Class 7 History Chapter 9 Question Answer | সপ্তম শ্রেণি ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর বইয়ের পৃষ্ঠা - ১৭১/১৭২ ❐ আরো পড়ুনঃ সপ্তম শ্রেণি ইতিহাস ...
Class 7 History Chapter 9 Question Answer | সপ্তম শ্রেণি ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর বইয়ের পৃষ্ঠা - ১৭১/১৭২
❐ আরো পড়ুনঃ
১। শূন্যস্থান পূরণ করো :
(ক) (বাংলাদেশ/জাপান/ফ্রান্স) জাপান-এ এখনও রাজা-রানি আছেন।
(খ) নিজেরা নিজেদের মধ্য থেকে শাসক নির্বাচনের পদ্ধতিকে বলে গণতন্ত্র (গণতন্ত্র/রাজতন্ত্র/যুক্তরাষ্ট্র)।
(গ) (ভারতের/জাপানের/ইংল্যান্ডের) ভারতের সংবিধান পৃথিবীর বৃহত্তম সংবিধান।
(ঘ) জনগণ যে শাসনব্যবস্থায় নিজেই নিজের অধীন, তাকে বলে স্বায়ত্তশাসন (সংবিধান/সভা ও সমিতি/স্বায়ত্তশাসন)।
(ঙ) অনেকগুলি গ্রাম নিয়ে হয় একটা ব্লক (ব্লক/জেলা/পৌরসভা)।
২। ‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিশিয়ে লেখো :

৩। সংক্ষেপে (৩০-৩৫টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও :
(ক) বর্তমান ভারতে শাসনব্যবস্থার কী কী বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়?
উত্তর : বর্তমান ভারতে শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
- ভারতের একটি গণতান্ত্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার আছে।
- একটি লিখিত সংবিধান অনুযায়ী দেশের সরকার বেছে নেওয়ার ব্যাপারে দেশের জনগণের অধিকার আছে।
- ভারতের জনগণ শুধু শাসক নির্বাচন করেন না, নিজেরাও শাসনে অংশগ্রহণ করেন।
- শহর বা নগর ও গ্রামের গণতন্ত্র জনগণের সরাসরি যোগদানের মাধ্যমে জোরদার হয়ে ওঠে।
(খ) যুক্তরাষ্ট্র ও সংবিধান কাকে বলে?
উত্তর : প্রত্যেক দেশ কীভাবে চলবে তার নিয়মকানুন আছে, এই নিয়মকানুনকে সংবিধান বলা হয়। বিধান শব্দটির
মানেই নিয়ম। বেশির ভাগ দেশেই সংবিধান আছে লিখিত আকারে। আবার কোনো কোনো দেশে তা লেখা নেই।
যে শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য দু-রকম সরকারের ক্ষমতাই স্বীকার করা হয়, তাকে বলে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার ব্যবস্থা।
উত্তর : প্রত্যেক দেশ কীভাবে চলবে তার নিয়মকানুন আছে, এই নিয়মকানুনকে সংবিধান বলা হয়। বিধান শব্দটির
মানেই নিয়ম। বেশির ভাগ দেশেই সংবিধান আছে লিখিত আকারে। আবার কোনো কোনো দেশে তা লেখা নেই।
যে শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য দু-রকম সরকারের ক্ষমতাই স্বীকার করা হয়, তাকে বলে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার ব্যবস্থা।
(গ) সরকারের কাজ কী কী?
উত্তর : সরকারের কাজ হল দেশের শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করা। জনগণের যাতে ভালো হয় তার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া, কর সংগ্রহ করা, দেশের স্বাধীনতা বজায় রাখা। দেশের শান্তি ও উন্নতির জন্য সরকার কাজ করে। আর এসব কাজে সরকারকে পথ দেখাবে সংবিধান। সংবিধান মেনেই সরকার দেশ শাসন করবে।
(ঘ) স্বায়ত্তশাসন বলতে তুমি কী বোঝো?
