❐ আরো পড়ুনঃ
❐ অধ্যায় সংক্ষেপে আলোচনাঃ ইতিহাসের পাতা থেকে আমরা রাজা, সুলতান, বাদশাহের কথা জেনেছি। তাদের শাসনব্যবস্থাকে বলা হয় রাজতন্ত্র । পৃথিবীতে এখনও কোনো কোনো দেশে আছে রাজা অথবা রানি। যেমন ইংল্যান্ডের রানি। জাপানের রাজা। তবে সেখানে এখন গণতান্ত্রিক সরকার আছে। গণতান্ত্রিক সরকারে জনগণ নিজেরাই সরকার বেছে নেন। ভারতে রাজা-রানি নেই। তবে,ভারতে এখন আছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
ভারতের সংবিধান : পৃথিবীর প্রত্যেকটি রাষ্ট্রেই লিখিত নিয়মকানুনকে বলা হয় সংবিধান। ভারতের সংবিধান নির্মিত হয় এ দেশের রাষ্ট্রনেতাদের প্রায় তিন বছর আলোচনা ও বিতর্কের পর। সংবিধানটি গৃহীত হয় ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ নভেম্বর। ওই সংবিধান কার্যকরী হয় ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি। সেই থেকে আমাদের দেশে প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি ‘প্রজাতন্ত্র দিবস' হিসেবে পালিত হয়।
সরকারের বিভাগ : পৃথিবীর সমস্ত দেশেই বিচার বিভাগকে আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগ থেকে আলাদা রাখা হয়। সুবিচারের পথ যাতে সবসময় সকলের জন্য খোলা থাকে তার জন্যই এই ব্যবস্থা। এককথায় একে বলা হয় ‘ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি’। ‘স্বতন্ত্রীকরণ’ মানে আলাদা করা। গণতন্ত্র যাতে বলবৎ থাকে, তার জন্যই এই নীতি গৃহীত হয়। এই নীতির কথা প্রথম বলেন, ফ্রান্সের দার্শনিক মন্তেস্ক।
গণতন্ত্র : গণতন্ত্র ব্যাপারটা কিন্তু নতুন ধারণা নয়। আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগের কথা। গ্রিস দেশে এথেন্সের লোকেরা তাদের মধ্য থেকে শাসক বেছে নিত। শোনা যায় যে, লোকেরা ভাঙা কলশির টুকরোর ওপর পছন্দমতো চিহ্ন এঁকে আরেকটা আস্ত কলশির মধ্যে ফেলে দিত। যার পক্ষে কলশির টুকরো বেশি হত, সেই হত শাসক। মনে রেখে
[প্রতিটি প্রশ্নমান-৩]
প্রশ্ন ১. ব্লক কীভাবে তৈরি হত?
উত্তর : অনেকগুলি গ্রাম নিয়ে একটি ব্লক তৈরি হত। সেই ব্লকে একইভাবে একটি পঞ্চায়েত সমিতি থাকে। আবার,
কয়েকটি ব্লক নিয়ে জেলা তৈরি হয়। জেলায় থাকে জেলাপরিষদ। গ্রামের মতোই ব্লক ও জেলার স্বায়ত্তশাসনের
ভার থাকে পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলাপরিষদের ওপর।
প্রশ্ন ২. গণতন্ত্র কী?
উত্তর : গণতন্ত্র ব্যাপারটা কিন্তু নতুন ধারণা নয়, আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগের কথা। গ্রিস দেশে এথেন্সের
লোকেরা তাদের মধ্য থেকে শাসক বেছে নিত। শোনা যায় যে, লোকেরা ভাঙা কলশির টুকরোর ওপর পছন্দমতো
চিহ্ন এঁকে আরেকটা আস্ত কলশির ওপর ফেলে দিত।
প্রশ্ন ৩. ভারতীয় সংবিধান কবে তৈরি হয়?
উত্তর : প্রায় তিনবছর আলোচনা, বিতর্কের পর ভারতীয় সংবিধান তৈরি হয়। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ নভেম্বর সংবিধান
গৃহীত হয়। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ওই সংবিধান কার্যকর হয়। ২৬ জানুয়ারি ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ পালন করা হয়।
[প্রতিটি প্রশ্নমান-৫]
প্রশ্ন ১. ভারতকে ‘গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র' বলা হয় কেন?
উত্তর : ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি থেকে স্বাধীন ভারতের নতুন সংবিধান চালু হয়। নতুন সংবিধান চালু হওয়ার পর ভারতবর্ষ স্বাধীন, সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক, প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। ভারতের জনগণ কেন্দ্রে, পার্লামেন্ট ও প্রতিটি রাজ্যে আইনসভার মাধ্যমে তাদের সার্বভৌমত্ব প্রয়োগ করে। মন্ত্রীসভা কেন্দ্রে পার্লামেন্টের ও রাজ্যে আইনসভার কাছে দায়ী থাকবে। ভারতের গণতন্ত্র হল প্রতিনিধিমূলক গণতন্ত্র। ভারতবর্ষের সংবিধানে সার্বজনীন ভোটাধিকার গৃহীত হয়েছে। জাতিধর্মবর্ণ নির্বিশেষে নারী ও পুরুষ সকল নাগরিকের সমান অধিকার স্বীকৃত হয়েছে। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর পরিণত বয়স্কদের ভোটের দ্বারা কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের আইনসভাসমূহের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন। একজন মানুষ, একজন ভোট—এই নীতি অনুযায়ী ভোটদাতারা ভোট দেবেন। এভাবে কেন্দ্রের ও রাজ্যের সরকারসমূহ জনগণের দ্বারা গঠিত হয় এবং জনগণের জন্য পরিচালিত হয়। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন। তাই ভারত যথার্থই একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র।
প্রশ্ন ২. ২৬ জানুয়ারি ১৯৫০ ভারতের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর : ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে জওহরলাল নেহরুর সভাপতিত্বে লাহোরে ঐতিহাসিক কংগ্রেস শুরু হয়। তখন দেশের অগ্নিগর্ভ অবস্থা। সভাপতির ভাষণে জওহরলাল নেহরু ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের আদর্শ ও লক্ষ্য ব্যাখ্যা করেন। তাঁর মতে, সাম্প্রদায়িক সমস্যাসমাধানের একমাত্র পথ হল অর্থনৈতিক উন্নতি। গান্ধিজি স্বয়ং ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাত্রে পূর্ণ স্বাধীনতার প্রস্তাব উত্থাপন করেন। পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামের পদ্ধতি হিসেবে আইন অমান্যের কথা বলা হয়। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে ২৬ জানুয়ারি সারা দেশ ‘স্বাধীনতা দিবস’ পালনের আহ্বান জানানো হয়। এই আহ্বান অনুযায়ী ১৯৩০ খ্রিস্টব্দে ২৬ জানুয়ারি স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জানুয়ারি গণপরিষদের শেষ অধিবেশন বসে। ওই অধিবেশনেই স্বাধীন ভারতের সংবিধান অনুযায়ী ড. রাজেন্দ্রপ্রসাদ ভারত প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। গণপরিষদ আরও ঘোষণা করে যে, ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে ২৬ জানুয়ারি স্বাধীন ভারতের নতুন সংবিধান প্রবর্তিত হবে। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি নতুন সংবিধান বলবৎ হওয়ার ফলে ভারত ‘একটি সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র' রূপে আত্মপ্রকাশ করে। প্রতিবছর এই দিনটি ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ হিসেবে ভারতবর্ষের সর্বত্র উপযুক্ত মর্যাদা সহকারে পালিত হয়।
No comments
Hi Welcome ....