে “পরবর্তী যুগের মহেঞ্জোদাড়ো আনুমানিক হরপ্পা পূর্ববর্তীযুগের তুলনায় দরিদ্র ও হতশ্রী।” অনেক ঐতিহাসিকের মতে হরপ্পা সভ্যতার অবসান ঘটেছিল রক্তপাতের মাধ্যমে। কিন্তু এই রক্তপাতের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে ঐতিহাসিক এম. ট্যাডি বলেন গৃহযুদ্ধ বা গোষ্ঠী দ্বন্দ্বই ছিল এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ।
☞ হুইলার, স্টুয়াট পিগট, গর্ডনচাইল্ড এবং অলচিন দম্পতি মনে করেন যে, আর্যদের আক্রমণের ফলেই হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংস হয়। এই প্রসঙ্গে নানা যুক্তি উপস্থাপিত করা হয়— (i) সৎকার না হওয়া স্তূপীকৃত মৃতদেহ, (ii) আর্যদের আগমনকাল ও হরপ্পার ধ্বংসের কালের সাদৃশ্য, (iii) ঋগ্‌বেদে উল্লিখিত ‘হরিরূপীয়ার যুদ্ধ’-কে অনেকে হরপ্পার যুদ্ধ বলে মনে করেন, (iv) ঋগ্‌গ্বেদে রাজা ইন্দ্রকে ‘পুরন্দর’ বা নগর ধ্বংসকারী বলা হয়েছে যা একমাত্র হরপ্পা নগর সভ্যতার ধ্বংসের ইঙ্গিত বহন করে।
☞ আর্নেস্ট ম্যাকে বলেছেন যে হরপ্পায় আক্রমণকারীরা ছিল বেলুচিস্তানে ব্রাহুই উপজাতির লোক।

No comments

Hi Welcome ....