উত্তর : ভারতের জনগণ শুধু শাসক নির্বাচন করেন না, নিজেরাও শাসনকার্যে অংশ নেন, সরাসরি শাসনকার্যে অংশ
নেওয়াকেই হাবলে ‘স্বায়ত্তশাসন’। ‘স্ব’ মানে নিজের, আর ‘আয়ত্ত’ মানে অধীন। জনগণ যেখানে নিজেই নিজের অধীন, সেই শাসনব্যবস্থকে বলে স্বায়ত্তশাসন। পশ্চিমবঙ্গে এই স্বায়ত্তশাসন দু-ভাগে দেখা যায়।
(ঙ) নির্বাচনকে সাধারণ ভাবে কী বলে? ভারতে কত বছর অন্তর সরকার নির্বাচন হয়? সরকার নির্বাচনের সঙ্গে গণতন্ত্রের কী সম্পর্ক?
উত্তর : নির্বাচনকে সাধারণভাবে ‘ভোট হওয়া’ বলে। সেই নির্বাচনে ভোট দিয়ে দেশের মানুষ সরকার নির্বাচন করেন। ভারতে পাঁচ বছর অন্তর সরকার নির্বাচন হয়। আবার, এই দুই ক্ষেত্রেই জনগণ নিজেরাও শাসনব্যবস্থা ও নানা কর্মসূচিতে অংশ নেন। এভাবেই জনগণের সরাসরি যোগদানের মধ্য দিয়ে শহর বা নগরও গ্রামের গণতন্ত্র জোরদার হয়ে ওঠে। জনগণ নিজেরাই দেশের ব্যবস্থা ঠিক করেন বলে একে গণতন্ত্র বলে।
৪। বিশদে (১০০-১২০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও :
(ক) ভারতকে কেন গণতান্ত্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় বলা হয় ? দেশ পরিচালনায় সংবিধানের ভূমিকা কী বলে বলে তুমি মনে করো?
উত্তর : সংবিধানে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার দুয়েরই কী কী ক্ষমতা তা বলা আছে। যে শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্ৰীয়
ও রাজ্য দু-রকম সরকারের ক্ষমতাই স্বীকার করা হয়, তাকে বলে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার ব্যবস্থা। ভারতের সরকার একদিকে গণতান্ত্রিক—কারণ জনগণ নিজেরা শাসক বেছে নেন। আবার অন্যদিকে তা যুক্তরাষ্ট্রীয়—কারণ কেন্দ্রীয় ও রাজ্য দু-ধরনের সরকারই এই শাসনব্যবস্থায় আছে। প্রত্যেক দেশের শাসনপ্রণালী কীভাবে চলবে তার নির্দিষ্ট নিয়মকানুন আছে। এই নিয়মকানুনকেই ‘সংবিধান’ বলা হয়। ‘বিধান’ শব্দটার মানেই নিয়ম। ভারতের একটি লিখিত সংবিধান আছে। ভারতীয় সংবিধানে ভারতের জনগণের দেশের সরকার বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে দেশের জনগণের অধিকারকেই স্বীকার করা আছে।
ভারত একটি বিশাল দেশ। এই দেশে একটাই কেন্দ্রীয় সরকার আছে। আবার, প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব সরকার আছে। তাদের বলা হয় রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার দুটোই জনগণ বেছে নেন। কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্বাচন করেন দেশের সমস্ত জনগণ। রাজ্য সরকারকে নির্বাচন করেন ওই রাজ্যের বাসিন্দারা। জনগণের যাতে ভালো হয় তার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া, কর সংগ্রহ করা, দেশের স্বাধীনতা বজায় রাখা এবং দেশের শান্তি ও উন্নতির জন্য সরকার কাজ করবে। আর এসব কাজে সরকারকে পথ দেখাবে সংবিধান। সংবিধান মেনেই সরকার দেশ শাসন করবে।
(খ) সরকারের কয়টি ভাগ? ওই ভাগগুলি কোন্টি কী কাজ করে? বিচার বিভাগকে কেন আলাদা করে রাখা হয়?
উত্তর : সরকারের কাজকর্মকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তিনটি বিভাগ করা হয়েছে। (১) আইন বিভাগ, যেখানে দেশ পরিচালনার আইন তৈরি হবে, (২) শাসন বিভাগ, ওই আইন অনুসারে যারা দেশ পরিচালনা করবে। আর, (৩) বিচার বিভাগ, সংবিধান অনুসারে দেশ শাসন হচ্ছে কিনা, জনগণের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে কিনা—এসবের প্রতি নজর রাখবে। আর কেউ নিয়ম ভাঙলে, তার ব্যবস্থা নেওয়াও বিচার বিভাগের কাজ। তাই এই বিভাগটিকে আলাদা করে রাখা হয়। সব দেশেই বিচার বিভাগকে বাকি দুটি বিভাগের (আইন ও শাসন) থেকে আলাদা রাখা হয়। কোনোভাবেই যাতে সুবিচারের পথ বন্ধ না হয়, তার জন্যই এই ব্যবস্থা। এককথায় একে বলে ক্ষমতা ‘স্বতন্ত্রীকরণ নীতি’। ‘স্বতন্ত্রীকরণ’ মানে আলাদা করা। গণতন্ত্র যাতে দৃঢ় বলবৎ থাকে, তার জন্যই এই নীতি নেওয়া হয়। ফ্রান্সের দার্শনিক মস্তেস্কু প্রথম এই নীতির কথা বলেন।
(গ) পৌরসভা ও গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি কী কী কাজ করে?
উত্তর : ছোটো ছোটো শহরে বা নগরে পৌরসভা আছে। ‘পৌর’ কথাটি এসেছে ‘পুর’ থেকে। সংস্কৃতে পুর শব্দের অর্থ নগর। ওই শহর বা নগরের আঠারো বছর বা তার বেশি বয়সের বাসিন্দারা ভোট দিয়ে পৌরসভার সদস্যদের বেছে নেন। এদের পৌরপ্রতিনিধি বলে। এঁদের মধ্যে একজন পৌরপ্রধান হন, শহর বা নগরের জনসেবা, জনস্বাস্থ্য, উন্নয়ন ও প্রশাসন ইত্যাদির পরিচালনা করাই পৌরসভার কাজ। পানীয় জল সরবরাহ করা, রাস্তাঘাট বানানো, দূষণ রোধ করা, এইসবই পৌরসভাগুলি করে থাকে। বিদ্যালয়, হাসপাতাল প্রভৃতি নির্মাণ উন্নযনে পৌরসভাগুলি উদ্যোগ নেন। করে শিক্ষার প্রসারে ও স্বাস্থ্য শহর বা নগরে পৌরসভার মতোই গ্রামে আছে গ্রাম পঞ্চায়েত। গ্রামের বাসিন্দারা ভোট দিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের
সদস্যদের নির্বাচন করেন। তাদের মধ্য থেকে একজন হন পঞ্চায়েত প্রধান। গ্রামের সবরকম উন্নতি, গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজ। পানীয় জলসরবরাহ গ্রামের পরিচ্ছন্নতা, পথঘাট নির্মাণ এই সবই হল গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজ।
(ঘ) পশ্চিমবঙ্গে স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা বিষয়ে একটি টীকা লেখো।
উত্তর : ভারতের জনগণ শুধু শাসক নির্বাচন করেন না, নিজেরাও শাসনে অংশ নেন। সরাসরি শাসনে অংশ নেওয়াকেই বলে ‘স্বায়ত্তশাসন’। ‘স্ব’ মানে নিজের আর ‘আয়ত্ত’ মানে অধীন। জনগণ যেখানে নিজেই নিজের অধীন, সেই শাসন ব্যবস্থাকে বলে স্বায়ত্তশাসন। পশ্চিমবঙ্গে এই স্বায়ত্তশাসন দু-ভাবে দেখা যায়। ছোটো ছোটো শহরে বা নগরে পৌরসভা আছে। ‘পৌর’ কথাটা এসেছে ‘পুর’ থেকে। সংস্কৃতে পুর মানে নগর। ওই শহর বা নগরের আঠারো বছর বা তার বেশি বয়সের বাসিন্দারা ভোট দিয়ে পৌরসভার সদস্যদের বেছে নেন। এঁদের পৌরপ্রতিনিধি বলে। এঁদের মধ্যে একজন পৌরপ্রধান হন। শহর বা নগরের জনসেবা, জনস্বাস্থ্য, উন্নয়ন ও প্রশাসন পরিচালনা করাই পৌরসভার কাজ। পানীয় জল সরবরাহ করা, রাস্তাঘাট বানানো, দূষণ রোধ করা, এসবই পৌরসভাগুলি করে থাকে। বিদ্যালয়, হাসপাতাল প্রভৃতি বানিয়ে শিক্ষার প্রসারে ও স্বাস্থ্য উন্নয়নে পৌরসভাগুলি উদ্যোগ নেয়।
শহর বা নগরে পৌরসভার মতোই গ্রামে আছে গ্রাম পঞ্চায়েত। গ্রামের বাসিন্দারা ভোট দিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের নির্বাচন করেন। তাদের মধ্যে থেকে একজন হন পঞ্চায়েত প্রধান। গ্রামের সবরকম উন্নতি, গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজ, পানীয় জল সরবরাহ, গ্রামের পরিচ্ছন্নতা, পথ-ঘাট নির্মাণ এসবই গ্রাম পঞ্চায়েত করে। আবার, শিক্ষাদানের জন্য বিদ্যালয় স্থাপন করা, চিকিৎসা কেন্দ্র তৈরি করা, বনসৃজন করা এসবও গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজের মধ্যে পড়ে। অনেকগুলি গ্রাম নিয়ে একটা ‘ব্লক’ হয়। সেই ব্লকে একইভাবে একটা পঞ্চায়েত সমিতি থাকে। আবার, কয়েকটি ব্লক নিয়ে হয় ‘জেলা’। জেলায় থাকে জেলাপরিষদ। গ্রামের মতোই ব্লক ও জেলার স্বায়ত্তশাসনের ভার থাকে পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলাপরিষদের ওপরে।
পৌরসভা হোক বা পঞ্চায়েত ব্যবস্থা সবেতেই পাঁচ বছর অন্তর জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। আবার, এই দুই ক্ষেত্রেই নানাভাবে জনগণ নিজেরাও শাসনব্যবস্থা ও নানা কর্মসূচিতে অংশ নেন।
(ঙ) প্রাচীন কালে ভারতে ও অন্য কোথাও গণতন্ত্রের কথা জানা যায় কি? সেই গণতন্ত্র কেমন ছিল বলে তুমি মনে করো?
উত্তর : বাংলায় মাৎস্যন্যায় চলার সময় বাংলার মানুষ স্থানীয় এক রাজা গোপালকে (৭৫০ খ্রি.) নির্বাচন করেন রাজা হিসেবে। গণতন্ত্র ব্যাপারটা কিন্তু নতুন ধারণা নয়। আজ থেকে আড়াই বছর আগের কথা। গ্রিস দেশে এথেন্সের লোকেরা তাদের মধ্য থেকে শাসক বেছে নিত। শোনা যায় যে, লোকেরা ভাঙা কলশির টুকরোর ওপর পছন্দমতো চিহ্ন এঁকে আরেকটা আস্ত কলশির মধ্যে ফেলে দিত। যার পক্ষে বেশি কলশির টুকরো জমা পড়ত, সেই হত শাসক।
৫। কল্পনা করে লেখো (১০০-১৫০টি শব্দের মধ্যে) :
(ক) ধরো তুমি একজন পৌর-প্রতিনিধি/পঞ্চায়েত সদস্য। তোমার স্থানীয় অঞ্চলের উন্নতি করার জন্য তুমি কী কী কাজ করবে শ্রেণিকক্ষে যুক্তিসহ একটি বক্তৃতা পেশ করো।
উত্তর : অঞ্চল উন্নয়নের পরিকল্পনা
মাননীয় সভাপতি রূপে শ্রেণিশিক্ষক মহাশয় ও এলাকাবাসী হিসেবে আমার প্রিয় সতীর্থগণ, আজ আমি আপনাদেরই নির্বাচিত পৌরপ্রতিনিধি হিসেবে এই এলাকার উন্নয়নের ব্যাপারে কী কী পরিকল্পনা নিয়েছি তা আপনাদের গোচরে আনতে চাই। প্রথমে, যথোপযুক্ত পানীয় জল সরবরাহের জন্য পুরোনো কিছু কিছু পাইপলাইন মেরামতির কাজ করব। এজন্য কিছুদিন যে আপনাদের অল্পবিস্তর কষ্ট সহ্য করতে হবে এ ব্যাপারে আমি আপনাদের কাজে আগাম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আপনারা জানেন, এখানকার হাসপাতালে প্রসুতিবিভাগে মাত্র দশজন সন্তানসম্ভবা মাতার জন্য বেড ছিল। আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাভ করে আরও দশটি বেড ও তার জন্য উপযুক্ত বিল্ডিং নির্মাণের অবিলম্বে ব্যবস্থা নিচ্ছি। পায়রাখাঁচা লেন-এ প্রায় পাঁচশো পরিবার বসবাস করেন। তাই হঠাৎ কোনো কারণে পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে তার বিকল্প হিসেবে একসঙ্গে দুটি নলকূপ পরস্পর একশো মিটার ব্যবধানে বসানোর ব্যবস্থা নিয়েছি।
পরিবেশদূষণের আশঙ্কায় কাশীপুর রোড এবং পিএনসি লেন সংলগ্ন দীর্ঘদিন মজে থাকা পুকুরটি সংস্কারের আয়োজন নিয়েছি। আগামী সপ্তাহেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। এ ছাড়া আপনাদের কাছে বিনীত আবেদন রাখব যে, আপনারা এবার থেকে আমাদের পৌরসভার গলিতে গলিতে ঘোরা ময়লাফেলা গাড়িতে ঘরের যাবতীয় জঞ্জাল বা আবর্জনা ফেলবেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের এলাকা স্বাস্থ্য সুন্দর রাখার ব্যাপারে আমাদের এখনই সচেতন হতে হবে। আসুন, আমরা সকলের স্বার্থে সকলেই এই শুভ উদ্যোগে হাতে হাত মিলিয়ে এগিয়ে চলি নমস্কার।
(খ) ধরো তুমি ভারতের একজন সাধারণ মানুষ। তুমি তোমার অঞ্চলের উন্নতি করতে চাও। কী কী ভাবে তুমি সেই উন্নতির পরিকল্পনা করবে, শ্রেণিকক্ষে যুক্তিসহ একটি বিতর্কের আয়োজন করো।
উত্তর : অঞ্চলের উন্নতিকল্পে বিতর্কের আয়োজন
মাননীয় সভাপতি, মাননীয় বিচারকমণ্ডলী, শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষাকর্মীবৃন্দ, সমাগত ছাত্রবন্ধু ও আমার প্রিয়
- সতীর্থবর্গ— আজ আমি ভারতের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার অঞ্চলের উন্নতির পরিকল্পনায় একটি বিতর্কের আয়োজন করেছি। এই আলোচনায় প্রত্যেককেই অংশগ্রহণের জন্য বিনীত আহ্বান জানাব। আমরা পাশাপাশি দুটি গ্রামের অধিবাসী এখানে উপস্থিত আছি, তাই আমার প্রথম পরিকল্পনা তালন্দগ্রামে প্রতিবছর একই স্থানে পাঁচমিটার লম্বা মাটির বাঁধ ভেঙে যে জল ঢুকে ফসলের ক্ষতি করে তা প্রতিরোধের জন্য সেখানে সিমেন্ট বাঁধানো লক গেট গড়ে তুলতে চাই।
- মহেশ—তাহলে মলিহাটি গ্রামের মানুষজনেরা যে ডুবে থাকবে সেটা কি ভেবেছেন মহাশয়?
- শিবানী—না, আমি বলি, উপযুক্ত জলনিকাশির ব্যবস্থা করা দরকার।
- চন্দ্রজিৎ—তা সম্ভব কী করে? তাহলে তো মাঠের মাঝখান দিয়ে একটু সরু ক্যানাল করে দিতে হবে।
- অনিন্দ্য—ভাবনা মন্দ নয়। এজন্য অবশ্য প্রত্যেকেরই কিছু কিছু স্বার্থত্যাগ করতে হবে।
- সুনেত্রা—ওরে বাবা, আপনারা শুধু বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ব্যাপারটা বলছেন। আমরা যে মলিহাটি গ্রামের প্রায়তিনশো ফ্যামিলি ইলেকট্রিক লাইন পাইনি তার পরিকল্পনা কি নিয়েছেন?
- শংকর—সেজন্য আমাদের সকলকেই মিলিত হয়ে বিদ্যুৎ দপ্তরে আর্জি জানতে হবে, শুধুমাত্র গ্রামেরই ওই ক-টি অধিবাসী হলে চলবে না।
- শ্যামলী—গ্রামের বাচ্চাগুলো যে ভাঙা কাঠামোযুক্ত আদ্যিকালের প্রাইমারি স্কুলঘরে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষায় কষ্ট পাচ্ছে সে কথা কেউ ভেবেছেন কি?
- আমি—এ ব্যাপারে আমাদের দুটি গ্রামের শীর্ষস্থানীয় প্রত্যেককেই একসঙ্গে একবার বসতে হবে আলোচনায়। আসুন কিছু কিছু চাঁদা তুলি। এরপর যা কম পড়বে তার জন্য বিডিয়ো অফিসে আবেদন জানাব। আজ এখানেই আমাদের বিতর্কসভা শেষ করছি। এবার এই মর্মে আমি একখানি উপস্থিতিপত্র রচনা করেছি দয়া করে আলোচনায় অংশগ্রহণকারী সকলে এতে নাম সই করবেন
(গ) ধরো পাল যুগের বাংলার একজন সাধারণ মানুষের সঙ্গে তোমার হঠাৎ দেখা হয়ে গিয়েছে। তোমার রাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এসব নিয়ে গল্প করছো। তোমাদের সেই কতাবার্তা নিয়ে সংলাপ লেখো।
উত্তর : আমি : নমস্কার ভুবনবাবু। আপনার পোশাক অন্যরকম লাগছে কেন?
- ভুবনবাবু : নমস্কার। আসলে আমি প্রাচীন বাংলার একজন সাধারণ মানুষ।
- আমি : আপনি কি প্রাচীন বাংলা থেকে আসছেন?
- ভুবনবাবু : হ্যাঁ। দেখতে এলাম এখানকার রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কী পরিবর্তন হয়েছে।
- আমি : কী দেখলেন এখানে ?
- ভুবনবাবু : দেখলাম, এখানকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চেয়ে সেই সময়কার রাজতন্ত্র। একজন দক্ষ রাজার অধীনে
- সাধারণ মানুষ অনেক সুবিধা ভোগ করতেন।
- আমি : কিন্তু সেই রাজা যদি অত্যাচারী, নিষ্ঠুর হতেন তাহলে কি সাধারণ মানুষ সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারত?
- ভুবনবাবু : এ প্রশ্ন আমিও আপনাকে করতে পারি? এখনকার গণতন্ত্রেও তো সেই একই অবস্থা।
- আমি : না, তা নয়। গণতন্ত্রে জনগণ নিজেরাই শাসক নির্বাচন করেন। অযোগ্য শাসককে পরবর্তী নির্বাচনে সরিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু রাজতন্ত্রে তো একমাত্র বিপ্লব বা বিদ্রোহ ছাড়া তা সম্ভব নয়। এ ছাড়া গণতন্ত্রে আমরা ব্যক্তি-স্বাধীনতা ভোগ করি, যা রাজতন্ত্রে তো সম্ভবই নয়।
- ভুবনবাবু : এবার বুঝতে পারছি রাজতন্ত্রের চেয়ে গণতন্ত্রই শ্রেয়।
No comments
Hi Welcome ....